Menu

Show posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.

Show posts Menu

Messages - Jupiter Joyprakash

#166
প্রার্থনার শক্তি
[/size]
সকলেই কোনো না কোনো সময়ে প্রার্থনা সফল হতে দেখেছেন। যাঁরা দেখেন নি তাঁরা অন্যদের কাছে শুনেছেন যে প্রার্থনায় চাকরী হয়, মামলা জেতা যায়, মনের মত বৌ মেলে, ইত্যাদি ইত্যাদি। আজ আলোচনা করব কিছু প্রার্থনার সফল হবার সম্ভাবনা নিয়ে।


১) অমুক ব্যাটা মরুক, মরুক, মরুক।
সকলেই একদিন মরবে। কাজেই এই প্রার্থনা সফল হবার সম্ভাবনা ১০০%।

২)অথবা, রহিম করিমের মামলায় যেন করিম জিতে যায়।
অথবা ইন্ডিয়া পাকিস্তান ক্রিকেটে যেন ইন্ডিয়া জেতে।
মজার ব্যাপার হল আপনি এই প্রার্থনা করলে অন্য কেউ ঠিক এর উল্টোটা চাইবেই। কাজেই আপনার আর তার, দুজনের মধ্যে একজনের প্রার্থনা কবুল হবেই হবে। সফলতার সম্ভাবনা ১০০%

৩) অমুক পদের চাকরিটা যেন আমি পাই। অমুক মেয়েটা যেন আমাকেই বিয়ে করে। ইত্যাদি
যারাই এই তালে থাকে তারা সবাই যদি এমন প্রার্থনা করে তবেই হয়েছে। একজন কারো প্রার্থনা সফল হবেই হবে। সফলতার হার ১০০%

৪) আমার বৌয়ের ব্যাটা হোক।
ব্যাটা কিম্বা বেটির একটা তো হবেই। সফলতার হার ৫০%। অতি বিরল ক্ষেত্রে অন্য কিছু হতে পারে।

৫) আমার ডানা গজাক
সফলতার হার নির্ভর করে আপনার বিশ্বাসের উপর। জ্ঞানী ব্যক্তিরা বলেন যে বিশ্বাসে মিলায় পাঙ্খা, তর্কে বহুদুর।


আশা করি যাঁরা নিয়মিত প্রার্থনা করে করে বিফল হওয়ায় ঈমান হারাতে বসেছেন তাঁরা এই লেখা পড়ে প্রার্থনার শক্তি সম্পর্কে বিশ্বাস ফিরে পাবেন। যদি আগ্রহী কেউ আরো বেশি নিদর্শন পেতে চান তবে অবশ্যই পাবেন।

#167
মন্ত্রের জন্মকথা

একটি জীবনদায়ী শিক্ষনীয় বিষয়। পাখি পড়া করিয়া শিখিয়া নিন।

একদা কোনো এক সময়ে এক সাধু বনে গিয়াছিলেন। বনের ধারে থাকিয়া তিনি ঈশ্বরচিন্তা করিয়া ভালই ছিলেন। কিন্তু শীঘ্রই এক সমস্যা দেখা দিল। এক পক্ষী শিকারী সেই বনে আসিয়া জাল পাতা শুরু করিল। জাল পাতিয়া তাহার উপর চালের দানা ছড়াইয়া সে চলিয়া গেল। অবোধ পক্ষীগণ মনের আনন্দে নাচিতে নাচিতে আসিয়া চাল খাইতে লাগিল আর জালে পড়িতে লাগিল। তারপর শিকারীর খাঁচায় ঢুকিয়া তাহারা কোথায় যাইতে লাগিল তাহা সাধু জানিতে পারিলেন না।
সাধুর মনে বড়ই দুঃখ হইল। তিনি নিজে সংসারের বন্ধন হইতে মুক্তির তপস্যা করিবেন, আর তাঁহার চক্ষের সমুখে স্বাধীন পক্ষীরা বন্ধনে আবদ্ধ হইবে ইহা তাঁহার নিতান্তই স্বার্থপরতা মনে হইল। তিনি অনেক ভাবিয়া বুঝিলেন যে পক্ষীরা বেকুব বলিয়াই এমন জালে জড়াইয়া যায়। তাই তিনি পক্ষীদের কিছু শিক্ষা দিবার ব্যবস্থা করিলেন।
তিনি দেখিলেন যে অধিকাংশ পক্ষীরা সারাদিন গান গাহিয়া বেড়ায়। এবং যাহারা গান গাহিয়া বেড়ায় শিকারীর নজর তাহাদের উপরেই বেশি। তাই তিনি তাঁহার শিক্ষার বিষয়বস্তুকে ছন্দোবদ্ধ রূপ দিয়া গাহিবার উপযোগী করিয়া শিক্ষা দিবার ব্যবস্থা করিলেন। অতঃপর কয়েকটি গায়ক পক্ষীকে ডাকিয়া তিনি সেই গীতটি তাহাদের মুখস্ত করাইলেন। পক্ষীরা সহজেই তাহা মুখস্ত করিয়া লইল। তাহার পর সাধু বলিলেন, ?তোমরা অন্য সকল গীত পরিত্যাগ করিয়া এই গীতটি গাহিতে থাক। অন্য পক্ষীদের মধ্যে এই গীতটি প্রচার কর ও তাহাদেরও অন্য সব গীত ত্যাগ করিয়া এইটিই গাহিতে বল। তাহাদের জানাইয়া দাও যে আমার আদেশমত করিলে তাহারা শিকারীর খাঁচা হইতে পরিত্রাণ পাইবে। আর এইরূপ না করিলে তাহারা অচিরেই বিনাশ প্রাপ্ত হইবে।?

কিছুক্ষণের মধ্যেই সমগ্র বনভূমি সেই একমাত্র গানে ভরিয়া উঠিল। নূতন পক্ষীরাও ভয়েডরে আসিয়া মাত্র দুই লাইনের গাণটি শুনিতে ও শিখিতে লাগিল। তাহার পর তাহারাও গলা ছাড়িয়া কীর্তন ও প্রচার করিতে লাগিল। এই গাণ শিখিলে ও গাহিলে শিকারীর খাঁচা হইতে ভয় থাকিবে না শুনিয়া কেহই আর শিখিতে বাকি রাখিল না। এমন সময়ে শিকারী আসিয়া প্রতিদিনের মত জাল পাতিতে বনে ঢুকিল। সাধু দেখিলেন আর মুচকি হাসিলেন। শিকারী পক্ষীদের ভাষা বুঝে না। সে কিছুই জানিল না। জাল পাতা ও চাল ছড়ানো শেষ করিয়া সে চলিয়া গেল। সাধু তাহার চলিয়া যাওয়া দেখিয়া আবার হাসিলেন।
সন্ধ্যার সময় শিকারী আবার আসিয়া বনে ঢুকিল। কিছুক্ষণ বাদে গোটাকয় পক্ষী খাঁচায় করিয়া লইয়া আসিল। সাধু চমকিত হইয়া তাড়াতাড়ি দেখিতে গেলেন। কাছে গিয়া শুনিলেন পক্ষীরা শিকারীর খাঁচা হইতে পরিত্রাণ পাওয়ার আশায় সেই শেখানো গীতটি দাঁড়িকমা ভুলিয়া চিৎকার করিয়া গাহিয়া চলিতেছে।

জালের উপর চালের দানা
ভুলেও খেতে কেউ যাবনা

জালের উপর চালের দানা
ভুলেও খেতে কেউ যাবনা

জালের উপর চালের দানা
ভুলেও খেতে কেউ যাবনা

জালের উপর চালের দানা
ভুলেও খেতে কেউ যাবনা

জালের উপর চালের দানা
ভুলেও খেতে কেউ যাবনা

আসুন আমরাও বলিঃ-
জালের উপর চালের দানা
ভুলেও খেতে কেউ যাবনা


#168
 
উড়ন্ত ঘোড়া ও দুরন্ত গবেষণা।
ইহা একটি গবেষণার প্রতিবেদনপাঠক এটি বুঝিয়া পড়িবেন

প্রথম পর্যায়ঃ-
জীববিজ্ঞানী ডঃ আবুল দিওয়ানা জাতিসঙ্ঘের মহাসচিবকে এক পত্র লিখিলেন



মাননীয় মহাশয়
,লোকগাথাবিশারদ ডঃ ফকির আলি যখন তাঁহার গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করিলেন তখন তাহা পড়িয়া দেখিলাম যে দুনিয়ার সকল দেশের লোককথায় উড়ন্ত ঘোড়া পাওয়া যায়তাঁহার গবেষণাপত্রটি সঙ্গে দেওয়া হইলআমি ডঃ আবুল দিওয়ানা এই ফলাফল লইয়া সমাজবিজ্ঞানী ডঃ আদম ওস্তাদ এর সঙ্গে কথা বলিয়াছিতিনি মত প্রকাশ করেন যে দুনিয়ার সকল দেশেই যে কথা লোকে বিশ্বাস করিত তাহা সঠিক হওয়ার সম্ভাবনা খুবই বেশিঅর্থা উড়ন্ত ঘোড়া থাকা খুবই সম্ভব  আর তাহা যদি থাকে তবে তাহাকে আবিষ্কার করা আমাদের কর্তব্য

মহাশয়
, আমরা তিন জনে পরিকল্পনা করিয়াছি যে এই উড়ন্ত ঘোড়ার অনুসন্ধানে আমরা শীঘ্র একটি বিশ্বব্যাপী অভিযান শুরু করিব এই অনুসন্ধানের খরচের জন্য আমরা আপনার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করি
========================
দ্বিতীয় পর্যায়ঃ-
মহাসচিব এই জরুরী পত্রটি পাঠ করিয়া একটি সভা ডাকিলেনসেই সভায় সকলেই একবাক্যে জানাইলেন যে উড়ন্ত ঘোড়ার কথা তাঁহারা সকলেই পড়িয়াছেন ও শুনিয়াছেনতবে এমন ঘোড়া থাকা সম্ভব বলিয়া তাঁহারা মনে করেন নাযদিও এই সম্পর্কে কোনো গবেষণা কেহ কখনো করে নাই
মহাসচিব সিদ্ধান্ত করিলেন যে বিনা অনুসন্ধানে উড়ন্ত ঘোড়া নাই বলিয়া সিদ্ধান্ত করা উচিত হইবে নাতাই তিনি ডঃ আবুল এর কাছে খরচের সম্ভাব্য পরিমাণ জানিতে চাহিলেনদীর্ঘ আলোচনার পর প্রাথমিকভাবে একটি অনুসন্ধানী দল গঠিত হইল
, যাহার নেতা হইলেন ডঃ আবুলস্থির হইল যে এই দল ছয়মাসের মধ্যে তাহাদের প্রাথমিক অনুসন্ধান শেষ করিয়া একটি প্রতিবেদন পেশ করিবেসেই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হইবেমহাসচিব এই ছয় মাসের খরচ বাবদ এক হাজার কোটি ডলার বরাদ্দ করিলেন

========================

তৃতীয় পর্যায়ঃ-
ছয় মাস পর বিজ্ঞানীদল তাঁহাদের রিপোর্ট দিলেন
তাহাতে লেখা ছিল
, আমরাপৃথিবীর সমস্ত দেশের সমস্ত গৃহপালিত ঘোড়াদের পরীক্ষা করিয়াছিতাহাদের মালিকদের প্রশ্ন করিয়াছিতাহাতে দেখা যায় বেশ কিছু ঘোড়ার নাম পক্ষীরাজ রাখা হইয়াছেতাহাদের কেহ কখনো উড়িতে দেখে নাই বলিয়াই জানাইয়াছেকিন্তু তাহারা এমন বলে যে এযাবতকাল কোনো ঘোড়াকেই সর্বক্ষণ নজরে রাখা যায়নাইতাই মানুষ না দেখিলে যে তাহারা ওড়ে না এমন নিশ্চিত হওয়া যায় না আপাততঃ আমাদের মনে হয় যে উড়ন্ত ঘোড়া থাকা সম্ভব নহে এমন সিদ্ধান্ত করার মত কোনো তথ্য পাওয়া যায় নাইতাই এই অনুসন্ধানে বন্য ঘোড়াদেরও সামিল করার উদ্দেশ্যে আমরা আরো এক বসর সময় ও দুই হাজার কোটি ডলার মাত্র বরাদ্দ দেওয়ার আবেদন করিতেছি

আবার সভা বসিল
  ওস্তাদেরা বলিলেন যে উড়ন্ত ঘোড়া বলিয়া কিছু নাই সিদ্ধান্ত করার জন্য পৃথিবীর সকল ঘোড়াকে পরীক্ষা করা প্রয়োজন নতুবা নিশ্চিতভাবে কিছু বলা সম্ভব নাফলে এই আবেদনও মঞ্জুর হইল
========================

চতুর্থ পর্যায়ঃ-
সময় শেষে বিজ্ঞানীদল জানাইলেন যে পৃথিবীর সকল ঘোড়াদের প্রাথমিক ভাবে পরীক্ষা করিয়া দেখা গিয়াছে যে তাহারা কেহই কখনো মানুষের সামনে ওড়ে নাইতবে তাহার অর্থ এই হয় না যে তাহারা উড়িতে পারে না এমনও হওয়া সম্ভব যে ইহাদের মধ্যেই এক বা একাধিক উড়ন্ত ঘোড়া আছে কিন্তু তাহারা ইচ্ছা করিয়াই মানুষের সামনে ওড়ে নাপরবর্তী পরীক্ষা হিসাবে এইসব ঘোড়াদের এরোপ্লেনে তুলিয়া আকাশ হইতে ফেলিয়া দেখা দরকার যে তাহারা বাধ্য হইয়া ওড়ে কিনাআবার যাহারা উড়িতে পারেই না তাহারা যাতে পড়িয়া না মরে তাহার ব্যবস্থাও রাখা আবশ্যকএই কাজের জন্য আমরা পঞ্চাশ লক্ষ কোটি ডলারর সাহায্য প্রার্থনা করিসেই সঙ্গে প্রতিটি পালিত ঘোড়ার মালিকের অনুমতি আদায় করিয়া দিতেও আবেদন করিএছাড়া বন্য ঘোড়াদের পরীক্ষায় সামিল করিতে যে সকল আইন বাধা হইয়া দাঁড়ায় সেগুলির পরিবর্তন করাও প্রয়োজন।
========================

বর্তমান অবস্থাঃ-
জাতিসঙ্ঘ
আপাততঃ এই আবেদন মঞ্জুর করা সম্ভব কিনা সেই বিষয়ে বিবেচনা করিতেছেএখনো পর্যন্ত হওয়া গবেষণায় উড়ন্ত ঘোড়া থাকা সম্ভব কিনা তাহার কোনো নিশ্চিত সিদ্ধান্ত করা যায় নাই