Main Menu

Islam-er-tin-siddhanto

Started by DarkHorus, March 17, 2014, 04:27:47 PM

Previous topic - Next topic

0 Members and 1 Guest are viewing this topic.

DarkHorus

ইসলামের তিন সিদ্ধান্ত (Three Decrees of Islam)
লেখকঃ ডঃ রাধেশ্যাম ব্রহ্মচারী।
(অধ্যাপক- ফলিত পদার্থবিদ্যা, কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়।)

DarkHorus

ডার্ক হোরাস এর নিবেদনঃ

বইখানিতে যদিও ইসলামের দোষ ধরার ফাঁকে ফাঁকে হিন্দুধর্মের দোষ ঢাকার চেষ্টা হয়েছে তবুও ইসলাম সম্পর্কে যেটুকু বলা আছে তা সঠিক। হয়তো আল্লার মুমিন বান্দাদের এই বইয়ের কথা বিশ্বাস না হতেও পারে। সেক্ষেত্রে আশা করব তাঁরা তাঁদের নিজের ধর্মগ্রন্থের মধ্যে একবার ভাল করে ডুব দিয়ে সবকিছু যাচাই করে নেবেন। কোনো পাঠক যদি বইটি পড়ার পর এইটুকু কৌতুহল অনুভব করেন তবে আমার পরিশ্রম সার্থক।

এই বইটিকে স্ক্যান করে পিডিএফ বানিয়ে দিলেও হয়ত চলত, কিন্তু তাতে ইচ্ছামত রেফারেন্স দেওয়ার সুবিধা হত না। তাই অনেক বেশি সময় দিয়ে পুরোটা টাইপ করে ইউনিকোডে পরিণত করেছি। আশা রাখি এতে অনেকের পরিশ্রম ও সময় বেঁচে যাবে। যদি কেউ বইটিকে পিডিএফ আকারে পড়তে চান তবে এখান থেকেই ডাউনলোড করতে পারেন।

-- ডার্ক হোরাস--

DarkHorus

#2


DarkHorus

Page - 1





ভূমিকা
গত ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর আমেরিকার বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্রে জঙ্গী আক্রমণ, তৎপরবর্তী আফগানিস্তানের ও ইরাকের ঘটনাবলী দিল্লির সংসদ ভবনে ও কলকাতার আমেরিকান সেন্টারে ইসলামী জঙ্গী হানা এবং গোধরায় ৫৯ জন করসেবকদের জীবন্ত পুড়িয়ে মারার ঘটনা এই দেশের মানুষের মধ্যে ইসলাম সম্পর্কে কৌতূহল বেশ বাড়িয়ে তুলেছে। তাঁরা ইসলাম সম্পর্কে জানতে অনেক বেশি আগ্রহী হয়েছেন। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, তাঁদের এই আগ্রহের সুযোগ নিয়ে কিছু কিছু হিন্দু দুর্বুদ্ধিজীবী এবং সেকুলারবাদী রাজনীতিক তাদের লেখার মধ্য দিয়ে ইসলাম সম্পর্কে এক ভ্রান্ত ধারণা পরিবেশন করতে খুবই সচেষ্ট হয়ে উঠেছেন।এই সব ব্যক্তিরা প্রচার চালাচ্ছেন যে, ইসলামের অর্থ হল শান্তি এবং সন্ত্রাসবাদ বা সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে ইসলামের কোন সম্পর্কই নেই। ইসলাম খুবই নিরীহ এবং ইসলামের নীতিকে অমান্য করেই সন্ত্রাসবাদীরা তাদের নাশকতামূলক কাজকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে, কারণ কোরান ও হাদিসের কোথাও সন্ত্রাসবাদের কথা নেই। তাঁরা বলেছেন, কোরান-হাদিসের বাণী খুবই মানবতাবাদী, অথবা কোন ধর্মই সন্ত্রাসের কথা বলে না, অথবা মুসলমানদের মধ্যেও অনেক ভাল মুসলমান আছেন, যাঁরা সন্ত্রাসবাদ বা রক্তপাতে বিশ্বাস করেন না ইত্যাদি ইত্যাদি। ইসলাম সম্পর্কে পাহাড় প্রমাণ অজ্ঞতা অথবা উচ্ছিষ্টের লোভে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবেই যে তাঁরা এসব ডাহা মিথ্যা কথা লিখে চলেছেন, তা বলাই বাহুল্য।

মিল্লাৎ ও কুফর
কোরান হল ইসলামের মূল প্রামাণ্য গ্রন্থ। তা ছাড়া আছে হাদিস, যার মধ্যে বুখারী ও মুসলীম-এর হাদিস হল শ্রেষ্ঠ। এইসব গ্রন্থে যেসব কথাবার্তা লেখা আছে তা থেকে বেরিয়ে আসে তিনটি মূল ইসলামী সিদ্ধাম্ভ। এগুলো হল
১  মিল্লাৎ ও কুফর।
২ দার-উল ইসলাম ও দার-উল-হার্ব এবং
৩ জিহাদ।

প্রথম সিদ্ধান্ত 'মিল্লাৎ ও কুফর' -এর মিল্লাৎ বলতে বোঝায় সৌভাতৃত্ব, বা ভাইচারা। কিন্তু সঙ্কীর্ণ ইসলামী অর্থে শুধু মুসলমানে মুসলমানে ভাইচারা। অর্থাৎ মিল্লাৎ শব্দের মূল অর্থ হল, 'এই পৃথিবীর সব মুসলমান ভাই ভাই' বা 'কুল্ল মুসলেমীন ইখুয়াতুন'। মৃত্যুর ঠিক আগের বছর নবী মহম্মদ মক্কায় হজ করতে গিয়ে আরাফৎ (মিলন)- এর ময়দানে যে বিদায় ভাষণ (Farewell address) দেন, তাতে তিনি মুসলমানদের তিনটি উপদেশ দেন। এই উপদেশ তিনটির মধ্যে সর্বপ্রধান উপদেশই ছিল 'কুল্ল মুসলেমীন ইখুয়াতুন'। এই উপদেশ থেকেই আজকের বিশ্বব্যাপী মুসলিম ভ্রাতৃত্ব বা 'ইসলামী উন্মা'র জন্ম হয়।

কুফর শব্দের অর্থ বিরোধিতা করা বা অবিশ্বাস করা এবং যারা এই বিরোধিতা করে তাদের বলা হয় কাফের। এখানে বিরোধিতা বলতে ইসলামের বিরোধিতা বোঝায়। বিশেষ করে আল্লার কোরান ও আল্লার রসুল মহম্মদের বিরোধিতা। অর্থাৎ যে সমস্ত ব্যক্তি আল্লার কোরান ও মহম্মদের নবীত্বে অবিশ্বাস করে তারাই কুফরকারী কাফের। ইসলামের মোট ছটা কলেমা বা সঙ্কল্পবাক্য আছে। যার মধ্যে প্রথম কলেমা বা কলেমা তৈয়ব-কে বলা হয় ইসলামের প্রাণ। এই কলেমা তৈয়ব হল, 'লা ইলাহা ইল্লাল্লা, মহম্মদুর রসুলুল্লা'। অর্থাৎ আল্লা ব্যতীত উপাস্য নাই এবং মহম্মদ আল্লার রসুল বা বার্তাবাহক বা পয়গম্বর। ইসলামে এই কলেমার এতই গুরুত্ব যে বলা চলে, এই কলেমা তৈয়বে যারা বিশ্বাস করে না, তারাই কাফের। অত্যন্ত গোঁড়া কোন মুসলমানও যদি এই কলেমায় বিন্দুমাত্র অবিশ্বাস করে তবে সেও তৎক্ষণাৎ কাফের হয়ে যাবে।

এখানে বলে রাখা যুক্তিযুক্ত হবে যে, ইসলাম শব্দের অর্থ শান্তি নয় ইসলাম শব্দের প্রকৃত অর্থ হল আত্মসমর্পন। বিশেষ অর্থে আল্লার কোরান ও আল্লার রসুল মহম্মদের কাছে আত্মসমর্পন। যে সমস্ত ব্যক্তি আল্লার কোরান ও নবী মহম্মদের কাছে আত্মসমর্পণ করে এবং কলেমায় বিশ্বাস করে,

DarkHorus

Page - 2





তারাই হল আত্মসমর্পণকারী ইমানদার মুসলমান বা মোমেন। যারা তা করে না তারাই হল কাফের।
বর্তমানে অনেক মুসলমান লেখক এই ব্যাখ্যা দিয়ে চলেছেন যে, কাফের বলতে বোঝায় ঈশ্বরে অবিশ্বাসী বা নাস্তিক ব্যক্তি। এই ব্যাখ্যা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং হিন্দু কাফেরদের বিভ্রান্ত করতেই তাঁরা যে এই ব্যখ্যা উপস্থিত করেছেন তা বলাই বাহুল্য। এই ব্যাখ্যা সত্য হলে মুসলমান আক্রমণকারীরা এই দেশে এসে কোটি কোটি হিন্দু কেটে রক্তগঙ্গা বইয়ে দিত না। কারণ এই সমস্ত হিন্দুরা সকলেই ছিলেন ঈশ্বরে বিশ্বাসী। তাঁদের দোষ ছিল যে তাঁরা আল্লার কোরানে বা মহম্মদের নবীত্বে বিশ্বাস করতেন না। তাই তাঁরা কাফের বলে বিবেচিত হয়েছিলেন এবং সেই কারণেই তাঁদের হত্যা করা হয়েছিল। ওই একই কারণে,আজ বাংলাদেশের হিন্দুরা কাফের বা মালাউন বলে চিহ্নিত হচ্ছেন এবং অত্যাচারিত হচ্ছেন। তাঁদর নির্মমভাবে হত্যা করা হচ্ছে। ধ্বনি তোলা হচ্ছে, "একটা দুইটা হিন্দু ধর, সকাল বিকাল নাস্তা কর"। কাফের শব্দের অর্থ যদি নিরীশ্বরবাদী নাস্তিক হত তবে মুসলমানদের উচিত ছিল সবার আগে কমিউনিস্টদের কেটে উজার করা। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে পচিমবঙ্গের কমিউনিস্টদের সঙ্গেই তাদের খাতির সব থেকে বেশি।

উপরিউক্ত আলোচনা থেকে এটাই পরিষ্কার হচ্ছে যে, ইসলাম এই বিশ্বের মানব সমাজকে সরাসরি দুই ভাগে ভাগ করে -  ১  মুসলমান এবং  ২ অমুসলমান কাফের। আল্লার দৃষ্টিতে এই কাফেররা অত্যন্ত ঘৃণিত জীব ও ঈশ্বরহীণ পশু। তাই কোরান বলছে- 'আমি অবশ্যই নরকের জন্য বহু জাতির মানব সৃষ্টি করেছি তাদের হৃদয় আছে, কিন্তু তারা উপলব্ধি করে না। তাদের চক্ষু আছে কিন্তু দেখে না তাদের কর্ণ আছে কিন্তু শোনে না। ওরা পশুর ন্যায় এবং তা অপেক্ষাও অধিক মূঢ়', সুরা-৭ আয়াত- ১৭৯।
"যে কেহ ইসলাম ব্যতীত অন্য মতের অনুসরণ করলে তা কখনও গৃহীত হবে না, এবং পরলোকে সে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে" ৩/৮৫।
আমি অচিরেই অবিশ্বাসীদের অন্তরে ভীতি সঞ্চার করছি। অতএব তাদের গর্দানে আঘাত করে মস্তক ছিন্ন কর এবং তাদের অঙ্গুলী সমূহ ছিন্ন কর। ইহা এই জন্য যে তারা আল্লার রসুলের বিরোধিতা করেছিল এবং যে আল্লা ও তাঁর রসুলের বিরোধিতা করে, তবে আল্লা নিশ্চই কঠোর শাস্তিদাতা' ৮/১২-১৩।

"যারা অবিশ্বাস করেছে, আমি তাদেরকে ইহকাল ও পরকালের কঠোর শান্তি দান করব। আর যারা বিশ্বাস করেছে এবং সৎ কাজ করেছে, তাদেরকে পূর্ণ পুরস্কার দেওয়া হবে" ৩/৫৬-৫৭।
পরলোকে তাদের (কাফেরদের‌) কোন অংশ নাই, এবং আল্লা তাদের সঙ্গে কথা বলবেন না এবং উত্থান দিবসে বা শেষ বিচারের দিন তাদের প্রতি দৃষ্টি দিবেন না। এবং তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি আছে। ৩/৭৭ । কোরাণঃ ডঃ ওসমান গনি-র বঙ্গানুবাদ।

আল্লা তাঁর শরিক করার অপরাধ শির্ক ক্ষমা করেন না, ইহা ব্যতীত যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন এবং যে কেহ আল্লার শরিক করে, সে মহা অপরাধী 'মুশরিক' ৪/৪৮।

"যারা অবিশ্বাস করেছে, আমি সত্তর তাদের অন্তরসমূহে ভীতির সঞ্চার করব যেহেতু তারা আল্লার সাথে অংশী স্থির করেছে, নরক তাদের বাসস্থান এবং অবশ্যই তা নিকৃষ্ট বাসস্থান" ৩/১৫১ ।।

"তোমাদের (অবিশ্বাসীদের‌) ও আমাদের (বিশ্বাসীদের‌) মধ্যে চির শক্রতা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি হবে, যদি তোমরা এক আল্লাতে বিশ্বাস স্থাপন না কর" ৬০/৪।

"আল্লার কাছে অবিশ্বাসকারীরাই নিকৃষ্ট জীব, কারণ তারা (কোরান) অবিশ্বাস করে" ৮/৫৫।

"ওরা (কাফেররা) আল্লার পরিবর্তে এমন কিছুর উপাসনা করে যা ওদের উপকারও করতে পারে না, অপকারও করতে পারে না। অবিশ্বাসীরা স্বীয় প্রতিপালকের বিরোধী" ২৫/৫৫।

"মহম্মদ আল্লার রসুল। তার অনুগামীগণ অবিশ্বাসীদের প্রতি কঠোর এবং নিজেদের মধ্যে পরস্পরের প্রতিসহানুভূতিশীল" ৪৮/২৯।

"আমাদের মধ্যে কতক আত্মসমর্পণকারী মুসলমান, কতক অবাধ্যচারী কাফের । যারা আত্মসমর্পণ করে

DarkHorus

Page - 3




তারা সুচিন্তিতভাবেই সৎ পথ বেছে নেয়। অপর পক্ষে অবাধ্যচারীরা তো নরকের ইন্ধন" ৭২/১৪-১৫।
"তোমাদের পিতা ও ভ্রাতা যদি বিশ্বাস অপেক্ষা অবিশ্বাসকে শ্রেয় জ্ঞান করে, তবে তাদের অভিভাবকরদ্ধপে গ্রহণ করো না" ৯/২৩। অর্থাৎ একজন মুসলমানের কাছে কাফের আত্মীয়রাও ঘৃণার পাত্র। উপরন্তু তারা আল্লার শত্রু, ইসলামের শত্রু, নবী মহম্মদের শত্রু। তাই তারা নির্মমভাবে বধযোগ্য। সেই কারণে আল্লার বান্দা মুসলমানরা এই ঘৃণিত কাফেরদের ওপর অত্যাচার করলে, তাদের সহায় সম্বল লুঠ করলে তাদের জমি জায়গা দখল করলে এবং কাফের মহিলাদের বলাৎকার করলে আল্লা খুশী হন এবং অত্যাচারকারী ওই সব মুসলমানকে তিনি নানাভাবে পুরস্কৃত করেন।
অপরদিকে কোরানে অবিশ্বাস করার অপরাধে কাফেররা সকলেই নরকের আণ্ডনে নিক্ষিপ্ত হবে  - ৩/৮৫ । সেখানে আল্লা তাদের অনন্তকাল ধরে আণ্ডনে ঝলসাবেন এবং প্রত্যেকবার ঝলসাবার পর আল্লা আবার নতুন চামড়ার সৃষ্টি করবেন, যাতে তারা অনন্তকাল ধরে শাস্তি পেতে পারে - ৪/৫৬। বুঝতে অসুবিধা হয় না যে আল্লা কত বুদ্ধিমান। চামড়া একবার পুড়ে গেলে দ্বিতীয়বার পোড়াবার সময় যন্ত্রনা তত বেশি হবে না, তাই এই ব্যবস্থা।

আল্লার দৃষ্টিতে এই কাফেররা এতই ঘৃণিত যে, আল্লা তাঁর নিজের লোকেদের বা মুসলমানদের এই ঘৃণিত কাফেরদের ওপর এবং তাদের মহিলাদের ওপর যেন কোন ধরণের নারকীয় অত্যাচার করার অধিকার দিয়ে রেখেছেন। লুটপাট করে তাদের সহায়- সম্বল, ধন সম্পদ, জায়গা-জমি আত্মসাৎ করার অধিকার দিয়ে রেখেছেন। যে সব বান্দা কাফেরদের ওপর অত্যাচার করবে, কেয়ামৎ বা শেষ বিচারের দিন আল্লা তাদের চরমভাবে পুরস্কৃত করবেন। যে সব মুসলমান কমপক্ষে একজন কাফেরও হত্যা করবে, তারা হবে গাজী। আল্লার স্বর্গে এই গাজীরা হবে সম্মানীয় অতিথি। আল্লা সসম্মানে সেই খুনীদের জান্নাৎ-ই-ফেরদৌস বা সর্বোচ্চ স্বর্গে নিয়ে যাবেন এবং সেখানে অনন্তকাল থাকার ব্যবস্থা করবেন।

যেসব বাক্তি আল্লার কোরান ও মহম্মদের নবীত্বে বিশ্বাস করে মহম্মদের সত্য ধর্ম গ্রহণ করবে, শেষ বিচারের দিন আল্লা তাদের নানাভাবে পুরস্কৃত করবেন। শুধু মাত্র 'লা ইলাহা ইল্লাল্লা' কলেমা গ্রহণ করার জন্য আল্লা তাদের পাহাড়প্রমাণ পাপ ক্ষমা করে দেবেন এবং অত্যন্ত অধঃপতিত ও পাপাসক্ত মুসলমানও আল্লার জান্নাতে (স্বর্গ) প্রবেশ করবে। অবশ্য শুধু পুরুষ মুসলমানরাই এই সুযোগ পাবে এবং মুসলমান মহিলারা সকলেই নরকের আগুণে- নিক্ষিপ্ত হবে।

সেই আল্লার জান্নাতে মুসলমানরা নানারকম স্বর্গীয় খাবার ও স্বর্গীয় ফলমূল খাবে। দুধের নহর (খাল) থেকে দুধ, মধুর নহর থেকে মধু ও সুরার নহর থেকে স্বর্গীয় সুরা খাবে। সেখানে তারা যা খাবে সবই হজম হয়ে যাবে। তাই মলমূত্র ত্যাগের প্রয়োজন হবে না। সব স্বর্গবাসী মুসলমানের বয়স ৩২ বছর পর্যন্ত বাড়বে, তারপর আর বয়স বাড়বে না। সেখানে প্রতিটি স্বর্গবাসী মুসলমান হাজার হাজার অপূর্বসুন্দরী স্বর্গীয় রমণী বা হুরী পাবে, যারা সব সময় কুমারী থাকবে। তাদের বয়স ১৬ বছরের বেশি হবে না। একটি হাদিস বলেছে, অত্যন্ত পাপাসক্ত, লম্পট ও পতিত একজন মুসলমানও আল্লার জান্নাতে বিশাল এক জমিদারী পাবে। সেখানে থাকবে ৭০টি প্রাসাদ, প্রত্যেক প্রাসাদে থাকবে ৭০টা মহল, প্রত্যেক মহলে থাকবে ৭০টা ঘর, প্রত্যেক ঘরে থাকবে ৭০টা আরাম কেদারা আর প্রত্যেক আরাম কেদারায় বসে থাকবে এক জন হুরী। আল্লা প্রতিটি স্বর্গবাসী মুসলমানকে অঢেল যৌনক্ষমতা দেবেন, যাতে তারা সব হুরীদের সঙ্গে যৌনক্রিয়া করতে পারে। একজন হুরীর সঙ্গে যৌনক্রিয়া শুরু করলে তা ৪০ বছর স্থায়ী হবে। এছাড়া সমকাম করার জন্য প্রতিটি মুসলমান পাবে অন্ততপক্ষে ৮০,০০০ স্বর্গীয় কিশোর ক্রীতদাস বা গেলেমান। যাদের বয়স ১৬ বছরের বেশি বাড়বে না। স্বর্গে এতসব সুবিধা পেয়ে মুসলমানরা যার পর নাই আনন্দিত হবে এবং আল্লা কোন

DarkHorus

Page - 4




কাফেরকে সেখানে প্রবেশ করতে না দেবার জন্য তারা আল্লার প্রশংসা করবে। বুঝতে অসুবিধা হবার কথা নয় যে, পার্থিব পতিতালয় ও আল্লার জান্নাতের মধ্যে সামান্যই তফাৎ আছে। পার্থিব পতিতালয়ে পয়সা লাগে কিন্তু আল্লার পতিতালয়ে কোন পয়সা লাগে না। (আরও বিশদ বিবরণের জন্য বর্তমান লেখকের 'ইসলামী ধর্মতত্তঃ এবার ঘরে ফেরার পালা গ্রন্থের জান্নাৎ বা স্বর্গ' অধ্যায় দ্রষ্টব্য।)
কাজেই বুঝতে অসুবিধা হবার কথা নয় যে ইসলাম হল চুড়ান্ত সাম্প্রদায়িক, চরম এক ঘৃণার তত্ত্ব। একমাত্র মুসলমানরাই আল্লার প্রিয়পাত্র আর অমুসলমানরা তাঁর দৃষ্টিতে পশুর সমান, ঘৃণ্য এক জন্তু বিশেষ। সেই সঙ্গে সঙ্গে আল্লা তাঁর বান্দাদের উপদেশ দিচ্ছেন তারাও যেন কাফেরদের প্রতি সমান ঘৃণা পোষণ করে। আল্লা বলেছেন তিনি কাফেরদের মনে ভীতির সঞ্চার করবেন, তাই তার বান্দারা আত্মীয় স্বজনের সামনে কাফেরদের কেটে কুচি কুচি করে। কাফের রমণীদের তার স্বামী পুত্রদের সামনে বলাৎকার করে, কাফের শিশুরদের আছাড় দিয়ে মারে, আরও কত কি।মদিনার ইহুদীদের মনে ত্রাসের সঞ্চার করার জন্য নবী মহম্মদ প্রথমে ভয় দেখিয়ে নজির ও কানুইকা গোত্রের ইহুদীদের মদিনা থেকে বিতাড়িত করলেন এবং ৬২৭ সালে কুরাইজা গোত্রের ইহুদীদের গণহত্যা করলেন। আগের দিন কুরাইজাদের ৮০০ সক্ষম পুরুষকে দিয়ে মদিনার বাজারে ৮০০ মানুষ মাটি চাপা দেবার মত বিশাল এক গর্ত খোড়া হল এবং রাত্রে একটা গুদাম ঘরে সেই ৮০০ ইহুদীকে বন্দী করে রাখা হল। পরদিন ভোরে ফজর-এর নামাজের পরেই শুরু হল কোতল পর্ব। ৫/৬ জন বন্দীকে ডেকে আনা হতে লাগল এবং গর্তের কিনারায় তাদের উপুড় হয়ে শুয়ে পড়তে বলা হল। এবং নবীর চাচা হামজা এবং চাচাত ভাই তালহা, যুবায়ের এবং আলি তাদের গলা কেটে কেটে গর্তে ফেলতে লাগল। এইভাবে ৮০০ মানুষকে কোতল করতে সন্ধ্যা গড়িয়ে গেল। কুরাইজা যুবতী মহিলাদের মুসলমানরা নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নিল এবং বয়স্কা মহিলা ও শিশুদের বেদুইন উপজাতি লোকদের কাছে ঘোড়া ও অস্ত্রশস্ত্রের বিনিময়ে ক্রীতদাস হিসাবে বিক্রয় করা হল। কুরাইজা সুন্দরী রেহানাকে নবী আগে থেকেই নিজের জন্য পছন্দ করে রেখেছিলেন। সারাদিন ধরে ৮০০ কুরাইজার কোতল পর্ব সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করে নবী ক্লান্তি দূর করার উদ্দেশ্যে রেহানার সাথে শয়ন করতে চললেন। বিখ্যাত মুসলমান লেখক আনোয়র শেখ মহাশয়ের মতে সেই সময় ৮০০ কুরাইজার গণহত্যা আজ ৮০,০০০ নর হত্যার সমান। বুঝতে অসুবিধা হয় না যে, দুনিয়ার সমস্ত মুসলমানের সামনে রয়েছে কি অমানবিক, পাশব ও দানবীয় আদর্শ।

দার-উল ইসলাম ও দার-উল হার্ব
ইসলামের দ্বিতীয় সিদ্ধান্ত দার-উল-ইসলাম ও দার-উল-হার্ব বলছে যে, এই পৃথিবীতে যত দেশ আছে তা দুইভাগে বিভক্ত। দার-উল-ইসলাম হচ্ছে সেই সমস্ত দেশ, যেগুলো ইতিমধ্যে ইসলামের অধিকারে চলে এসেছে। বর্তমানে পাকিস্তান, বাংলাদেশ, ইরাক, ইরান, মিশর ইত্যাদি দার-উল-ইসলামের নিদর্শন। দার-উল-হার্ব এর আক্ষরিক অর্থ হল সন্ত্রাসের দেশ বা Land of violence। প্রকৃতপক্ষে দার-উল-হার্ব হল সেইসমস্ত দেশ, যেগুলো এখনও মুসলমানদের অধিকারে আসেনি এবং যেখানে মুসলমান ও কাফেরদের মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। তাই সেগুলো হল হিংসা ও রক্তপাতের দেশ। ইসলামের অন্তিম লক্ষ্য হল পৃথিবীর সমস্ত দার-উল-হার্বকে দার-উল-ইসলামে পরিণত করে সমগ্র বিশ্বে আল্লার রাজত্ব কায়েম করা। সমগ্র বিশ্বে ইসলামের বিজয় পতাকা উড্ডীন করা। অর্থাৎ সমগ্র পথিবীকে আরবের সাংস্কৃতিক ক্রীতদাসে পরিণত করা। তাই কোরান বলছে, 'তাদের

DarkHorus

Page - 5




বিরুদ্ধে অবিরাম যুদ্ধ করতে থাক, যতদিন না আল্লার রাজত্ব কায়েম হয়" ৮/৩৯ । ইসলামী মতে পৃথিবীতে যতদিন কাফের থাকবে এবং দার-উল-হার্ব থাকবে, ততদিন ঝগড়া মারামারি, রক্তারক্তি ফিৎনা ফাসাদ্ ও থাকবে। যেদিন সমস্ত পৃথিবী দার-উল-ইসলামে পরিণত হবে, একমাত্র সেই দিনই পৃথিবীতে চিরস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে। এই কারণেই অনেক দুষ্ট ব্যক্তি বলেন যে, ইসলামের অর্থ শান্তি।


যাই হোক, কোনৃ পদ্ধতির মধ্যে দিয়ে সমগ্র পৃথিবীতে ইসলামের পতাকা উড্ডীন করতে হবে? কোন্ পদ্ধতির মধ্যে দিয়ে পৃথিবীর সমস্ত দার-উল-হার্বকে দার-উল-ইসলামে পরিণত করতে হবে? এখানেই ইসলামের তৃতীয় সিদ্ধান্ত জিহাদ-এর আগমন।


জিহাদ
অনেক হিন্দু আছেন যাঁরা জিহাদের বাংলা লেখেন ধর্মযুদ্ধ। কিন্তু হিন্দুরা ধর্মযুদ্ধ বলতে বোঝেন, ধর্মের সঙ্গে অধর্মের যুদ্ধ। বা ধর্মাশ্রিত মানুষের সঙ্গে অন্যায়কারী, অসুর প্রকৃতির মানুষের যুদ্ধ। হিন্দুদের এই ধর্মযুদ্ধে যে কোন অসামরিক ব্যক্তি নারী, শিশু, বৃদ্ধ বা বৃদ্ধারা শুধু অবধ্যই নয়, তাদের বধ করা মহাপাপ। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ হিন্দুর ধর্মযুদ্ধের প্রকৃষ্ট উদাহরণ। সেখানে যুদ্ধ শুরু হবার ঠিক আগের মুহর্তে পিতামহ ভীষ্ম যেসব নিয়ম কানুনের বাথা ঘোষণা করেছিলেন, তা থেকে হিন্দুর ধর্মযুদ্ধের চরিত্র বোঝা যায়।
কিন্তু জিহাদ হল পৃথিবীতে আজ পর্যন্ত যত রকম বর্বরতার অনুষ্ঠান হয়েছে তার মধ্যে বর্বরতম ও সর্বাপেক্ষা পাশবিক হত্যালীলা। তিনটি ইংরাজী শব্দের মাধ্যমে জিহাদের বর্বরতাকে প্রকাশ করতে সুবিধা হয়, তা হল by sword, fire and rape বা তরবারি, আগুন ও ধর্ষণের মধ্যে দিয়ে নারী, শিশু, বৃদ্ধ, বৃদ্ধু নির্বিশেষে কাফের হত্যা করে তাদের সহায়, সম্বল, ধন-দৌলত লুটপাট করে তাদের জমি জায়গা দখল করার নামই জিহাদ।

বর্বর মুসলমান আক্রমণকারীরা যখন ভারত আক্রমণ করল, তখন থেকেই এই ভারতবর্ষে জিহাদের বর্বরতার অনুষ্ঠান শুরু হল। তারা কোন নিয়ম নীতির ধার ধারল না। লক্ষ লক্ষ পরাজিত হিন্দুসেন্যকে কেটে রক্তগঙ্গা বইয়ে দিল। লক্ষ লক্ষ নিরীহ অসামরিক প্রজা হত্যা করে মৃত মানুষের পাহাড় তৈরি করল। তাদের ঘরবাড়ি ও ক্ষেতের ফসল জালিয়ে পুড়িয়ে এক ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করল। যে যে যুদ্ধে হিন্দু রাজারা বিজয়ী হতেন, সেইসব ক্ষেত্রে তাঁরা বহুদিনের সভ্যতার সংস্কারবশত পরাজিত মুসলমান সৈন্যদের মুক্ত করে দিতেন। পক্ষান্তরে মুসলমানরা পরাজিত হিন্দু বাহিনীর সকলকেই, কোরানের কাফের নিধনের নির্দেশানুসারে হত্যা করত। তাই হিন্দু রাজারা যে বার বার মুসলমানদের কাছে পরাজিত হয়েছেন তার জন্য হিন্দুর সভ্যতার সংস্কারও অনেকাংশে দায়ী। পরাজিত শক্র অবধ্য, এই সভ্য সংস্কারের দ্বারা চালিত হয়েই রাজা পৃথ্বীরাজ মহম্মদ ঘোরীকে মুক্ত করে দিয়েছিলেন। কিন্তু এই সুসভ্য আচরণই তাঁর পরাজয় ও মৃত্যু ডেকে এনেছিল। (বিশদ বিবরণের জন্য বর্তমান লেখবোর মিথ্যার আবরণে দিন্নী, আগ্রা ও ফতেপুর সিক্রি' দ্রষ্টব্য।)

ইসলামের মূল উদ্দেশ্য হল, সারা পৃথিবীতে ইসলামের সাম্রাজ্য বিস্তার করা। সমগ্র পৃথিবীকে ইসলাম তথা আরবের সাম্রাজ্যে পরিণত করা। এই কারণে বলা চলে যে, ইসলাম কোন ধর্মমত নয়, ইসলাম হল একটি রাজনেতিক মতবাদ। যেহেতু জিহাদ হল এই সাম্রাজ্য বিস্তারের সামরিক অঙ্গ, তাই ইসলামে জিহাদের গুরুত্ব অপরিসীম। এই কারণেই আল্লা প্রত্যেক সক্ষম মুসলমানের জন্য জিহাদে অংশগ্রহণ অবশ্য কর্তব্য বলে নির্দেশ করেছেন।কোরান – ২/২৪৪ । যারা জিহাদে যোগ না দিয়ে ঘরে বসে থাকে তাদের নিন্দা করেছেন ৪/৯৬-৯৬ এবং কাফেরদের বিরুদ্ধে এই যুদ্ধে মুসলমানদের অত্যন্ত নির্মম হতে বলেছেন  – ৪/৮-২৯।

DarkHorus

Page - 6




জিহাদের গুরুত্ব এতই অপরিসীম যে, আল্লা একদিনের জিহাদকে হাজার দিনের নামাজের সমান করে দিয়েছেন এবং জিহাদকারীর জন্য রোজা সম্পূর্ণ মাফ করে দিয়েছেন। ৬২৪ খৃষ্টাব্দের রমজান মাসে মুসলমানদের সঙ্গে কোরেশদের বদর যুদ্ধ সংঘটিত হয়। রমজান মাস রোজার মাস। যুদ্ধের আগে মহম্মদ সর্বপ্রথম নিজে রোজা ভাঙেন এবং অন্য সবাই পরে রোজা ভাঙে। খয়বর অভিযানের সময় (৬২৯ খৃ) একজন ইহুদী যুবক সকালে ইসলাম গ্রহণ করে জিহাদে যোগ দেয় এবং দুপরে যুদ্ধে মারা যায়। তাই সে একবারও নামাজ পড়ার সুযোগ পায় না। কিন্তু মহম্মদ বলেন যে, জিহাদে শহীদ হবার ফলে সে মরার সঙ্গে সঙ্গে স্বর্গে চলে গিয়েছে।
জিহাদে উদ্দীপিত করার জন্য আল্লা জিহাদ-লব্ধ লুঠের মাল বৈধ করে দিয়েছেন। জিহাদ-লব্ধ কাফের নারীও লুটের মাল বা গণিমতের মাল। তাই আল্লা জিহাদ-লব্ধ কুমারী, সধবা, বিধবা, বৃদ্ধা যে কোন রকমের কাফের নারী মুসলমানদের জন্য বৈধ করে দিয়েছেন। জিহাদে উদ্দীপিত করতে আল্লা আরও বলছেন, অংশীবাদী কাফেরদের যেখানে পাবে হত্যা করবে, তাদের জন্য ঘাঁটি গেড়ে ওঁৎ পেতে ত্থাকবে, তাদের বন্দী করবে, অবরোধ করবে' কোরান – ৯/৫। "যেখানেই তাদের পাবে হত্যা করবে" – ২/১৯১ । 'তাদের গ্রেপ্তার কর, যেখানে পাও হত্যা কর, তাদের মধ্যে থেকে সাহায্যকারী গ্রহণ করো না" – ৪/৮৯ । "অবিশ্বাসীদের মধ্যে যারা তোমার নিকটবর্তী তাদের সঙ্গে যুদ্ধ কর এবং ওরা তোমাদের কঠোরতা দেখুক – ৯/১২৩।" আমার সৎকর্মশীল বান্দারাই পৃথিবীর অধীস্বর হবে' – ২১/১০৫ । "তোমরা তাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম কর, যতক্ষণ না অশাস্তি দূর হয় এবং আল্লার রাজত্ব কায়েম হয়' এ – ৮/৩৯ । "যখন তোমরা অবিশ্বাসীদের সঙ্গে যুদ্ধে মোকাবিলা কর, তখন তাদের গর্দানে আঘাত কর" – ৪৭/৪ । "তাদের হত্যা কর, কিংবা তাদের শূলবিদ্ধ কর অথবা তাদের হস্তসমূহ ও পদসমূহ বিপরীত দিক হতে কর্তন কর – ৫/৩৩।  "ওরাই অভিশপ্ত এবং ওদের যেখানে পাওয়া যাবে সেখানেই ধরা হবে এবং নির্মমভাবে হত্যা করা হবে' – ৩৩/৬১  ইত্যাদি ইত্যাদি।
জিহাদে অংশগ্রহণকারী মুসলমানকে বলে মুজাহিদ বা আল্লার সৈনিক এবং বহুবচনে মুজাহিদিন্। আল্লার অন্তিম ইচ্ছা হল মুজাহিদদের সাহায্যে পৃথিবীর আর সমস্ত ধর্মকে বিনাশ করে সারা বিশ্বে ইসলানের প্রভুত্ব প্রতিষ্ঠা করা। মুসলমানদের জিহাদে উদ্দীপিত করতে আল্লা আরও বলছেন, ' আল্লার দৃষ্টিতে জিহাদের সমতুল্য মহৎ কাজ আর কিছু নেই" ৯/১৯  এবং 'বিশ্বাসীদের মধ্যে যারা অক্ষমতা ব্যতীত ঘরে বসে থাকে, আর যারা আল্লার পথে স্বীয় ধন প্রাণ দ্বারা জিহাদ করে তারা সমান নয়। যারা ঘরে বসে থাকে তাদের উপর জিহাদকারীদের আল্লাহ মহাপুরস্কারে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন"  ৪/৯৫ । "যে কোন ব্যক্তি, যার পা আল্লার পথে জিহাদ করতে গিয়ে ধূলিমলিন হয়েছে, নরকের আগুন তার জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে  বোখারি শরীফ-৮৬৬। যে সব ব্যক্তি শারীরিক দিক থেকে সক্ষম হওয়া সত্ত্বেও জিহাদে যোগ না দিয়ে ঘরে বসে থাকে, আল্লা তাদের কঠোর ভাষায় তিরস্কার করে বলছেন, যদি তোমরা জিহাদে বের না হও, তবে তিনি (আল্লা) তোমাদের যন্ত্রণাপ্রদ শাস্তি দিবেন, এবং অপর কোন জাতিকে তোমাদের স্থলাভিষিক্ত করবেন তোমরা তাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না" ৯/৩৯।

জিহাদে সফল হতে গেলে প্রথমেই দরকার সামরিক শৃঙ্খলা। তাই আল্লা বলছেন, "যারা আল্লার পথে সারিবদ্ধভাবে সুদঢ় প্রাচীরের মত সংগ্রাম করে, আল্লা তাদের ভালবাসেন' ৬১/৪।
সামরিক ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ একজন ব্যক্তিই থাকেন, যিনি সর্বোচ্চ আদেশ দেন এবং বাহিনীর সবাই তার আনুগত্য করে। একাধিক ব্যাক্তি হলে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। তাই আল্লা সকল জিহাদীকে আল্লার রসুলের আনুগত্য করতে আদেশ দিয়ে বলছেন, "যারা, তোমার আল্লোর রসুল মহম্মদের নিকট আনুগত্যের শপথ গ্রহণ করে, তারা তো আল্লার আনুগত্যেরই শপথ গ্রহণ করে,"  ৪৮/১০। সেই

DarkHorus

Page - 7




সঙ্গে সঙ্গে আল্লা জিহাদীদের স্বর্গীয় সাহায্য ও বিজয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলছেন যে, তিনি ৫০০০ ফেরাস্তা বা দেবদূতকে জিহাদীদের হয়ে যুদ্ধ করার জন্য পাঠাবেন যাতে তারা জয়ী হতে পারে ৩/১২৪- ১২৫। "তোমরা শিথিল হয়ো না, ও বিষন্ন হয়ো না। তোমরাই সমুন্নত যদি তোমরা প্রকৃত বিশ্বাসী হও" ৩/১৩৯ ।
আল্লা আরও বলছেন, "যারা বিশ্বাসী তারা আল্লার পথে যুদ্ধ করে এবং যারা অবিশ্বাসী তারা শয়তানের পথে যুদ্ধ করে, নিশ্চয়ই শয়তান এক দূর্বল চক্রান্তকারী" ৪/৭৬ "হে বিশ্বাসীগণ, তোমরা যখন কোন (কাফের) বাহিনীর সম্মুখীন হও তোমরা অবিচলিত থাকবে এবং মুখে ও মনে আল্লাকে স্মরণ করবে, যাতে তোমরা বিজয় প্রাপ্ত হও" ৮/৪৫ । 'যদি আল্লা তোমাদের সাহায্য
করেন, তবে তোমাদের উপর কেহ জয়ী হতে পারবে না এবং তিনি যদি তোমাদের পরিত্যাগ করেন তবে কে আর তোমাদের সাহায্য করবে"৩/১৬০। "হে নবী, বিশ্বাসীগণকে যুদ্ধে উদীপিত কর, যদি তোমাদের মধ্যে কুড়িজন ধৈর্যশীল থাকে, তবে তারা দুশ জনের উপর জয়ী হবে এবং তোমাদের মধ্যে একশ জন থাকলে তারা এক হাজার জন অবিশ্বাসীর উপর জয়ী হবে" ৮/৬৫। পক্ষান্তরে জিহাদ করতে এসে জিহাদের ময়দান থেকে ভয়ে পলায়ন করলে আল্লার চোখে তা হবে অতিশয় গর্হিত কাজ এবং তার শাস্তি হবে ভয়ঙ্কর। তাই আল্লা বলেছেন, "হে বিশ্বাসীগণ, যখন তোমরা জিহাদে অবিশ্বাসীদের সম্মুখীন হবে, তখন তোমরা, পৃষ্ঠপ্রদর্শন করবে না। যে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করবে সে হবে আল্লার বিরাগভাজন এবং তার আশ্রয় হবে নরক" ৮/১৫- ১৬।
আগেই বলা হয়েছে যে, জিহাদ করতে গিয়ে যারা শহীদ হবে, আল্লার জান্নাতে তারা হবে আল্লার বিশিষ্ট অতিথি। এই ব্যাপারে আল্লা বলছেন "যারা আল্লার পথে নিহত হয়েছে, তাদের তোমরা কখনও মৃত মনে করো না। আল্লার দৃষ্টিতে তারা জীবিত এবং প্রতিপালকের কাছ থেকে তারা উত্তম জীবিকা প্রাপ্ত হয়ে থাকে" ৩/১৬৯ । "যারা পরকালের বিনিময়ে পার্থিব জীবন বিক্রয় করতে ইচ্ছুক তারা আল্লার পথে সংগ্রাম (জিহাদ) করুক, এবং কেহ আল্লার পথে সংগ্রাম করলে সে মরুক বা বাঁচুক, আমি তাকে মহান প্রতিদান দিব" ৪/৭৪ । কোন মুসলমানের পক্ষে জিহাদে শহীদ হওয়া এতই লাভজনক যে, একজন মুজাহিদ বলবে, 'আমি আল্লার পথে জিহাদ করে শহীদ হব এবং শহীদ হবার জন্য আবার বেঁচে উঠব এবং শহীদ হব, শহীদ হবার জন্য আবার বেঁচে উঠব এবং শহীদ হব, এবং শহীদ হবার জন্য আবার বেঁচে উঠব' বোখারী-৪৫৪ ।
জিহাদে শহীদ হওয়া কত উপকারী ও লাভজনক তা বোঝাতে নবী- মহম্মদ বলতেন যে-
(১)  শহীদের আত্মু সবুজ পাখী হয়ে স্বর্গেবসবাস করবে এবং স্বর্গের যেখানে সেখানে উড়ে বেড়াবে।
(২) তাদের সমস্ত গোনা (পাপ) ও কুকর্ম ক্ষমা করা হবে।
(৩) কেয়ামত বা শেষ বিচারের দিন সেই শহীদ তার ৭০ জন আত্মীয় ও বন্ধুর জন্য আল্লার বিচারে হস্তক্ষেপ করতে পারবে।
(৪)  কেয়ামতের সেই ভয়ঙ্কর দিনে সে অবিচলিত থাকবে।
(৫)  সে মৃত্যুর কোন কষ্ট বা যন্ত্রণা অনুভব করবে না।
(৬) কাফেরদের হত্যা করার বাপারে সে কোন অনুতাপ দুঃখ ভোগ করবে না।
বুঝতে অসুবিধা হবার কথা নয় যে, জিহাদ ও জিহাদে শহীদ হবার উপরিউক্ত ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গীর ফলেই পাকিস্তান, আফগানিস্তান, সৌদি আরব, ইরাক, প্যালেস্টাইন ইত্যাদি ইসলামী দেশগুলোর হাজার হাজার যুবক যুবতী সন্ত্রাসবাদী ও আত্মঘাতী বোমা বা suicide bomber (ফিদায়িন) হবার জন্য এগিয়ে আসছে।

DarkHorus

Page - 8



আল্লা বনাম ভগবান

যাই হোক, ইসলাম সম্বন্ধে আর দু-একটি কথা বলা বিশেষ প্রয়োজন। হিন্দু গান রচনা করেছেন 'ঈশ্বর আল্লা তেরে নাম" অর্থাৎ যিনিই ঈশ্বর তিনিই আল্লা। কিন্তু যে হিন্দু এই গান রচনা করেছেন তাঁর জানা নেই যে, ঈশ্বর হতে গেলে য়ে যোগ্যতা দরকার, আল্লার তা নেই। আল্লা যদি ঈশ্বর হতেন তবে সব মানুষই তাঁর কাছে সমান হত। যেমন হিন্দুর ভগবান গীতায় বলেন, "আমার কাছে সবাই সমান, কেউ আমার প্রিয়পাত্রও নয়, আবার কেউ আমার বিদ্বেষভাজনও নয় " ৯/২৯। কিন্তু আল্লার দৃষ্টিতে সব মানুষ সমান নয়। শুধু মুসলমানদের প্রতিই তিনি দয়ালু দয়াময় বা রহমানির রহিম। কিন্তু হিন্দু সহ অন্যান্য অমুসলমানদের প্রতি তিনি নির্মম নৃশংস একজন ঘাতক জল্লাদ। কাজেই এরকম পক্ষপাত দোষে দোষী আল্লা এই জগতের ঈশ্বর হবেন কেমন করে? তাই স্বামী বিবেকানন্দ তাঁরঁ Practical Vedanta, গ্রন্থে লিখেছেন  A God who is partial to his children called men, and cruel to his children called brute beasts, is worse than a demon. I would rather die a hundred times than worship such a God. My whole life would be a fight with such a God. অর্থাৎ, "যেই ভগবান তাঁর বিশেষ কিছু সন্তানের প্রতি দয়ালু দয়াময় এবং বাকীরা হৃদয়হীন পশু, এরকম পক্ষপাত দোষে দুষ্ট আল্লা ভগবান হবেন কেমন করে? সে তো অসুরের থেকেও নীচ। আমি একশত বার জন্মগ্রহণ করতে রাজি আছি কিন্তু এরকম আল্লাকে ঈশ্বর বলতে রাজি নই। বরং আমি এই আল্লার সঙ্গে সারাজীবন যুদ্ধ করতে রাজী আছি।"

নামাজ হল নিয়মিত সামরিক অভ্যাস
অনেক হিন্দু আবার এই মনোভাব পোষণ করেন যে, মুসলমানরা কত ধর্মপ্রাণ, তারা দিনে পাঁচবার নমাজের মধ্যে দিয়ে তাদের ভগবানকে বা আল্লাকে ডাকছে। এ ব্যাপারে প্রথমেই বলে নেওয়া ভাল যে, ইসলামে চরম আধ্যাত্মিক প্রাপ্তি হল স্বর্গবা জান্নাত নামক আল্লার পতিতালয়ে যাওয়া। কিন্তু আগেই বলা হয়েছে যে, 'লা ইলাহা ইল্লাল্লা, মহম্মদুর রসুলুল্লা' কলেমা গ্রহণ করার জন্য অতান্ত পাপমতি অধঃপতিত মুসলমানকেও আল্লা তাঁর স্বর্গে নিয়ে যাবেন। কাজেই স্বর্গে যাবার জন্য নামাজের প্রয়োজন নেই এবং রোজারও প্রয়োজন নেই। তাই প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক, তবু কেন মুসলমানরা দিনে পাঁচবার নামাজ পড়ে এবং এক মাস ধরে রোজা রাখে?

হিন্দু বলে ভগবানকে ডাকতে হয় একা একা, নির্জনে গিয়ে। কিন্তু ইসলামী শাস্ত্র মতে নির্জনে একা একা নামাজ পড়লে খুব কমই পুণ্য হয়। মহল্লার মসজিদে পড়লে তার দশগুণ এবং জাম-এ মসজিদে পড়লে তার ১০০ গুণ, এবং এইভাবে বাড়তে বাড়তে মক্কার মসজিদুল হারাম-এ পড়লে তার ১লক্ষ গুণ পুণ্য হয়। কাজেই বুঝতে অসুবিধা হবার কথা নয় যে,-নামাজের মূল উদ্দেশ্য হল মসজিদে লোক জড়ো করা। তারপর সারি বেঁধে দাঁড়ানো, ইমামের আদেশমতো ওঠা বসা ইত্যাদি দেখলে অসুবিধা হবার কথা নয় যে, নামাজের মূল উদ্দেশ্য প্রথমত মসজিদে জড়ো করে মুসলমানদের নিজেদের মধ্যে দেখাশোনা ও কথাবার্তার মধ্যে দিয়ে সঙ্ঘবদ্ধতা বাড়িয়ে তোলা এবং দ্বিতীয় উদ্দেশ্য, হল নামাজের মধ্য দিয়ে সামরিক প্রশিক্ষণ। এই কারণেই মহম্মদের জীবিতকালে মুসলমানরা যত যুদ্ধ করেছে সব ক্ষেত্রে নামাজ পড়ে যুদ্ধ শুরু করেছে। নবীর জীবিতকালে কোন কাফের বসতিকে আক্রমণ করতে হলে মুসলমানরা খুব ভোরে, ফজর-এর নামাজ শেষ করে আক্রমণ করত। গত ১৯৪৬ সালের ১৬আগষ্ট মুসলমানরা কলকাতায় যে দাঙ্গা শুরু করেছিল, যার নাম 'গ্রেট ক্যালকাটা কিলিং", সেই ভয়ঙ্কর দাঙ্গাও তারা শুক্রবারের জুম্‌আর নামাজ শেষ করে মসজিদ থেকেই শুরু করেছিল।
কাজেই বুঝতে অসুবিধা হবার কথা নয় যে মৃতুর পর জান্নাত বা আল্লার পতিতালয়ে যাবার জন্য নামাজের প্রয়োজন না থাকলেও জিহাদের জন্য নামাজের প্রয়োজন আছে। এবং সেই


DarkHorus

Page - 9




উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই দুনিয়াব্যাপী মুসলিম সমাজ দিনে ৫ ওয়াক্ত নামাজ করে চলেছে। কোরানের প্রথম সুরা বা অধ্যায়ের নাম 'ফাতেহা'। নামাজের শুরুতে প্রত্যেক নামাজীকে মনে মনে সুরা ফাতেহা আবৃত্তি করতে হয় এবং তারপর কোরানের অন্তত তিনটি আয়াত আবৃত্তি করতে হয়। সাধারণত কোরানে কাফের নিধনের যে সব ভয়ঙ্কর আয়াত আছে, তা থেকে ওই তিনটি আয়াত আবৃত্তি করা হয়ে থাকে। কাজেই বুঝতে অসুবিধা হবার কথা নয় যে দিনে ৫বার করে ওইসব কাফের নিধনের আয়াত আবৃত্তি করতে থাকলে একজন মানুষের মনে কাফেরদের প্রতি কতখানি ঘৃণার উদ্রেক হতে পারে এবং কাফের নিধনের ব্যপারে তার মন কতখানি হিংসাত্মক হয়ে উঠতে পারে।
তারপর আছে নামাজের শেষে ইমামের খুৎবা বা ধর্মীয় ভাষণ। এই খুৎবায় কি বলা হয় তা অনেকেরই জানা নেই। তাই পবিত্র ঈদের নামাজের পর ইমাম যে খুৎবা দেন তা থেকে খানিকটা তুলে দেওয়া হল।
"........ হে আল্লা, আপনি ইসলাম ধর্ম ও মুসলমানদের চিরকাল জয়যুক্ত করুন, আর অবাধ্য কাফের, বেদআত ও মোশরেকদের সর্বদা পদানত ও পরাস্ত করুন। হে আল্লা, যে বান্দা আপনার আজ্ঞাবহ হবে, তার রাজ্য চির অক্ষয় রাখুন। তিনি রাজার পুত্র রাজা হোন কিংবা খাকান পুত্র খাকান হোন, স্থল বা নদীপথের অধিকর্তা হোন, কিংবা দুই সাগরের মালিক হোন, তিনি পবিত্র মক্কা ও মদিনার সেবক হোন, কিংবা আল্লার পথে জেহাদ ও সংগ্রামকারী হোন, তিনি যদি মুসলিম রাজা হন, আল্লা তাঁর রাজ্য ও অধিকৃত সাম্রাজ্যকে চির অক্ষয় রাখুন। ......তাঁরই তরবারি দ্বারা বিদ্রোহী, মহাপাতকী ও অবাধ্যদের অর্থাৎ কাফেরদের‌ মস্তকচ্ছেদন করে নিশ্চিহ্ন করে দিন।
হে আল্লা, আপনি ধবংস করুন কাফেরদের, বেদআতি মোশরেকদের। হে আল্লা তাদের দল ও সঙ্ঘকে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন করে দিন। হে আল্লা তাদের এক্যৈর মধ্যে মতানৈক্য আনয়ন করুন। হে আল্লা, তাদের দেশ সমূহকে চূর্ণবিচূর্ণ করে দিন।"
মুসলিম পঞ্জিকা - ১৪০০ বঙ্গাব্দ, হরফ প্রকাশনী, পৃঃ ১৬৯।

ইসলামী রীতি অনুসারে প্রত্যেক মুসলমান বালককে ৭ বছর বয়স থেকে নামাজ শিক্ষা দেবার বিধি। তাই বুঝতে অসুবিধা হয় না যে, ৭ বছরের শিশু বয়স থেকে কোন মানুষকে দিনে ৫বার করে কাফের নিধনের মন্ত্র দিলে তার মন কতখানি কলুষিত হতে পারে, বা কতখানি সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন এবং হিংসাত্মক হয়ে উঠতে পারে। এক কথায় কতখানি জানোয়ার হয়ে উঠতে পারে।
নামাজের মতো রোজার উপকারিতাও জিহাদের মধ্যে নিহিত রয়েছে। যে আরব দেশে ইসলামের আবির্ভাব হয়েছিল, সেখানে জলের বড় অভাব। অনেক সময় এমন হত যে, মদিনা থেকে অনেক দূরে নবী তাঁর সৈন্য সামন্ত নিয়ে জিহাদ করতে গেলেন। সারাদিন ধরে যুদ্ধ করতে হল। কিন্তু খাওয়া দাওয়া দূরে থাক পিপাসায় এক ফোঁটা জলও জুটল না। এইরকম পরিস্থিতিকে মোকাবিলা করার জনাই পানাহার তাগ করে এক মাস রোজা পালন। এটাও সামরিক প্রশিক্ষণের একটা অঙ্গ এবং ইংরাজীতে একে বলা হয় Endurance training বা প্রতিকূলতা সহ্য করার প্রশিক্ষণ। সেইরকম, বকরী ঈদের দিন চাকু দিয়েপুচিয়ে পুচিয়ে নৃশংসভাবে পশু কাটা হল, কাফেরদের গলা কাটার হাতে-কলমে শিক্ষা।

মাক্কি ও মাদানি আয়াত
মুসলমানরা নানাভাবে হিন্দু কাফেরদের প্রতারিত করে থাকে। ইসলামের অর্থ শান্তি, কাফের অর্থ নাস্তিক ব্যক্তি, জিহাদ মানে ধর্মযুদ্ধ ইত্যাদি বলে যে তারা হিন্দুদের প্রতারিত করে চলেছে তা আগেই বলা হয়েছে। এছাড়া তারা আরও একটি উপায়ে হিন্দু সহ অন্যান্য কাফেরদের প্রতারিত করে থাকে। কোরানে কিছু কিছু আয়াত আছে যেগুলো হিংসাত্মক নয়। বরং বেশ নিরীহ ও সহনশীল, যেমন, আল্লা অত্যাচারীদের ভালবাসেননা" কোরান ৩/১৪০, 'নিচয়ইঅত্যাচারীদের জন্য মর্মন্তুদ শাস্তি আছে' – ১৪/২২। আল্লা অশান্তি উৎপাদনকারীদের ভালবাসেন না" ৫/৬৪।

DarkHorus

Page - 10




আল্লা উদ্ধত ও অহঙ্কারীদের ভালবাসেন না' ৫/২৩। "কেউ ধৈর্য ধরলে বা ক্ষমা করলে তা হবে বীরত্বের কাজ' এ – ৪২/৪৩। 'তোমাদের ধর্ম তোমাদের কাছে প্রিয়, আমার ধর্ম আমার কাছে প্রিয় – ১০৯/৬। 'আল্লার বাণী প্রচার করাই রসুলের একমাত্র কাজ ৫/৯৯  ইত্যাদি ইত্যাদি। এইসব আয়াত শুনে অনেক কাফেরই প্রতারিত হয় ভাবে তাই তো, কোরানে অনেক ভাল ভাল আয়াতও রয়েছে তো। এই প্রতারণার কাজে মুসলমানরা "তোমাদের ধর্ম তোমাদের.... আমার কাছে' ১০৯/৬ আয়াতটি বহুল প্রয়োগ করে থাকে। দেখাতে চেষ্টা করে যে ইসলাম খুব পরমত সহিষ্ণু
কোরানের সমস্ত আয়াতগুলিকে সরাসরি দুভাগে ভাগ করা চলে। মাক্কি ও মাদানি। নবীর প্রাণের ভয়ে হিজরৎ করে মদিনা যাবার আগে মক্কায় অবতীর্ণ আয়াতগুলিকে মাক্কি আয়াত বলে এবং হিজরতের পর মদিনায় অবতীর্ণ আয়াতগুলিকে মাদানি আয়াত বলে। নবী মহম্মদের চিন্তা ভাবনার দ্বারা এই আয়াতগুলি ভীষণভাবে প্রভাবিত। হিজরতের আগে নবী ছিলেন একজন মাত্র পত্নী বিবি খাদিজাকে নিয়ে ঘর করা একজন রসুল মাত্র। তখন তাঁর একমাত্র কাজ ছিল সম্পূর্ণ অহিংসক পদ্ধতিতে মক্কার অধিবাসীদের কাছে আল্লাতায়লার বাণী পৌছে দেওয়া। তাই আল্লাও তখন উপরিউক্ত আয়াতগুলির মত নিরীহ ও সহিষ্ণু আয়াতই অবতীর্ণ করলেন। কিন্তু হিজরৎ করে মদিনা যাবার পর নবী হলেন একাধারে মদিনার প্রধান প্রশাসক, প্রধাণ বিচারক এবং সর্বোচ্চ সেনানায়ক। এক কথায় মদিনার সর্বময় অধিকর্তা। তখন থেকেই 'তরবারি দ্বারা ইসলাম প্রচার' নীতি হিসাবে গৃহীত হল এবং নবী জিহাদের তত্ব আমদানি করলেন।  আল্লাও নবীর মনোভাব বুঝতে পেরে জিহাদের ভয়ঙ্কর আয়াতগুলি অবতীর্ণ করতে শুরু করলেন। এখানে বলে রাখা দরকার যে কোরান আল্লার বাণী নয়। নবী মহম্মদই কোরানের রচয়িতা এবং সাধারণ মানুষকে ধোঁকা দেবার জন্যই তাকে আল্লার বাণী বলা হয়ে থাকে। যাই হোক, আল্লা প্রথমেই বলে রাখলেন, 'আমি কোন জনপদে নবী পাঠালে সেখানকার অধিবাসীদের দুঃখ ও ক্লেশ দ্বারা পীড়িত করি, যাতে তারা বিনত হয়" কোরান ৭/৯৪  এবং এই বাণীর দ্বারা মদিনাবাসীদের ওপর যথেচ্ছ অত্যাচার ও উৎপীড়ন চালাবার একচ্ছত্র অধিকার নবীর হাতে তুলে দিলেন। মহম্মদও সঙ্গে সঙ্গে তার চাচা, চাচাত ভাই ও অন্যান্য চ্যালাদের সাহায্যে একটা গুন্ডা বাহিনী তৈরী করে ফেললেন। আল্লাও তাঁর বান্দাদের যুদ্ধ করার অনুমতি দিলেন- ২২/৩৯  এবং ইসলামকে তরবারির সাহায্যে অন্য সমস্ত ধর্মের উপর প্রভুত্ব করার নির্দেশ দিলেন – ৪৮/২৮। তারপর একে একে জিহাদের উপরিউক্ত ভয়ঙ্কর আয়াতগুলি অবতীর্ণ করতে থাকলেন।
মুসলমানরা যখন কোন ভদ্র সমাজে ইসলাম সম্বন্ধে কথা বলে তখন শুধু মাক্কি আয়াতগুলোই বলে। গত ১১ সেপ্টেম্বরের ঘটনার পরে টিভি ও খবরের কাগজের রিপোর্টাররা অনেক মুসলমান সাংবাদিক, ধর্মীয় নেতা ও রাজনেতিক নেতাদের সাক্ষাৎকার নেন। সব ক্ষেত্রেই মুসলমানরা শুধু মাক্কি আয়াতগুলো তুলে ধরে সাংবাদিকদের প্রতারিত করে। কোন দেশে বা অঞ্চলে মুসলমানরা যত দিন সংখ্যালঘু থাকে, ততদিন তারা শুধু মাক্কি আয়াতগুলো বলে সংখ্যাগুরুদের প্রতারিত করতে থাকে। যেই মুহুর্তে মুসলমানরা সংখ্যাগুরু হয়ে যায় সে মুহুর্তেই তারা মাক্কি আয়াতগুলো ফেলে দিয়ে জিহাদের মাদানি আয়াতগুলো প্রচার করতে থাকে। আমাদের দেশের মুসলমানরাও বর্তমানে মাক্কি আয়াতগুলোর বহুল প্রয়োগ করে চলেছে। কিন্তু যেসব অঞ্চলে মুসলমানরা ইতিমধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে গিয়েছে, সেইসব অঞ্চলে মসজিদ থেকে মাইকের সাহায্যে জিহাদের মাদানি আয়াতগুলো দিনে রাত্রে প্রচার করা হচ্ছে।

মন্দির বনাম মসজিদ
অনেক হিন্দু আবার মন্দির শব্দের সঙ্গে মসজিদ শব্দটা এমনভাবে উচ্চারণ করেন যেন মন্দির আর মসজিদ একই জিনিস। মন্দিরও ধর্মস্থান আর মসজিদও ধর্মস্থান। কাজেই যাহা মন্দির

DarkHorus

Page - 11




তাহাই মসজিদ। কিন্তু বাস্তব দৃষ্টিভঙ্গী থেকে বিচার করলে দেখা যাবে যে মন্দির আর মসজিদের মধ্যে আকাশ পাতাল পার্থক্য বিদ্যমান। একটা বিশেষ প্রভেদ যা আজ সকলেরই নজর পড়ছে তা হল, মুসলমান সন্ত্রাসবাদীরা কাশ্মীরের মসজিদগুলোতে আশ্রয় নিচ্ছে। কিন্তু হিন্দুদের কোন সন্ত্রাসবাদী
দলও নেই, এবং তারা কোনদিন কোন মন্দিরে আত্মগোপন করেছে এমন সংবাদও নেই।

আগেই বলা হয়েছে যে হিন্দু যাকে ধর্ম বলে, ইসলাম সেরকম কোন ধর্ম নয়। প্রকৃতপক্ষে ইসলাম হল একটি রাজনৈতিক মতবাদ, যার উদ্দেশ্য হল পৃথিবী ব্যাপী এক ইসলামী সম্রাজ্য গড়ে তোলা এবং মসজিদগুলো হল ইসলামের পার্টি অফিস। মসজিদগুলোতে জিহাদ ও কাফের হত্যার পরিকল্পনা তৈরি করা এবং জিহাদের অস্ত্রশস্ত্র যথা রাইফেল, বন্দুক, পিস্তল গোলাগুলি, নানারকম বিস্ফোরক মসজিদগুলোতে মজুদ করা হয়। হিন্দুরা তাদের কোন মন্দিরকে এরকম অস্ত্রাগার হিসাবে ব্যবহার করছে এমন সংবাদ আজ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।

আগেই বলা হয়েছে যে হিজরত করে মদিনা আসার পর নবী মহম্মদ একাধারে মদিনার প্রধান শাসক, প্রধান বিচারক এবং প্রধান সৈনাধ্যক্ষ হয়েছিলেন। মদিনার মসজিদে বসেই নবী তাঁর উপরিউক্ত দায়িত্বগুলি পালন করতেন। কাজেই সেই সময় মদিনার মসজিদ ছিল প্রধান সরকারি কার্যালয়, প্রধান বিচারালয় এবং প্রধান সামরিক কার্যালয়। নবী তাঁর ১০ বছর মদিনা বাসকালে ৮২টা যুদ্ধ, হত্যা আক্রমণ ও লুণ্ঠনের অভিযান করেন। এই সমস্ত অভিযানের পরিকল্পনা মদিনার মসজিদেই তৈরি করা হয়েছিল। তাছাড়া মহিলা কবি আসমা, কবি আবু আফাক, কবি কাব বিন আসরাফ-এর মতো মদিনার বিশিষ্ট ব্যক্তিদের গুপ্তহত্যার পরিকল্পনাও নবী মদিনার মসজিদে বসেই রচনা করেছিলেন। কোন হিন্দু ধর্মগুরু মন্দিরকে এ সমস্ত হীন চক্রান্ত ও সামরিক কাজে ব্যবহার করেছেন বলে শোনা যায়নি।

নবী মহম্মদই হলেন সমগ্র মুসলমান সমাজের আদর্শস্থল  নবী বলেছেন, গোঁফ কামিয়ে দাড়ি রাখতে, যাতে মুসলমানদের সহজে চেনা যায়। তাই গোঁফ কামিয়ে দাঁড়ি রাখতে হবে। নবী খাওয়ার পর হাত চেটে পরিষ্কার করতেন, তাই সবাইকে হাত চেটে পরিস্কার করতে হবে। নবী কুকুর পছন্দ করতেন না, তাই কোন মুসলমান কুকুর পুষতে পারবে না। নবী বলতেন, যে দাবা খেলে তার হাত শুয়োরের রক্তে মাখামাখি হয়, তাই কোন মুসলমান দাবা খেলতে পারবে না। পাজামার ঝুল গোড়ালী ঢেকে ফেললে নবী তা অহমিকার প্রকাশ বলে মনে করতেন, তাই খাটো ঝুলের পাজামা পরতে হবে। আল্লা বলেছেন, সর্বক্ষেত্রে নবীকে অনুসরণ কর। কাজেই নবী যে যে কাজে মসজিদকে ব্যবহার করে গিয়েছেন নবীর সেই পবিত্র দৃষ্টান্তকে অনুসরণ করে আজকের মুসলমানরাও মসজিদকে সেই সেই কাজে ব্যবহার করবে তাতে আর আশ্চর্য কি।
তাই আজ মসজিদের ইমামরা মসজিদ থেকে ফতোয়া জারি করে মসজিদে বসে জিহাদ তথা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার চক্রান্ত রচনা করে, মসজিদের মধ্যে জিহাদের অস্ত্রশস্ত্র মজুত করে তাকে অস্ত্রের গুদাম হিসাবে ব্যবহার করে, ইত্যাদি। শুধু তাই নয়, ইমামদের নোংরা প্রস্তাবে রাজি না হবার ফলে নিরীহ মুসলমান গৃহবধূদের ধরে এনে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ব্যভিচারের অভিযোগ এনে হয় পাথর ছুঁড়ে মেরে ফেলার বা জ্যান্ত জ্বালিয়ে দেবার ফতোয়া দেয়। হিন্দুদের পক্ষে কোন মন্দিরকে এই সমস্ত হীন কাজে ব্যবহার করা দূরে থাক, এই সব চিন্তা করাও এক অকল্পনীয় ব্যাপার।
কাজেই দেখা যাচ্ছে যে, মন্দির ও মসজিদের মধ্যে পাহাড় প্রমাণ পার্থক্য বিদ্যমান এবং যেসব ব্যক্তি বলেন যে, মন্দির ও মসজিদ একই বস্ত, কোন হীন উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই তাঁরা এই সব মিথ্যা কথা বলে থাকেন। হিন্দু কোনদিন কোন মন্দিরকে সামরিক শিক্ষাকেন্দ্র হিসাবে ব্যবহার করেন না। কোন মন্দিরকে তারা লুটপাট, হত্যা ইত্যাদির ষড়যন্ত্র রচনা করার স্থান বা লুঠ করে আনা গণিমতের মাল ভাগাভাগি করার কাজে ব্যবহার করেননা। সর্বোপরি তারা মন্দিরে বসে মাতৃজাতিকে কলুষিত করার কোন ষড়যন্ত্র তৈরি করেন না। তাঁরা ভক্তি করে পূজা অর্চনার দ্বারা আত্মিক উন্নতির