মন্ত্রের জন্মকথা (History of MANTRA)

Started by Jupiter Joyprakash, May 03, 2013, 04:24:08 PM

Previous topic - Next topic

0 Members and 1 Guest are viewing this topic.

Jupiter Joyprakash

মন্ত্রের জন্মকথা

একটি জীবনদায়ী শিক্ষনীয় বিষয়। পাখি পড়া করিয়া শিখিয়া নিন।

একদা কোনো এক সময়ে এক সাধু বনে গিয়াছিলেন। বনের ধারে থাকিয়া তিনি ঈশ্বরচিন্তা করিয়া ভালই ছিলেন। কিন্তু শীঘ্রই এক সমস্যা দেখা দিল। এক পক্ষী শিকারী সেই বনে আসিয়া জাল পাতা শুরু করিল। জাল পাতিয়া তাহার উপর চালের দানা ছড়াইয়া সে চলিয়া গেল। অবোধ পক্ষীগণ মনের আনন্দে নাচিতে নাচিতে আসিয়া চাল খাইতে লাগিল আর জালে পড়িতে লাগিল। তারপর শিকারীর খাঁচায় ঢুকিয়া তাহারা কোথায় যাইতে লাগিল তাহা সাধু জানিতে পারিলেন না।
সাধুর মনে বড়ই দুঃখ হইল। তিনি নিজে সংসারের বন্ধন হইতে মুক্তির তপস্যা করিবেন, আর তাঁহার চক্ষের সমুখে স্বাধীন পক্ষীরা বন্ধনে আবদ্ধ হইবে ইহা তাঁহার নিতান্তই স্বার্থপরতা মনে হইল। তিনি অনেক ভাবিয়া বুঝিলেন যে পক্ষীরা বেকুব বলিয়াই এমন জালে জড়াইয়া যায়। তাই তিনি পক্ষীদের কিছু শিক্ষা দিবার ব্যবস্থা করিলেন।
তিনি দেখিলেন যে অধিকাংশ পক্ষীরা সারাদিন গান গাহিয়া বেড়ায়। এবং যাহারা গান গাহিয়া বেড়ায় শিকারীর নজর তাহাদের উপরেই বেশি। তাই তিনি তাঁহার শিক্ষার বিষয়বস্তুকে ছন্দোবদ্ধ রূপ দিয়া গাহিবার উপযোগী করিয়া শিক্ষা দিবার ব্যবস্থা করিলেন। অতঃপর কয়েকটি গায়ক পক্ষীকে ডাকিয়া তিনি সেই গীতটি তাহাদের মুখস্ত করাইলেন। পক্ষীরা সহজেই তাহা মুখস্ত করিয়া লইল। তাহার পর সাধু বলিলেন, ?তোমরা অন্য সকল গীত পরিত্যাগ করিয়া এই গীতটি গাহিতে থাক। অন্য পক্ষীদের মধ্যে এই গীতটি প্রচার কর ও তাহাদেরও অন্য সব গীত ত্যাগ করিয়া এইটিই গাহিতে বল। তাহাদের জানাইয়া দাও যে আমার আদেশমত করিলে তাহারা শিকারীর খাঁচা হইতে পরিত্রাণ পাইবে। আর এইরূপ না করিলে তাহারা অচিরেই বিনাশ প্রাপ্ত হইবে।?

কিছুক্ষণের মধ্যেই সমগ্র বনভূমি সেই একমাত্র গানে ভরিয়া উঠিল। নূতন পক্ষীরাও ভয়েডরে আসিয়া মাত্র দুই লাইনের গাণটি শুনিতে ও শিখিতে লাগিল। তাহার পর তাহারাও গলা ছাড়িয়া কীর্তন ও প্রচার করিতে লাগিল। এই গাণ শিখিলে ও গাহিলে শিকারীর খাঁচা হইতে ভয় থাকিবে না শুনিয়া কেহই আর শিখিতে বাকি রাখিল না। এমন সময়ে শিকারী আসিয়া প্রতিদিনের মত জাল পাতিতে বনে ঢুকিল। সাধু দেখিলেন আর মুচকি হাসিলেন। শিকারী পক্ষীদের ভাষা বুঝে না। সে কিছুই জানিল না। জাল পাতা ও চাল ছড়ানো শেষ করিয়া সে চলিয়া গেল। সাধু তাহার চলিয়া যাওয়া দেখিয়া আবার হাসিলেন।
সন্ধ্যার সময় শিকারী আবার আসিয়া বনে ঢুকিল। কিছুক্ষণ বাদে গোটাকয় পক্ষী খাঁচায় করিয়া লইয়া আসিল। সাধু চমকিত হইয়া তাড়াতাড়ি দেখিতে গেলেন। কাছে গিয়া শুনিলেন পক্ষীরা শিকারীর খাঁচা হইতে পরিত্রাণ পাওয়ার আশায় সেই শেখানো গীতটি দাঁড়িকমা ভুলিয়া চিৎকার করিয়া গাহিয়া চলিতেছে।

জালের উপর চালের দানা
ভুলেও খেতে কেউ যাবনা

জালের উপর চালের দানা
ভুলেও খেতে কেউ যাবনা

জালের উপর চালের দানা
ভুলেও খেতে কেউ যাবনা

জালের উপর চালের দানা
ভুলেও খেতে কেউ যাবনা

জালের উপর চালের দানা
ভুলেও খেতে কেউ যাবনা

আসুন আমরাও বলিঃ-
জালের উপর চালের দানা
ভুলেও খেতে কেউ যাবনা