Menu

Show posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.

Show posts Menu

Messages - Jupiter Joyprakash

#1
Poetry / Re: নান্টু ঘটক Nantu Ghatak
September 08, 2022, 05:02:30 AM
#নান্টুঘটক ৯ হাফসা বিবির বিবাহ
-----------------
মদিনার অধিবাসী --- সকলে রয়েছে খুশি
মহাবদ শুধু একা অতিশয় চুপ
নান্টু ঘটক বুড়ো --- আরবে সবার খুড়ো
চিন্তায় বোতল টানে দেখে এইরূপ।
পেয়ালা লইয়া হাতে --- বসাইয়া একসাথে
কানেকানে চুপিচুপি শুধায় কারণ
বলো হে ভাইপো আজ --- ভুল হল কোন কাজ
আনন্দে থাকিতে তব কিসের বারণ?
কয়েক পেয়ালা খেয়ে --- মহাবদ ওঠে গেয়ে
যতগুলি আছে বিবি, মুখ বুজে রহে।
সকলে হূরের মতো --- দেয়-নেয় অবিরত
মুখপানে চেয়ে কেহ কথা নাহি কহে।
সংসারে সমতা নাহি --- প্রাণ করে ত্রাহি ত্রাহি
স্বর্গে নাকি বেঁচে আছি বুঝি না যে হায়।
আমার তেজের মত --- একটিও যদি হত
তেমন বিবির খোঁজ পাওয়া নাহি যায়।

নান্টু কহিল মিয়া --- ছাড়ো কথা প্যাচানিয়া
হাড়ে যদি দম থাকে বলো সোজাসুজি
সামলাতে পারো যদি --- দিতে পারি দশ শাদি
আগে থেকে করা আছে সব খোঁজাখুঁজি।
কেবল তোমার জন্যে --- এনে দেবো সেই কন্যে
যাহার তেজের ভয়ে কাঁপে মহাবীর
তার এক দৃষ্টিপাতে --- সূর্য ওঠে মধ্যরাতে
ছাগলের পেটে দুধ হয়ে যায় ক্ষীর।
আকাশে চাহিলে ডরে --- নক্ষত্র খসিয়া পড়ে
জোরে যদি শ্বাস ফেলে উঠে মরুঝড়
ধমক শুনিলে যার --- দিনে নামে অন্ধকার
কবরে লাশের বুক করে ধড়ফড়
প্রথম খসম তার --- সদ্যই হয়েছে পার
সেই থেকে একা রয় মনে নাহি সুখ
বয়স উনিশ মাত্র --- খুঁজেছি নতুন পাত্র
ভয়ে রাজী হয়নাই কোনো উজবুক।
খালি হাতে কাটে মাথা --- ধারালো মুখের কথা
সোলেমানী তলোয়ার যেন খাপখোল্লা
রাগিয়া যদি সে ওঠে --- সাগরে সুনামি ছোটে
যেনতেন মেয়ে নয় আগুনেরই গোল্লা।
#2
#নান্টুঘটক ৮
গরিবের মাতা জয়নব বিনতে খুযায়মা।
------------------------------------------------
মক্কা ছাড়িয়া হায় --- বাস করে মদিনায়
মহাবদ নাহি পায় মনে কোনো সুখ
এমন বারতা জেনে --- কয়েক পেয়ালা টেনে
নান্টু ঘটক এসে দেখাইল মুখ।
বিকাশ করিয়া দাঁত --- আকাশে তুলিয়া হাত
স্বাগত জানায় তাকে মহাবদ এসে
নান্টু হাসিয়া বলে --- সমস্যা কী কহো খুলে
খরচ করিলে সবই হয় এই দেশে।
এমন ভরসা পেয়ে --- মহাবদ ওঠে গেয়ে
আমারে দিয়েছে প্রভু সমস্ত পৃথিবী
তাঁহার কৃপাতে হায় --- সবই ভালো দুনিয়ায়
সমস্যা কেবল ঘরে দুটিমাত্র বিবি।
একটি নেহাতই শিশু --- বিছানাতে করে হিসু
অন্য যেটি আছে তাহা রীতিমতো বুড়ো
কোনোটি কাজের নয় --- নিজে রেঁধে খেতে হয়
আরো কত দুখে আছি বুঝেছ তো খুড়ো?
---------------------------
বুঝেছ তো খুড়ো?
-----------------------------
বুঝেছ তো?
---------------------------
নান্টু কহিল ভেবে --- বুদ্ধি দিলে কি নেবে?
যতদিন বড় হয় ছোটো বিবিজান
এনে দেবো সেই কন্যে --- যাহারে পাবার জন্যে
অর্ধেক আরব জাতি দিতে পারে প্রাণ।
তাহারে করিতে খুশি --- খাটুনি অনেক বেশি
বয়স তিরিশ থেকে কিছুমাস কম
চারটি খসম ছেড়ে --- আজকাল একা ঘোরে
শাদির বায়না আজও আসে হরদম।
লাভ ক্ষতি নাহি জানে --- অসীম করুণা প্রাণে
গরীব দুঃখীর তরে খোলা হাত দুটি
ছিল যবে শুভদিন --- বাগদাদ রোম চীন
তাহার দুয়ারে বসে খেয়ে যেত রুটি।
যদিও সে দিন গেছে --- তবুও তাহারই কাছে
আপদে বিপদে লোকে আজও পাতে ঝোলা
এখনও তাহার দোরে --- শত লোকে বাটি ধরে
যেনতেন মেয়ে নয় আগুনেরই গোলা।
#3
সাওদা বিবির বিবাহ

বাগানে খেজুর তলে
বালিশ লইয়া কোলে
পড়িতেছে ঘুমে ঢলে
নান্টু ঘটক।
হেনকালে কী আপদ
ভাইপো সে মহাবদ
তুলিয়া মাঝের পদ
নাড়ায় ফটক।।

লম্বিত করিয়া ঘাড়
মাথাখানি তুলে তার
দেওয়াল করিয়া পার
তাকায় ভিতরে।
যদিও কেতাবে লেখে
পাঁচিলের পাশে বেঁকে
পরগৃহে চেয়ে দেখে
কেবল ইতরে।।

নান্টু কহিল মিয়া,
ছাড়ো কথা পেঁচানিয়া
আধখানি ঘুম দিয়া
আসিলাম ছুটে।
কথাটুকু শুনে নিয়ে
পড়িব আবার শুয়ে
সংক্ষেপে বারতা কয়ে
দ্রুত যাও ফুটে।।

এমন ভরসা পেয়ে
মহাবদ ওঠে গেয়ে
সদ্য বিবিহারা হয়ে
রয়েছি মরিয়া।
খাদিজা বিবির পর
কীবা আছে মনোহর
সংসার সুখের মোর
হবে কী করিয়া??

নান্টু কহিল ভেবে
বুদ্ধি দিলে কি নেবে?
রয়েছে এখন জেবে
বহু টাকাকড়ি।
পঞ্চাশ করেছ পার
অর্ধেক বয়স যার
সেরকম বিবি আর
নয় বাড়াবাড়ি।।

শুয়ে পড়ো চেয়ে শুন্যে
এনে দেবো সেই কন্যে
কেবল আমার জন্যে
জেব রাখো খোল্লা
রেশমে ঢাকিয়া গাত্র
শিরে ধরো স্বর্ণছত্র
তবে তুমি যোগ্যপাত্র,
আগুনের গোল্লা।।
#4
কাছিম কাহিনী। সুদ হারাম।।
-----------------------


দামড়া কাছিম ধর্ম নিয়ে খুব খোঁচায়
ছাড়তে হল জন্মভূমি মক্কা যে
তাই মদীনায় পরের খেয়ে প্রাণ বাঁচায়
খোদার দয়ায় পকেট তাহার ফক্কা যে


কাছিম ছিল বেজায় মনোকষ্টেতে
যুদ্ধ করে দেশ দখলের খুব খোয়াব
দেরি কেবল মস্ত সেনার দল পেতে
অস্ত্র পেলেই উঠবে বেড়ে ঠিক রোয়াব


তাইত কাছিম ঋণ করে যায় সবখানে
সত্তর গুণ সুদ দেবে তার আল্লাতে
ফেরেস্তারা হিসাব কিতাব সব জানে
ভুল হবেনা তাদের দাঁড়িপাল্লাতে


ঋণের টাকায় জোগাড় করে সৈন্যদল
করল কাছিম অনেকগুলি যুদ্ধ যে
জায়গাজমি তঙ্কা এবং দেশ দখল
দাস বানালো মানুষগুলো শুদ্ধ যে


এমনি করে হৈল কাছিম মস্ত লোক
কিন্তু তাহার ঋণের কোনো অন্ত নেই
যুদ্ধ জিতেও কাছিম করে দুঃখশোক
পাওনাদারের তাড়ায় জীবন শান্ত নেই।


বল্ল কাছিম "আল্লা এবার সামলা রে
এমন করে দ্বীন চালানো হয়না আর
পড়লে ধরা, খেতেই হবে মামলা রে
সুদ মিটিয়ে ফকির হওয়া সয়না আর"


আল্লা তখন বল্ল হেসে "কর আরাম
বকরি কেটে আয়েশ করে ধর বোতল
এখন থেকে সুদের টাকা সব হারাম
সুদ চাইলেই আমার নামে কর কোতল।"
#5
Collection / মশা
August 06, 2018, 06:29:26 AM
মশাদের খোকাটি এখন বড় হইয়াছে। আজ তাহার বয়স দুইদিবস পার হইয়া তিনে পড়িল। সন্ধ্যাবেলায় শিকারে বাহির হইয়াছিল, রীতিমতো বীরত্ব দেখাইয়া মশারিতে ছিদ্র করিয়া একটি জাগ্রত মানবশিশুর রক্তপান করিয়া সে বাড়ি ফিরিয়াছে। মশারীতে বসিয়া ছিদ্র করিতে তাহার প্রায় বিশ মিনিট সময় লাগিয়াছিল। মানবশিশুটি সেই সময়ে মশারীর অন্দরে বসিয়া উচ্চরবে পাঠ্যপুস্তক মুখস্ত করিতেছিল। সামান্য কিছু জ্ঞান তাহার মগজেও প্রবেশ করিয়া গিয়াছে।
বাসায় ফিরিয়া খোকা মায়ের কোলে গিয়া চড়িল। জীবনের প্রথম মশারী বিজয়ের কাহিনী শুনাইতে শুনাইতে সহসা প্রশ্ন করিল "আচ্ছা মা, মানুষ তো দুই প্রকার, তাইনা?"
মশার মা উত্তর দিলেন "হাঁ, মানুষ দুই প্রকার। গ্রামের মানুষ আর সহরের মানুষ।"
"জানো মা, আজ শুনলাম একই মানবজাতি হতে নাকি গ্রামের মানুষ আর সহরের মানুষ সৃষ্টি হয়েছে।"
মশার মা অতিশয় অবাক হইয়া গেলেন। "এমন কথা কে বলে রে? আমার তো আটদিন বয়স হয়ে গেল, আজ অবধি কখনো গ্রামের মানুষকে সহরের মানুষ হতে দেখিনি।"
"সে তুমি না দেখলেই কি হতে পারেনা? সবাই কি সবকিছু নিজে দেখতে পায়?"
"কেবল নিজে দেখিনি এমন তো নয়। কোনও মশা কোনোদিন দেখেছে বলে তো শুনিনি। আমার চোদ্দো পুরুষে কেউ শোনেনি। চোদ্দো পুরুষ মানে বুঝিস বোকাছেলে? ২০০ দিনের বেশি হতে পারে, তবে কম হবেনা। চিরকালই জানি গ্রামের মানুষ গ্রামে জন্মায়, সহুরে মানুষ জন্মায় সহরে।"

সদ্য লায়েক হওয়া খোকা কিন্তু শান্ত হইলনা। মায়ের নিকট হইতে উঠিয়া গাঁওবুড়োর আস্তানার দিকে যাত্রা করিল। গাঁওবুড়োর বয়স অনেক, দেখিয়াছেন অনেক কিছু। তিনি হয়ত নূতন কোনো তথ্য দিতে পারিবেন।
গাঁওবুড়ো চুপচাপ সমস্ত শুনিয়া লইলেন। তারপর শুধাইলেন "গ্রামের মানুষ থেকে সহরের মানুষ হওয়া সম্ভব হলে এখনও এত গ্রামের মানুষ আছে কেন? তারা সবাই তো তাহলে সহরের মানুষ হয়ে যেতে পারত। অমন আরামের জীবন কেউ নিজের ইচ্ছায় ছেড়ে দেয়?"
খোকা বলিল "তাইতো! কিন্তু মানুষের বাচ্চাটা বই থেকে পড়ছিল। আমি মশারী ফুটো করতে করতে শুনেছি।"
গাঁওবুড়ো আবার কহিলেন "বইখানা নিশ্চয় বিগ্যানের বই?"
মশার খোকা মাথা চুলকাইয়া বলি "হাঁ, বিজ্ঞান কথাটাও দু'-তিন বার শূনেছিলাম।"
গাঁওবুড়ো অতিশয় গম্ভীর হইয়া গেলেন- "তুমি কি জানো, বিগ্যানের বই কে লেখে? সহরের মানুষদের মধ্যে একটি দল আছে, সে দলের নাম বিগ্যানী। এরা কেবলই খারাপ কাজ করে। মশা থেকে হাতী পর্যন্ত সবকিছু মারে। মশারীও তদেরই আবিষ্কার। এরা জগতের নিকৃষ্টতম জীব। তাদের লেখা বই শুধুই মিথ্যায় ভরা। তদেরই একজন নিশ্বাসের-ভাইরাস নামের বইতে লিখেছে মশারা নাকি মারাত্মক রোগ ছড়ায়। আগে আমরা সামান্য রক্তপান করলে কেউ কিছু মনে করত না। কিন্তু আজকাল রোগজীবাণুর কথায় বিশ্বাস করেই ভয়ে তারা মশাদের বিরুদ্ধে ক্ষেপে উঠেছে। বিগ্যানীদের কথা বিশ্বাস করলে তোমার এখনই নিশ্বাস বন্ধ করে মরে যাওয়া উচিত।"
এইরূপে গাঁওবুড়োর নানাবিধ উপদেশ শুনিয়া খোকা যখন বাহির হইয়া আসিল তখন তাহার সমস্ত সংশয় দূর হইয়াছে। জগতে অনর্থ সৃষ্টিকারী বিগ্যানী নামক নিকৃষ্ট জীবদের উচিত শিক্ষা দিবার ইচ্ছাও তাহার মনে প্রবল হইয়া উঠিয়াছে। মানুষের ঘরে জন্ম লইয়া তাহারা কিনা মানুষকেই ভ্রান্ত শিক্ষা দিতে পুস্তক রচনা করে! গাঁওবুড়োর কথায় অবিশ্বাসের কিছুই নাই, মশাগ্রামের প্রায় সকল মশা তাঁহারই পাঠশালে ছাত্র ছিল। আর তিনদিন পরেই গাঁওবুড়োর জন্মদিন, বিগত মাসের ঐ তারিখে তিনি জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন। এই দীর্ঘ এক মাসের জীবনে তিনিও কখনও গ্রামের মানুষ হইতে সহরের মানুষ সৃষ্টির ঘটনা দেখেননাই। মশাদের জন্য জন্মদিন পালন এক বিরল ঘটনা কারণ সাধারণত মশারা ১৫ দিন অবধি জীবিত থাকে। জন্মদিনটি পার হইয়া গেলেই তিনি খোকাকে পাঠশালায় ভরতি কইয়া লইবেন এবং বিগ্যানী নামক নিকৃষ্ট জীবগুলিকে নিপাত করার গোপন পদ্ধতি শিখাইয়া দিবেন।
কোনোক্রমে দুইটি দিন পার করিয়া খোকা গাঁওবুড়োর জন্মদিনে শুভেচ্ছা ও সম্মান জানাইতে হাজিরা দিল। কিন্তু বুড়োর আস্তানায় গিয়া শুনিল সহসা শরীর অসুস্থ হইয়া পড়ার কারণে তিনি বিগ্যানীদের নিকট চিকিৎসা করাইতে গিয়াছেন। সুস্থ হইয়া ফিরিয়া আসার পর পাঠশালা চালু হইবে।
#6
কাছিম কাহিনীঃ কুত্তা খারাপ!


দামড়া কাছিম যাইতেছিল মাঝরাতে
চাচাত বোন উম্মে-হানীর ঘরপানে
একলা কেন? নেই কেন তার কেউ সাথে?
মতলব তার কী ছিল তা সেই জানে।

কুত্তা ছিল অনেক গুলি সেই দেশে
মধ্যরাতে কাছিম দেখে করল ঘেউ
কাছিম ভাবে এবার বুঝি যাই ফেঁসে
ঘুম ভেঙে এই লাফিয়ে বুঝি ধরল কেউ।।

বল্ল কাছিম "পাগলা এবার সামলা রে!
এমন করে দিন চালানো হয়না আর
পড়লে ধরা খেতেই হবে মামলা রে
কোথায় পাবো মধ্যরাতে ময়না আর"।।

পাগলা তখন চুলকে মাথা রুল আজীব
বানিয়ে দিল সেই প্রব্লেম করতে দূর
এবার থেকে কুত্তা গুলো হারাম জীব
কুত্তা তাড়াও, মরার পরে মিলবে হূর।।

#7
কাছিম কাহিনী - মূর্তি হারাম

ছোট্ট কাছিম হইয়া গেল আধবুড়া
নিজের চেয়েও বৃদ্ধ বিবি সামলাতে।
অন্যদিকে আবুতালিব (তার খুড়া)
লাগায় তারে মূর্তি সাফাই কামলা-তে।।

কাছিম ছিল বেজায় মনোকষ্টেতে
কাবার ভেট-এর হইত না সে অংশীদার।
মাগনা কেবল সাফাই করার চেষ্টাতে
এলার্জিতে বাজত নাকে বংশী তার ।।


তাইত কাছিম রইত বিবির ঘরজামাই
চাচার কাছে মোটেও যেতে চাইত না
গুহায় গিয়ে দুম্বা নিয়ে খেলত তাই
সেখানে কেউ বাগড়া দিতে যাইত না।।

মনের দুখে কাছিম শুধু করত ধ্যান
বকরী নিয়ে পালিয়ে যেত পর্বতে।
পাগলা তখন মূর্তিপূজাই করল ব্যান
নতুন করে পাঠানো তার ধর্মতে।
#8
কাছিম কাহিনীঃ অলৌকিক অঙ্গীকার


ছোট্ট কাছিম হৈল যবে জাস্ট বড়
তারে একখান লাঙ্গল দিল পাগলাতে
লাঙ্গলখানা সত্যি ছিল বেশ দড়
ছোট্ট কাছিম পারছিলনা সামলাতে।

কাছিম ছিল বড়ই মনোকষ্টেতে
লাঙ্গল কাজে লাগল না তার একদিনও
পাগলা তখন লাগিয়ে দিল তার সাথে
উনতিরিশ ম্যান-পাওয়ারের ইঞ্জিনও।

তারপরে যা হৈল তাহা ঐতিহাস
টেম্পারেচার এমনি ছিল বেশ গরম
তার উপরে তিরিশ পাওয়ার এক্সট্রাতে
পড়ল কাছিম অ-সুবিধায় বেশ চরম।

পাগলা তখন জগত জুড়ে শষ্যক্ষেত
বানিয়ে দিল সেই প্রব্লেম করতে দূর
বললে এখন যা জোটে তাই চালিয়ে নাও
মরার পরে তোমায় দেবো লক্ষ হূর।

#9
নান্টু ঘটক বলেছিল খুব করে
তারপরে নিজে স্বপ্ন দেখাল আল্লা
ছয় বছরেই তাই খেলাধুলা ছেড়ে
বিয়ে করলাম, পাত্রের সে কী জেল্লা
পাত্রটি সবে বাহান্ন পার হচ্ছে
হাতে তার থাকে তলোয়ার খাপ খোল্লা
পুরো হয়ে যায় যখন যা তার ইচ্ছে
কথা না শুনলে সোজা কেটে ফেলে কল্লা
মুরুব্বি যত পুত্র সমান হয়
দুইদিন আগে যারা দিত কান মল্লা
মিয়াকে আমার সকলেই করে ভয়
পোলা সে তো নয়! পুরো আগুনের গোল্লা।

#10
নান্টু ঘটক নামে এক মস্ত মহাশয়
বিয়ের খবর নিয়ে এল, বয়স যখন ছয়
পাত্র আমার মস্ত মানুষ, তুলনা তার নাই
বাপ নেই তার, মা নেই তার, নেইক বহিন-ভাই
একটি আছে পুষ্যি ছেলে, কিসের তাতে ভয়?
তেমন হলে তাড়িয়ে দেবে। আপন তো আর নয়!
বৃদ্ধ বিবি একটি আছে, সে যদি হয় বোঝা,
তাকেও দেবে বিদায় করে। তালাক দেওয়া সোজা।
কন্যে ছিল, তারা সবাই গেছে শ্বসুরবাড়ি।
দরকার হয়; তাদের সাথেও করতে রাজি আড়ি।
একটু বেশি বয়স হলেও  নয় সে মরোমরো
মাত্র আমার বাপের চেয়ে দুই বছরের বড়ো।
পছন্দ তো হতেই হবে, নইলে যাবে কল্লা!
যেমন তেমন পোলা সে নয়, আগুনেরই গোল্লা!!

#11

নান্টু ঘটক বুড়ো জগতে সবার খুড়ো

মহাবদ কাঁদে তারে ধরিয়া।

প্রথম বিবির সাথে পরাণ লইয়া হাতে

বেঁচে থেকে প্রাণ ছিল মরিয়া।

যদিও হয়েছি বুড়ো পঞ্চাশ হয়েছে পুরো

তবু আজও তাজা আছি খাশা যে

কচি কনে পাই যদি করিব আবার শাদি

বহুকাল ধরে মনে আশা যে।



নান্টু কহিল মিয়া ছাড়ো ত্যানা প্যাচানিয়া

ব্যবসায় যাহা লাগে তাহা দাও

খরচ করিবে যদি করাইব দশ শাদি

ছয় হতে ছত্রিশ যাহা চাও।



এমন ভরসা পেয়ে মহাবদ ওঠে গেয়ে

আছে মোর চেলা আবু বকরী

দেখেছি তাহার কোলে বসিয়া পুতুল খেলে

ছয় বছরের কচি ছোকরী।

প্রভাতে দেখিলে তারে ইমান আপনি বাড়ে

মন চায় রাতে দেখি গোপনে

দিনে তারই কথা ভাবি রাতে দেখি তার ছবি

ঘুমালেও তারে দেখি স্বপনে।

মুখে কি বোঝাই বলো নিজেই দেখিবে চলো

কি জিনিস বানিয়েছে আল্লা

চাহিলে তাহার দিকে হূরপরী লাগে ফিকে
মেয়ে নয়, আগুনের গোল্লা।
#12



 আয়েশা বেবির বিবাহ। বেবির নিজের জবানীতে।
----------------------------
৬ বছরের আয়েষা বেবির সঙ্গে ৫২ বছরের দয়াল নবীর বিবাহ দেওয়া একমাত্র নান্টু ঘটকের পক্ষেই সম্ভব বলে আমাদের ধারণা।
-----------------------------


বয়স তখন ছয় - - - - নাই দুখ নাই ভয়
রাত কাটে ভোর হয় নয়ন মেলিয়া
নরম শীতলপাটি - - - - গরম দুধের বাটি
দিন কাটে ফাটাফাটি পুতুল খেলিয়া।
প্রতিদিন সন্ধ্যাবেলা - - - - শেষ হয়ে গেলে খেলা
আদরে মায়ের কোলে বসে শোনা ছড়া
চোখে নেমে আসে ঘুম - - - - আসে রাত নিঝঝুম
স্বপ্নে রাজপুত্র আর তার সাদা ঘোড়া।

এমনই সুন্দর দিনে - - - - পড়ে বাজ মেঘ বিনে
আগমণ দেখিলাম নান্টু ঘটকের
বাদ দিয়ে সব কন্যে - - - - কেবল আমারই জন্যে
নিয়ে এল চাবীখানি স্বর্গ ফটকের।

সেকালে স্বর্গের খোঁজে - - - - কেহ থাকে চক্ষু বুজে
আর কেহ যুদ্ধ করে হাতে তলোয়ার
কেহ বলে রক্তপাতে - - - - স্বর্গ পাবে হাতে হাতে
কেহ বলে অহিংসাতে হয়ে যাবে পার।
কেবলই পুণ্যের বস্তা - - - - দেবেনা স্বর্গের রাস্তা
সেখানেও আছে নানা হিসাবের ফের
একা বসে মন্ত্র পড়ো - - - - নাকি দলে যুদ্ধ করো
অর্থ নাহি বোঝা যায় ধর্ম কেতাবের।

এমন ধন্দের দিনে - - - - ঠিক পথ চিনে চিনে
আসিল সুখের বার্তা নান্টু ঘটকের
পিতাও আনন্দে নেচে - - - - কোলের মেয়েটি বেচে
পেয়ে গেল হাতে চাবী স্বর্গ ফটকের।



পাত্রটি বড়ই চাঙ্গা - - - - করে শুধু মারদাঙ্গা
এক বিবি মারা গেছে বাকি আছে এক
বয়সে বাহান্ন পুরো - - - - আমার বাপেরও বড়ো
এমন সুযোগ্য পাত্র কে-বা ছাড়িবেক!
গুনে বড় চমৎকার - - - - নাহি কোনো সীমা তার
এক রাতে সাত স্বর্গে করে আসা যাওয়া
আকাশে পাতিয়া ফাঁদ - - - - শিকার সে করে চাঁদ
ডাকাতি করিয়া আনে তবে জোটে খাওয়া।

এ জগতে একমাত্র - - - - সেই মোর যোগ্যপাত্র
এরকমই ছিল দাবী নান্টু ঘটকের
জগতে বিখ্যাত পোলা - - - - জ্বলন্ত আগুন গোলা
শুধু তারই হাতে চাবী স্বর্গ ফটকের।
#13
নান্টু ঘটক ছিল সেরা পরিণয়কার
এযাবত দুনিয়ার মাঝারে
জোটে না যাহার বিবি, জুটাইয়া দিত দশ
এমনই সুনাম ছিল বাজারে।
দয়াল নবীর যবে পঞ্চাশ হইল পার
উড়ি উড়ি করে প্রাণ পক্ষী
বাসনা হইল তার বিবাহ করিয়া ঘরে
আনিবারে কচি এক লক্ষী।
শুনিয়া নবীর দাবী নান্টু কহিল হেসে
খাদীজা বিবি যে আজও বাঁচিয়া
তোমার কাহিনী শুনে চুপ সেতো থাকিবে না
মহারেগে উঠিবে সে নাচিয়া।
বিবাহ দেওয়া তো সোজা মেয়ে আছে শতশত
অসাধ্য কিছু নহে কর্ম
বিবি নিয়ে ঘরে গেলে তোমার কী দশা হবে
ভেবেছ কি কভু তার মর্ম?
তোমার তো কিছু নাই রয়েছ ঘর-জামাই
খাদীজা এখনই দিলে ভাগিয়ে
ভিখারীর দশা হবে কেয়ার-অফ ফুটপাথ
কেন দিতে চাও তারে রাগিয়ে!
ভেবে দেখো মহাবদ, বিবি যদি ক্ষেপে যায়
বাঁচাইতে পারিবেনা আল্লা
নিজের বিবিরে তুমি আশাকরি ভালো চেনো
মেয়ে নয়, আগুনের গোল্লা।।
#14
১) খাদীজা বিবির বিবাহ

দুইবার বিধবা হওয়া ৪৫ পার করে ফেলা খাদীজা বিবির সঙ্গে ২৫ বছরের জোয়ান পাত্রের বিবাহ দেওয়া।




আরবে ঊটের পিঠে গদী আঁটা মোটা সিটে
বসে ছিল নান্টু ঘটক
আবু-তালিবের গাড়ি সে সময়ে তাড়াতাড়ি
পার হল মদীনা ফটক।।
সে গাড়ির পাশে পাশে গাধায় চড়িয়া আসে
ভাইপো সে মহাবদ ছোকরা
পাঠশালে দিয়ে ফাঁকি লেখাপড়া সবই বাকি
তাই শুধু চরাইত বকরা।।
দেখিয়া নান্টুর মুখ মনে তার বড় সুখ
তাড়াতাড়ি এসে তারে ধরিয়া
বলে "এ জোয়ান কালে কোনোমতে পেট চলে
বিয়াশাদী হইবে কী করিয়া!"
নান্টু কহিল "মিয়া, ছাড়ো কথা পেচানিয়া
অসাধ্য নহে কোনও কর্ম
কীপ্রকার বিবি চাও মন খুলে বলে যাও
খুলে দাও আপনার মর্ম।।"
এমন ভরসা পেয়ে মহাবদ ওঠে গেয়ে
সেই বিবি সবচেয়ে চাঙ্গা
রূপে সে হইবে 'সানি', গুণে সে টাকার খনি
রাগিলে করেনা মারদাঙ্গা।।
জুটিলে তেমন মেয়ে দিন যাবে নেচে গেয়ে
করিতে হবেনা আর নোকরী
ক্ষতি নাই হলে বুড়ি, পকেটে আসিলে কড়ি
লাইন লাগাবে কত ছোকরী!
নান্টু কহিল ভেবে বুদ্ধি দিলে কি নেবে?
রয়েছে তেমন এক কন্যে
বয়স যদিও বেশি তবুও রূপের রাশি
পিছনে অনেকে ঘোরে হন্যে
আগে আরও দুইবার করিয়েছি শাদি তার
পাত্ররা বেশিদিন টেকেনাই
তাদের সম্পদ যতো হিসাব ছিলনা কতো
সবকিছু পেয়েছে এ বিধবাই
এর উপরে বাপ তার বিরাট ব্যবসাদার
তার কত আছে টাকা জানা নেই
কে তার হিসাব করে! বুড়ো গেলে পরপারে
ওয়ারিস হয়ে সব পাবে সেই।
সোনা হয় যাহা ধরে ছাপ্পড় ফুড়িয়া তারে
রাশি রাশি দিয়ে গেছে আল্লা
টাকার রয়েছে খনি রূপে সে পরীর রাণী
মেয়ে নয় আগুণের গোল্লা।
#15
Poetry / নান্টু ঘটক Nantu Ghatak
March 25, 2016, 10:03:40 AM
নান্টু ঘটক ঘটকালিতে বিখ্যাত। তার পছন্দের পাত্রপাত্রীরা একেবারে আগুনের গোলা। এরকম মহান ঘটকের প্রতি সম্মান জানাতে তার মাধ্যমে হওয়া কিছু অসম্ভব বিয়ের কাহিনী এখানে জানানো হচ্ছে। নান্টু ঘটক ছাড়া এইসব বিবাহ আর কারও পক্ষে ঘটানো সম্ভব ছিল বলে আমাদের মনে হয়না।