Menu

Show posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.

Show posts Menu

Messages - Jupiter Joyprakash

#106
অবিশ্বাসীরা (অমুসলিম) খায় সাতটি অন্ত্র দিয়ে
একজন (ইসলামে) বিশ্বাসী খায় একটি অন্ত্র দিয়ে
একজন অবিশ্বাসী খায় সাতটি অন্ত্র দিয়ে


প্রমাণঃ-
একদা নবী একজন অমুসলিমকে নিমন্ত্রণ করলেননবী আদেশ  দিলেন সেই অতিথির জন্য ছাগলের দুধ দুয়ে আনতেএক এক করে সাতটি ছাগলের দুধ সেই অতিথি খেয়ে ফেললেন
পরের দিন সকালে সেই ব্যক্তি ইসলাম গ্রহণ করলেনমুহম্মদ তার জন্য আবার ছাগলের দুধ আনালেনসেই ব্যক্তি একটি ছাগলের দুধ পান করলেনআরেকটি ছাগলের দুধ দুয়ে এনে দিলেও সেটি তিনি শেষ করতে পারলেন না
এর পর মুহম্মদ বললেন একজন বিশ্বাসী পান করে একটি অন্ত্র দিয়েআর একজন অবিশ্বাসী পান করে সাতটি অন্ত্র দিয়ে
এতদ্বারা প্রমাণিত হইল.........
১) কারো যদি খিদে কমে গিয়ে থাকে তবে সেরা চিতিৎসা হল (আল্লায়)অবিশ্বাসী হওয়া
২) (ইসলামে)অবিশ্বাসই দুর্ভিক্ষের প্রধান কারণ


sahih-muslim-book-023 Number 5113:
Ibn 'Umar reported Allah's Messenger (may peace be upon him) as saying that a non-Muslim eats in seven intestines whereas a Muslim eats in one intestine.

Book 23, Number 5114:
This hadith has been reported on the authority of Ibn 'Umar but with a different chain oi transmitters.

Book 23, Number 5115:
Nafi' reported that Ibn 'Umar saw a poor man. He placed food before him and he ate much. He (Ibn 'Umar) said: He should not come to me. for I heard Allah's Messenger (may peace be upon him) as saying that the non-Muslim eats in seven intestines.

Book 23, Number 5116:
Ibn 'Umar reported Allah's Messenger (may peace be upon him) as saying: A believer eats in one intestine, whereas a non-believer eats in seven intestines.

Book 23, Number 5117:
This hadith has been transmitted on the authority of Jabir.

Book 23, Number 5118:
Abu Musa reported Allah's Messenger (may peace be upon him) as saying: A believer eats in one intestine, whereas a non-believer eats in seven intestines.

Book 23, Number 5119:
This hadith has been narrated on the authority of Abu Huraira with a different chain of transmitters.

নাস্তিকেরা নিশ্চয় জানতে চাইবে এই জ্ঞান কোথা থেকে পাওয়া গেল। পরীক্ষা না করেই এসব কথা বললে তারা কখনোই বিশ্বাস করবে না। তাই তাদের জন্য বিস্তারিত দেওয়া আছে এখানে।
Book 23, Number 5120:

Abu Huraira reported that Allah's Messenger (may peace be upon him) invited a non-Muslim. Allah's Messenger (may peace be upon him) commanded that a goat be milked for him. It was milked and he drank its milk. Then the second one was milked and he drank its milk, and then the other one was milked and he drank its milk. till he drank the milk of seven goats. On the next morning he embraced Islam. And Allah's Messenger (may peace be upon him) commanded that a goat should be milked for him and he drank its milk and then another was milked but he did not finish it, whereupon Allah's Messenger (may peace be upon him) said: A believer drinks In one intestine whereas a non-believer drinks in seven intestines.
#107
রঙ্গ ২| আল্লার বান্দা বুদ্ধিমান
সুরা আল কাহাফঃ

৬৫ তারপর তাঁরা (মূসা ও তাঁর সাথী) আমাদের মধ্যে এক বান্দাকে দেখলেন যাকে আমরা করূণা ও জ্ঞান দান করেছিলাম
৬৬ মূসা তাঁকে বললেন, আমি কি আপনাকে অনুসরণ করতে পারি এই শর্তে যে আপনি আমাকে সঠিক পথ দেখাবেন?
৬৭ তিনি (সেই বান্দা) বললেন, "তুমি আমার সাথে ধৈর্য ধরে থাকতে পারবে না"
৬৮ তুমি কিভাবে সেই বিষয়ে ধৈর্য রাখবে যে ব্যাপারে তুমি কিছুই জানোনা
৬৯ তিনি (মূসা) বললেন আপনি আমাকে এখনই ধৈর্যশীল পাবেনকোনো বিষয়ে আমি আপনাকে অমান্য করব না
৭০ তিনি (সেই বান্দা) বললেন, তবে তুমি আমাকে কোনো প্রশ্ন করতে পারবে নাযদি না আমি নিজে কিছু প্রকাশ করি

৭১ তাঁরা যাত্রা করলেনপথে তাঁরা একটি নৌকায় চড়লেন তখন সেটিতে একটি ছিদ্র করে দিলেনমূসা বললেন এটি আপনি কেন করলেন? আপনি কি যাত্রীদের ডুবিয়ে দিতে চান?
৭২ তিনি বললেন, আমি কি বলি নি যে তুমি ধৈর্য ধরতে পারবে না?
৭৩ মূসা বললেন, অপরাধ নেবেন না, আমি ভুলে গিয়েছিলাম

৭৪ এর পর চলতে চলতে পথে তাঁরা একটি বালকের দেখা পেলেনতিনি সেই বালককে মেরে ফেললেনমূসা বললেন, আপনি কি একজন নির্দোষকে হত্যা করলেন না?
৭৫ তিনি বললেন "আমি কি বলিনি তুমি ধৈর্য রাখতে পারবে না?"


৮০ বালকটি সম্পর্কে- তার পিতামাতা ছিল মুমিন, আর আমরা আশঙ্কা করেছিলাম সে (বালক ) অবিশ্বাস আর বিদ্রোহ দিয়ে তাদের ব্যতিব্যস্ত করবে
৮১ তাই আমরা চেয়েছিলাম প্রভু যেন তার বদলে দেন পবিত্রতায় এর চেয়ে ভালো ও ভক্তি ভালোবাসায় পূর্ণ অন্য সন্তান



=============================
মুহম্মদের চাচা আবু তালিব কোনোকালে ইসলাম কবুল করেন নাইকিন্তু তিনি তাঁর নিজের ধর্মের বিরোধী ভাতিজার জন্য যত রকম ভাবে সম্ভব কাজ করেছেন যাতে ভাতিজা তার নিজের মত স্বাধীনভাবে প্রচার করতে পারে
অন্যদিকে আল্লার বান্দা যদি আশঙ্কা করে যে কোনো বালক ভবিষ্যতে অবিশ্বাস প্রচার করতে পারে তবে তাকে খুন করে ফেলাও সম্ভব
সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে যে সর্বগ্যানী আল্লা আবার আশঙ্কা করে। নিশ্চিত ভাবে কিছু বলতে পারে না।

এতদ্বারা প্রমাণিত হল আল্লার বান্দারা ছাড়া সকলেই বেকুব
#108
রঙ্গ ১
আল্লা বলেছে "আমি কোরান কে সহজ করে অবতীর্ণ করেছি, যাতে সকলেই তা বুঝতে পারে।"
কিন্তু মোল্লা-মৌলভীদের মতন গ্যানীরাও কোরান বুঝতে শানে-নাজুল, তাফসীর ইত্যাদী খুঁজে বেড়ায়। সবচেয়ে মজা হল, কোরানের মাথার উপরে লেখা 'আলিফ লাম মীম' এর অর্থ কেওই বোঝে না।
#109
কোরান হাদিস রঙ্গঃ
ধর্মের বাণী অতিশয় ফানি। দুচোখ খুলে পড়লে ধর্মপুস্তকের মধ্যে এতই সব হাস্যকর কথাবার্তা পাওয়া যায় যে গোপাল ভাঁড়, মোল্লা নাসিরুদ্দীন, তেনালীরামন, বীরবল ইত্যাদিরা সকলেই শিশু মনে হয়। কিন্তু সমস্যা হল এত সব হাসির কথা থাকার পরেও লোকে তা পড়ে হাসতে ভয় পায়। কারণ ঐসব পুস্তকের গোড়াতেই "হাসতে মানা" নোটিশ দেওয়া থাকে। যেরকম রেলগাড়িতে নোটিশ থাকে
বিনা টিকিটে ভ্রমণ করা অপরাধ

আর তার পরেই স্বর্গীয় আইনের অমুক তমুক ধারা উল্লেখ করে বলে দেওয়া থাকে যে এই আইন অনুসারে হাসার শাস্তি হবে তিম মাস জেল অথবা সাত বার ফাঁসি (অথবা দুইই একত্রে)।

যাঁরা এইসব আইন কানুন মেনে চলতে চান তাঁরা সাবধানে পড়বেন। হেসে ফেললে তার দায়িত্ব একান্তই আপনার।
#110

ইংরাজী ৬২৬ সনে মুহম্মদ কাবায় হজ্ব করিলেন। ইহা তাঁহার প্রথম হজ্ব ছিল। এজন্য কাবার পুরোহিতদের নিকট তিনি অনুমতি পাইয়াছিলেন। এখানেও মুহম্মদ তাঁহার কীর্তি স্থাপনের সুযোগ ত্যাগ করেন নাই।
চাচা আব্বাস এর বিধবা স্ত্রী মৈমূতা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তাঁহার বয়স ২৫ বৎসর ছিল আর সম্পর্কেও তিনি মুহম্মদের নিকটাত্মীয় ছিলেন। দেখাশুনা ঠিকভাবে করার জন্য মুহম্মদ তাঁহাকেও নিজগৃহে আনিয়া রাখিলেন। মদীনার মসজিদে যেখানে আগে নয়টি কক্ষ ছিল সেখানে আর একটি বানানো হইল।

ইহা ছিল মুহম্মদের বাস্তবিক বিবিদের কাহিনী। যেগুলিকে মুহম্মদ কুরানের বক্তব্যমতে দক্ষিণ হস্তে সংগ্রহ করিয়াছিলেন। এছাড়াও তিনি যেসব রক্ষিতা পালন করিতেন তাহারা আলাদা ছিল।

মারিয়াঃ-
ইংরাজী ৬২৮ সন এ মুহম্মদ তাঁহার গভর্ণরকে লকোকষ এর নিকট পাঠাইলেন। কিন্তু সে মুহম্মদের পয়গম্বরীতে বিশ্বাস করিত না। ফলে কিঞ্চিত তলোয়ারবাজীর দ্বারা তাহার ঈমান মজবুত করিয়া দিতে হইল। অতঃপর সে সম্পর্ক স্থাপন করিতে সম্মত হইয়া দুইখানি সুন্দরী ভেট পাঠাইল। তাহাদের একজনের নাম ছিল 'মারিয়া'। [হাদিশ মুসলিমঃ তাফসীর হুসেনী]

মসজিদের কক্ষে মুহম্মদের অন্য বিবিদের সহিত মারিয়ার স্থান হইল না। যেহেতু সে রক্ষিতা ছিল তাই তাহার জন্য আলাদা বাগানবাড়ি প্রস্তুত করা হইল। সেখানে মুহম্মদ মাঝেমধ্যে সময় কাটাইয়া যাইতেন।

মারিয়া কে লইয়া মুহম্মদের বদনাম আছে যে কুরানে কি মাগী পুষিবার ব্যবস্থা রাখা হইয়াছে? মুহম্মদের গৃহে রক্ষিতা ছিল, এ লইয়া না তাঁহার বিবিরা আপত্তি করিয়াছেন না তাঁহার অনুগত বান্দারা।
একবার কোথা হইতে তিন জন মাগী লাভ হইয়াছিল। মুহম্মদ সেগুলির এক-একটিকে শ্বসুর আবুবকর এবং উসমান এর নিকট এবং তৃতিয়টিকে জামাতা আলির নিকট ভেট পাঠাইয়াছিলেন। আজকের দুনিয়া এসব শুনিয়া ছিছি করিবেই; জামাতা-স্বশুরের সহিত এমন ব্যবহার! শাবাস মুহম্মদ!!

হিন্দুস্তানে শ্বসুরকে পিতার ন্যায় ও জামাতাকে পুত্রের ন্যায় মনে করা হয়। এমন শ্রদ্ধেয় গুরুজন এবং স্নেহের পাত্রকে মাগী পাঠানোকে কোনো ভদ্রলোকে কখনোই প্রশংসা করিতে পারিবে না, কিন্তু সেইকালে আরব দেশে এসব প্রথা চালু ছিল। তাছাড়া ফেরেস্তাগণ সাক্ষ্য দিয়া যাহাকে বৈধ করিয়া দিয়াছে তখন কে এমন কাফের আছে যে পয়গম্বরকে গিয়া বলিবে যে তুমি অবৈধ কর্ম করিতেছ!
#111
বনি মুস্তলক গোত্রের উপর আক্রমণের কথা আমরা আগে বলিয়াছি। যেখানে আয়েষা হারাইয়া গিয়াছিলেন এবং নানা বদনাম রটিয়াছিল। এই যুদ্ধে অন্য মালামালের সহিত জ়োয়েরিয়া নামের ইহুদিনীও আসিয়াছিল যাহার নিলামের সময়ে মুহম্মদ ডাকাডাকিতে দাম বাড়ানোর সুযোগ না দিয়া প্রথমেই তাহাকে কিনিয়া লইলেন (eBay তে Buy It Now এর মতো) এবং বিবি বানাইয়া ফেলিলেন। জ়োয়েরিয়া যখন মুহম্মদের গৃহে আসিল তখন তাহার সৌন্দর্য্য দেখিয়াই আয়েষা বুঝিয়াছিলেন এ আর বিদায় হইবে না, আর এক সপত্নী বাড়িয়া যাইবে। আর হইলও তাহাই।
খাইবার এও ইহুদীদের এক বসতি ছিল। সেখানেও মুহম্মদ চড়াও হইয়া দখল করিলেন। তাহাতে উহাদের সর্দার 'কনাণ' এর মৃত্যু হইল আর তাহার বিবি দখলে আসিল। মুহম্মদ তাহাকে বিবাহ করার ইচ্ছা প্রকাশ করিতে সে সম্মত হইয়া গেল। আবার মদীনায় ফিরিবার কোনো কথাই হইল না। সেখানেই মাটি ফেলিয়া দস্তরখান বানানো হইল ও খেজুর মাখন এর নিমন্ত্রণ হইয়া গেল। নূতন বিবিলে সাজাইয়া মুহম্মদ যখন কামরায় লইয়া গেলেন তখন চারিপাশে বিশ্বাসী অনুচরেরা প্রহরায় ছিল। আশঙ্কা ছিল এই বেজাতের আওরাৎ বদলা লইবার জন্য কিছু করিয়া ফেলিতে পারে। অবশ্য তেমন কিছু হয়নাই। এই বিবির কপালে এক ক্ষতচিহ্ণ ছিল। যখন মুহম্মদ তাহার কারণ জানিতে চাহিলেন তখন সে উত্তর দিল  যে আমি একরাত্রে স্বপ্নে দেখিয়াছিলাম আকাশ হইতে চাঁদ আমার কোলে পড়িতেছে। আমার পতিকে ইহা জানাইতে তাহার মনে সন্দেহ হইল। "হারামজাদী! পয়গম্বরেকে বিবাহ করার শখ হইয়াছে?" এই বলিয়া সে আমার মাথায় আঘাত করিল। সেই হইতেই এই দাগ হইয়াছে। পাঠক আশা করি সকলই বুঝিয়াছেন। যাহার অন্তরে পূর্ব হইতেই মুহম্মদের বাস, তাহার চরিত্র লইয়া আর কথা কি থাকিতে পারে! ইহার পর মুহম্মদ খাইবার হইতে মদীনায় ফিরিলেন। সেখানে আবার আবুসফিয়ার কন্যা ওস্মহবিবি কে বিবাহ করিলেন।
#112
হারেমের শোভাঃ
এতক্ষন আমরা রঙ্গিলা রসুল এর দস্তুরমত গৃহস্থজীবনের আলোচনা করিতেছিলাম, সেজন্য অন্যদের ইহার মধ্যে আসিতে দেওয়া হয়নাই। কিন্তু এইবার তাহার ব্যতিক্রম করিতে হইবে। কারণ মুহম্মদ আর যাহাদের আনিয়াছিলেন তাহারা কেবল ইহুদিনী ছিল। মুহম্মদের জিদ ধরার পরেও তাহারা ব্যাভিচারে সম্মত ছিল না। ব্যাপারখানি পাঠকের পক্ষে বুঝা কঠিন হইবে যদি না মুহম্মদের সহিত ইহুদীদের সম্পর্ক বিষয়ে কিছু বিবরণ না দেওয়া হয়। দেখা যাক!

হিজরত (দেশত্যাগ) এর পর মুহম্মদকে ইহুদীদের ধর্মের বহুরকম প্রশংসা করিয়া তাহাদের নিকট নিজ মতবাদের সার্টিফিকেট লইতে হইয়াছিল। পরে যখন তাঁহার অনুসারীদের সংখ্যা যথেষ্ট বৃদ্ধি পাইল তখন সেই ইহুদীরাই মুহম্মদের গলার কাঁটা বোধ হইতে লাগিল। অবশেষে একদিন তিনি উহাদের ঘেরাও করিয়া ফেলিতে সক্ষম হইলেন। ইহুদীরা যখন ক্ষমাপ্রার্থনা করিল তখন তিনি উহাদের কোতল করার সিদ্ধান্ত করিলেন। শত শত ইহুদী তলোয়ারে দুইখানা হইয়া গেল। একজন ইহুদিনীকেও তাঁহার আদেশে কাটিয়া ফেলা হইয়াছিল।

'রেহানা' নামের এক আওরাৎ এর প্রতি অবশ্য মেহেরবানি করা হইয়াছিল।  প্রথমেই তাহাকে আলাদা করিয়া রাখা হইয়াছিল। দেখিতে শুনিতে সুন্দর ছিল বলিয়া সে মুহম্মদের জন্য রিজার্ভ ছিল। মুহম্মদ যখন তাহাকে বিবাহের আবেদন জানাইলেন তাহা সে নামঞ্জুর করিয়া দিল। ইসলাম কবুল করার প্রস্তাবেও সে সম্মত হইল না। শেষে মুহম্মদ তাহাকে রক্ষিতা বানাইয়া রাখিলেন। অবশ্য সে বেচারী বেশিদিন জীবিত রহিল না। ভাই বেরাদরদের মৃত্যু এবং রসুলের মেহেরবানির চাপে কাঁদিয়া কাঁদিয়া মরিয়া গেল।
#113

এই দিব্যবচনের শেষ কথাটি আমার বড়ই পছন্দের। আমি নিজেও তাঁহাদের মাতা বলিয়াই মনে করি। ইহার পর আরও বলা হইল-
"হে রসুল! আপন স্ত্রী কন্যা তথা মোমিন দিগের স্ত্রীদের বলুন যে তাহারা যেন বস্ত্রের একাংশ আপ্ন দেহে জড়াইয়া রাখে, আপন দৃষ্টি সংযত করে এবং নিজ মর্যাদা রক্ষা করে। -------------

যদি এইসব নিয়ম জয়নবের গৃহে যাইবার পূর্বে প্রচলিত হইয়া যাইত তবে জয়নবের সংসার বাঁচিয়া যাইত, মুহম্মদ নিজে কলঙ্ক হইতে বাঁচিতেন। কিন্তু  পর্দা করিয়াই কি মোমিনরা তাঁহার কীর্তি হইতে নিস্তার পাইয়াছিল? মনের মধ্যে সাধুতা আনয়ন করাই অসৎ কর্মের প্রকৃত ঔষধ। মুহম্মদ যদি এই বিষয়ে যত্ন লইতেন তবে হয়ত নিজের ধর্ম ও ধর্মের অনুসারীদের প্রকৃত মঙ্গল হইত। ম্যোরসাহেব এক কাহিনী আছে, যিনি হজ্ব করিতে মক্কায় গিয়া আরবের অবস্থা স্বচক্ষে এইরূপ দেখিয়া আসিয়াছিলেন-

মহিলারা ১০-১২ খানি করিয়া বিবাহ করিত। দুই চারিটি মাত্র বিবাহ করিয়াছে এমন আওরাৎ এর সংখ্যা বেশ অল্পই ছিল। পতি বৃদ্ধ হইয়া গেলে অথবা অন্য কেহ পছন্দ হইয়া গেলেই তাহারা মক্কাশরীফে আসিয়া মামলা-খতম করিয়া লইত। পুরাতন পতিকে ত্যাগ করিয়া নূতন বিবাহ করিয়া ফেলিত। এমনই ছিল পরদার মহিমা।
#114
সেই সময়ের মুসলমানেরা কিন্তু চুপ ছিল না। ইতিহাস বলে মুহম্মদ কাজটি ভাল করেন নাই। তাঁহার আসমানী আয়াত, আল্লা, জিব্রাইল সকলের উপরেই লোকে বিরক্ত হইয়া উঠিয়াছিল। এমন নহে যে মুহম্মদ নিজের দোষ বুঝিতেন না। বরং তিনি ভালই জানিতেন যে সেদিন যদি তিনি জায়েদের গৃহে না যাইতেন এবং বেপর্দা জয়নবকে না দেখিতেন তবে এইভাবে দিন দুপুরে অন্ধকার নামিত না। যাহা হউক সে সব তো ঘটিয়াই গিয়াছিল, তাহার পর কি হইল দেখা যাক!

মুহম্মদ এইবার নিজের হারেম খানি লইয়া চিন্তায় পড়িলেন। লোকে সর্বদাই তাঁহার গৃহে আসিত। তাঁহার বিবিদের সহিত কথাবার্তা কহিত। পয়গম্বরের যাহা হইয়াছিল তাহা অন্য কোনো মুসলমানের উপরেও ঘটিয়া যাওয়া অসম্ভব ছিল না। জায়েদের বিবি জয়নব যাহা করিতে পারে  মুহম্মদের কোনো বিবিও সাহস করিয়া তেমন কিছু করিয়া ফেলিতে পারিত। ইহার ব্যবস্থা সময়মত করার প্রয়োজন ছিল। এইসব চিন্তা করিয়া মুহম্মদ শুন্যপানে তাকাইলেন এবং আল্লার দরবারের ঘন্টী বাজাইয়া দিলেন। অমনি কাজ হইয়া গেল, আয়াত নামিয়া আসিল।

হে মুমিনগণ!! রসুলের গৃহে প্রবেশ করিও না। তোমাদের যাহা জানিবার থাকে তাহা পর্দার আড়াল হইতে প্রশ্ন করিও। ইহাই তোমাদের ও তাঁহার হৃদয়ের জন্য সর্বোত্তম। আর তোমাদের জন্য কখনোই উচিত নয় যে তোমরা রসুলের মনে দুঃখ দাও বা তাঁহার মৃত্যুর পর তাঁহার বিবিদের সহিত বিবাহ করো। রসুলের বিবিরা তোমাদের মাতা।



হে মুমিনগণ! তোমাদেরকে অনুমতি দেয়া না হলে তোমরা খাওয়ার জন্য আহার্য রন্ধনের অপেক্ষা না করে নবীর গৃহে প্রবেশ করো না। তবে তোমরা আহুত হলে প্রবেশ করো, তবে অতঃপর খাওয়া শেষে আপনা আপনি চলে যেয়ো, কথাবার্তায় মশগুল হয়ে যেয়ো না। নিশ্চয় এটা নবীর জন্য কষ্টদায়ক। তিনি তোমাদের কাছে সংকোচ বোধ করেন; কিন্তু আল্লাহ সত্যকথা বলতে সংকোচ করেন না। তোমরা তাঁর পত্নীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্যে এবং তাঁদের অন্তরের জন্যে অধিকতর পবিত্রতার কারণ। আল্লাহর রাসূলকে কষ্ট দেয়া এবং তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর পত্নীগণকে বিবাহ করা তোমাদের জন্য বৈধ নয়। আল্লাহর কাছে এটা গুরুতর অপরাধ।
 
O you who believe! Enter not the Prophet's houses, except when leave is given to you for a meal, (and then) not (so early as) to wait for its preparation. But when you are invited, enter, and when you have taken your meal, disperse, without sitting for a talk. Verily, such (behaviour) annoys the Prophet, and he is shy of (asking) you (to go), but Allâh is not shy of (telling you) the truth. And when you ask (his wives) for anything you want, ask them from behind a screen, that is purer for your hearts and for their hearts. And it is not (right) for you that you should annoy Allâh's Messenger, nor that you should ever marry his wives after him (his death). Verily! With Allâh that shall be an enormity.

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَدْخُلُوا بُيُوتَ النَّبِيِّ إِلَّا أَن يُؤْذَنَ لَكُمْ إِلَى طَعَامٍ غَيْرَ نَاظِرِينَ إِنَاهُ وَلَكِنْ إِذَا دُعِيتُمْ فَادْخُلُوا فَإِذَا طَعِمْتُمْ فَانتَشِرُوا وَلَا مُسْتَأْنِسِينَ لِحَدِيثٍ إِنَّ ذَلِكُمْ كَانَ يُؤْذِي النَّبِيَّ فَيَسْتَحْيِي مِنكُمْ وَاللَّهُ لَا يَسْتَحْيِي مِنَ الْحَقِّ وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِن وَرَاء حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ وَمَا كَانَ لَكُمْ أَن تُؤْذُوا رَسُولَ اللَّهِ وَلَا أَن تَنكِحُوا أَزْوَاجَهُ مِن بَعْدِهِ أَبَدًا إِنَّ ذَلِكُمْ كَانَ عِندَ اللَّهِ عَظِيمًا
তোমরা খোলাখুলি কিছু বল অথবা গোপন রাখ, আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সর্বজ্ঞ।
 
Whether you reveal anything or conceal it, verily, Allâh is Ever All­Knower of everything.

إِن تُبْدُوا شَيْئًا أَوْ تُخْفُوهُ فَإِنَّ اللَّهَ كَانَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمًا
নবী-পত্নীগণের জন্যে তাঁদের পিতা, পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নি পুত্র, সহধর্মিনী নারী এবং অধিকার ভুক্ত দাসদাসীগণের সামনে যাওয়ার ব্যাপারে গোনাহ নেই। নবী-পত্নীগণ, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ সর্ব বিষয় প্রত্যক্ষ করেন।
 
It is no sin on them (the Prophet's wives, if they appear unveiled) before their fathers, or their sons, or their brothers, or their brother's sons, or the sons of their sisters, or their own (believing) women, or their (female) slaves, and keep your duty to Allâh. Verily, Allâh is Ever All­Witness over everything.

  لَّا جُنَاحَ عَلَيْهِنَّ فِي آبَائِهِنَّ وَلَا أَبْنَائِهِنَّ وَلَا إِخْوَانِهِنَّ وَلَا أَبْنَاء إِخْوَانِهِنَّ وَلَا أَبْنَاء أَخَوَاتِهِنَّ وَلَا نِسَائِهِنَّ وَلَا مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ وَاتَّقِينَ اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ شَهِيدًا
#115
এসব কথা এইজন্য লিখিত হইল যাহাতে মুহম্মদের অন্তরমন সম্পর্কে পাঠক জ্ঞানলাভ করিতে পারেন। জয়নবকে বিবাহ করিতে মুহম্মদ মুখে অস্বীকার করিয়াছিলেন বটে, কিন্তু অন্তরে প্রেমের আগুন জ্বলিয়া উঠিয়াছিল। এমনও বলিতে পারেন যে অগ্নি সর্বদাই জ্বলিয়া থাকিত। তাহাই ঈশ্বরের বাণীরূপে প্রকাশিত হইয়া গেল। আর তারপর মুহম্মদ জয়নবের নিকট বার্তা পাঠাইলেন-
"আল্লাহ তোমাকে আমার সহিত মিলাইয়া দিয়াছেন। তাই আর বিবাহের কোনো প্রয়োজন নাই।"

আল্লা যেখানে মনের মিলন করিয়া দিয়াছেন সেখানে মৌলভী-কাজী দের নাক গলাইয়া বিবাহ দেওয়া নিরর্থক। তাই আরো বলা হইল-
"আল্লাহ স্বয়ং বিবাহ দিয়াছেন এবং জিব্রাইল তাহার সাক্ষী" [তাফসীর হুসনী আয়াত মজকর খূরা জমকুর], "আর বিবাহের জন্য এই দুটি ছাড়া অন্য কি প্রয়োজন?"

রঙ্গীলা রসুল এর এই কাহিনী বড়ই বিচিত্র। পুত্র পুত্র রহিল না, পুত্রবধু পুত্রবধু রহিল না।

পাঠক এইবার বুঝিতে পারিবেন কেন মুহম্মদ কাহারো সহিত মাতা, কন্যা অথবা ভগ্নী পাতাইতে ইচ্ছুক ছিলেন না। যেখানে পাতানো পুত্রেরই সহিত সম্পর্ক রহিল না, যেখানে তাহার বিবিও মুহম্মদের জন্য হালাল হইয়া গেল, সেখানে পাতানো মাতা-কন্যা-ভগ্নীরা কিভাবে নিস্তার পাইত?
#116
জায়েদ যখন গৃহে ফিরিয়া আসিল, জয়নাব তাহাকে ঘটনা জানাইয়া দিল। ইহার পর যাহা হইল তাহাকে আপনারা মুহম্মদের বিবাহের কথাবার্তা বুঝিবেন কিনা তাহা আপনাদের ব্যাপার। কিম্বা হয়ত জায়েদ জয়নবের উপর পূর্বেই চটিয়া ছিল। যাহাই হউক সে এক দৌড়ে মুহম্মদের নিকট গিয়া হাজির হইল আর নিজের বিবিটিকে যাহাকে দেখিয়া মুহম্মদ মুগ্ধ হইয়াছিলেন তাহাকে তালাক দিবার প্রস্তাব করিল। কিন্তু মুহম্মদ তাহাকে বুঝাইয়া কহিলেন, "সুখে শান্তিতে সংসার করো"। কিন্তু যে বিবি অন্যের দিকে টান দেখাইতেছে তাহাকে লইয়া সংসার করার ইচ্ছা জায়েদ এর ছিল না। সে জয়নবকে তালাক দিয়াই ফেলিল। আর জয়নব তখন মুহম্মদের খিদমতের আশায় তাঁহার পিছনে লাগিয়া গেল। বদনামের ভয়ে মুহম্মদ ইহাতে সম্মত হইতে পারিতেছিলেন না। সেই সময়েই ঐশ্বরিক বাণী আসিয়া সমস্ত সমস্যার সমাধান করিয়া দিল।

আল্লা মনুষ্যকে দুইটি হৃদয় দেন নাই তেমনই পোষ্যপুত্রকে তোমার পুত্রও করেন নাই। যাহা তুমি বলিয়াছ তাহা তোমার মুখের কথা মাত্র, কিন্তু আল্লাহ প্রকৃত সত্য জানেন ও সঠিক পথ প্রদর্শন করেন। তিনি ইচ্ছা করেন যে মনুষ্য তাহার প্রকৃত পিতার নামেই পরিচিত হঊক। আর যখন তুমি বলিয়াছ "বিবি লইয়া সুখে সংসার করো" তখন তুমি সত্য গোপন করিয়াছ যে সত্য প্রকাশ করাই আল্লার ইচ্ছা ছিল। ভয় করিয়ো না, জায়েদ যখন তালাক দিয়াছে তখনই আমরা মুহম্মদের সহিত বিবাহ দিয়াছি, যাহাতে মোমিনেরা তাহাদের পোষ্যপুত্রের বিবিকে বিবাহ করিতে পারে। নিয়ম অনুযায়ী তালাক সম্পন্ন হইয়া গিয়াছে এবং আল্লার ইচ্ছা অবশ্যই পূর্ণ হইবে।

-- সুরা আখরাব ৫ --

মুহম্মদ তোমাদের কাহারও পিতা নহেন তিনি আল্লার রসুল এবং "খাতিমুল্মরসলীম"। আর আল্লা সবকিছু অবগত।
#117
পুত্রবধু সমাচার

আমরা আগেই বলিয়াছি যে জ়ায়েদ নামে খাদীজার এক ঈশাঈ গোলাম ছিল। সে মুহম্মদের ধর্মীয় ও মানসিক সমস্যায় নানাভাবে সমাধান করিত। এজন্য উহার প্রতি মুহম্মদের বিশেষ প্রীতি ছিল। খাদীজা এই গোলামটি মুহম্মদকে দান করিয়াছিলেন এবং মুহম্মদ তাহাকে নিজের পুত্র বানাইয়া লইয়াছিলেন। জ়ায়েদ ও মুহম্মদকে অত্যধিক ভালবাসিত। একবার তাহার আপন পিতা তাহাকে লইতে আসিলে সে যাইতে সটান অস্বীকার করিয়াছিল। মুহম্মদ রসুলও ছিলেন আবার বাপও ছিলেন, সে শুধুই বাপের নিকট থাকিয়া কি করিত! উহার প্রথম বিবাহ "উম্মেমন" এর সহিত হইয়াছিল, যাহার বয়স ছিল জ়ায়েদ এর দ্বিগুণ। কিন্তু বাপ মুহম্মদ পাত্রীটি পছন্দ করিয়াছিলেন ফলে বাধ্য হইয়া তাহাকে বিবাহ করিতে হইয়াছিল। তাহাদের একটি পুত্র জন্মাইয়াছিল। তাহার নাম ছিল "ওসামা"। জ়ায়েদ এর দ্বিতীয় বিবাহ হয় জয়নব এর সহিত। জয়নব কুরেশী বংশের ছিল এবং মুহম্মদের পিস্তুতো সম্পর্কের ভগ্নী ছিল। একদিন মুহম্মদ জ়ায়েদ এর অবর্তমানে তাহার ঘরে গিয়া পড়িলেন। জয়নব পর্দার আড়াল হইতে রসুলের (আবার শ্বসুরও বটে) গলা পাইয়া তাড়াতাড়ি আসিয়া তাঁহাকে ভিতরে ডাকিল। মুহম্মদের নজর তাহার সুন্দর চেহারায় পড়িল। আর কি বাকি থাকে? তাঁহার দিলের মধ্যে কারেন্ট লাগিয়া গেল আর মুখে বাহির হইল- "সোভান-আল্লা! তোমার সৃষ্টি কতই না সুন্দর!"
জয়নব তাহা শুনিয়া ফেলিল এবং মনে মনে পয়গম্বরের হৃদয় জয় করিয়া খুশী হইয়া উঠিল। জায়েদকে সম্ভবতঃ তাহার পছন্দ ছিল না। যতই মুহম্মদের পুত্রতুল্য হোক না কেন, আসলে তো ছিল সে গোলামই!
#118
রাঃ আঃ সৈয়দ আমীর আলি ফরমাইয়াছেন যে এইসব বিধবারা, যাহাদের মুহম্মদের বিবি হইয়া অহঙ্কার হইয়াছিল তাঁহারা অসহায় ছিলেন। তাঁহাদের পতি ইসলামের সেবা করিতে করিতে শহীদ হইয়া গিয়াছিলেন। তাঁহাদের যাহাতে গিন গুজরাণ হইতে পারে তাহার ব্যবস্থা করা মুহম্মদের কর্তব্য ছিল। কার্য্যটি জরুরী ছিল বটে, কিন্তু তাঁহার নিজের দিন গুজরানেই প্রথম হইতে টানাটানি চলিত। তাহার উপর তিনি নিজের রুজিরুটির উপর নূতন বোঝা চাপাইয়া খরচের বহর আরো বাড়াইয়া ফেলিলেন। অন্যদিকে আমদানী সেই আগের মতই রহিল। এক এক দেশের এক এক রেওয়াজ। হয়ত হজরৎ আমীর আলির কথাই সত্য। আরব দেশে মুহম্মদের সময়ে কোনো নারী অন্য পুরুষের নিকট কেবল পত্নী হিসাবেই থাকিতে পারিত। নতুবা হিন্দুস্থানের প্রথা তো এই যে ধর্মাত্মারা পরনারীকে ধর্মভগ্নী বানাইয়া লইতেন। ইহাতে তাহাদেরও দিনাতিপাতের উপায় হইয়া যাইত আবার ধর্মরক্ষাও হইত। হয়ত সমস্ত মুসলমানের মধ্যে বিধবাদের পালনকর্তা আর কেহই ছিল না। হয়ত কোনো কুমার অথবা বিপত্নীক ঐসব বিধবাদিগকে বিবাহ করিতে প্রস্তুত ছিল না। দয়ার সাগর একমাত্র মুহম্মদই ছিলেন। আমাদের তুচ্ছ বুদ্ধিতে তো মুহম্মদ তাহাদিগকে ধর্মভগ্নী মানিয়া লইলেও কাজ চলিত। অথবা যদি বিবাহই দিতে হয় তবে কোনো কুমারের সহিত দেওয়া যাইত। আপন আপন ধর্মের ব্যাপার, হয়ত মুহম্মদের এই পথই ভাল বোধ হইয়াছিল যে বিবিতে গৃহ পরিপূর্ণ কইয়া লইবেন। ৬০ বৎসরের বৃদ্ধ আর ৫-৫ জন বিবি! যাহা হউক, বিবি লইয়া কামকাজ নিশ্চয় ভালই চলিত। দিন-রাত মৌজেই কাটিত। বৃদ্ধের তরুণী ভার্যা চিরকালীন ঘটনা।
#119
আবু সাল্লামা প্রথম দিকের মুসলমান দের মধ্যে ছিলেন। "হবস" হিজরতের সময়ে তাঁহাকে আরব ছাড়িতে হইয়াছিল। পরে মুহম্মদ যখন মদীনায় ডেরা পাতিলেন তখন তিনিও সেখানে ফিরিয়া আসিলেন। 'ঊহুদ' এর যুদ্ধে তিনি আহত হইয়াছিলেন কিন্তু প্রায় সুস্থও হইয়া উঠিয়াছিলেন। যখন "বনি-সাদ" গোত্রের উপর মুসলিমেরা চড়াও হইল তখন তাঁহাকে সেনাপতি বানানো হইয়াছিল। দুর্বল শরীর লইয়া যুদ্ধ করিতে গিয়া তিনি পরলোক প্রাপ্ত হইলেন। আপন আত্মীয়দের প্রতি মুহম্মদের সহানুভূতি ছিল, তিনি উহার বিধবা 'হিন্দ' এর নিকট যাতায়াত করিতেন। বৃদ্ধা হইলেও হিন্দ সুন্দরী ছিলেন। মুহম্মদ তাহাকে শাদী করিবার ইচ্ছা প্রকাশ করিলেন তখন তিনি বৃদ্ধ হইবার বাহানা দেখাইয়াছিলেন। কিন্তু মুহম্মদ কহিলেন "আমারও কিছু কম বয়স হয়নাই।" ইহার পর হিন্দ তাঁহার বালবাচ্চার কথা তুলিলে মুহম্মদ তাহাদেরও দায়িত্ব লইতে সম্মত হইয়া গেলেন এবং বুড়ীকে রাজী করাইয়া ঘরে আনিলেন। মদীনা মসজিদের সংলগ্ন ৫ কুঠুরী গৃহ সে সময়ে নির্মিত হইয়াই গিয়াছিল। এক এক কামরায় মুহম্মদের এক এক বিবি থাকিতেন। মুহম্মদ পালাক্রমে এক-এক রাত, এক-এক দিন এক এক বিবির সহিত কাটাইতেন। শেষ কামরাখানি ছিল হারিশ এর। যখনই মুহম্মদের ঘরে কোনো নূতন বিবি আসিতেন, তাঁহাকে হারিশ এর কামরায় তোলা হইত। হারিশ এর জন্য নূতন কুঠুরী বানাইয়া দেওয়া পড়িত। সে বেচারী চুপচাপ আলাদা ব্যবস্থা করিয়া লইত। একবার মুহম্মদ স্বয়ং লজ্জিত হইয়া বলিয়াছিলেন "হারিশ কি বলিবে!"।
#120
সদা সোহাগিনী


আবু বকর যেমন হজ়রৎ মুহম্মদ সাহেবের দক্ষিণ হস্তস্বরূপ ছিলেন তেমনই মোহম্মদ ওমর ছিলেন বাম হাত। আবুবকর এর ন্যায় তিনি সহজে মুসলিম হইতে স্বীকার করেন নাই, কিন্তু যখন হইলেন তখন পূর্ণ বিশ্বাসের সহিতই হইলেন। এই ধর্মের জন্য প্রাণ পর্যন্ত ত্যাগ করিতে প্রস্তুত ছিলেন।

আবু বকর উদার মনের বুদ্ধিমান ব্যক্তি ছিলেন। অন্যদিকে ওমর অধিক আবেগপ্রবণ ছিলেন। সহজেই তাঁহার মাথাটি গরম হইয়া যাইত। সেই সময়ে তাঁহাকে সামলানো বড় সহজ ছিল না। তাঁহার কন্যা "হাফসা" পিতার নিকট হইতে এই গুণটি লাভ করিয়াছিলেন। তিনিও কাহারো কথা কানে তুলিতে অভ্যস্ত ছিলেন না। 'খানীস' এর সহিত তাঁহার বিবাহ হইয়াছিল যিনি যুদ্ধে (গিজ়বাবদর) নিহত হইয়াছিলেন। বেশ কিছুদিন বিধবা থাকার পরও কোনো মুসলমান তাঁহাকে বিবাহ করিতে প্রস্তুত হইল না। তখন ওমর প্রথমে আবুবকর এর সহিত তাঁহার বিবাহের প্রস্তাব করিলেন কিন্তু আবুবকর রাজী হইলেন না। ওমর তখন ওসমান কে অনুরোধ করিলেন, কিন্তু তিনিও সম্মত হইলেন না। কারণ হাফসা কে সামলানো কোনো সামান্য ব্যাপার ছিল না। ইহাতে ওমর এর মাথা গরম হইয়া গেল আর তিনি মহম্মদের নিকট হাফসা কে বিবাহ করার প্রস্তাব লইয়া গেলেন। মুহম্মদ মেহেরবানি করিয়া তাহাকে আপন স্ত্রী হিসাবে মঞ্জুর করিয়া লইলেন। এইভাবে আবুবকরের সহিত যেমন আত্মীয়তা ছিল, ওমরের সহিতও সেইরূপ হইল। দুইজনেই পরম বিশ্বস্তভাবে ইসলামের প্রচারে আত্মনিয়োগ করিলেন এবং আপন কন্যাদের সুবাদে মুহম্মদের গুরুজন হইয়া গেলেন। এই রকমই বদর যুদ্ধের আর এক শহীদ উবাইদা-র স্ত্রী ছিল জৈনব। সম্পর্কে উবাইদা
মুহম্মদের ভাই ছিলেন। (আল-মুত্তালিব বংশের সন্তান।) তাঁহার বিধবা পত্নীর সহিতও মুহম্মদ শাদী করিয়া লইলেন। জৈনব বড়ই সুন্দর শরীর-স্বাস্থ্য পাইয়াছিলেন এজন্য তাঁহাকে "আম্মুল্মসাকীন" বলা হইত।