The spaceship of Ezekiel in Bengali

Started by Jupiter Joyprakash, October 22, 2013, 11:33:18 AM

Previous topic - Next topic

0 Members and 1 Guest are viewing this topic.

Jupiter Joyprakash

No doubt. But there is no new idea in place of it.

Jupiter Joyprakash

যানের ভেতর থেকে একটি যান্ত্রিক হস্ত লোহিততপ্ত একটি যন্ত্রাংশ বের করে নিরাপত্তা পোষাক পরিহিত লোকটির হাতে দিতে সে তৎক্ষণাৎ চলে গেল।

সব দিক থেকেই মনে হয়, ব্যাপারটা বেশ ঘোরালো গোছের, কারণ অধিনায়ক বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করেছিলেন, অন্ততঃ নিজের জন্যেও। এদিকে দেখি, তাঁর চালক-কোষটিকে নিজের কাছে আনিয়েছেন, দূর-নিয়ন্ত্রণের সাহায্যে, উদ্দ্যেশ্য, হঠাৎ প্রয়োজনে যাতে অবিলম্বে নিজেকে সরিয়ে নিতে পারেন নিরাপদ দূরত্বে, আর একদিকে বুঝতে পারি, আরো একটি মহাকাশযান কাছাকাছি অপেক্ষমান ছিল, প্রয়োজনে সেও তুলে নিয়ে যেতে পারতো অধিনায়ককে।

যাইহোক, পূর্বপ্রস্তুতির সুব্যবস্থার গুণে অঘটন কিছু ঘটেনি। অধিনায়ক তাঁর কোষ নিয়ে মহাকাশযানে ফিরে গেছেন, গিয়েই চালু করেছেন সে যানকে, বহিঃপ্রাঙ্গণে যাবার জন্যে। ইজেকিয়েল তাঁর কাছে নীত হয়েছেন, আদেশও গ্রহণ করেছেন, তারপর দেখেছেন, সে মহাকাশযানের উৎক্ষেপণ এবং উড্ডয়ন, শেষে দ্বিতীয় যানটি তাঁকে নিয়ে গেছে তাঁর স্বজন-প্রতিবেশীর কাছে। প্রসঙ্গতঃ তাঁর প্রথম উড্ডয়নের ধাক্কা ইতিমধ্যে সামলে উঠেছেন এবং দ্বিতীয় উড্ডয়ন তাঁকে দিয়েছে বিস্ময়কর উপভোগ্য অভিজ্ঞতা।

তারপর প্রায় উনিশ বছর কেটে গেছে। এই দীর্ঘকালের ভেতর ইজেকিয়েল আর একবারও কোন মহাকাশযানের কথা উচ্চারণ করেননি।

তারপর হঠাৎ একদিন অধিনায়ক আবার এসে তুলে নিয়ে গেছেন কোন মন্দিরে। সে মন্দির ছিল বহু উচ্চ কোন স্থানে। এই ঘটনা যে পূর্ব-পরিকল্পিত, তা বোঝা যায়, অবতরণক্ষেত্রে ইজেকিয়েলের জন্যে অপেক্ষমান একটি লোককে দেখে। তৃতীয় ঘটনার মত এবারও লোকটির চালচলন, চেহারা, কথাবার্তা, কোন কিছুতেই অস্বাভাবিক কিছু দেখতে পাননি, তাই তার কোন উল্লেখও করেননি। তার পোষাকটা অবশ্য তাঁর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তার পোষাকের গা যেন ব্রঞ্জের মত বা সোনার মত চকচকে, সেই প্রথম দর্শনের দিনে দেখা অধিনায়েকর পরিধেয়ের মত, যার ঔজ্জ্বল্যের বর্ণনায় বলেছিলেন, অগ্নিশিখার মত।

অপেক্ষমান লোকটির হাতে দুটি বস্তু, যার একটিকে মনে হয়েছে শনের দড়ি, আর একটিকে মাপকাঠি। লোকটি বারে-বারে ইজেকিয়েলকে বলেছে যে তাঁকে সেখানে আনা হয়েছে সব দেখাবার জন্যে, বলেছে তাঁকে যা দেখানো হবে, তা যেন তিনি খুব ভালো করে মনে রাখেন।

ইজেকিয়েলকে সে নিয়ে চললো মন্দিরের বিশাল প্রাঙ্গণের ভেতর দিয়ে। তার নিখুঁত বর্ণনা রেখে গেছেন তিনি। খানিক পরে, যে বিমানে তিনি এসেছিলেন, সে-বিমান মন্দিরের সামনের অবতরণক্ষেত্র থেকে উড়ে গিয়ে ভেতরের প্রাঙ্গণে নাবলো। তাঁর প্রদর্শক এবং রক্ষী লোকটি তাঁকেও সেখানে নিয়ে গেল। তারপর, যতক্ষণ অধিনায়ক তাঁকে করণীয় নির্দেশাদি দিয়েহেন, ততক্ষণ সে লোকটিও তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে থেকেছে।
এইখানে পৌছে ইজেকিয়েলের প্রতিবেদন হঠাৎ থেমে গেছে, তাই আমাদের দুর্ভাগ্য, সেই শেষ সাক্ষাতের পরিণতি, তথা তাঁর প্রতিবেদনের পরিশিষ্টের পরিচয় আর মেলে না।
এ সংক্ষিপ্তসারে তাঁর প্রতিবেদনে উল্লখিত অপ্রয়োজনীয়, অংশসমূহ বাদ দিয়েছি, প্রকৃত প্রয়োজনীয় তথ্যসমূহের উপস্থাপনার উদ্দেশ্যে। সেই কারণে যে সব অংশে প্রযুক্তিনির্ভর ব্যখ্যার কোন আলোচনা নেই, ভবিষ্যদ্বাণী সংক্রান্ত সে সব অংশসমূহকে আমার এ আলোচনার বাইরে রেখে দিয়েছি। ফলে প্রযুক্তিগত তথ্যাদি আরো পরিষ্কার হয়েছে- ফুটে উঠেছে ঘটনাপুঞ্জের সারাংশ এবং তাদের যুক্তিসঙ্গত যোগাযোগ।

এবার অবশ্য, উপস্থাপনার সে ধারা অনুসরণ না করে সমস্ত খুঁটিনাটির দিকেই চোখ ফেরাবো। সে খুঁটিনাটি প্রমাণ করবে ইজেকিয়েলের প্রতিবেদনের সত্যতাকে, পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ এবং বিচার-বিবেচনা মারফত।


Jupiter Joyprakash

মহাকাশযান

ইজেকিয়েলের মহাকাশযান দর্শনের প্রমাণ পেতে হলে, তাঁর পর্যবেক্ষণের যাথাযথ্য বুঝতে হলে, আসল মহাকাশযানের সঙ্গে যথেষ্ট পরিচিত হওয়া প্রয়োজন। তাই, এ পরিচ্ছেদে তার প্রতিটি অংশের বর্ণনা দেবো। এ বর্ণনা-, বিচার-বিশ্লেষণের পরিণতির ওপর পুরোপুরি প্রতিষ্ঠিত। এ বর্ণনা লিপিবদ্ধ করেছি প্রযুক্তিগত তথ্যে কৌতূহলী পাঠকদের জন্যে, আর যন্ত্র-বিজ্ঞানীদের প্রয়োজনে তথ্যাদি সন্নিবিষ্ট করেছি, এ বইয়ের পরিশিষ্টে, অনুমান এবং সিদ্ধান্ত সমেত মৌলিক তথ্য।

পরিষ্কার করে বোঝবার জন্যে মহাকাশযানের গঠন এবং তার ক্রিয়াপদ্ধতি সম্পর্কে আলাদা আলাদা ভাবে আলোচনা করবো।

গঠন
মহাকাশযানের গঠনতন্ত্রে আছে প্রধানতঃ তিনটি অংশ,-
কেন্দ্রীয় মূল দেহকাণ্ড,
দেহকান্ডের আলম্বস্বরূপ চারটে হেলিকপ্টার, আর
চালকের নিয়ন্ত্রক-কোষ, যার স্থান মূল দেহকাণ্ডের ওপর দিকে। ১নং, ২নং এবং
৪নং ছবিতে মহাকাশযানের সাধারণ বাহ্যিক রূপ চিত্রিত হয়েছে।

মূল দেহকাণ্ড
চেহারাটা ভবিষ্যৎ উড্ডয়নযানের না হয়ে, বলা যায়, ছেলেদের খেলবার লাট্টুর মতন। তা হোক, একটু পরেই বুঝতে পারা যাবে, অবয়ব রূপায়ণের পরিকল্পনাটি যথেষ্ট বিচক্ষণ এবং দক্ষতাপূর্ণ।



এ ধরনের চেহারার প্রথম কারণ, বায়ুগতীয় প্রয়োজনীয়তা। মহাকাশ থেকে বাতাস চিরে পৃথিবীমুখী যাত্রা যে-গতিবেগ দিয়ে শুরু হয়, তার মান ঘন্টায় প্রায় ২১,৩০০ মাইল। পৃথিবীতে নাববার সময় সেই প্রচণ্ড বেগকে কমিয়ে শুন্যে নাবাতে হবে। গতিরোধের একটা বড় অংশ সাধিত হবে, তার অবয়বে যদি বায়ুগতীয় প্রতিরোধ ব্যবস্থা খুব বেশি থাকে। এই কারণে মহাকাশযানের নিম্নভাগের আধা শাঙ্কব (quasi-conical),  গঠন খুবই উপযুক্ত। অবতরণ-কালে যানের তলদেশের অগ্রভাগ থাকবে উড্ডয়নগতিমুখী। তার সূক্ষ্ম 'আক্রম কোণের' (angle of attack = বিমানের ডানার জ্যা এবং বায়ুর আপেক্ষিক প্রবাহপথের অন্তর্গত সূক্ষ্ম কোণ) কথা ছাড়া, মহাকাশযান নিচের দিকে উড়ে আসবে তার প্রধান উল্লম্ব-অক্ষ বরাবর (৪ নং ছবি)। ওপরে ওঠবার সময় কিন্তু তার উল্টোটাই ঘটে। মহাকাশযান উড়ে চলে তার প্রধান উল্লম্ব-অক্ষ বরাবর ঊর্ধ্বমুখে, আসন্ন প্রবাহের দিকে ফেরানো থাকে তার মূল দেহকাণ্ড। অবতরণকালেও  তেমনি প্রয়োজন হৃয়, সে-প্রতিরোধের সম্ভাব্য ন্যূনতা। যানের উর্ধ্বাংশের বায়ুগতীয় প্রতিরোধ নির্ণীত হয় তার গোলাকৃতি প্রাম্ভভাগ থেকে। কেন্দ্রের কাছাকাছি তার যে বাহ্যিক গঠন তার গুরুত্ব সামান্যই। নিম্নাংশের অবতল গঠনের জন্যেও চেপ্টা, খাড়া কানার চেয়ে সুগোল, নিটোল কানা-ই বেশি উপযুক্ত। তাই, কি উর্ধ্বাংশের, কি নিম্নাংশের বহিরাবরণের গঠনের দিক থেকে, তাদের প্রয়োজনটা একইরকম। দুটো সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরনের বায়ুগতীয় অবয়বের ভেতর তাই সহজেই সামঞ্জস্য রাখা যায়।

বাহ্যিক গঠনের ক্ষেত্রে নিম্নাংশের এই আধা-শাঙ্কব অবয়ব সম্পর্কে আলোচনা করেছিলেন নাসার ল্যাংলী রিসার্চ সেন্টারের রজার এ আণ্ডার্সন, এবং তাঁর গবেষণার ফল প্রকাশ করেছিলেন, ১৯৬৪ সালের ডিসেম্বরে। এই ধরনের বাহ্যিক গঠনের আবিষ্কারের মূলে ছিল উচ্চ বায়ুগতীয় প্রতিরোধ ব্যবস্থার সঙ্গে কাঠামোকে লঘুভার করার প্রয়াস। দুটো প্রয়োজনই মিটেছে চমৎকারভাবে। লঘুভার কাঠামোর জনো অবতল গঠন তৈরী, নিঃসন্দেহে সমস্যার সুষ্ঠ সমাধান। কারণ এ ধরনের গঠনে ওপরকার কাঠামোয় শুধু সংকোচন ও প্রসারজনিত চাপ পড়বে ফলে অল্প কিছু দৃঢ় আস্তর দিয়ে ধাতুর পাতলা পাত লাগিয়েই কাজ চালানো যাবে।

এই ধরনের গঠনের সত্যিকার উপযুক্ততা উপলব্ধি করা যাবে, যে-যানের কথা আমরা আলোচনা করছি, বিশেষ করে তারই ক্ষেত্রে। বাতাবরণের ভেতর ওড়বার সময় মহাকাশযানের চারটে হেলিকপ্টার দরকার হয়। এর জন্যে যানের অবতল গঠনই আদর্শ, কারণ হেলিকপ্টারগুলোকে তাহলে স্থাপন করা যাবে গরিষ্ঠতম দূরত্বে। সুষ্ঠ উড্ডয়নের পক্ষে তার গুরুত্ব অতান্ত বেশি। অবতল কাঠামোর আরো সুবিধে এই যে তার খিলেনের তলায় পাখাগুলোকে জোড করে ওপরের দিকে মুড়ে রাখাও যাবে। এ বিন্যাসে মূল দেহকাণ্ড থাকবে হেলিকপ্টারগুলোর মাঝখানে। গোটা যানের


Jupiter Joyprakash

উচ্চতাকে এ ব্যবস্থায় রাখা যাবে ন্যূনকল্পে, ভরকেন্দ্র থাকবে যতদূর সম্ভব নিচে আর পৃথিবী মুখী উড্ডয়নেও তা দেবে প্রয়োজনীয় স্থৈর্য এবং অবতরণ বৈশিষ্ট্য। বর্তমানে মহাকাশযানের বহিরঙ্গের এমন আর কোনরকম গঠন-বিন্যাসের কথা জানি না, যা প্রচালন এবং গঠনপ্রণালীর নানাতরো বিরুদ্ধ-ব্যবস্থার মাঝে সমন্বয় সাধন করতে পারবে। এ প্রসঙ্গে, মার্কারী, জেমিনি এবং অ্যাপোলোযানের সুপরিচিত অবয়বের কথা স্মরণ করা যেতে পারে। তাদের গঠন-বিন্যাসে হেলিকপ্টারের অন্তর্ভুক্তি অসম্ভব।

ইজেকিয়েল বর্ণিত মহাকাশযানের উদ্দেশ্য থেকে পরিষ্কার বোঝা যায়, সেই অজ্ঞাতকুলশীল যন্ত্রবিদ্‌দের হাতে যে-ধরনের প্রযুক্তি ছিল এবং যানের যে-চেহারা তাঁরা বেছে নিয়েছিলেন, তা নিঃসন্দেহে সেই উদ্দেশ্য সাধনের সহায়ক। এই কারণেই আমি বলেছি যে ইজেকিয়েলের প্রতিবেদনের বাস্তব প্রযুক্তিগত ব্যখ্যা নির্ভর করছে, অ্যাণ্ডার্সনের নিবন্ধের ওপর।

যানের বহিরঙ্গের বর্ণনা দিয়েছি এবার তার যস্ত্রপাতির কথা বলবো। প্রধান যন্ত্রগুলোর ভেতর আছে রকেট-ইঞ্জিন- (তাতে আছে, পারমাণবিক শক্তি-উৎপাদক-যন্ত্র, প্লাগনজ্‌ল এবং বিকিরক),ইন্ধনাধার,ইন্ধন, হেলিকপ্টারের প্রয়োজনে শক্তি-উৎপাদক যন্ত্র এবং আরো কিছু বাড়তি যন্ত্র, যথা-পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ-তন্ত্র এবং ইন্ধন ' পুনর্তরলীকরণ যন্ত্র।

নিম্নাঙ্গের গঠনকৌশল যেমন আমাদের পুনর্গঠনের চাবিকাঠি, গোটা অবয়বের ক্ষেত্রে পারমাণবিক শক্তি-উৎপাদক যন্ত্রটিও তেমনি চাবিকাঠি। মূল দেহকাণ্ডের নিম্নতম অংশে স্থাপিত সে-যন্ত্র। এই যস্ত্রটির অভাবেই আমরা আজো অমন যান তৈরী করতে পারছি না।
একথা বুঝতে হলে, রকেটের হিসেব-নিকেশের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যকে বুঝতে হবে। সে বৈশিষ্ট্য হলো, আপেক্ষিক ঘাত,' Isp। সাধারণ সংজ্ঞা অনুযায়ী তার মান, প্রতি সেকেণ্ডে প্রতি পাউন্ড জ্বালানি খরচ করে একটা ইঞ্জিন যত পাউণ্ড ঘাত (thrust) সৃষ্টি করতে পারে। তার অর্থ, একটা বিশেষ পরিমাণ ঘাত সৃষ্টি করতে যত কম জুলানি খরচ হবে, Isp মান তত বেশি হবে। তাহলে, মোটামুটিভাবে বলা যায়, আপেক্ষিক ঘাত' হচ্ছে, চালক-যন্ত্রের দক্ষতার নির্দেশ। অপরপক্ষে, জ্বালানির ওজনটাই মোট ওজনের বৃহত্তম অংশ, তাই জ্বালানির ওজন কমানোর ব্যাপারটাও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সহজ কথায়, এইটাই হল, 'আপেক্ষিক ঘাতের' মর্মার্থ।

এমন হতে পারে, কোন একটা উড্ডয়ন-পরিকল্পনায় একটি বিশেষ 'আপেক্ষিক ঘাত' এমন ওজন এবং আয়তনে পরিণত হচ্ছে যে তাদের সমাধান কোনভাবেই সম্ভব নয়। তেমন ক্ষেত্রে উচ্চতর 'আপেক্ষিক ঘাত' ব্যবহার করা যায়, এমন কোন ব্যবস্থা করতে হবে। ইজেকিয়েলের মহাকাশযানের ব্যাপারে আমরা ঠিক এইসমস্যার সামনে পড়ি।

উচ্চ দহন-তাপ সৃষ্টির প্রয়োজনে আজকের চালকযন্ত্রে ব্যবহৃত হয়, জ্বালানির সঙ্গে  বিশুদ্ধ অক্সিজেন, - হয় অনা কোন দাহক। যে ধরনের জ্বালানি আমরা ব্যবহার করি, তাতে আজকের যন্ত্র ৪০০ (চারশ') সেকেণ্ড পর্যন্ত এবং তদূর্ধ্ব Isp মানে পোঁছতে পারে। (সহজ সংজ্ঞা অনুযায়ী 'সেকেন্ড' পাওয়া যায় Isp এর সংজ্ঞা মতে, পাউণ্ডকে
'প্রতি পাউন্ড/সেকেন্ড দিয়ে ভাগ করে। পারমাণবিক শক্তি-উৎপাদক যন্ত্রের ব্যবহারে, তার উচ্চ তাপের কারণে এই মান- পৌঁছে যায় ৯০০ সেকেন্ডের উর্ধে। এ গ্রন্থের পরিশিষ্টে দেথিয়েছি যে ইজেকিয়েলের দেখা মহাকাশযান তখন-ই সম্ভব, যখন Isp  মান ২০০০ সেকেণ্ড বা তারও ওপরে পৌঁছয়। ওই জন্যই অর্থাৎ Isp মানের স্বল্পতার কারণেই ওরকম মহাকাশযান এখন তৈরী করা যায় না। Isp এর অমন উচ্চ মানের পাশে আজকের লব্ধ্ মানকে পারাবারের পাশ পল্বল বললে অতুক্তি হবে না। তবু অতখানি হতাশ হবার কারণ নেই, ব্যবধানটা সতিই অত দুস্তর নয়, বরং বলতে পারি, কয়েক দশকের ভেতরেই অমন চালকযন্ত্র তৈরী করা সম্ভব হবে। অমন একটা যস্ত্র তৈরী করতে সময কতটা লাগবে, তা নির্ভর করে বর্তমান বিরাট প্রযুক্তিগত- প্রতিবন্ধক অপনয়নের ওপর। তবে সে-প্রতিবন্ধ দূর করতে যে টাকা খরচ হবে, তার অঙ্কও আকাশ-ছোওয়া। তবু সেই উন্নত মানে পৌছবার কাল নির্ধারিত হবে, চেষ্টার ব্যাপকতা এবং দৃঢ়তার ওপর। সঙ্গে সঙ্গে একথাও বলা যায়, অমন যন্ত্র ইতিমধ্যেই তৈরী হয়ে যেতে পারতা, যদি তার প্রয়োজনীয়তাকে এবান্তভাবে উপলব্ধি করে কয়েক বছর আগে থেকেই তাব উন্নতিবিধানের চেষ্টা করা হত।

মহাকাশযানের পারমানবিক শক্তি-উৎপাদক যন্ত্র আজ আর এমন কিছু কল্পনার বৃত্তান্ত নয়, নয় দুর ভবিষ্যতের বস্তু। বাস্তবিক পক্ষে, সে বস্তু আজ আমাদের হাতের নাগাল,-সময়ের পরিপ্রেক্ষিতেই হাতের নাগাল,। তবু নিছক প্রযুক্তির দিক থেকে দেখতে গেলে, আকাঙ্ক্ষিত বস্ত কিন্তু হনৌজ দূর অস্ত।

আমাদের বর্তমান জ্ঞানের সঙ্গে সেই 'ভিনদেশী' প্রযুক্তি বিদ্যার তুলনার উদ্দেশ্য, ইজেকিয়েলের পর্যবেক্ষণের প্রকৃত মূল্যায়ন। এ চিন্তা, এ তুলনা, বাইবেলের মহাকাশযানের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ককে করবে নিকটতর। সে প্রযুক্তির সান্নিধ্য, আমাদের মূল্যায়নে, আমাদের আপন প্রযুক্তির ভিত্তিভুমিকে করবে সুদৃঢ়।

একালের প্রযুক্তির একটি বিকাশ আমরা দেথেছি মহাকাশযানের নিম্নাংশের রূপায়ণের মাধামে। উপাদান সস্পর্কে অতি সাম্প্রতিক পরীক্ষা নিরীক্ষা-অনুশীলনের উন্নতিতে আমাদের বিশ্বাস দৃঢ়তর হয় যে ভবিযাৎ পরিকল্পনায় বহুল পরিমান ওজন কমাবার ব্যবস্থা হবে এবং বিভিন্ন হিসেব-নিকেশেও তা ধরা হবে। তাই ১নং এবং ৪নং ছবিতে যে মহাকাশযানের রূপ দেখান হয়েছে, সে মহাকাশযানের সম্ভাব্যতার কথা আজ আমরা চিন্তা করতে পারি, কেননা অমন একটা মহাকাশযান আমরা এথনই গডে ফেলতে পারি, অবশ্য পারমাণবিক শক্তি-উৎপাদক যন্ত্রটিকে বাদ দিয়ে। এ কথা সত্যি যে সে-নির্মাণ-পরিকল্পনায় এখানে ওখানে কিছু অনিশ্চয়তার সম্মুখীন হতে হবেই। যথোচিত উন্নতিবিধানের জন্যে পরিকল্পনাও করতে হবে এবং সে পরিকল্পনাকে কাজেও লাগাতে হবে। কিন্তু এসব ব্যাপার তো আমাদের কাছে নতুন নয়, যাঁরা মহাকাশযান বা উচ্চ গতিসম্পন্ন বিমানের উন্নতিবিধানের কাজ করেছেন, তাঁরাই এ ঘটনার সঙ্গে পরিচিত।