আল্লার বাপ।

Started by Jupiter Joyprakash, May 03, 2013, 06:37:10 PM

Previous topic - Next topic

0 Members and 1 Guest are viewing this topic.

Jupiter Joyprakash

 
আল্লার বাপ।
        উড়ন্ত ঘোড়ার আবিষ্কারক ডঃ আবুল দিওয়ানার বাপের একটা নাম ছিল বটে। কিন্তু আবুল মহাশয় যেইদিন বিশ্ববিখ্যাত হইলেন সেদিনের পরে তিনি আবুলের বাপ নামেই সর্বত্র পরিচিত। এর আগেও অবশ্য অনেকে তাঁহাকে এই নামে ডাকিতেন। কিন্তু তাহাতে তাঁহার মনে সুখ ছিল না। কারণ তিনি নিজে সুপুত্র আবুলকে হারামজাদা বলিয়া ডাকিতেন।

যাহাই হউক সবে বরাত এর পবিত্র রজনীতে আবুলের বাপের সহসা মনে হইল আল্লা তাঁহার গদিচেয়ারে তাকিয়া ঠেসান দিয়া বসিয়া আছেন। অবশ্যই তিনি উহা চক্ষে দেখেন নাই। কিন্তু তিনি একজন বিশ্বাসী, গায়েবে তাঁহার অবিশ্বাস নাই। অতিশয় সংবেদনশীল অনুভূতির দ্বারা তিনি সহজেই বুঝিলেন যে সেই তাকিয়া ঠেসান দেওয়া ব্যক্তিটি স্বয়ং আল্লাহ।
অনেকে হয়ত মনে করিবেন যে আল্লার আর কাজকাম নাই! তিনি আবুলের বাপের কাছে আসিয়া বসিবেন। এক সাল আগে হইলে আবুলের বাপও এমন কথায় বিশ্বাস করিতেন না। কিন্তু এখন তিনি বিশ্ববিখ্যাত আবুলের বাপ। তাই এমন লোকের কাছে আল্লা আসিতেই পারেন।

যাহা হউক আবুলের বাপ বিশ্বাসী মানুষ হইলেও তিনি বিজ্ঞানী আবুলের বাপও বটেন। তাই আল্লার আগমণের কথা বলিলে যে অনেকে প্রমাণ চাহিবে তাহা তিনি পুত্রের কারবার দেখিয়া ভালই জানিতেন। কিন্তু বৈজ্ঞানিক প্রমাণ কেমনে সংগ্রহ করে তাহা তিনি ভাল জানিতেন না। তাই তিনি সোজা পুত্রকে ফোন দিলেন।

ডঃ আবুল তখন বসিয়া ঠাকুরমার ঝুলির রূপকথা পড়িতেছিলেন। পড়িতে পড়িতে চিন্তা করিতেছিলেন ঘুমন্তপুরীর রাজকন্যাকে কোথায় গেলে আবিষ্কার করা যায়। এমন সময়ে বাপের ফোন আসিল।

বাপ- ব্যাটা আবুল, কোথায় আছি রে এখন? তোর কাছে বুদ্ধি চাই।
আবুল সমস্ত শুনিয়া তখনি অন্য ফোনে হেলিকপ্টার অর্ডার করিয়া আনাইলেন। একদল বিশেষজ্ঞ সমেত হেলিকপ্টারে চলিতে চলিতে বাপকে কহিলেন
আবুল- উনি চেয়ারে বসে আছেন তো। তা ওনাকে কি খোঁচা দেওয়া যায়?
আবুলের বাপ- না বেটা! হাত নাড়িয়ে দেখলাম, হাওয়ার মতনই লাগে।
আবুল- ছবি তোলা যায়?
আবুলের বাপ- না বেটা, মোবাইলে তুলে দেখলাম। কেবল চেয়ার দেখা যায়।
আবুল- উনি বসার ফলে কি চেয়ারের ওজন বেড়েছে?
আবুলের বাপ- নাঃ চেয়ারটা তুলে দেখলাম। একেবারে যেমন ছিল তেমনই।

আবুল- তার মানে ওনার শরীর কোনো বস্তু দিয়ে তৈরী নয়। আচ্ছা উনি কি নিঃশ্বাস ফেলেন?
আবুলের বাপ- মোটেই না। নাকের কাছে হাত দিয়েও কোনো বাতাস লাগে না।

এইসব আলোচনা করিতে করিতেই ডঃ আবুলের হেলিকপ্টার বাড়ি আসিয়া নামিল। সকলে সেই চেয়ারের কাছে আসিয়া পরীক্ষা শুরু করিলেন।

প্রথমেই ইনফ্রারেড হইতে এক্সরে পর্যন্ত ক্যামেরা দিয়া দেখা হইল। কোনোভাবেই কিছু দেখা গেল না।

চেয়ারটিকে অতি উন্নত যন্ত্রে ওজন করিয়া দেখা হইল। লোকটির কোনো ওজন পাওয়া গেল না।

এবারে চেয়ারটিকে পলিথিনের চাদরে ঢাকিয়া দিয়া ভিতরে বায়ু পরিমাপ যন্ত্র লাগানো হইল। তাহাতে বাতাসের কোনো পরিবর্তন দেখা গেল না। অর্থাৎ শ্বাসক্রিয়াও নাই।


চেয়ারের লোকটি যে অতিশয় অলৌকিক তাহা নিশ্চিত হইবার পরে তাহাকে প্রশ্ন করা শুরু হইল। অবশ্য অন্য কেহ তাহা পারেন নাই। আবুলের বাপই একমাত্র উহাকে অনুভব করিতে পারিতেছিলেন। তাই তিনিই দোভাষীর কাজ করিলেন।


প্রশ্ন- আপনি কে মহাশয়? আপনি কি আল্লার ফেরেস্তা? নাকি আল্লা স্বয়ং?
ব্যক্তি- আমি হলাম আল্লার বাপ।
প্রশ্ন- তা কিভাবে সম্ভব? আল্লার বাপ থাকে কিভাবে?
আল্লার বাপ- যেভাবে তোমাদের বাপ থাকে সেইভাবে আল্লারও বাপ থাকে। তোমরা কিভাবে জানলে যে আল্লার বাপ থাকতে পারে না?
প্রশ্ন- আল্লা তো নিজেই বলেছেন তেনার কোনো বাপ নাই। তাইলে আপনি কোথা থেকে এলেন?
আল্লার বাপ- আচ্ছা! তুমি কি আল্লাকে দেখেছ? তিনি যে তোমাকে সৃষ্টি করেছেন সেটা তুমি জানলে কিভাবে?
আবুল- সেটা তো আল্লাই বলেছেন যে তিনিই সব সৃষ্টি করেছেন আল্লার বাপ- তাইলে দেখলে তো। যে বানিয়েছে সেইই বলতে পারে। তোমাকে যে আল্লায় বানিয়েছে সেটা তোমার জানার কথা না। সেটা আল্লায় জানে। তেমনি আমি আল্লাকে বানিয়েছি সেটা আল্লার জানার কথা না, সেটা আমি জানি। ভগবান, গড, আল্লা তিনটাকেই আমি বানিয়েছি। কিন্তু তারা এতটাই বেয়াড়া নাস্তিক হয়ে গেছে যে যেখানে সেখানে বলে বেড়ায় যে তারা নিজে নিজেই হয়েছে। ঠিক তোমাদের পৃথিবীর নাস্তিকগুলার মতন।