Menu

Show posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.

Show posts Menu

Messages - Jupiter Joyprakash

#136
মহম্মদ এই নাতিনীর বয়সী বালিকার প্রতি নজর দিলেন কেন? অনেকেরই ধারণা যে আবু-বকর এর সঙ্গে আত্মীয়তার সম্পর্ক স্থাপনের প্রয়োজন ছিল। প্রথমতঃ তো আবু বকর মহম্মদের ধর্মের প্রতি আগেই বিশ্বাস আনিয়াছিলেন এবং তাঁহাকে খোদার রসুল স্বীকার করিয়া লইয়াছিলেন, অর্থাৎ মহম্মদের বাক্যকে তিনি ঈশ্বরের বাক্য মানিতেন। কাজেই এই ধরণের ব্যক্তিগত আত্মীয়তার কোনো প্রয়োজনই ছিল না। তবুও ধরা যাক, কখনো যদি এই বিশ্বাসের সম্পর্ক দুর্বল হইয়াও পড়িত তবে তাহা মজবুত করিবার সর্বাধিক সভ্য পন্থা এই ছিল যে মহম্মদ আবুবকর এর কন্যাকে নিজ কন্যা করিয়া লইতেন, নিজহস্তে তাহার বিবাহ দিতেন, তাহার বিবাহে যৌতুক প্রদান করিয়া পিতার স্থান গ্রহণ করিতেন। কিন্তু আরববাসীরা এই প্রকার মোটাদাগের সম্পর্ক ব্যতীত আর কোনো ভদ্রসভ্য সম্পর্কের খবর রাখিত না।

"সৈয়দ আমীর আলি" লিখিয়াছেন যে আরবে কোনো নারী কেবল পত্নী সম্পর্ক ব্যতীত কোনো পরপুরুষের নিকট বাস করিতে পারিত না। মহম্মদ তাঁহার রাজনৈতিক প্রয়োজনে বাধ্য হইয়া ধারাবাহিক বিবাহ করিয়াছিলেন। আহা! প্রিয় ভারত!! পবিত্রতার নক্ষত্র ভারত!!! প্রাচীন আর্যদের প্রাচীন সভ্যতার ভারত!!!! ঔরঙ্গজেব এর পৌত্রী সফিউন্নীসাকে দুর্গাদাস আপন কন্যা হিসাবে গ্রহণ করিয়াছিলেন, গোলেদারীর আসীর শাহজ়াদী, যিনি লুটের মাল হিসাবে আসিয়াছিলেন, তাঁহাকে শিবাজী আপন কন্যা মানিতেন।

তবে ইহাও মনে রাখিতে হইবে যে আয়েশা অতি কোমল ও লঘুশরীর ছিলেন, তাই পালকী তুলিবার সময় তিনি ভিতরে আছেন কিনা তাহা বুঝিতেই পারা যায় নাই। আয়েশা সেখানেই অসহায় বসিয়া রহিলেন। এই বুঝি কেহ লইতে আসিল, এই বুঝি কেহ আসে, এই প্রতীক্ষায় প্রভাত হইয়া গেল, কেহই আসিল না। ভাগ্যক্রমে সাফবান তাহার ঊট লইয়া সেই পথে যাইতেছিল। আয়েশাকে দেখিয়াই সে চিনিতে পারিল এবং কোনো কথাবার্তায় না গিয়া আয়েশার সামনে নিজের ঊট বসাইয়া দিল। আয়েশাও একলাফে তাহাতে চড়িয়া বসিলেন। এইভাবে একরাত্রি পার করিয়া তিনি প্রিয় মহম্মদের সহিত মিলিত হইলেন।

এখন এই অবস্থায় কে কাহার মুখ বন্ধ করিত! নানাপ্রকার কথাবার্তা শুরু হইয়া গেল। ধীরে-ধীরে মহম্মদও আয়েশার প্রতি বিরক্ত হইয়া উঠিলেন। এ অবস্থায় বেচারী আয়েশা আর কোনো উপায় না দেখিয়া আপন পিতা-মাতার নিকট চলিয়া গেলেন। মাতা তাঁহাকে ভুলাইয়া রাখিবার যন্য যত্ন করিতেন, কিন্তু তাহাতে আয়েশার মনের দুঃখকষ্ট দূর হইত না।
#137
বাস্তবিক; নারীর প্রকৃত সদগুণ তাহার কুমারীত্ব। মহম্মদ কুমারীও বিবাহ করিয়াছিলেন। তাঁহার নাম আয়েশা। তিনি ছিলেন হজরত আবু-বকর এর কন্যা। আবু-বকর ও মহম্মদ বাল্যসখা ছিলেন। তাঁহাদের বয়সও ছিল প্রায় সমান; মাত্র দুই বৎসরের পার্থক্য ছিল।  মহম্মদ আবু বকর অপেক্ষা দুই বৎসরের বড় ছিলেন। আবু বকর অতি শীঘ্রই মহম্মদের প্রতি প্রশ্নহীন বিশ্বাস স্থাপন করিয়াছিলেন। আয়েশা তাঁহার প্রাণপ্রিয় ছিল। সেই সময়ে আয়েশার বয়স ৬ কি ৭ বৎসর ছিল।।
#138
আমরা উপরেই বলিয়া আসিয়াছি যে মহম্মদ ২৫ বৎসর একই পত্নীর সহিত অতিবাহিত করিয়াছিলেন, তাহাও আবার দুইবারের বিধবা। বিবাহকালে তিনি ছিলেন ৪০ বৎসরের। মৃত্যুকালে বয়স ছিল ৬৫। এই বুড়ীর সহিত যে যুবা মহম্মদ টিকিয়া ছিলেন ইহাই মহম্মদের পবিত্রতার সাক্ষ্য দেয়। অন্য সকল পুরুষকে পুণ্যের পথে উৎসাহিত করে, সমস্যায় সমাধান দেয়, বিপদে ধৈর্য বৃদ্ধি করে, হৃদয় প্রশস্ত করে, আত্মার শক্তি বৃদ্ধি করে। এখনও জগতে অনেক মানুষ আছে যাহারা নারীর সৌন্দর্যের চিত্র গ্রহণ করিয়া তাহাকে পূজনীয় দেবী বানাইয়া রাখে। পবিত্রতার মূর্তি বানাইয়া কল্পনার আকাশে উড়িয়া বেড়ায়। এই কল্পনার প্রেম তাহাদের হৃদয়ে অবোধ্য রহস্যের সৃষ্টি করে।
মহম্মদ সুন্দর স্বাস্থ্যের অধিকারী ছিলেন। কিন্তু খাদীজার ক্ষেত্রে বলিতে হয় শালী বুড়ী বয়সে বিবাহ করিয়া (মহম্মদকে) কচি মেয়ের সুখ পাইতে দিল না। ইহাতে আর এক সুফল ফলিয়াছিল। জগতের সকল নারীর চিন্তা দূর হইয়া গিয়াছিল, স্বর্গের হূর পরীর কল্পনা আসিয়া সেই স্থান পূরণ করিত। পরে মহম্মদের যখন ধারাবাহিক বিবাহ হইতে লাগিল তখন আর হূর পরীর সৌন্দর্য্য বর্ণনার মধ্যে সেই তীব্র উষ্ণতা দেখা যায় না, যাহা খাদীজার জীবিতকালে থাকিয়া থাকিয়া কোরানের আয়াতে পরিষ্ফুট হইত, সৌন্দর্য বর্ণনায় প্রধান স্থান লইত। অর্থাৎ বাহ্যিক দেহবর্ণনায় যাহা নিহিত আছে, এই প্রকার গৌরবর্ণ কুমারী বালিকা, প্রশস্ত নয়ন, উন্নত বক্ষ, ইত্যাদি।
#139
BanglaLogic / প্রশ্ন-১
May 21, 2013, 08:11:27 AM
যেখানে একটা নৌকা, গাড়ি, কারখানা নিজে নিজে সৃষ্টি হতে পারেনা। নিজে নিজে চলতেওপারে না সেখানে এত বড় বিশ্ব কিভাবে নিজে সৃষ্টি হতে বা চলতে পারে?

একটা নৌকা, গাড়ি বা কারখানা জাতীয় জটিল সিস্টেম তৈরী হয় অনেকগুলি সরল সিস্টেমকে উপযুক্তভাবে জুড়ে। যেমন কারখানার উদাহরণ দিয়েই বলা যায় যে সেটির মধ্যে বিভিন্ন অংশ আছে যেগুলোর একসাথে মিলে সেই কারখানা হয়। এই অংশগুলি কোনোটাই নিজে তৈরী হয় না, সেগুলো বানানো হয়। যারা সেগুলো বানায় তারা সেইসব অংশের ব্যাপারে জেনেই সেগুলো বানায়। এক কথায় বলতে গেলে যে জিনিসটা বানানো হয় সেটার চেয়ে যে বানায় সে অনেক বেশি জটিল। যেখানে বানানোর বস্তুটা অত্যধিক জটিল হয় সেখানেও সেটাকে বিভিন্ন অংশে ভাগ করে বানানো হয়। সব সময়েই যে বানায় সে সৃষ্ট বস্তুটার চেয়ে বেশি জটিল হয়। 
মানুষের শরীরের মতন জটিল জিনিসও কিছু কোষ দিয়ে বানানো। সেই কোষ আবার তার চেয়েও সরল অঙ্গানু দিয়ে বানানো। ইলেকট্রণ প্রোটন নিউট্রন ইত্যাদি দিয়ে পরমাণু, পরমাণু দিয়ে পদার্থ। এইভাবে বিশ্ব তৈরী। সব খানেই সরল সিস্টেম জুড়ে জটিল সিস্টেম গড়ে ওঠার ব্যাপার।


এবারে প্রশ্ন হল যে এই সরল সিস্টেমগুলো নিজেই তৈরী হতে পারে, নাকি কেউ সেটা বানিয়ে দিলে তবেই হয়?
এবার একটা সরল উদাহরণ নিয়ে শুরু করা যাক। ধরা যাক মানুষের প্রাচীন আগুন জ্বালার যন্ত্র, যা ছিল পাথরে পাথরে ঘষা দেওয়া। এটি দুই ভাবে তৈরী হতে পারে।
১) মানুষ আকস্মিকভাবে জানতে পেরেছে যে পাথরে পাথরে ঘসে আগুন জ্বলে। পরে সেটা নিজেরা ব্যবহার করেছে।
২) মানুষ আগে জেনেছে যে পাথরে পাথরে ঘষে তাপ সৃষ্টি হয়, আগুন জ্বালতে তাপের প্রয়োজন ইত্যাদি।

প্রথমটা আকস্মিকতা। হাজারবার দেখে মানুষ শিখে যেতেই পারে। কিন্তু দ্বিতীয়টা ঘটার শর্ত হল যিনি পাথরে পাথরে ঘষে আগুন জ্বালার ব্যাপারটা বুঝে সেটা বানাবেন তাঁর মানষিক জটিলতা অবশ্যই সেই যন্ত্রটির তুলনায় বেশি জটিল হবে। তাঁর চেতনা অবশ্যই সেই স্তরের হতে হবে যাতে তিনি এর মেকানিজমটা বোঝেন, সেটা বাস্তবে প্রয়োগ করার ক্ষমতা রাখেন।

বাস্তবেই দেখা যায় একটা মানুষ জন্ম থেকে যন্ত্রের মেকানিজম বোঝার মত জটিল মানসিকতা নিয়ে আসে না। এই ক্ষমতা একটু একটু করে জ্ঞান অর্জন ও তার বিশ্লেষণ করতে করতে তার ব্রেনে তৈরী হয়। সেটা হবার জন্য ছোটো থেকে অল্পে অল্পে অনেক কিছু জানার দরকার পড়ে। আবার সেইসব যন্ত্রের অংশ যিনি তৈরী করেন তাঁর জ্ঞান ও চেতনা আলাদা লাইনের। কিন্তু সামান্য একটা হাতঘড়ি বানাতে গেলে ধাতু পরিশুদ্ধ করে তা থেকে যন্ত্রাংশ বানানো লাগে, তার পর সেগুলো সঠিক ভাবে জুড়ে গোটা জিনিসটা দাঁড় করানো লাগে। এই পুরো সিস্টেমের প্রতিটি অংশ যাঁরা বাস্তবায়ন করেন তাঁরা সেই স্তরের চেতনা অর্জন করেছেন বলেই পারেন। কেউ যদি দাবী করে বসেন যে একটা হাতঘড়ি তৈরীর মতন জটিল চেতনা নিয়ে জন্মেছেন তবে সেটা হাস্যকর।

এই ধাতু বিশুদ্ধ করা থেকে শুরু করে প্রতিটি অংশই আবিষ্কার হয়েছে হয় আকশ্মিকভাবে, অথবা সচেতন গবেষণায়। সচেতন গবেষণার ক্ষেত্রে অবশ্যই আবিষ্কারক সেই স্তরের চেতনা অর্জন করেছিলেন আগের জ্ঞান হজম করে। আজ যদি কেউ একটা হাতঘড়ি বানিয়ে বলে বসে সে এটার পুরোটাই গোড়া থেকেই জানত আর বুঝত তবে সেটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। সহজ কথায়, একটা জটিল সিস্টেম গড়ে ওঠার জন্য সময় লাগে। সেটাকে বুঝে ওঠার জন্যও সময় লাগে।

কেউ যদি এখন দাবী করেন যে ইলেকট্রন, প্রোটন, নিউট্রন, কোয়ার্ক ইত্যাদির মতন কণা কোটি কোটি বছরেও আকশ্মিকভাবে সৃষ্টি হওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু তাদের জেনেবুঝে সৃষ্টি করে নির্দিষ্ট সিস্টেমে সাজিয়ে দেবার মতন চেতনা আপনা থেকেই তৈরী হওয়া সম্ভব তবে সেটা আকশ্মিক ভাবে বিশ্বসৃষ্টির চেয়েও অসম্ভব দাবী হয়ে দাঁড়ায়। এমন একটা জটিল চেতনা নিজেই তৈরী হবার চাইতে ইলেকট্রণ প্রোটন নিজেই তৈরী হওয়াটা অনেক বেশি সহজ।


জীব সৃষ্টি ও মানুষ সৃষ্টি

উপরের দাবীর মতই আস্তিকদের দাবী যে শতকোটি বছরেও মৌলিক পদার্থ এমন কোনো রাসায়নিক বিক্রিয়া করতে পারে না যাতে DNA বা RNA এর মতন জটিল অনু আকশ্মিকভাবে তৈরী হতে পারে। তৈরী হবার পরে কোটি কোটি বছরের গড়াপেটার মাধ্যমেও সে থেকে বুদ্ধিমান জীব জন্মাতে পারে বলেও তাঁরা মানতে পারেন না। কিন্তু তাঁরাই আবার দাবী করেন DNA এর মতন জটিল অনু জেনেবুঝে ডিজাইন করা ও বানানোর মতন জটিল চেতনা নিজে থেকেই থাকা সম্ভব। সেই জটিল চেতনার সৃষ্টি করার দরকার হয় না, অতি জটিল জ্ঞান লাভ করতে তাঁর কোনো সময়ও লাগে না।

শতকোটিবছর ধরে এতবড় বিশ্বে প্রতি মূহূর্তে কোনো না কোনো রাসায়নিক বিক্রিয়া চলছে। এর ফলে মৌলিক পদার্থ একটি বিশেষ সজ্জায় সজ্জিত হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম হলেও শুন্য নয়। কিন্তু সেই ডিজাইন সজ্ঞানে তৈরী করে ফেলার মতন জটিল চেতনা আপনাআপনি সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা আরো অনেক অনেক কম। তাই ঈশ্বর বলে কোনো কিছু যদি নিজেই সৃষ্টি হতে পারে তবে মহাবিশ্ব নিজে সৃষ্টি হওয়া অসম্ভব নয়।


কিন্তু আস্তিকেরা দাবী করেন যে একটা পরমাণু কখনোই নিজে তৈরী হতে পারে না, কিন্তু সর্বজ্ঞানী সর্বশক্তিমান ঈশ্বর নিজে নিজেই হয়ে যেতে পারেন। একখানা এককোষী জীব কোটি কোটি বছরেও নিজে সৃষ্টি হতে পারে না, কিন্তু ঈশ্বরের মতন একখানা রেডিমেড সিস্টেম নিজেই গজায়। অথচ বিজ্ঞানের নিতান্ত সাধারণ জ্ঞান দিয়েই এটুকু বোঝা যায় যে ঈশ্বরের মতন ১০০% পারফেক্ট কিছু নিজের থেকে তৈরী হবার চেয়ে ইলেক্ট্রণ, প্রোটণ, পরমাণূ বা এককোষী জীব সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।
#140
পুত্রী আয়েশাঃ

খাদীজার দেহত্যাগের পর তিন মাসও অতিক্রান্ত হয় নাই, মহম্মদ অনুভব করিলেন যে এ জগতে পত্নী অপেক্ষা প্রিয় আর কিছুই নাই। সমস্যা বৃদ্ধি পাইতেছিল, গৃহে কোনো আনন্দ ছিল না। মহম্মদ দ্বিতীয় পত্নীর সন্ধান আরম্ভ করিলেন। মাতা সুদা সুকরাণ এর পত্নী ছিলেন তাঁহারা স্বামী-স্ত্রী মুসলমান হইয়াছিলেন এবং এই অপরাধের জন্য ভালরকম শাস্তিও পাইয়াছিলেন। আরব নিবাসীদের জ্বালায় তাঁহাদিগকে আপন দেশ মালুফ কে বিদায় জানাইয়া বিদেশে বাস করিতে হইত। মহম্মদ যখন বিধর্মীদের সহিত সন্ধি করিয়া লইলেন ও তাহাদের মূর্তিগুলিকে মানিয়া লইলেন (আবার পরে সেই সন্ধি হইতে সমস্যা দেখিয়া প্রথমবামের কথাগুলিকে শয়তানের বার্তা বলিয়া বাতিল করিয়াছিলেন) তখন অন্য সব বিতাড়িতদের সহিত সুকরাণ ও সুদাও ফিরিয়া আসিলেন। ফিরিবার পরেই সুকরাণ এর মৃত্যু হইল। সুদা বিধবা হইলেন। তিনি সত্যের জন্য দেশত্যাগী হইয়া এত কষ্ট ভোগ করিয়াছেন তাঁহার সততার আর কি প্রমাণ প্রয়োজন! একদিকে আপন পতির প্রতি বিস্বস্ত, অন্যদিকে ধর্মের জন্য প্রাণত্যাগে প্রস্তুত, এমন পত্নী লাভ করা মহম্মদের পক্ষে যথেষ্টই কঠিন ছিল। বিধাতার আশীর্বাদে তিনি বিবাহ করিয়া লইলেন। বৃদ্ধের পক্ষে বিধবা বিবাহ করার মধ্যে সমস্যার কিছুই ছিল না। একে অন্যের প্রেমের সম্মান করিতে পারিতেন। খাদীজার স্থান আর কে লইতে পারিত! কেবল সুদাই একমাত্র আশা ছিলেন, তাহাও পুরণ হইল। গৃহ আর শুন্য রহিল না।
#141
২৫ বৎসর বয়স হইতে খাদীজা মহম্মদের রক্ষা করিয়াছেন। যতদিন তিনি মহম্মদের পত্নীরূপে জীবিতা ছিলেন ততদিন মহম্মদের মনে দ্বিতীয় বিবাহের চিন্তাও আসে নাই। আর্য্যশাস্ত্র অনুসারে গৃহস্থাশ্রমের সময়কাল ২৫ বৎসর নির্ধারিত আছে। এই সময়টি মহম্মদ বড়ই পবিত্রতার সহিত অতিবাহিত করিয়াছিলেন তাই আমরা তাঁহাকে আর্য্য গৃহস্থ বলিতে পারি।
খাদীজাকে বিবাহ করার পরিবর্তে মহম্মদ যদি তাঁহার পুত্র হওয়া স্বীকার করিয়া লইতেন তবে তাহা আর্য্যশাস্ত্রসম্মত হইত। এক মুসলমান মৌলানা সাহেব এর সহিত আলোচনাকালে যখন আমরা এই কথা কহিলাম তখন তিনি আশ্চর্য্য হইয়া কহিলেন, "হাঁ, ভাই ও হওয়া যাইত।" আমি জানাইলাম "হাঁ, হিন্দুস্তানে এমন প্রথাও আছে যে কোনো বয়স্কা মহিলার ভাই হইয়া সন্তানবৎ কর্তব্যপালন করা যায়।" সেক্ষেত্রে আমরা তাঁহাকে ভগ্নী খাদীজা বলিতে পারিতাম। তথাপি জ্ঞান, বুদ্ধি, বয়স ও অভিজ্ঞতায় তিনি মাতা খাদীজাই ছিলেন।
#142
মহম্মদ তাঁহার পয়গম্বরীর শিশুকাল খাদীজার কোলে কাটাইয়াছিলেন। সে কাহিনী যথেষ্ট দীর্ঘ। হইয়াছিল এই যে মহম্মদ নিজেকে প্রচলিত ধর্ম ও তাহার বিধি-ব্যবস্থা হইতে সম্পূর্ণ পৃথক করিয়া ফেলিয়াছিলেন এবং আপন ভক্তজনের প্রতিও সে সকল ত্যাগ করার উপদেশ প্রদান করিতেছিলেন। ইহাতে সকলে মহম্মদের বিরুদ্ধে চলিয়া যাইতেছিল এবং অনেকেই তাঁহার পরম শত্রু হইয়া উঠিয়াছিল। আরবের প্রথা ছিল ?হত্যার বদলে হত্যা?। সেখানে এক ব্যক্তি কাহাকেও হত্যা করিলে দুই বংশের মধ্যে অনন্ত শত্রুতার সৃষ্টি হইত এবং তাহারা একে অপরকে হত্যা করা ভিন্ন অন্য কোনো পথই দেখিতে পাইত না। তবে মহম্মদের জন্য বাঁচার পথ ছিল। এক তো তাঁহার পক্ষে ছিলেন ছিলেন চাচা আবু তালিব এবং অন্যজন ছিলেন খাদীজা। বালক হইতে বৃদ্ধ, সকলেই এই দুইজনকেই অতিশয় মান্য করিত। মহম্মদ সমস্যায় পড়িয়াছেন, দুঃখ পাইয়াছেন কিন্তু পত্নীভাগ্যে কখনো তাঁহার প্রাণশংসয় হয় নাই। অবশেষে মহম্মদ যখন ৪০ বৎসরের হইলেন তখন খাদীজার দেহাবসান হইল। অন্যদিকে চাচা আবু তালিবও পরলোকে প্রস্থান করিলেন। এইবার মহম্মদ অনাথ হইয়া পড়িলেন। বাধ্য হইয়া দেশত্যাগ করিয়া মদীনায় চলিয়া গেলেন।       খাদীজা যে মহম্মদের জন্য কতখানি গুরুত্বপূর্ণ ছিলেন তাহা পাঠক আশা করি বুঝিয়াছেন। পরে মহম্মদের গৃহ সর্বপ্রকার পত্নীতে ভরিয়া উঠিয়াছিল, তাঁহারা রূপে গুণে অনন্যা ছিলেন। সর্বপ্রকার আনন্দের ব্যবস্থা ছিল। শাসনক্ষমতা ছিল, অপ্রতিহত অধিকার ছিল। তথাপি মহম্মদ খাদীজাকে ভুলিতে পারেন নাই। এমন কি জীবিত আয়েশা অপেক্ষাও মৃতা খাদীজার প্রতি তাঁহার অনুরাগ অধিক ছিল।
#143
ঐশ্বরিক জ্ঞানলাভকালে মহম্মদের বড়ই কষ্ট হইত। তাঁহার মুখে ফেনা আসিত, সর্বশরীর ঘর্মাক্ত হইয়া উঠিত, এবং বহির্জগতের কোনো জ্ঞান থাকিত না। অনেকেই ধারণা করিয়াছিল ইহা মৃগি রোগের লক্ষ্ণণ। সে সময়ে মহম্মদ অসুস্থ হইয়া পড়িতেন, খাদীজাই তাঁহার সেবা করিতেন। তিনি মহম্মদের উপর কাপড় ঢাকা দিতেন ও জল ছিটাইয়া তাঁহার জ্ঞান উদ্ধার করিতেন।
#144
 :D :D :D :D :D :D :D :D :D :D
#145
মহম্মদের সাহস বৃদ্ধি পাইতেছিল। ধৈর্য্য রাখার কোনো উপায় তিনি দেখিতে পাইতেছিলেন না। এই সময়ে তাঁহার মনে চিন্তা আসিল যে আত্মহত্যা করা উচিত। এই বেদনাময় জীবন রাখিয়া কোনো ফল নাই। এইখানেই খাদীজার বয়সের সুফল পাওয়া গেল। অল্পবয়সী কেহ হইলে মহম্মদকে পাগল মনে করিয়া ত্যাগ করিত। নিজেও ভয় পাইত, অন্যদেরও ভয় দেখাইত। খাদীজা মহম্মদকে শান্ত করিলেন। মহম্মদের ধারণা হইয়াছিল তাঁহার উপর জ্বীনের জাদু পড়িয়াছে। উহা ঐশ্বরিক জ্ঞান নহে বরং শয়তানের মায়া। খাদীজা তাঁহার জ্বীনের পরীক্ষা করাইয়া বুঝাইলেন যে উহারা জ্বীন নহে, দেবদূত। তাহাদের বার্তা বিশ্বাসযোগ্য। এর পর মহম্মদ যখন কহিলেন যে তিনি হয় জগতের পরিবর্তন করিয়া দিবেন অথবা এই প্রাণ আর রাখিবেন না; তখন খাদীজা জগতের পরিবর্তন করাই উচিত বলিয়া বুঝিলেন এবং মহম্মদের এই নূতন ধর্ম, যেটি প্রচার করিতে মহম্মদ ব্যগ্র ছিলেন তাহাতে প্রথম সহায়ক হইলেন।

কসসুলম্বিয়া


অনুবাদকের মন্তব্যঃ
মহম্মদ তবে সুইসাইডের ভয় দেখিয়ে খাদীজাকে ইসলামীকরণ করেছিলেন! কেয়াবাৎ কেয়াবাৎ।
#146
নাস্তিকদের বেকুবি প্রমাণিত হতে চলেছে এই নূতন আবিষ্কারের ফলে
===================================

জগতে এমন অনেক কিছু আছে যা দেখা যায় নাঅথচ কেউ কেউ সেগুলি দেখেছে বলে দাবী করেযেমন ভূত প্রেত জ্বীন ভগবান, শয়তান ইত্যাদিঅনেকেই এইসব দেখতে পানকিন্তু বেশির ভাগ মানুষ এগুলি দেখতে পায় নাএগুলির ছবিও তোলা যায় নাতাই যাঁরা এগুলি দেখেন নাই তাঁদের মধ্যে এক দল মনে করেন এগুলি একেবারেই নাইঅন্যদলের ধারণা এনারা নিজে থেকে চাইলে তবেই এনাদের দেখা সম্ভবকিন্তু নাস্তিকেরা যে কেবল এইগুলি নাই বলেই থামে তা নয়, যারা এইসব দেখতে পান তাদের পাগল ছাড়া অন্য কিছু বলে মানতেই চায় নাঅবস্থা পালটে গেছে একটি মারাত্মক আবিষ্কারের ফলেএই আবিষ্কার না হলে আমরা কিছুতেই জানতে পারতাম না সেই রহস্য, কেন মাত্র কয়েকজন মানুষের চোখ এইসব জিনিস দেখতে পায়আজ পর্যন্ত আমরা যেসব অলৌকিক জীবের কথা শুনে এসেছি তারা হয়ত আর কিছুদিনের মধ্যেই সকলের চোখে ধরা পড়বেএকটি বিশেষ চশমা পরলেই আমরা সেইসব জিনিস দেখতে পাবো, যেগুলি দেখার সৌভাগ্য এতদিন কেবল কয়েকজন মানুষের হয়েছেসবকিছুর মূলে সেই মহান আবিষ্কারএর সবচেয়ে বড় অবদান হল এর পর আর অলৌকিক বলে কিছু থাকবে নানাস্তিক বলেও আর কিছু থাকবে নাকারণ তারা নিজের চোখেই দেখতে পাবেন ভূত ভগবান সব কিছুই

আবিষ্কারটি হল একটি নতুন ধরনের আলোকরশ্মিযেটি কোটি মানুষের মধ্যে হয়ত এক-দুই জনের চোখে ধরা পড়েএকদা যেমন অতিবেগুনী রশ্মির কথা আমরা জানতাম না সেই রকম এই রশ্মিটিও এতদিন সকলের অজ্ঞাত ছিলএতদিন আমরা যেসব অদৃশ্য জীব ইত্যাদির কথা জানতাম তারা এই রশ্মিটিতেই দেখা যায় বলে জানা গেছেএছাড়া বিভিন্ন অলৌকিক কথায় যেসব রশ্মিনির্মিত দেবতা, বা দেবদূত ইত্যাদির কথা পাওয়া যায় তারাও সম্ভবত এই রশ্মি দ্বারাই নির্মিতযার ফলে কোটিতে দু-এক জন এইসব গায়েবী জিনিসের জ্ঞান পেয়ে এসেছেন, এবং অন্যেরা তাঁদের কথা হেসে উড়িয়ে দিয়েছেএখনকার ক্যামেরাগুলিও এই রশ্মিতে ছবি তুলতে পারে নাতাই ঐসব এর ছবি তোলাও সম্ভব হয়নি

কিন্তু আর দেরি নেইরশ্মিটি যখন আবিষ্কার হয়েই গেছে তখন এর উপযুক্ত ক্যামেরা বানাতে বেশিদিন লাগব নাতারপর আমরা সকলেই দেখতে পাবো তাদের ফটো আর ভিডিওআর চশমা বের হয়ে গেলে ত কথাই নেইভূত থেকে ভগবান, সবই দেখা যাবে নিজের চোখেইঅবশ্য যদি তারা চশমা-পরা লোকের সামনে না আসে তাহলে কিছু করার নেই

আপাততঃ আসুন, আমরা সকলে অতিপেঁয়াজী রশ্মির আবিষ্কার নিয়ে চিন্তা করি
=======================
#147
আবুলের বাপ ও অলৌকিক ব্যাঙ্ক।



বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী ও উড়ন্ত ঘোড়ার আবিষ্কারক ডঃ আবুল অন্য সবার মতোই ব্যাঙ্কে টাকাকড়ি রাখেন। আবুলের বাপ ছিলেন নিতান্ত সাধারণ চাষী। পুরোনো আমলের লোক হিসেবে তিনি ব্যাঙ্ক পছন্দ করতেন না। পরে ডঃ আবুল যখন বিশ্বজোড়া নাম-ডাক পেয়ে বছরের দশমাস বিদেশে ঘুরতে লাগলেন তখন তিনিই জোর করে বাপের নামে একাউন্ট খুলিয়ে দিলেন। কিছুদিন পরেই আর কারো কোনো আপত্তি রইল না।

একদিন আবুলের বাপ গেছেন ব্যাঙ্কে টাকা তোলার জন্যে। দরজার সাইনবোর্ড দেখে তিনি বেজায় অবাক হয়ে গেলেন। ব্যাঙ্কের নামের আগে ?অলৌকিক? কথাটা জুড়ে গেছে। (মানে অলৌকিক সুইস ব্যাঙ্ক টাইপের নাম)। চিন্তা করতে করতে তিনি ভিতরে ঢুকলেন। ঢুকেই দেখেন দেয়ালে মোটা করে লেখা আছেঃ-

?টাকা তুলিতে আসা ব্যক্তিরা দাঁড়াইয়া থাকিবেন?

আবুলের বাপের চিন্তা বেজায় বেড়ে গেল। ভাবতে ভাবতে তিনি কাউন্টারের কাছে গিয়ে দেখেন সেখানে লেখা আছে
?টাকা তুলিবার জন্য তাড়া দিবেন না। সঠিক সময়ে পাইবেন।?

তার তলাতেই লেখাঃ
?টাকা গুনিয়া দেখা নিষেধ?

এমন আজব কারবার দেখে আবুলের বাপ প্রায় দিশেহারা হয়ে গেলেন। গ্রামের নিতান্ত সাধারণ মানুষ হয়ে এইসব পরিবর্তনের তিনি কোনো থই করে উঠতে পারলেন না। অবশেষে সাহস করে কাউন্টারে প্রশ্ন করলেন, ?ভাই, এসব কি হয়েছে??
কাউন্টারের ভাই গর্বিতভাবে বললেন ?সব অলৌকিক! আপনি যদি বেশি কিছু জানতে চান তবে ম্যানেজার অথবা মালিকের কাছে প্রশ্ন করুন।?

ম্যানেজার এর কামরায় গিয়ে আবুলের বাপ আরোই অবাক হলেন। ভিতরে যাওয়া মাত্রই ম্যানেজার এক আজব কায়দা করে মাথা নাড়িয়ে তাঁকে স্বাগত জানালেন। বললেন, ?বসুন। বলুন আপনার জন্য কি করতে পারি?

আবুলের বাপ- ?আপনারা এত সব নিয়ম পাল্টালেন কেন? আগের নিয়মে কি সমস্যা ছিল??
ম্যানেজার- দেখুন, আগের চেয়ে এই নিয়ম ভালো। কারণ আগের গুলো মানুষের তৈরী ছিল। এগুলো সব অলৌকিক নিয়ম।?
আবুলের বাপ- ?ব্যাঙ্কেও অলৌকিক নিয়ম??
ম্যানেজার- কেন? আপনি কি অলৌকিক বিশ্বাস করেন না? যদি বিশ্বাস করেন তবে তো এগুলো সেই অলৌকিক থেকেই এসেছে বলে আপনি মানতে বাধ্য।?
আবুলের বাপ- এই নিয়মে চলতে আমার সমস্যা আছে। আমি অন্য ব্যাঙ্ক দেখব।
ম্যানেজার- আপনি এসব কি বলছেন? আমাদের নিয়মে চলে দেখুন। এই নিয়ম আপনাদের ভালর জন্যেই তো করা হয়েছে। আপনি সেটা বুঝার চেষ্টা করছেন না কেন? আপনি এই নিয়ম মেনে চলুন, তবেই না সেটা বুঝবেন।

আবুলের বাপ এই কথা শুনে বেজায় ঘাবড়ে গেলেন। তাঁর স্বাভাবিক বুদ্ধি বলছে যে এইসব নিয়ম কোনোভাবেই অলৌকিক হতেই পারে না। কিন্তু গ্রামের মূর্খ চাষী হয়ে ম্যানেজারের সাথে তর্ক করার ক্ষমতাও তাঁর নেই। কাজেই তাঁকে টাকা তুলতে গেলে অপেক্ষা করতে হবে কখন ব্যাঙ্কের সময় হয়। তারপর সেই টাকা না গুনেই বাড়ি চলে যেতে হবে। এমন বিটকেল ব্যাঙ্কে তাঁর টাকা রাখতেই ইচ্ছা করছিল না। ফলে অগতির গতি হিসাবে তিনি মোবাইল বের করে পুত্র ডঃ আবুলের নম্বর ডায়াল করলেন। এরপর ডঃ আবুল এর সাথে ম্যানেজারের কথাবার্তা চলল।

আবুল- ম্যানেজার স্যার, আপনি ব্যাঙ্কের নিয়ম বদল করলেন বেশ কথা। কিন্তু সেই নিয়মে ভালো চলছে সেটা কিভাবে বুঝলেন?
ম্যানেজার- সার, আমনে আমাত্তে বেশি বুঝেন? আমনে কি ব্যাঙ্কিং লাইনের লোক?
আবুল- না, বেশি বুঝি না। আপনি আমাকে বোঝান ত। টাকা তোলার সময় গুণে নিলে সমস্যা কি?
ম্যানেজার- মালিক বলেছেন যে অলৌকিক ব্যাঙ্কের ভুল হতেই পারে না। তাই টাকা গুনে দেখার দরকার নেই। গুনে দেখলে যদিও বা কোনোভাবে কম হয় তবে সেটা কাস্টমারের গোনার ভুল। তাকে আবার গুনতে হবে, তাতেও না হলে আবার গুনতে হবে। যতক্ষণ না মেলে গুনতেই হবে। তাই আমরা গুনতে মানা করি।
আবুল- আর টাকা নেবার সময়ে আপনারা কি করেন?
ম্যানেজার- দেখুন, মানুষের ভুল হতেই পারে। তাই আমরা গুনে নিই।

আবুল- আচ্ছা, আপনাদের কাছে টাকা তোলার সময় দেরী করান কেন?
ম্যানেজার- দেরী করাই বললে ভুল হবে। আমরা সঠিক সময়েই সব কাজ করি। আপনি নিশ্চয় জানেন যে অলৌকিক ব্যাঙ্ক ভুল করতেই পারে না।

আবুল- আপনাদের ব্যাঙ্কে টাকা রাখলে কি কি সুবিধা আছে?
ম্যানেজার- আমাদের ব্যাঙ্ক সবার সেরা স্যার। সব রকম সুবিধা পাবেন।
আবুল- তবু দু একটা শুনি। ধরুন হাজার টাকা ডবল হয় কত বছরে?
ম্যানেজার ? সেটা স্যার সঠিক বলা যাবে না। মালিক যেটা ভাল মনে করবেন সেটাই হবে। তবে তিনি যা করবেন তাতে খারাপ কিছু হবে না এটা নিশ্চিত জানবেন। অলৌকিক ব্যাঙ্ক কোনোদিন খারাপ কিছু করতেই পারে না।

আবুল- আচ্ছা এবার শেষ প্রশ্ন। টাকা রাখার পরে কিছুই ফেরত না পাওয়া যেতে পারে কি?
ম্যানেজার- অবশ্যই তেমন সম্ভাবনা আছে স্যার। মালিক যদি মনে করেন তবে কিছুই না দিতেও পারেন।

আবুল- আচ্ছা, আপনার চেয়ে ভালো ব্যাঙ্ক নেই এটা কিভাবে জানলেন? আপনি আর কোনো ব্যাঙ্কে কাজ করেছেন?
ম্যানেজার ? অলৌকিক ব্যাঙ্ক যেকোনো মানুষের ব্যাঙ্কের থেকে ভালো। এতে সন্দেহ করার কিছু থাকতেই পারেনা। কেন অন্য ব্যাঙ্কের সাথে তুলনা করেন?

আবুল- ঠিক আছে। আপনার ব্যাঙ্ক সবার সেরা। কিন্তু আমার পছন্দ নয়। আমরা মানুষের ব্যাঙ্কেই টাকা রাখব। আপনি একাউন্ট ক্লোজ করে দিন।
ম্যানেজার- এটা তো সম্ভব নয় স্যার। কারো একাউন্ট ক্লোজ করলে অলৌকিক ব্যাঙ্কের নিয়ম ভাঙা হবে। এতে বিশ্ব অর্থনীতির সর্বনাশ হয়ে যাবে। এমনটা কিছুতেই সম্ভব নয়।

এইবার আবুলের সেই চেহারা দেখা গেল, যার জন্য আবুলের বাপ তাকে ছেলেবেলায় হারামজাদা ডাকতেন। বাঘা গলায় আবুল বললেন। শোনেন ম্যানেজার! পনের মিনিটের মধ্যে আপনি পুরো টাকা তুলে গুণে দিয়ে হিসাব বন্ধ করুন। না হলে এখান থেকে একটা ফোন করলে আপনার পিঠে যা পড়বে তার হিসেব অলৌকিক খাতায় কুলোবে না। আবুল কি জিনিস সেটা না জানা থাকলে এই সময়ের মধ্যে জেনে নিতে পারেন।

ফোন রেখে ম্যানেজার আরেকটি নম্বর ডায়াল করে সমাচার শোনালেন। আবুল কি জিনিস তা এক মিনিট শূনেই তাঁর মুখ সাদা হয়ে গেল। মাথার চুল খাড়া হয়ে উঠল। অজ্ঞান হয়ে গদাম করে চেয়ার সমেত উলটে পড়লেন ম্যানেজার। লোকজন দৌড়ে এল। মিনিট পাঁচেকের চেষ্টায় তিনি আবার উঠে চেয়ার দখল করলেন।

চেয়ারে গুছিয়ে বসেই ম্যানেজার বলনেন ?আপনি কি ভেবেছেন আমি অজ্ঞান হয়ে গেছিলাম? মোটেই না, আমি অলৌকিক মালিকের সাথে কথা কইলাম। তিনি বললেন আপনি একাউন্ট বন্ধ করতে পারেন। এতে বিশ্ব অর্থনীতির ক্ষতি যা হবে তা উনি সামলে দেবেন। আপনি প্লিজ আপনার ছেলেকে বলে দিন। আর ইয়ে, ভয় পেয়েছি বলে মনে করবেন না।।?

টাকাকড়ি বুঝে নিয়ে আবুলের বাপ বের হয়ে গেলেন। ম্যানেজার তাঁকে দরজা অবধি এগিয়ে দিয়ে কামরায় ফিরে এলেন। সেখানে বসে তাঁর চোখমুখ লাল হয়ে গেল, মাথার চুল খাড়া হয়ে গেল। রাগে গজগজ করে বলতে লাগলেন

ক্র্যাশ হোক আবুলের প্লেন। আর সে আফ্রিকার জঙ্গলে পড়ুক। নরখাদকের হাতে বন্দী হোক। তাদের আগুনে পুড়ে কাবাব হোক। তার হাড্ডি দিয়ে বাঁশি বানানো হোক। তার মুন্ডু নিয়ে জংলীরা ফুটবল খেলুক.........


আস্তে আস্তে তাঁর ভাষা আরো উন্নত হতে থাকল। এদিকে তাঁর স্টেনোগ্রাফার নোট বই বের করে সেসব লিখে নেওয়া শুরু করে দিল।
#148
পাঠ করো সেই পবিত্র পুস্তকের রচয়িতার নামে, যিনি মানুষকে ঘোড়া করেন। ইচ্ছা করলে তিনি গাধাদেরও ঘোড়া করতে পারেন। তিনি হোক বললেই সব হয়ে যায়।


তোমরা যারা সেই মহান মালিক এর অনুগত, তাদের জন্য মালিক প্রয়োজন অনুসারে ঘোড়া থেকে মানুষ এবং মানুষ থেকে ঘোড়া করে থাকেন। তিনিই মুখে লাগাম এবং চোখে ঠুলি পরানোর একমাত্র অধিকারী।


হে মহান মালিকের অনুগত বান্দারা! মালিক যখন তোমাদের জন্য মানুষকে ঘোড়া করেন তখন তার সঙ্গে ঘোড়ার মত ব্যবহার করাই তোমাদের কর্তব্য। মনে রেখো, মালিক যাকে ঘোড়া করেন সে মানুষ হলেও মানুষ নয়।


আর মালিক যদি তোমাদের মধ্য থেকে ঘোড়া তৈরী করেন তবে তোমরাও মানুষের অধিকার দাবী করার চেষ্টা করবে না। মনে রেখো, সাধারণ মানুষ অপেক্ষা মালিকের ঘোড়া অধিক মূল্যবান।


যেসব সাধারণ মানুষ উপযুক্ত সময়ে মালিকের ঘোড়া হবার ইচ্ছা প্রকাশ করে তারাই শ্রেষ্ঠ মানুষ। তাদের জন্য ইহকালে কচি ঘাস এবং পরকালে পুরোনো বোতল নিশ্চিত।


যেসব ঘোড়া মালিক প্রদত্ত লাগাম এবং জীন এর পবিত্রতা রক্ষায় জীবন অতিবাহিত করে তারাই শ্রেষ্ঠ ঘোড়া। তাদের সৌভাগ্যে তাদের সওয়ারও ধন্য হয়।


আর তোমরা মনে রেখো, মালিকের ঘোড়ার কর্তব্য কেবল লাগামের ইশারায় ছুটে চলা। আর সাধারণ মানুষের কর্তব্য হল মালিকের ঘোড়ার জন্য ঘাস কাটা। অসাধারণ মানুষেরাই কেবল ঘোড়ায় সওয়ার হতে পারে।


তোমরা পাঠ করো সেই পবিত্র পুস্তক, যাতে মালিকের ঘোড়ার মহান গুণাবলীর বিবরণ আছে। আর আছে অনুগত ঘোড়াদের জন্য কচি ঘাসের অঙ্গীকার। আর প্রার্থনা করো যাতে জগতের সমস্ত মানুষ ঘোড়া হয়।
#149
ভদ্রলোকের কারবার

অহিংসা পরম ধর্ম
যারা করে অপকর্ম
তাদের কোমল মর্ম
       ব্যথিত না করে
ছেড়ে দিয়ে মাংস আঁশ
শুদ্ধ মনে বারোমাস
বাঘ দাদা খাও ঘাস
       বলে যে পা ধরে।।

সেই জন ভদ্রলোক
চেপে রাখে দুঃখ শোক
ভরে না আগুনে চোখ
      নাক নিলে কেটে
যত হোক মনোকষ্ট
বলে না সে কথা স্পষ্ট
দুষ্টকে বলিতে দুষ্ট
       বুক যায় ফেটে।।

হও সবে ভদ্রলোক
জগৎ সুন্দর হোক
সুস্বপ্ন দেখুক চোখ
       আঁধারে বসিয়া
গান শোনো পড়ো বই
কিনে খাও পচা ঘই
নেপোয় মারুক দই
      প্রত্যহ আসিয়া।।
#150
 
শ্যাওড়া গাছে ভূতের ছানা (একটি ভৌতিক বাউল গীত)

তারে ধরি ধরি মনে করি,
ধরতে গেলে আর পেলেম না
দেখেছি শ্যাওড়া গাছে ঠ্যাং দোলানো ভূতের ছানা।

ক্যামেরা বাগিয়ে হাতে
জেগে আছি নিশুত রাতে
ছবি নেব হাতে হাতে, মিস হবেনা
ছবি তুলি তুলি মনে করি তুলতে গিয়েও আর হলনা
দেখেছি শ্যাওড়া গাছে ঠ্যাং দোলানো ভূতের ছানা
দেখেছি শ্যাওড়া গাছে ঠ্যাং দোলানো ভূতের ছানা।।

তার পানে চেয়ে চেয়ে
গাছে উঠি মই লাগিয়ে
তবু সে ফোকাস হয়ে আর আসেনা
তারে ধরিতে না পারি যদি নোবেল পাওয়া আর হবেনা
দেখেছি শ্যাওড়া গাছে ঠ্যাং দোলানো ভূতের ছানা।
দেখেছি শ্যাওড়া গাছে ঠ্যাং দোলানো ভূতের ছানা।।

পথিক কয় ভাবিস নারে
একদিন যাবিই মরে
মরে যাওয়া আটকাতে তো কেউ পারেনা
সেদিন নোবেল নাহয় নাই বা পেলি ভূতের অভাব আর রবেনা
দেখেছি শ্যাওড়া গাছে ঠ্যাং দোলানো ভূতের ছানা।
দেখেছি শ্যাওড়া গাছে ঠ্যাং দোলানো ভূতের ছানা।

তারে ধরি ধরি, মনে করি,
ধরতে গেলে আর পেলেম না