রঙ্গিলা রসুল (Rangeela Rasool - The playboy prophet)

Started by Jupiter Joyprakash, May 05, 2013, 03:42:10 PM

Previous topic - Next topic

0 Members and 1 Guest are viewing this topic.

Jupiter Joyprakash

 
রঙ্গিলা রসুল (The playboy prophet)
লেখক ? পন্ডিত চমুপতি
প্রকাশক শহীদ-এ আজম মহাশয় রাজপাল, লাহোর

বিতরক- মহম্মদ রফী, সবজী মন্ডী, দিল্লী



উৎসর্গঃ-
সেই মহান যোদ্ধা, সাহসী, বিদ্বান কে এই কীর্তি সমর্পন করা হইল যিনি এই সংসারের নিকট ?হজরত মহম্মদ সাহেব? এর জীবন চরিত্র প্রকাশ করিয়া সঠিক দিগদর্শন করাইয়াছেন এবং তাহার ফলস্বরূপ ছোরার আঘাতে শহীদ হইয়াছেন। এই পুণ্যাত্মার প্রতি আমার অন্তিম প্রণাম।

              পন্ডিত চমূপতি (লেখক)









ইতিহাসঃ


পন্ডিত চমূপতি ছদ্মনামে এক আর্যসমাজী এই 'রঙ্গীলা রসুল' গ্রন্থটি রচণা করেন। লাহোরের রাজপাল প্রকাশনী হইতে এটি প্রকাশিত হয়। এজন্য মুসলিম সমাজের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রকাশক শহীদ আজম রাজপালকে আদালতে উঠানো হইয়াছিল, কিন্তু কোনো অবস্থাতেই তিনি এই গ্রন্থের রচয়িতার পরিচয় প্রকাশ করেন নাই। পাঁচ বৎসর মামলা চলিবার পর প্রকাশক আজম সাহেব এই মামলা হইতে মুক্তিলাভ করেন। এই সময়ের মধ্যে তাঁহার উপর বহুবার প্রাণঘাতী আক্রমণ ঘটিয়াছিল। অবশেষে ১৯২৯ সালের ৬ এপ্রিল ইল্ম-উদ-দীন নামক এক জিহাদী তরুণ আজম সাহেবকে ছোরার আঘাতে হত্যা করিতে সক্ষম হয়। এই মহান কীর্তি সম্পাদন করার ফলে ইলম-উদ-দীন এর ফাঁসি হইয়াছিল।

নিজের জীবন বার বার বিপন্ন করিয়াও প্রকাশক আজম সাহেব যেভাবে গ্রন্থকারকে রক্ষা করিয়াছিলেন সেজন্য লেখক 'পন্ডিত চমূপতি' আজম সাহেবের প্রতি আজীবন কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করিয়াছেন।

Jupiter Joyprakash

#1
 প্রস্তাবনাঃ-

হজরত মহম্মদ সাহেব এর পঁচিশ বৎসর বয়সকাল হইতে  লেখক এই পুস্তকের সূচনা করিয়াছেন। ইহার পূর্বকালের কোনো তথ্য এই পুস্তকে নাই। এজন্য পাঠকের জ্ঞাতার্থে সংক্ষেপে তাঁহার জন্ম হইতে পঁচিশ বৎসর বয়স পর্যন্ত কাহিনী পাঠকের নিকট জানাইয়া আমার পবিত্র কর্তব্য পালন করিতেছি।
হজরত মহম্মদ এর পিতার নাম ছিল আব্দুল্লাহ। তিনি আব্দুল মুত্তালিব এর পুত্র ছিলেন। তাঁহারা ছিলেন কুরাইশ বংশের সন্তান। এই বংশ আরবের অন্যতম প্রধান গোত্র ছিল এবং তৎকালীন বেদুইনদের মধ্যে সর্বাধিক সম্মানিত ছিল।
মহম্মদ এর জন্ম মক্কায় হইয়াছিল। জন্মের পূর্বেই তাঁহার পিতা আব্দুল্লাহ পরলোকে প্রস্থান করেন। তাই জন্মের পর তাঁহার পিতামহ আব্দুল মুত্তালিবের নিকট তিনি পালিত হইতেছিলেন। মহম্মদের যখন আট বৎসর বয়স তখন আব্দুল মুত্তালিবের মৃত্যু হইল, অতঃপর বালক মহম্মদের দায়িত্ব লইলেন চাচা হজরৎ আবু তালিব।
মহম্মদের মাতার নাম ছিল আমীনা। কিন্তু সে সময়ের প্রথা অনুসারে শারীরিক ও মানসিক উন্নতির জন্য তাঁহাকে নিকটের এক গ্রামে হালিমা সাদীয়া নামক এক মহিলার নিকট পাঠাইয়া দেওয়া হয়। সেখান হইতে মাতার নিকট ফিরিয়া আসার অল্পদিন পরেই মাতা আমীনাও দেহরক্ষা করিলেন। ফলে বালক মহম্মদের সম্পূর্ণ দায়িত্ব পড়িল চাচা আবু তালিব এর উপর। চাচা ব্যবসায়ী ছিলেন। তিনি মহম্মদকে ব্যবসায়ে লাগাইয়া দিলেন এবং ছাগল চরানোর দায়িত্বে নিযুক্ত করিলেন। এই ছাগল চরানোতেই মহম্মদের বাল্যকাল কাটিয়া গেল। প্রভূর কৃপায় অলৌকিক সৌন্দর্য্য, অসাধারণ স্বাস্থ্য, বিশুদ্ধ হৃদয় ও গভীর ভক্তি থাকার পরেও তাঁহাকে দারিদ্র ও কঠোর পরিশ্রমের মধ্য দিয়া চলিতে হইয়াছিল। পিতাকে কখনো দেখেন নাই, মাতাকে অতি বাল্যকালেই হারাইয়াছিলেন।
পঁচিশ তম বর্ষে তাঁহার প্রতি খাদিজা নামক এক ধনী বিধবা মহিলার দৃষ্টি পড়িল। তাঁহার বয়স সেই সময় চল্লিশ বৎসর ছিল। মহম্মদও ইহাতে হৃদয় হারাইয়া ফেলিলেন। ২৫ বৎসরের কষ্টের পর সহসা তাঁহার যেন লটারী লাগিয়া গিয়াছিল। যে ভালবাসা হইতে তিনি আজন্ম বঞ্চিত ছিলেন সেই ভালবাসা একই সঙ্গে পত্নী ও মাতার রূপে সাক্ষাৎ প্রাপ্ত হইবার মত সৌভাগ্য আর কি হইতে পারে! খাদীজার বয়স যদি চল্লিশ না হইয়া ষাট হইত তাহাতেও হজরত এই বিবাহ প্রস্তাবে আপত্তি করিতেন না।
এইবার আপনারা হজরত মহম্মদ সাহেব এর পবিত্র? জীবন চরিত মনযোগ সহকারে পাঠ করিয়া লাভবান হোন। অন্য কোনো পয়গম্বরের এমন শিক্ষাপ্রদ জীবন বৃত্তান্ত পাওয়া কঠিন, যাহা অনুসরণকারীর জন্য স্বর্গ নিশ্চিত। যাহাতে প্রত্যেক বাক্যের সহিত প্রমাণ নিহিত আছে যেগুলিকে সুন্নী মুসলমান ভাইয়েরা প্রামাণ্য হিসাবে মান্য করেন। যদি আপনি ইহাকে নরকের পথ বলিয়া মনে করেন তবে আজই পরিত্যক্ত ঈমান ফিরাইয়া আনিতে পারিবেন। কারণ কিছু না জানিয়া কাহারো অনুসরণ করা অস্বাভাবিক।
এই জীবন চরিতটি সম্পূর্ণ নিরপেক্ষতা সহকারে প্রমাণ সহ লিখিত হইয়াছে। ইহাতে পরিষ্কার জানা যায় যে সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠাতা নিজেই এত পবিত্র যে তাঁহার তুলনা ইতিহাসে আর দ্বিতীয় পাওয়া যায় না! তবে তাঁহার উপদেশ ও সিদ্ধান্ত কতই না শিক্ষাপ্রদ হইবেক। পাঠক স্বয়ং তাহা বিচার করিবেন।
                                                বিতরকঃ-  মহম্মদ রফী।

Jupiter Joyprakash

#2
!!ওম!!
পয়গম্বরের প্রশংসা

বাগিচায় বুলবুলি যায় যেমন করে ফুলের টানে।
আমি যাই তেমন আমার রঙ্গিলা রসুলের পানে।।

চির বসন্তের রঙ্গিলা রসুল আমার!
লক্ষ পীরের রঙ্গিলা রসুল আমার!!
জগতের সেরা রঙ্গিলা রসুল আমার!
দেবতার প্রিয় রঙ্গিলা রসুল আমার!!

বাগিচায় বুলবুলি যায় যেমন করে ফুলের টানে।
আমি যাই তেমন আমার রঙ্গিলা রসুলের পানে।।

মন্দকে চাও করতে ভালো? বিয়ে করাই সহজ পথ।
আঁধারে চাও জ্বালতে আলো? বিয়ে করাই সহজ পথ।।
দেখতে পেলে রূপের রাণী? বিয়ে করাই সহজ পথ।
দেখলে কারো টাকার খনি? বিয়ে করাই সহজ পথ।।


বাগিচায় বুলবুলি যায় যেমন করে ফুলের টানে।
আমি যাই তেমন আমার রঙ্গিলা রসুলের পানে।।


চমূপতি (এম এ)

Jupiter Joyprakash

#3
ঈশ্বরের অন্তিম বার্তাবাহক "হজরত মহম্মদ সাহেব" এর জীবন-চরিত্র আরম্ভ।
মহম্মদের বিশেষত্ব এই যে তিনি গৃহস্থ পয়গম্বর ছিলেন। মুসলমান ভাইয়েরা তাঁহার এই চরিত্র লইয়া গর্ব করেন, যে দেখ; অন্য পয়গম্বরের মধ্যে যাহা নাই তাহা মহম্মদের মধ্যে আছে। এই জন্যই ত মহম্মদ প্রশংসার যোগ্য। এ কথা আমারও হৃদয় স্পর্শ করে।


- দয়ানন্দ বাল-ব্রহ্মচারী ছিলেন। তিনি ছিলেন দেবতা। আমরা সামান্য মনুষ্য, তাঁহার ব্রহ্মচর্যের স্তরে যাওয়া আমাদের সাধ্য কি!

- মহাত্মা বুদ্ধ বিবাহ করিয়াছিলেন। কিন্তু তিনি গৃহত্যাগ করিয়াছিলেন। যৌবনকালে পত্নী ও সন্তানকে একলা পরিত্যাগ
করিয়া তিনি সাধু হইয়াছিলেন। এমন সাধুতা লাভ করা আশা বা ক্ষমতা আমাদের নাই।

- যীশু ত সংসারের কাজ কিছুই করেন নাই।

- মহম্মদ বিবাহ করিয়াছেন, না! তিনি অজস্র বিবাহ করিয়াছেন। সকল প্রকার নারীকে বিবাহ করিয়াছেন। বিধবা, কুমারী, বৃদ্ধা, যুবতী, হাঁ, একজন নবযুবতীও ছিলেন। তিনি সমস্ত রকম বিবাহেরই রঙ দেখিয়াছেন, তাহাদের ভালমন্দ কেবল বুঝেনই নাই, তাহা প্রয়োগ করিয়া বাস্তব ফলাফলের
নিদর্শনও স্থাপন করিয়াছেন।
- মহম্মদ একজন অভিজ্ঞ পয়গম্বর ছিলেন। অভিজ্ঞতাই তাঁহার জ্ঞানের উৎস ছিল। এমন নিম্বপত্রের ন্যায় তিক্ত অভিজ্ঞতাও মহম্মদ মধুর মত পান করিয়াছেন, কেন? কেবল সকলের মঙ্গলের জন্য! আমাদের জ্ঞান দান করার জন্যই। মহম্মদের জীবন শিক্ষাপ্রদ উপদেশে ও উপাসনায় পরিপূর্ণ। সত্যই তিনি পথ-প্রর্দশক

- আমি গৃহস্থ, আমার পয়গম্বর গৃহস্থ। তিনি আমার গুরু, আমি তাঁহার শিষ্য। উপনিষদে লিখিত আছে যে গুরুর সদগুণ গ্রহণ করিবে ও অসদ গুণ বর্জন করিবে।
- এই দৃষ্টিকোণ হইতেই আজ আমরা ঘরবাড়ীওয়ালা, রঙ্গিলা, রসিক নাগর রসুলের জীবনের গৃহস্থাশ্রমের উপর এক সরস দৃষ্টিপাত করিতে চাই। মহম্মদী তথা অ-মহম্মদী সকলেই ইহা পাঠ করিতে পারেন, কারণ মহম্মদ ত সকলেরই।


Jupiter Joyprakash

#4
বৃদ্ধাচারী মহম্মদ

মহম্মদের প্রথম বিবাহ হয় ২৫ বৎসর বয়সে। আর্যসমাজীদেরও এ কথা মানিতেই হইবে যে মহম্মদ তাঁহার জীবনের প্রথম ভাগ শাস্ত্র অনুসারে কুমার অবস্থায় অতিবাহিত করিয়াছিলেন। তিনি ব্রহ্মচারী ছিলেন, বিবাহ করার পূর্ণ অধিকার তাঁহার ছিল।
সর্বপ্রথম আমরা মহম্মদের ব্রহ্মচর্য্য অবস্থার প্রতি একবার দৃষ্টিপাত করা উচিত বিবেচনা করিতেছি। কারণ দুর্গন্ধময় মানসিকতার লোকেরা সর্বদাই ভালমানুষের অভ্যাস, কর্ম ও বাক্যে সন্দেহ প্রকাশ করিয়া থাকে।
আমরা মহম্মদকে ব্রহ্মচারী মান্য করি কারণ তিনি স্বয়ং এ বিষয়ে আলোকপাত করিয়াছেন। তিনি বলিয়াছেন- একদা তিনি অন্য এক কুরেশী যুবকের সহিত পশুচারণ করিতেছিলেন। মহম্মদ ঐ যুবককে কহেন, "তুমি যদি আমার পশুগুলির প্রতি দৃষ্টি রাখিতে পারো তবে আমি ছুটি পাইতে পারি, আর যেভাবে নবযুবকেরা রাত্রিযাপন করিয়া থাকে আমিও সেইভাবে রাত্রিযাপন করিয়া আসিতে পারি।"
এই বলিয়া মহম্মদ মক্কা শহরে চলিয়া গেলেন। কিন্তু সেখানে এক বিবাহ অনুষ্ঠানে তাঁহার মনযোগ আকর্ষন করিয়া লইল। তিনি সেখানেই ঢুকিয়া পড়িলেন এবং এক সময় ঘুমাইয়া পড়িলেন। পরে আরেক রাত্রে তিনি আবার একই উদ্দেশ্যে মক্কায় গেলেন, কিন্তু স্বর্গীয় প্রলোভনে তাঁহার মন মোহিত হইয়া গেল এবং সেবারও তিনি ঘুমাইয়া রাত্রি কাটাইয়া দিলেন।
মহম্মদ কহেন যে এই দুই ঘটনার পর আর তাঁহার মন মন্দের দিকে অগ্রসর হয়নাই।

"হায়াত মহম্মদী  ম্যোরসাহেব কৃত"

আমরা মহম্মদের বাক্যে বিশ্বাস করি, কারণ তাঁহাকে 'হমামীন' বলা হয়। আমরা বিশ্বাস করি যে তাঁহার অন্তর সমস্ত পাপ হইতে মুক্ত ছিল। মাত্র দুইবার শয়তান তাঁহাকে পথভ্রষ্ট করিয়াছিল কিন্তু ঐশ্বরিক প্রেরণার সহায়তায় আমাদের "রঙ্গিলা রসুল" সেই অন্ধকার রসাতলের পথ হইতে এক চুলের জন্য নিস্তার পাইয়াছিলেন। তিনি বাস্তবে কোনো অন্যায় কার্য্য করেন নাই (করিবার চিন্তা করিয়াছিলেন মাত্র)। মহম্মদ পূর্ণ ব্রহ্মচারী ছিলেন, তিনি ২৫ বৎসর বয়সকাল পর্যন্ত যৌবনের সকল বাসনা হইতে সুরক্ষিত ছিলেন।


মাতা খাদীজা

আমরা খাদীজাকে মাতা খাদীজা বলিয়াই উল্লেখ করিব, কারণ তিনি যখন মহম্মদের অন্তঃপুরে আসিলেন তখন তাঁহার বয়স ৪০ বৎসর। সত্য কথা বলিতে গেলে মহম্মদই খাদীজার গৃহে গিয়াছিলেন। মহম্মদ ২৫ বৎসরের ছিলেন, দেখিতে-শুনিতে সুন্দর ছিলেন, স্বভাবে সৎ ছিলেন, কেবল সৎ বংশেরই নহে বরং সৎ গৃহেরও সন্তান ছিলেন।
অন্যদিকে খাদীজা বিধবা ছিলেন, কুরেশী অর্থাৎ মহম্মদের স্বগোত্র ছিলেন, তাঁহার দুই পতি ইতিপূর্বেই গত হইয়াছিলেন, তাঁহার সন্তানও ছিল। তবুও মহম্মদ ও তাঁহার মধ্যে সম্পর্কের সূত্র এই ছিল যে তাঁহার নিকট সম্পত্তি ছিল। সওদাগরের দল যখন বিদেশে যাইত তখন তিনিও প্রতিনিধি প্রেরণ করিতেন। প্রভুর আশীর্বাদে ব্যবসায়ে ১০০% হইতে ১৫০% অবধি লাভ থাকিত। সমগ্র মক্কা তাঁহাকে চিনিত। সুন্দর ধনী ব্যক্তিদের নিকট হইতে বিবাহের প্রস্তাবও কম আসিত না। কিন্তু তিনি তাঁহার সম্পত্তি ও অবস্থায় সুখী ছিলেন, অকারণে আর জাগতিক সমস্যা মাথায় লইবার কোনো ইচ্ছা তাঁহার ছিল না।
এক বৎসর তিনি মহম্মদকে প্রতিনিধি করিয়া বণিকদলের সহিত পাঠাইলেন। মহম্মদ সৎ ছিলেন, আশার অতিরিক্ত লাভ করিয়া ফিরিলেন। বাড়ির ছাতে বসিয়া খাদীজা এক সুন্দর সওয়ারকে আসিতে দেখিলেন, তিনি ছিলেন মহম্মদ। মহম্মদ আসিলেন, ব্যবসার হিসাব দিলেন, নিজের প্রাপ্য লইয়া চলিয়া গেলেন। তাঁহার লাজুক নয়ন, পরিমিত বাক্য, স্বাভাবিক সৌন্দর্য্য, ব্যবসায়িক দক্ষতা ও অন্তরের সরলতা বৃদ্ধার মনকে অতি স্বাভাবিকভাবেই প্রভাবিত করিয়া ফেলিল, আর তিনি এই যুবককে জীবনসাথী করিবার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিলেন।
খাদীজা পবিত্র ছিলেন। লোকে তাঁহার সৌন্দর্য্য ও সম্পত্তির পিছনে পড়িয়াছিল। এখন তিনি নিজেই পড়িলেন। এমন কে ছিল যে তাঁহাকে এইভাবে পড়িতে দেখিয়া বিচলিত হইবে না? এমন কে ছিল যে এই অবস্থায় মুখ ফিরাইয়া চলিয়া যাইতে পারে!
খাদীজার পিতা জীবিত ছিলেন। আশঙ্কা ছিল তিনি এই বিবাহে কাঁটা হইবেন। এই সময়ে খাদীজা এক উৎসব করিলেন। তাহাতে নিজে পরিবার এবং মহম্মদের পরিবারকেও নিমন্ত্রন করিলেন। সুরার স্রোত চলিল। খাদীজার পিতাও নিমন্ত্রিত হইয়াছিলেন। তিনি বৃদ্ধকালে অতিরিক্ত পান করিয়া বেসামাল হইয়া পড়িলেন। সকলে এই সুযোগের অপেক্ষাতেই ছিল। সঙ্গে সঙ্গে খাদীজাকে সাজাইয়া বিবাহ দেওয়া হইয়া গেল। জ্ঞান হইবার পর খাদীজার পিতা হতভম্ব হইয়া গেলেন, কিন্তু পক্ষী তখন উড়িয়া গিয়াছে। সমাজের প্রধানেরা যখন মানিয়া লইয়াছেন তখন বৃদ্ধকে নিরব থাকিতে হইল।

"হায়াত মহম্মদী  ম্যোরসাহেব কৃত"

Jupiter Joyprakash

যাহা হউক, মহম্মদ বিবাহ করিলেন। মাতা খাদীজার পতি হইয়া তাঁহার জান-মাল এর অধিকারী ও রক্ষক হইলেন। বাল্যকালেই দরিদ্র হইয়াছিলেন। মাতার মমতা কোনোদিন পান নাই। এখন বিবাহ করিয়া ফেলায় এক সঙ্গে দুই বাসনা পূরণ হইয়া গেল। মহম্মদ যাহা ইচ্ছা বলুন, কিন্তু আমরা তাঁহাকে মাতা খাদীজাই বলিব। তিনি আমাদিগের মাতা এবং আর্য্যশাস্ত্র অনুসারে প্রত্যেক নারীকেই মাতা বলা হইয়াছে।
ইহা মাতা খাদীজার তৃতীয় বিবাহ ছিল। মাতা খাদীজা মহম্মদের ছয়টি সন্তান জন্মদান করেন। তাহাদের মধ্যে দুইটি পুত্র এবং চারটি কন্যা ছিল। বড় পুত্রের নাম ছিল কাশেম, যে মাত্র দুই বৎসর বাঁচিয়াছিল। অন্য পুত্রটি নিতান্ত শিশুকালেই স্বর্গলাভ করে।

সীরাতুল্লাভী মৌলানা শাবলী কৃত

Jupiter Joyprakash

চিকিৎসকেরা বলেন যে একজন মহিলা ৪০ বা ৪৫ বৎসর বয়স পর্যন্ত সন্তানের জন্মদান করিতে পারেন। কিন্তু এত বয়সের সন্তান অধিক দিন জীবিত থাকে না। তাই সন্তানের জন্য বিবাহ করিতে হইলে এমন বয়সের নারীরা বিবাহের অযোগ্য। এই হিসাবে খাদীজা আদৌ বিবাহের যোগ্য ছিলেন না।

মহম্মদ একলা থাকিতেই অধিক ভালবাসিতেন। কল্পনার জগতে থাকিতেই আনন্দ পাইতেন। পাহাড়ে,জঙ্গলে, মাঠে বা মরুভূমিতে কিম্বা গৃহকোনেই একেলা বসিয়া নিজমনে কথাবার্তা কহিতেন। এই পাগলামি হইতেই তাঁহার পয়গম্বর হইবার সূচনা হয়।

রুজি-রুটির ব্যবস্থা না হইলে স্বাধীনতাই থাকে না, পয়গম্বরী ত অনেক দূরের কথা। খাদীজার সহিত বিবাহ ছিল এক দৈবিক প্রেরণা,যাহা হইতেই মহম্মদের সুসময়ের সূত্রপাত।

আরবে পাপ হইত। অতি ভয়ানক সব পাপ হইত, আর মহম্মদের অন্তর সৎ চিন্তায় পূর্ণ ছিল। আরবীয়রা মূর্তিপূজক ছিল আর মহম্মদ উন্মুক্ত প্রান্তরে, অসীম আকাশে অথবা ঘন বনে এক অলৌকিক শক্তির উপলদ্ধি করিয়াছিলেন। তিনি নিশ্চিত হইয়াছিলেন যে পরমাত্মা এক এবং তাঁহার কোনো প্রতিমা নাই।

খাদীজার দাসদের মধ্যে জায়েদ নামক একজন ক্রীশ্চান ছিল। সে মহম্মদকে ক্রীশ্চান ধর্মের উপদেশ শুনাইয়া তাঁহার বিশ্বাস উৎপাদনের চেষ্টা করিত। জায়েদ এর প্রতি মহম্মদের স্নেহ এতই বৃদ্ধি পাইয়াছিল যে তিনি নিজের জন্য তাহাকে খাদীজার নিকট হইতে চাহিয়া লইলেন। খাদীজার আত্মীয়দের মধ্যে বেশ কিছু খ্রীষ্টধর্মে বিশ্বাসী ছিল। তাহারা মহম্মদকে নানাভাবে উৎসাহিত করিবার সব রকমে সাহায্য করিত।

মহম্মদ নিশ্চিত হইয়া গিয়াছিলেন যে জগতের লোকসকল পথভ্রষ্ট হইয়া চলিয়াছে। নিজের এই অবস্থা দেখিয়া তাঁহার কান্না আসিত। তাঁহার অন্তরে গভীর ব্যথা ছিল, যাহা কখনো কখনো আরবী ভাষায় চমৎকার কবিতার রূপে প্রকাশিত হইত। ইহাই কোরানের প্রথম আয়াত। তাহা কোন কারণে কোরানের অন্তিমে লিখিত হইয়াছে তাহা বুঝা যায় না। ইহাতে ব্যথা আছে, তীব্রতা আছে। কেবল যে সত্য আছে তাহা নহে, তীব্র আকাঙ্খা আছে ও বাস্তবের সন্ধান আছে।

Jupiter Joyprakash

#7
মহম্মদের সাহস বৃদ্ধি পাইতেছিল। ধৈর্য্য রাখার কোনো উপায় তিনি দেখিতে পাইতেছিলেন না। এই সময়ে তাঁহার মনে চিন্তা আসিল যে আত্মহত্যা করা উচিত। এই বেদনাময় জীবন রাখিয়া কোনো ফল নাই। এইখানেই খাদীজার বয়সের সুফল পাওয়া গেল। অল্পবয়সী কেহ হইলে মহম্মদকে পাগল মনে করিয়া ত্যাগ করিত। নিজেও ভয় পাইত, অন্যদেরও ভয় দেখাইত। খাদীজা মহম্মদকে শান্ত করিলেন। মহম্মদের ধারণা হইয়াছিল তাঁহার উপর জ্বীনের জাদু পড়িয়াছে। উহা ঐশ্বরিক জ্ঞান নহে বরং শয়তানের মায়া। খাদীজা তাঁহার জ্বীনের পরীক্ষা করাইয়া বুঝাইলেন যে উহারা জ্বীন নহে, দেবদূত। তাহাদের বার্তা বিশ্বাসযোগ্য। এর পর মহম্মদ যখন কহিলেন যে তিনি হয় জগতের পরিবর্তন করিয়া দিবেন অথবা এই প্রাণ আর রাখিবেন না; তখন খাদীজা জগতের পরিবর্তন করাই উচিত বলিয়া বুঝিলেন এবং মহম্মদের এই নূতন ধর্ম, যেটি প্রচার করিতে মহম্মদ ব্যগ্র ছিলেন তাহাতে প্রথম সহায়ক হইলেন।

কসসুলম্বিয়া


অনুবাদকের মন্তব্যঃ
মহম্মদ তবে সুইসাইডের ভয় দেখিয়ে খাদীজাকে ইসলামীকরণ করেছিলেন! কেয়াবাৎ কেয়াবাৎ।

Jupiter Joyprakash


Jupiter Joyprakash

ঐশ্বরিক জ্ঞানলাভকালে মহম্মদের বড়ই কষ্ট হইত। তাঁহার মুখে ফেনা আসিত, সর্বশরীর ঘর্মাক্ত হইয়া উঠিত, এবং বহির্জগতের কোনো জ্ঞান থাকিত না। অনেকেই ধারণা করিয়াছিল ইহা মৃগি রোগের লক্ষ্ণণ। সে সময়ে মহম্মদ অসুস্থ হইয়া পড়িতেন, খাদীজাই তাঁহার সেবা করিতেন। তিনি মহম্মদের উপর কাপড় ঢাকা দিতেন ও জল ছিটাইয়া তাঁহার জ্ঞান উদ্ধার করিতেন।

Jupiter Joyprakash

মহম্মদ তাঁহার পয়গম্বরীর শিশুকাল খাদীজার কোলে কাটাইয়াছিলেন। সে কাহিনী যথেষ্ট দীর্ঘ। হইয়াছিল এই যে মহম্মদ নিজেকে প্রচলিত ধর্ম ও তাহার বিধি-ব্যবস্থা হইতে সম্পূর্ণ পৃথক করিয়া ফেলিয়াছিলেন এবং আপন ভক্তজনের প্রতিও সে সকল ত্যাগ করার উপদেশ প্রদান করিতেছিলেন। ইহাতে সকলে মহম্মদের বিরুদ্ধে চলিয়া যাইতেছিল এবং অনেকেই তাঁহার পরম শত্রু হইয়া উঠিয়াছিল। আরবের প্রথা ছিল ?হত্যার বদলে হত্যা?। সেখানে এক ব্যক্তি কাহাকেও হত্যা করিলে দুই বংশের মধ্যে অনন্ত শত্রুতার সৃষ্টি হইত এবং তাহারা একে অপরকে হত্যা করা ভিন্ন অন্য কোনো পথই দেখিতে পাইত না। তবে মহম্মদের জন্য বাঁচার পথ ছিল। এক তো তাঁহার পক্ষে ছিলেন ছিলেন চাচা আবু তালিব এবং অন্যজন ছিলেন খাদীজা। বালক হইতে বৃদ্ধ, সকলেই এই দুইজনকেই অতিশয় মান্য করিত। মহম্মদ সমস্যায় পড়িয়াছেন, দুঃখ পাইয়াছেন কিন্তু পত্নীভাগ্যে কখনো তাঁহার প্রাণশংসয় হয় নাই। অবশেষে মহম্মদ যখন ৪০ বৎসরের হইলেন তখন খাদীজার দেহাবসান হইল। অন্যদিকে চাচা আবু তালিবও পরলোকে প্রস্থান করিলেন। এইবার মহম্মদ অনাথ হইয়া পড়িলেন। বাধ্য হইয়া দেশত্যাগ করিয়া মদীনায় চলিয়া গেলেন।       খাদীজা যে মহম্মদের জন্য কতখানি গুরুত্বপূর্ণ ছিলেন তাহা পাঠক আশা করি বুঝিয়াছেন। পরে মহম্মদের গৃহ সর্বপ্রকার পত্নীতে ভরিয়া উঠিয়াছিল, তাঁহারা রূপে গুণে অনন্যা ছিলেন। সর্বপ্রকার আনন্দের ব্যবস্থা ছিল। শাসনক্ষমতা ছিল, অপ্রতিহত অধিকার ছিল। তথাপি মহম্মদ খাদীজাকে ভুলিতে পারেন নাই। এমন কি জীবিত আয়েশা অপেক্ষাও মৃতা খাদীজার প্রতি তাঁহার অনুরাগ অধিক ছিল।

Jupiter Joyprakash

২৫ বৎসর বয়স হইতে খাদীজা মহম্মদের রক্ষা করিয়াছেন। যতদিন তিনি মহম্মদের পত্নীরূপে জীবিতা ছিলেন ততদিন মহম্মদের মনে দ্বিতীয় বিবাহের চিন্তাও আসে নাই। আর্য্যশাস্ত্র অনুসারে গৃহস্থাশ্রমের সময়কাল ২৫ বৎসর নির্ধারিত আছে। এই সময়টি মহম্মদ বড়ই পবিত্রতার সহিত অতিবাহিত করিয়াছিলেন তাই আমরা তাঁহাকে আর্য্য গৃহস্থ বলিতে পারি।
খাদীজাকে বিবাহ করার পরিবর্তে মহম্মদ যদি তাঁহার পুত্র হওয়া স্বীকার করিয়া লইতেন তবে তাহা আর্য্যশাস্ত্রসম্মত হইত। এক মুসলমান মৌলানা সাহেব এর সহিত আলোচনাকালে যখন আমরা এই কথা কহিলাম তখন তিনি আশ্চর্য্য হইয়া কহিলেন, "হাঁ, ভাই ও হওয়া যাইত।" আমি জানাইলাম "হাঁ, হিন্দুস্তানে এমন প্রথাও আছে যে কোনো বয়স্কা মহিলার ভাই হইয়া সন্তানবৎ কর্তব্যপালন করা যায়।" সেক্ষেত্রে আমরা তাঁহাকে ভগ্নী খাদীজা বলিতে পারিতাম। তথাপি জ্ঞান, বুদ্ধি, বয়স ও অভিজ্ঞতায় তিনি মাতা খাদীজাই ছিলেন।

Jupiter Joyprakash

পুত্রী আয়েশাঃ

খাদীজার দেহত্যাগের পর তিন মাসও অতিক্রান্ত হয় নাই, মহম্মদ অনুভব করিলেন যে এ জগতে পত্নী অপেক্ষা প্রিয় আর কিছুই নাই। সমস্যা বৃদ্ধি পাইতেছিল, গৃহে কোনো আনন্দ ছিল না। মহম্মদ দ্বিতীয় পত্নীর সন্ধান আরম্ভ করিলেন। মাতা সুদা সুকরাণ এর পত্নী ছিলেন তাঁহারা স্বামী-স্ত্রী মুসলমান হইয়াছিলেন এবং এই অপরাধের জন্য ভালরকম শাস্তিও পাইয়াছিলেন। আরব নিবাসীদের জ্বালায় তাঁহাদিগকে আপন দেশ মালুফ কে বিদায় জানাইয়া বিদেশে বাস করিতে হইত। মহম্মদ যখন বিধর্মীদের সহিত সন্ধি করিয়া লইলেন ও তাহাদের মূর্তিগুলিকে মানিয়া লইলেন (আবার পরে সেই সন্ধি হইতে সমস্যা দেখিয়া প্রথমবামের কথাগুলিকে শয়তানের বার্তা বলিয়া বাতিল করিয়াছিলেন) তখন অন্য সব বিতাড়িতদের সহিত সুকরাণ ও সুদাও ফিরিয়া আসিলেন। ফিরিবার পরেই সুকরাণ এর মৃত্যু হইল। সুদা বিধবা হইলেন। তিনি সত্যের জন্য দেশত্যাগী হইয়া এত কষ্ট ভোগ করিয়াছেন তাঁহার সততার আর কি প্রমাণ প্রয়োজন! একদিকে আপন পতির প্রতি বিস্বস্ত, অন্যদিকে ধর্মের জন্য প্রাণত্যাগে প্রস্তুত, এমন পত্নী লাভ করা মহম্মদের পক্ষে যথেষ্টই কঠিন ছিল। বিধাতার আশীর্বাদে তিনি বিবাহ করিয়া লইলেন। বৃদ্ধের পক্ষে বিধবা বিবাহ করার মধ্যে সমস্যার কিছুই ছিল না। একে অন্যের প্রেমের সম্মান করিতে পারিতেন। খাদীজার স্থান আর কে লইতে পারিত! কেবল সুদাই একমাত্র আশা ছিলেন, তাহাও পুরণ হইল। গৃহ আর শুন্য রহিল না।

Jupiter Joyprakash

আমরা উপরেই বলিয়া আসিয়াছি যে মহম্মদ ২৫ বৎসর একই পত্নীর সহিত অতিবাহিত করিয়াছিলেন, তাহাও আবার দুইবারের বিধবা। বিবাহকালে তিনি ছিলেন ৪০ বৎসরের। মৃত্যুকালে বয়স ছিল ৬৫। এই বুড়ীর সহিত যে যুবা মহম্মদ টিকিয়া ছিলেন ইহাই মহম্মদের পবিত্রতার সাক্ষ্য দেয়। অন্য সকল পুরুষকে পুণ্যের পথে উৎসাহিত করে, সমস্যায় সমাধান দেয়, বিপদে ধৈর্য বৃদ্ধি করে, হৃদয় প্রশস্ত করে, আত্মার শক্তি বৃদ্ধি করে। এখনও জগতে অনেক মানুষ আছে যাহারা নারীর সৌন্দর্যের চিত্র গ্রহণ করিয়া তাহাকে পূজনীয় দেবী বানাইয়া রাখে। পবিত্রতার মূর্তি বানাইয়া কল্পনার আকাশে উড়িয়া বেড়ায়। এই কল্পনার প্রেম তাহাদের হৃদয়ে অবোধ্য রহস্যের সৃষ্টি করে।
মহম্মদ সুন্দর স্বাস্থ্যের অধিকারী ছিলেন। কিন্তু খাদীজার ক্ষেত্রে বলিতে হয় শালী বুড়ী বয়সে বিবাহ করিয়া (মহম্মদকে) কচি মেয়ের সুখ পাইতে দিল না। ইহাতে আর এক সুফল ফলিয়াছিল। জগতের সকল নারীর চিন্তা দূর হইয়া গিয়াছিল, স্বর্গের হূর পরীর কল্পনা আসিয়া সেই স্থান পূরণ করিত। পরে মহম্মদের যখন ধারাবাহিক বিবাহ হইতে লাগিল তখন আর হূর পরীর সৌন্দর্য্য বর্ণনার মধ্যে সেই তীব্র উষ্ণতা দেখা যায় না, যাহা খাদীজার জীবিতকালে থাকিয়া থাকিয়া কোরানের আয়াতে পরিষ্ফুট হইত, সৌন্দর্য বর্ণনায় প্রধান স্থান লইত। অর্থাৎ বাহ্যিক দেহবর্ণনায় যাহা নিহিত আছে, এই প্রকার গৌরবর্ণ কুমারী বালিকা, প্রশস্ত নয়ন, উন্নত বক্ষ, ইত্যাদি।

Jupiter Joyprakash

বাস্তবিক; নারীর প্রকৃত সদগুণ তাহার কুমারীত্ব। মহম্মদ কুমারীও বিবাহ করিয়াছিলেন। তাঁহার নাম আয়েশা। তিনি ছিলেন হজরত আবু-বকর এর কন্যা। আবু-বকর ও মহম্মদ বাল্যসখা ছিলেন। তাঁহাদের বয়সও ছিল প্রায় সমান; মাত্র দুই বৎসরের পার্থক্য ছিল।  মহম্মদ আবু বকর অপেক্ষা দুই বৎসরের বড় ছিলেন। আবু বকর অতি শীঘ্রই মহম্মদের প্রতি প্রশ্নহীন বিশ্বাস স্থাপন করিয়াছিলেন। আয়েশা তাঁহার প্রাণপ্রিয় ছিল। সেই সময়ে আয়েশার বয়স ৬ কি ৭ বৎসর ছিল।।