The Logical Forum

Bengali => Story => Topic started by: Jupiter Joyprakash on May 05, 2013, 03:42:10 PM

Title: রঙ্গিলা রসুল (Rangeela Rasool - The playboy prophet)
Post by: Jupiter Joyprakash on May 05, 2013, 03:42:10 PM
 
রঙ্গিলা রসুল (The playboy prophet)
লেখক ? পন্ডিত চমুপতি
প্রকাশক শহীদ-এ আজম মহাশয় রাজপাল, লাহোর

বিতরক- মহম্মদ রফী, সবজী মন্ডী, দিল্লী



উৎসর্গঃ-
সেই মহান যোদ্ধা, সাহসী, বিদ্বান কে এই কীর্তি সমর্পন করা হইল যিনি এই সংসারের নিকট ?হজরত মহম্মদ সাহেব? এর জীবন চরিত্র প্রকাশ করিয়া সঠিক দিগদর্শন করাইয়াছেন এবং তাহার ফলস্বরূপ ছোরার আঘাতে শহীদ হইয়াছেন। এই পুণ্যাত্মার প্রতি আমার অন্তিম প্রণাম।

              পন্ডিত চমূপতি (লেখক)









ইতিহাসঃ


পন্ডিত চমূপতি ছদ্মনামে এক আর্যসমাজী এই 'রঙ্গীলা রসুল' গ্রন্থটি রচণা করেন। লাহোরের রাজপাল প্রকাশনী হইতে এটি প্রকাশিত হয়। এজন্য মুসলিম সমাজের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রকাশক শহীদ আজম রাজপালকে আদালতে উঠানো হইয়াছিল, কিন্তু কোনো অবস্থাতেই তিনি এই গ্রন্থের রচয়িতার পরিচয় প্রকাশ করেন নাই। পাঁচ বৎসর মামলা চলিবার পর প্রকাশক আজম সাহেব এই মামলা হইতে মুক্তিলাভ করেন। এই সময়ের মধ্যে তাঁহার উপর বহুবার প্রাণঘাতী আক্রমণ ঘটিয়াছিল। অবশেষে ১৯২৯ সালের ৬ এপ্রিল ইল্ম-উদ-দীন নামক এক জিহাদী তরুণ আজম সাহেবকে ছোরার আঘাতে হত্যা করিতে সক্ষম হয়। এই মহান কীর্তি সম্পাদন করার ফলে ইলম-উদ-দীন এর ফাঁসি হইয়াছিল।

নিজের জীবন বার বার বিপন্ন করিয়াও প্রকাশক আজম সাহেব যেভাবে গ্রন্থকারকে রক্ষা করিয়াছিলেন সেজন্য লেখক 'পন্ডিত চমূপতি' আজম সাহেবের প্রতি আজীবন কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করিয়াছেন।
Title: Re: রঙ্গিলা রসুল (The playboy prophet)
Post by: Jupiter Joyprakash on May 05, 2013, 05:38:06 PM
 প্রস্তাবনাঃ-

হজরত মহম্মদ সাহেব এর পঁচিশ বৎসর বয়সকাল হইতে  লেখক এই পুস্তকের সূচনা করিয়াছেন। ইহার পূর্বকালের কোনো তথ্য এই পুস্তকে নাই। এজন্য পাঠকের জ্ঞাতার্থে সংক্ষেপে তাঁহার জন্ম হইতে পঁচিশ বৎসর বয়স পর্যন্ত কাহিনী পাঠকের নিকট জানাইয়া আমার পবিত্র কর্তব্য পালন করিতেছি।
হজরত মহম্মদ এর পিতার নাম ছিল আব্দুল্লাহ। তিনি আব্দুল মুত্তালিব এর পুত্র ছিলেন। তাঁহারা ছিলেন কুরাইশ বংশের সন্তান। এই বংশ আরবের অন্যতম প্রধান গোত্র ছিল এবং তৎকালীন বেদুইনদের মধ্যে সর্বাধিক সম্মানিত ছিল।
মহম্মদ এর জন্ম মক্কায় হইয়াছিল। জন্মের পূর্বেই তাঁহার পিতা আব্দুল্লাহ পরলোকে প্রস্থান করেন। তাই জন্মের পর তাঁহার পিতামহ আব্দুল মুত্তালিবের নিকট তিনি পালিত হইতেছিলেন। মহম্মদের যখন আট বৎসর বয়স তখন আব্দুল মুত্তালিবের মৃত্যু হইল, অতঃপর বালক মহম্মদের দায়িত্ব লইলেন চাচা হজরৎ আবু তালিব।
মহম্মদের মাতার নাম ছিল আমীনা। কিন্তু সে সময়ের প্রথা অনুসারে শারীরিক ও মানসিক উন্নতির জন্য তাঁহাকে নিকটের এক গ্রামে হালিমা সাদীয়া নামক এক মহিলার নিকট পাঠাইয়া দেওয়া হয়। সেখান হইতে মাতার নিকট ফিরিয়া আসার অল্পদিন পরেই মাতা আমীনাও দেহরক্ষা করিলেন। ফলে বালক মহম্মদের সম্পূর্ণ দায়িত্ব পড়িল চাচা আবু তালিব এর উপর। চাচা ব্যবসায়ী ছিলেন। তিনি মহম্মদকে ব্যবসায়ে লাগাইয়া দিলেন এবং ছাগল চরানোর দায়িত্বে নিযুক্ত করিলেন। এই ছাগল চরানোতেই মহম্মদের বাল্যকাল কাটিয়া গেল। প্রভূর কৃপায় অলৌকিক সৌন্দর্য্য, অসাধারণ স্বাস্থ্য, বিশুদ্ধ হৃদয় ও গভীর ভক্তি থাকার পরেও তাঁহাকে দারিদ্র ও কঠোর পরিশ্রমের মধ্য দিয়া চলিতে হইয়াছিল। পিতাকে কখনো দেখেন নাই, মাতাকে অতি বাল্যকালেই হারাইয়াছিলেন।
পঁচিশ তম বর্ষে তাঁহার প্রতি খাদিজা নামক এক ধনী বিধবা মহিলার দৃষ্টি পড়িল। তাঁহার বয়স সেই সময় চল্লিশ বৎসর ছিল। মহম্মদও ইহাতে হৃদয় হারাইয়া ফেলিলেন। ২৫ বৎসরের কষ্টের পর সহসা তাঁহার যেন লটারী লাগিয়া গিয়াছিল। যে ভালবাসা হইতে তিনি আজন্ম বঞ্চিত ছিলেন সেই ভালবাসা একই সঙ্গে পত্নী ও মাতার রূপে সাক্ষাৎ প্রাপ্ত হইবার মত সৌভাগ্য আর কি হইতে পারে! খাদীজার বয়স যদি চল্লিশ না হইয়া ষাট হইত তাহাতেও হজরত এই বিবাহ প্রস্তাবে আপত্তি করিতেন না।
এইবার আপনারা হজরত মহম্মদ সাহেব এর পবিত্র? জীবন চরিত মনযোগ সহকারে পাঠ করিয়া লাভবান হোন। অন্য কোনো পয়গম্বরের এমন শিক্ষাপ্রদ জীবন বৃত্তান্ত পাওয়া কঠিন, যাহা অনুসরণকারীর জন্য স্বর্গ নিশ্চিত। যাহাতে প্রত্যেক বাক্যের সহিত প্রমাণ নিহিত আছে যেগুলিকে সুন্নী মুসলমান ভাইয়েরা প্রামাণ্য হিসাবে মান্য করেন। যদি আপনি ইহাকে নরকের পথ বলিয়া মনে করেন তবে আজই পরিত্যক্ত ঈমান ফিরাইয়া আনিতে পারিবেন। কারণ কিছু না জানিয়া কাহারো অনুসরণ করা অস্বাভাবিক।
এই জীবন চরিতটি সম্পূর্ণ নিরপেক্ষতা সহকারে প্রমাণ সহ লিখিত হইয়াছে। ইহাতে পরিষ্কার জানা যায় যে সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠাতা নিজেই এত পবিত্র যে তাঁহার তুলনা ইতিহাসে আর দ্বিতীয় পাওয়া যায় না! তবে তাঁহার উপদেশ ও সিদ্ধান্ত কতই না শিক্ষাপ্রদ হইবেক। পাঠক স্বয়ং তাহা বিচার করিবেন।
                                                বিতরকঃ-  মহম্মদ রফী।
Title: Re: রঙ্গিলা রসুল (The playboy prophet)
Post by: Jupiter Joyprakash on May 05, 2013, 05:52:20 PM
!!ওম!!
পয়গম্বরের প্রশংসা

বাগিচায় বুলবুলি যায় যেমন করে ফুলের টানে।
আমি যাই তেমন আমার রঙ্গিলা রসুলের পানে।।

চির বসন্তের রঙ্গিলা রসুল আমার!
লক্ষ পীরের রঙ্গিলা রসুল আমার!!
জগতের সেরা রঙ্গিলা রসুল আমার!
দেবতার প্রিয় রঙ্গিলা রসুল আমার!!

বাগিচায় বুলবুলি যায় যেমন করে ফুলের টানে।
আমি যাই তেমন আমার রঙ্গিলা রসুলের পানে।।

মন্দকে চাও করতে ভালো? বিয়ে করাই সহজ পথ।
আঁধারে চাও জ্বালতে আলো? বিয়ে করাই সহজ পথ।।
দেখতে পেলে রূপের রাণী? বিয়ে করাই সহজ পথ।
দেখলে কারো টাকার খনি? বিয়ে করাই সহজ পথ।।


বাগিচায় বুলবুলি যায় যেমন করে ফুলের টানে।
আমি যাই তেমন আমার রঙ্গিলা রসুলের পানে।।


চমূপতি (এম এ)
Title: Re: রঙ্গিলা রসুল (The playboy prophet)
Post by: Jupiter Joyprakash on May 05, 2013, 06:32:03 PM
ঈশ্বরের অন্তিম বার্তাবাহক "হজরত মহম্মদ সাহেব" এর জীবন-চরিত্র আরম্ভ।
মহম্মদের বিশেষত্ব এই যে তিনি গৃহস্থ পয়গম্বর ছিলেন। মুসলমান ভাইয়েরা তাঁহার এই চরিত্র লইয়া গর্ব করেন, যে দেখ; অন্য পয়গম্বরের মধ্যে যাহা নাই তাহা মহম্মদের মধ্যে আছে। এই জন্যই ত মহম্মদ প্রশংসার যোগ্য। এ কথা আমারও হৃদয় স্পর্শ করে।


- দয়ানন্দ বাল-ব্রহ্মচারী ছিলেন। তিনি ছিলেন দেবতা। আমরা সামান্য মনুষ্য, তাঁহার ব্রহ্মচর্যের স্তরে যাওয়া আমাদের সাধ্য কি!

- মহাত্মা বুদ্ধ বিবাহ করিয়াছিলেন। কিন্তু তিনি গৃহত্যাগ করিয়াছিলেন। যৌবনকালে পত্নী ও সন্তানকে একলা পরিত্যাগ
করিয়া তিনি সাধু হইয়াছিলেন। এমন সাধুতা লাভ করা আশা বা ক্ষমতা আমাদের নাই।

- যীশু ত সংসারের কাজ কিছুই করেন নাই।

- মহম্মদ বিবাহ করিয়াছেন, না! তিনি অজস্র বিবাহ করিয়াছেন। সকল প্রকার নারীকে বিবাহ করিয়াছেন। বিধবা, কুমারী, বৃদ্ধা, যুবতী, হাঁ, একজন নবযুবতীও ছিলেন। তিনি সমস্ত রকম বিবাহেরই রঙ দেখিয়াছেন, তাহাদের ভালমন্দ কেবল বুঝেনই নাই, তাহা প্রয়োগ করিয়া বাস্তব ফলাফলের
নিদর্শনও স্থাপন করিয়াছেন।
- মহম্মদ একজন অভিজ্ঞ পয়গম্বর ছিলেন। অভিজ্ঞতাই তাঁহার জ্ঞানের উৎস ছিল। এমন নিম্বপত্রের ন্যায় তিক্ত অভিজ্ঞতাও মহম্মদ মধুর মত পান করিয়াছেন, কেন? কেবল সকলের মঙ্গলের জন্য! আমাদের জ্ঞান দান করার জন্যই। মহম্মদের জীবন শিক্ষাপ্রদ উপদেশে ও উপাসনায় পরিপূর্ণ। সত্যই তিনি পথ-প্রর্দশক

- আমি গৃহস্থ, আমার পয়গম্বর গৃহস্থ। তিনি আমার গুরু, আমি তাঁহার শিষ্য। উপনিষদে লিখিত আছে যে গুরুর সদগুণ গ্রহণ করিবে ও অসদ গুণ বর্জন করিবে।
- এই দৃষ্টিকোণ হইতেই আজ আমরা ঘরবাড়ীওয়ালা, রঙ্গিলা, রসিক নাগর রসুলের জীবনের গৃহস্থাশ্রমের উপর এক সরস দৃষ্টিপাত করিতে চাই। মহম্মদী তথা অ-মহম্মদী সকলেই ইহা পাঠ করিতে পারেন, কারণ মহম্মদ ত সকলেরই।

Title: Re: রঙ্গিলা রসুল (The playboy prophet)
Post by: Jupiter Joyprakash on May 06, 2013, 01:52:37 AM
বৃদ্ধাচারী মহম্মদ

মহম্মদের প্রথম বিবাহ হয় ২৫ বৎসর বয়সে। আর্যসমাজীদেরও এ কথা মানিতেই হইবে যে মহম্মদ তাঁহার জীবনের প্রথম ভাগ শাস্ত্র অনুসারে কুমার অবস্থায় অতিবাহিত করিয়াছিলেন। তিনি ব্রহ্মচারী ছিলেন, বিবাহ করার পূর্ণ অধিকার তাঁহার ছিল।
সর্বপ্রথম আমরা মহম্মদের ব্রহ্মচর্য্য অবস্থার প্রতি একবার দৃষ্টিপাত করা উচিত বিবেচনা করিতেছি। কারণ দুর্গন্ধময় মানসিকতার লোকেরা সর্বদাই ভালমানুষের অভ্যাস, কর্ম ও বাক্যে সন্দেহ প্রকাশ করিয়া থাকে।
আমরা মহম্মদকে ব্রহ্মচারী মান্য করি কারণ তিনি স্বয়ং এ বিষয়ে আলোকপাত করিয়াছেন। তিনি বলিয়াছেন- একদা তিনি অন্য এক কুরেশী যুবকের সহিত পশুচারণ করিতেছিলেন। মহম্মদ ঐ যুবককে কহেন, "তুমি যদি আমার পশুগুলির প্রতি দৃষ্টি রাখিতে পারো তবে আমি ছুটি পাইতে পারি, আর যেভাবে নবযুবকেরা রাত্রিযাপন করিয়া থাকে আমিও সেইভাবে রাত্রিযাপন করিয়া আসিতে পারি।"
এই বলিয়া মহম্মদ মক্কা শহরে চলিয়া গেলেন। কিন্তু সেখানে এক বিবাহ অনুষ্ঠানে তাঁহার মনযোগ আকর্ষন করিয়া লইল। তিনি সেখানেই ঢুকিয়া পড়িলেন এবং এক সময় ঘুমাইয়া পড়িলেন। পরে আরেক রাত্রে তিনি আবার একই উদ্দেশ্যে মক্কায় গেলেন, কিন্তু স্বর্গীয় প্রলোভনে তাঁহার মন মোহিত হইয়া গেল এবং সেবারও তিনি ঘুমাইয়া রাত্রি কাটাইয়া দিলেন।
মহম্মদ কহেন যে এই দুই ঘটনার পর আর তাঁহার মন মন্দের দিকে অগ্রসর হয়নাই।

"হায়াত মহম্মদী  ম্যোরসাহেব কৃত"

আমরা মহম্মদের বাক্যে বিশ্বাস করি, কারণ তাঁহাকে 'হমামীন' বলা হয়। আমরা বিশ্বাস করি যে তাঁহার অন্তর সমস্ত পাপ হইতে মুক্ত ছিল। মাত্র দুইবার শয়তান তাঁহাকে পথভ্রষ্ট করিয়াছিল কিন্তু ঐশ্বরিক প্রেরণার সহায়তায় আমাদের "রঙ্গিলা রসুল" সেই অন্ধকার রসাতলের পথ হইতে এক চুলের জন্য নিস্তার পাইয়াছিলেন। তিনি বাস্তবে কোনো অন্যায় কার্য্য করেন নাই (করিবার চিন্তা করিয়াছিলেন মাত্র)। মহম্মদ পূর্ণ ব্রহ্মচারী ছিলেন, তিনি ২৫ বৎসর বয়সকাল পর্যন্ত যৌবনের সকল বাসনা হইতে সুরক্ষিত ছিলেন।


মাতা খাদীজা

আমরা খাদীজাকে মাতা খাদীজা বলিয়াই উল্লেখ করিব, কারণ তিনি যখন মহম্মদের অন্তঃপুরে আসিলেন তখন তাঁহার বয়স ৪০ বৎসর। সত্য কথা বলিতে গেলে মহম্মদই খাদীজার গৃহে গিয়াছিলেন। মহম্মদ ২৫ বৎসরের ছিলেন, দেখিতে-শুনিতে সুন্দর ছিলেন, স্বভাবে সৎ ছিলেন, কেবল সৎ বংশেরই নহে বরং সৎ গৃহেরও সন্তান ছিলেন।
অন্যদিকে খাদীজা বিধবা ছিলেন, কুরেশী অর্থাৎ মহম্মদের স্বগোত্র ছিলেন, তাঁহার দুই পতি ইতিপূর্বেই গত হইয়াছিলেন, তাঁহার সন্তানও ছিল। তবুও মহম্মদ ও তাঁহার মধ্যে সম্পর্কের সূত্র এই ছিল যে তাঁহার নিকট সম্পত্তি ছিল। সওদাগরের দল যখন বিদেশে যাইত তখন তিনিও প্রতিনিধি প্রেরণ করিতেন। প্রভুর আশীর্বাদে ব্যবসায়ে ১০০% হইতে ১৫০% অবধি লাভ থাকিত। সমগ্র মক্কা তাঁহাকে চিনিত। সুন্দর ধনী ব্যক্তিদের নিকট হইতে বিবাহের প্রস্তাবও কম আসিত না। কিন্তু তিনি তাঁহার সম্পত্তি ও অবস্থায় সুখী ছিলেন, অকারণে আর জাগতিক সমস্যা মাথায় লইবার কোনো ইচ্ছা তাঁহার ছিল না।
এক বৎসর তিনি মহম্মদকে প্রতিনিধি করিয়া বণিকদলের সহিত পাঠাইলেন। মহম্মদ সৎ ছিলেন, আশার অতিরিক্ত লাভ করিয়া ফিরিলেন। বাড়ির ছাতে বসিয়া খাদীজা এক সুন্দর সওয়ারকে আসিতে দেখিলেন, তিনি ছিলেন মহম্মদ। মহম্মদ আসিলেন, ব্যবসার হিসাব দিলেন, নিজের প্রাপ্য লইয়া চলিয়া গেলেন। তাঁহার লাজুক নয়ন, পরিমিত বাক্য, স্বাভাবিক সৌন্দর্য্য, ব্যবসায়িক দক্ষতা ও অন্তরের সরলতা বৃদ্ধার মনকে অতি স্বাভাবিকভাবেই প্রভাবিত করিয়া ফেলিল, আর তিনি এই যুবককে জীবনসাথী করিবার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিলেন।
খাদীজা পবিত্র ছিলেন। লোকে তাঁহার সৌন্দর্য্য ও সম্পত্তির পিছনে পড়িয়াছিল। এখন তিনি নিজেই পড়িলেন। এমন কে ছিল যে তাঁহাকে এইভাবে পড়িতে দেখিয়া বিচলিত হইবে না? এমন কে ছিল যে এই অবস্থায় মুখ ফিরাইয়া চলিয়া যাইতে পারে!
খাদীজার পিতা জীবিত ছিলেন। আশঙ্কা ছিল তিনি এই বিবাহে কাঁটা হইবেন। এই সময়ে খাদীজা এক উৎসব করিলেন। তাহাতে নিজে পরিবার এবং মহম্মদের পরিবারকেও নিমন্ত্রন করিলেন। সুরার স্রোত চলিল। খাদীজার পিতাও নিমন্ত্রিত হইয়াছিলেন। তিনি বৃদ্ধকালে অতিরিক্ত পান করিয়া বেসামাল হইয়া পড়িলেন। সকলে এই সুযোগের অপেক্ষাতেই ছিল। সঙ্গে সঙ্গে খাদীজাকে সাজাইয়া বিবাহ দেওয়া হইয়া গেল। জ্ঞান হইবার পর খাদীজার পিতা হতভম্ব হইয়া গেলেন, কিন্তু পক্ষী তখন উড়িয়া গিয়াছে। সমাজের প্রধানেরা যখন মানিয়া লইয়াছেন তখন বৃদ্ধকে নিরব থাকিতে হইল।

"হায়াত মহম্মদী  ম্যোরসাহেব কৃত"
Title: Re: রঙ্গিলা রসুল (The playboy prophet)
Post by: Jupiter Joyprakash on May 06, 2013, 06:44:25 AM
যাহা হউক, মহম্মদ বিবাহ করিলেন। মাতা খাদীজার পতি হইয়া তাঁহার জান-মাল এর অধিকারী ও রক্ষক হইলেন। বাল্যকালেই দরিদ্র হইয়াছিলেন। মাতার মমতা কোনোদিন পান নাই। এখন বিবাহ করিয়া ফেলায় এক সঙ্গে দুই বাসনা পূরণ হইয়া গেল। মহম্মদ যাহা ইচ্ছা বলুন, কিন্তু আমরা তাঁহাকে মাতা খাদীজাই বলিব। তিনি আমাদিগের মাতা এবং আর্য্যশাস্ত্র অনুসারে প্রত্যেক নারীকেই মাতা বলা হইয়াছে।
ইহা মাতা খাদীজার তৃতীয় বিবাহ ছিল। মাতা খাদীজা মহম্মদের ছয়টি সন্তান জন্মদান করেন। তাহাদের মধ্যে দুইটি পুত্র এবং চারটি কন্যা ছিল। বড় পুত্রের নাম ছিল কাশেম, যে মাত্র দুই বৎসর বাঁচিয়াছিল। অন্য পুত্রটি নিতান্ত শিশুকালেই স্বর্গলাভ করে।

সীরাতুল্লাভী মৌলানা শাবলী কৃত
Title: Re: রঙ্গিলা রসুল (The playboy prophet)
Post by: Jupiter Joyprakash on May 09, 2013, 07:04:10 PM
চিকিৎসকেরা বলেন যে একজন মহিলা ৪০ বা ৪৫ বৎসর বয়স পর্যন্ত সন্তানের জন্মদান করিতে পারেন। কিন্তু এত বয়সের সন্তান অধিক দিন জীবিত থাকে না। তাই সন্তানের জন্য বিবাহ করিতে হইলে এমন বয়সের নারীরা বিবাহের অযোগ্য। এই হিসাবে খাদীজা আদৌ বিবাহের যোগ্য ছিলেন না।

মহম্মদ একলা থাকিতেই অধিক ভালবাসিতেন। কল্পনার জগতে থাকিতেই আনন্দ পাইতেন। পাহাড়ে,জঙ্গলে, মাঠে বা মরুভূমিতে কিম্বা গৃহকোনেই একেলা বসিয়া নিজমনে কথাবার্তা কহিতেন। এই পাগলামি হইতেই তাঁহার পয়গম্বর হইবার সূচনা হয়।

রুজি-রুটির ব্যবস্থা না হইলে স্বাধীনতাই থাকে না, পয়গম্বরী ত অনেক দূরের কথা। খাদীজার সহিত বিবাহ ছিল এক দৈবিক প্রেরণা,যাহা হইতেই মহম্মদের সুসময়ের সূত্রপাত।

আরবে পাপ হইত। অতি ভয়ানক সব পাপ হইত, আর মহম্মদের অন্তর সৎ চিন্তায় পূর্ণ ছিল। আরবীয়রা মূর্তিপূজক ছিল আর মহম্মদ উন্মুক্ত প্রান্তরে, অসীম আকাশে অথবা ঘন বনে এক অলৌকিক শক্তির উপলদ্ধি করিয়াছিলেন। তিনি নিশ্চিত হইয়াছিলেন যে পরমাত্মা এক এবং তাঁহার কোনো প্রতিমা নাই।

খাদীজার দাসদের মধ্যে জায়েদ নামক একজন ক্রীশ্চান ছিল। সে মহম্মদকে ক্রীশ্চান ধর্মের উপদেশ শুনাইয়া তাঁহার বিশ্বাস উৎপাদনের চেষ্টা করিত। জায়েদ এর প্রতি মহম্মদের স্নেহ এতই বৃদ্ধি পাইয়াছিল যে তিনি নিজের জন্য তাহাকে খাদীজার নিকট হইতে চাহিয়া লইলেন। খাদীজার আত্মীয়দের মধ্যে বেশ কিছু খ্রীষ্টধর্মে বিশ্বাসী ছিল। তাহারা মহম্মদকে নানাভাবে উৎসাহিত করিবার সব রকমে সাহায্য করিত।

মহম্মদ নিশ্চিত হইয়া গিয়াছিলেন যে জগতের লোকসকল পথভ্রষ্ট হইয়া চলিয়াছে। নিজের এই অবস্থা দেখিয়া তাঁহার কান্না আসিত। তাঁহার অন্তরে গভীর ব্যথা ছিল, যাহা কখনো কখনো আরবী ভাষায় চমৎকার কবিতার রূপে প্রকাশিত হইত। ইহাই কোরানের প্রথম আয়াত। তাহা কোন কারণে কোরানের অন্তিমে লিখিত হইয়াছে তাহা বুঝা যায় না। ইহাতে ব্যথা আছে, তীব্রতা আছে। কেবল যে সত্য আছে তাহা নহে, তীব্র আকাঙ্খা আছে ও বাস্তবের সন্ধান আছে।
Title: Re: রঙ্গিলা রসুল (The playboy prophet)
Post by: Jupiter Joyprakash on May 11, 2013, 12:58:56 AM
মহম্মদের সাহস বৃদ্ধি পাইতেছিল। ধৈর্য্য রাখার কোনো উপায় তিনি দেখিতে পাইতেছিলেন না। এই সময়ে তাঁহার মনে চিন্তা আসিল যে আত্মহত্যা করা উচিত। এই বেদনাময় জীবন রাখিয়া কোনো ফল নাই। এইখানেই খাদীজার বয়সের সুফল পাওয়া গেল। অল্পবয়সী কেহ হইলে মহম্মদকে পাগল মনে করিয়া ত্যাগ করিত। নিজেও ভয় পাইত, অন্যদেরও ভয় দেখাইত। খাদীজা মহম্মদকে শান্ত করিলেন। মহম্মদের ধারণা হইয়াছিল তাঁহার উপর জ্বীনের জাদু পড়িয়াছে। উহা ঐশ্বরিক জ্ঞান নহে বরং শয়তানের মায়া। খাদীজা তাঁহার জ্বীনের পরীক্ষা করাইয়া বুঝাইলেন যে উহারা জ্বীন নহে, দেবদূত। তাহাদের বার্তা বিশ্বাসযোগ্য। এর পর মহম্মদ যখন কহিলেন যে তিনি হয় জগতের পরিবর্তন করিয়া দিবেন অথবা এই প্রাণ আর রাখিবেন না; তখন খাদীজা জগতের পরিবর্তন করাই উচিত বলিয়া বুঝিলেন এবং মহম্মদের এই নূতন ধর্ম, যেটি প্রচার করিতে মহম্মদ ব্যগ্র ছিলেন তাহাতে প্রথম সহায়ক হইলেন।

কসসুলম্বিয়া


অনুবাদকের মন্তব্যঃ
মহম্মদ তবে সুইসাইডের ভয় দেখিয়ে খাদীজাকে ইসলামীকরণ করেছিলেন! কেয়াবাৎ কেয়াবাৎ।
Title: Re: রঙ্গিলা রসুল (Rangeela Rasool - The playboy prophet)
Post by: Jupiter Joyprakash on May 14, 2013, 04:42:07 PM
 :D :D :D :D :D :D :D :D :D :D
Title: Re: রঙ্গিলা রসুল (Rangeela Rasool - The playboy prophet)
Post by: Jupiter Joyprakash on May 16, 2013, 12:01:33 PM
ঐশ্বরিক জ্ঞানলাভকালে মহম্মদের বড়ই কষ্ট হইত। তাঁহার মুখে ফেনা আসিত, সর্বশরীর ঘর্মাক্ত হইয়া উঠিত, এবং বহির্জগতের কোনো জ্ঞান থাকিত না। অনেকেই ধারণা করিয়াছিল ইহা মৃগি রোগের লক্ষ্ণণ। সে সময়ে মহম্মদ অসুস্থ হইয়া পড়িতেন, খাদীজাই তাঁহার সেবা করিতেন। তিনি মহম্মদের উপর কাপড় ঢাকা দিতেন ও জল ছিটাইয়া তাঁহার জ্ঞান উদ্ধার করিতেন।
Title: Re: রঙ্গিলা রসুল (Rangeela Rasool - The playboy prophet)
Post by: Jupiter Joyprakash on May 18, 2013, 02:31:02 PM
মহম্মদ তাঁহার পয়গম্বরীর শিশুকাল খাদীজার কোলে কাটাইয়াছিলেন। সে কাহিনী যথেষ্ট দীর্ঘ। হইয়াছিল এই যে মহম্মদ নিজেকে প্রচলিত ধর্ম ও তাহার বিধি-ব্যবস্থা হইতে সম্পূর্ণ পৃথক করিয়া ফেলিয়াছিলেন এবং আপন ভক্তজনের প্রতিও সে সকল ত্যাগ করার উপদেশ প্রদান করিতেছিলেন। ইহাতে সকলে মহম্মদের বিরুদ্ধে চলিয়া যাইতেছিল এবং অনেকেই তাঁহার পরম শত্রু হইয়া উঠিয়াছিল। আরবের প্রথা ছিল ?হত্যার বদলে হত্যা?। সেখানে এক ব্যক্তি কাহাকেও হত্যা করিলে দুই বংশের মধ্যে অনন্ত শত্রুতার সৃষ্টি হইত এবং তাহারা একে অপরকে হত্যা করা ভিন্ন অন্য কোনো পথই দেখিতে পাইত না। তবে মহম্মদের জন্য বাঁচার পথ ছিল। এক তো তাঁহার পক্ষে ছিলেন ছিলেন চাচা আবু তালিব এবং অন্যজন ছিলেন খাদীজা। বালক হইতে বৃদ্ধ, সকলেই এই দুইজনকেই অতিশয় মান্য করিত। মহম্মদ সমস্যায় পড়িয়াছেন, দুঃখ পাইয়াছেন কিন্তু পত্নীভাগ্যে কখনো তাঁহার প্রাণশংসয় হয় নাই। অবশেষে মহম্মদ যখন ৪০ বৎসরের হইলেন তখন খাদীজার দেহাবসান হইল। অন্যদিকে চাচা আবু তালিবও পরলোকে প্রস্থান করিলেন। এইবার মহম্মদ অনাথ হইয়া পড়িলেন। বাধ্য হইয়া দেশত্যাগ করিয়া মদীনায় চলিয়া গেলেন।       খাদীজা যে মহম্মদের জন্য কতখানি গুরুত্বপূর্ণ ছিলেন তাহা পাঠক আশা করি বুঝিয়াছেন। পরে মহম্মদের গৃহ সর্বপ্রকার পত্নীতে ভরিয়া উঠিয়াছিল, তাঁহারা রূপে গুণে অনন্যা ছিলেন। সর্বপ্রকার আনন্দের ব্যবস্থা ছিল। শাসনক্ষমতা ছিল, অপ্রতিহত অধিকার ছিল। তথাপি মহম্মদ খাদীজাকে ভুলিতে পারেন নাই। এমন কি জীবিত আয়েশা অপেক্ষাও মৃতা খাদীজার প্রতি তাঁহার অনুরাগ অধিক ছিল।
Title: Re: রঙ্গিলা রসুল (Rangeela Rasool - The playboy prophet)
Post by: Jupiter Joyprakash on May 21, 2013, 05:23:32 AM
২৫ বৎসর বয়স হইতে খাদীজা মহম্মদের রক্ষা করিয়াছেন। যতদিন তিনি মহম্মদের পত্নীরূপে জীবিতা ছিলেন ততদিন মহম্মদের মনে দ্বিতীয় বিবাহের চিন্তাও আসে নাই। আর্য্যশাস্ত্র অনুসারে গৃহস্থাশ্রমের সময়কাল ২৫ বৎসর নির্ধারিত আছে। এই সময়টি মহম্মদ বড়ই পবিত্রতার সহিত অতিবাহিত করিয়াছিলেন তাই আমরা তাঁহাকে আর্য্য গৃহস্থ বলিতে পারি।
খাদীজাকে বিবাহ করার পরিবর্তে মহম্মদ যদি তাঁহার পুত্র হওয়া স্বীকার করিয়া লইতেন তবে তাহা আর্য্যশাস্ত্রসম্মত হইত। এক মুসলমান মৌলানা সাহেব এর সহিত আলোচনাকালে যখন আমরা এই কথা কহিলাম তখন তিনি আশ্চর্য্য হইয়া কহিলেন, "হাঁ, ভাই ও হওয়া যাইত।" আমি জানাইলাম "হাঁ, হিন্দুস্তানে এমন প্রথাও আছে যে কোনো বয়স্কা মহিলার ভাই হইয়া সন্তানবৎ কর্তব্যপালন করা যায়।" সেক্ষেত্রে আমরা তাঁহাকে ভগ্নী খাদীজা বলিতে পারিতাম। তথাপি জ্ঞান, বুদ্ধি, বয়স ও অভিজ্ঞতায় তিনি মাতা খাদীজাই ছিলেন।
Title: Re: রঙ্গিলা রসুল (Rangeela Rasool - The playboy prophet)
Post by: Jupiter Joyprakash on May 21, 2013, 05:49:23 AM
পুত্রী আয়েশাঃ

খাদীজার দেহত্যাগের পর তিন মাসও অতিক্রান্ত হয় নাই, মহম্মদ অনুভব করিলেন যে এ জগতে পত্নী অপেক্ষা প্রিয় আর কিছুই নাই। সমস্যা বৃদ্ধি পাইতেছিল, গৃহে কোনো আনন্দ ছিল না। মহম্মদ দ্বিতীয় পত্নীর সন্ধান আরম্ভ করিলেন। মাতা সুদা সুকরাণ এর পত্নী ছিলেন তাঁহারা স্বামী-স্ত্রী মুসলমান হইয়াছিলেন এবং এই অপরাধের জন্য ভালরকম শাস্তিও পাইয়াছিলেন। আরব নিবাসীদের জ্বালায় তাঁহাদিগকে আপন দেশ মালুফ কে বিদায় জানাইয়া বিদেশে বাস করিতে হইত। মহম্মদ যখন বিধর্মীদের সহিত সন্ধি করিয়া লইলেন ও তাহাদের মূর্তিগুলিকে মানিয়া লইলেন (আবার পরে সেই সন্ধি হইতে সমস্যা দেখিয়া প্রথমবামের কথাগুলিকে শয়তানের বার্তা বলিয়া বাতিল করিয়াছিলেন) তখন অন্য সব বিতাড়িতদের সহিত সুকরাণ ও সুদাও ফিরিয়া আসিলেন। ফিরিবার পরেই সুকরাণ এর মৃত্যু হইল। সুদা বিধবা হইলেন। তিনি সত্যের জন্য দেশত্যাগী হইয়া এত কষ্ট ভোগ করিয়াছেন তাঁহার সততার আর কি প্রমাণ প্রয়োজন! একদিকে আপন পতির প্রতি বিস্বস্ত, অন্যদিকে ধর্মের জন্য প্রাণত্যাগে প্রস্তুত, এমন পত্নী লাভ করা মহম্মদের পক্ষে যথেষ্টই কঠিন ছিল। বিধাতার আশীর্বাদে তিনি বিবাহ করিয়া লইলেন। বৃদ্ধের পক্ষে বিধবা বিবাহ করার মধ্যে সমস্যার কিছুই ছিল না। একে অন্যের প্রেমের সম্মান করিতে পারিতেন। খাদীজার স্থান আর কে লইতে পারিত! কেবল সুদাই একমাত্র আশা ছিলেন, তাহাও পুরণ হইল। গৃহ আর শুন্য রহিল না।
Title: Re: রঙ্গিলা রসুল (Rangeela Rasool - The playboy prophet)
Post by: Jupiter Joyprakash on May 26, 2013, 01:12:59 AM
আমরা উপরেই বলিয়া আসিয়াছি যে মহম্মদ ২৫ বৎসর একই পত্নীর সহিত অতিবাহিত করিয়াছিলেন, তাহাও আবার দুইবারের বিধবা। বিবাহকালে তিনি ছিলেন ৪০ বৎসরের। মৃত্যুকালে বয়স ছিল ৬৫। এই বুড়ীর সহিত যে যুবা মহম্মদ টিকিয়া ছিলেন ইহাই মহম্মদের পবিত্রতার সাক্ষ্য দেয়। অন্য সকল পুরুষকে পুণ্যের পথে উৎসাহিত করে, সমস্যায় সমাধান দেয়, বিপদে ধৈর্য বৃদ্ধি করে, হৃদয় প্রশস্ত করে, আত্মার শক্তি বৃদ্ধি করে। এখনও জগতে অনেক মানুষ আছে যাহারা নারীর সৌন্দর্যের চিত্র গ্রহণ করিয়া তাহাকে পূজনীয় দেবী বানাইয়া রাখে। পবিত্রতার মূর্তি বানাইয়া কল্পনার আকাশে উড়িয়া বেড়ায়। এই কল্পনার প্রেম তাহাদের হৃদয়ে অবোধ্য রহস্যের সৃষ্টি করে।
মহম্মদ সুন্দর স্বাস্থ্যের অধিকারী ছিলেন। কিন্তু খাদীজার ক্ষেত্রে বলিতে হয় শালী বুড়ী বয়সে বিবাহ করিয়া (মহম্মদকে) কচি মেয়ের সুখ পাইতে দিল না। ইহাতে আর এক সুফল ফলিয়াছিল। জগতের সকল নারীর চিন্তা দূর হইয়া গিয়াছিল, স্বর্গের হূর পরীর কল্পনা আসিয়া সেই স্থান পূরণ করিত। পরে মহম্মদের যখন ধারাবাহিক বিবাহ হইতে লাগিল তখন আর হূর পরীর সৌন্দর্য্য বর্ণনার মধ্যে সেই তীব্র উষ্ণতা দেখা যায় না, যাহা খাদীজার জীবিতকালে থাকিয়া থাকিয়া কোরানের আয়াতে পরিষ্ফুট হইত, সৌন্দর্য বর্ণনায় প্রধান স্থান লইত। অর্থাৎ বাহ্যিক দেহবর্ণনায় যাহা নিহিত আছে, এই প্রকার গৌরবর্ণ কুমারী বালিকা, প্রশস্ত নয়ন, উন্নত বক্ষ, ইত্যাদি।
Title: Re: রঙ্গিলা রসুল (Rangeela Rasool - The playboy prophet)
Post by: Jupiter Joyprakash on May 26, 2013, 02:01:16 AM
বাস্তবিক; নারীর প্রকৃত সদগুণ তাহার কুমারীত্ব। মহম্মদ কুমারীও বিবাহ করিয়াছিলেন। তাঁহার নাম আয়েশা। তিনি ছিলেন হজরত আবু-বকর এর কন্যা। আবু-বকর ও মহম্মদ বাল্যসখা ছিলেন। তাঁহাদের বয়সও ছিল প্রায় সমান; মাত্র দুই বৎসরের পার্থক্য ছিল।  মহম্মদ আবু বকর অপেক্ষা দুই বৎসরের বড় ছিলেন। আবু বকর অতি শীঘ্রই মহম্মদের প্রতি প্রশ্নহীন বিশ্বাস স্থাপন করিয়াছিলেন। আয়েশা তাঁহার প্রাণপ্রিয় ছিল। সেই সময়ে আয়েশার বয়স ৬ কি ৭ বৎসর ছিল।।
Title: Re: রঙ্গিলা রসুল (Rangeela Rasool - The playboy prophet)
Post by: Jupiter Joyprakash on October 10, 2013, 01:45:46 AM
মহম্মদ এই নাতিনীর বয়সী বালিকার প্রতি নজর দিলেন কেন? অনেকেরই ধারণা যে আবু-বকর এর সঙ্গে আত্মীয়তার সম্পর্ক স্থাপনের প্রয়োজন ছিল। প্রথমতঃ তো আবু বকর মহম্মদের ধর্মের প্রতি আগেই বিশ্বাস আনিয়াছিলেন এবং তাঁহাকে খোদার রসুল স্বীকার করিয়া লইয়াছিলেন, অর্থাৎ মহম্মদের বাক্যকে তিনি ঈশ্বরের বাক্য মানিতেন। কাজেই এই ধরণের ব্যক্তিগত আত্মীয়তার কোনো প্রয়োজনই ছিল না। তবুও ধরা যাক, কখনো যদি এই বিশ্বাসের সম্পর্ক দুর্বল হইয়াও পড়িত তবে তাহা মজবুত করিবার সর্বাধিক সভ্য পন্থা এই ছিল যে মহম্মদ আবুবকর এর কন্যাকে নিজ কন্যা করিয়া লইতেন, নিজহস্তে তাহার বিবাহ দিতেন, তাহার বিবাহে যৌতুক প্রদান করিয়া পিতার স্থান গ্রহণ করিতেন। কিন্তু আরববাসীরা এই প্রকার মোটাদাগের সম্পর্ক ব্যতীত আর কোনো ভদ্রসভ্য সম্পর্কের খবর রাখিত না।

"সৈয়দ আমীর আলি" লিখিয়াছেন যে আরবে কোনো নারী কেবল পত্নী সম্পর্ক ব্যতীত কোনো পরপুরুষের নিকট বাস করিতে পারিত না। মহম্মদ তাঁহার রাজনৈতিক প্রয়োজনে বাধ্য হইয়া ধারাবাহিক বিবাহ করিয়াছিলেন। আহা! প্রিয় ভারত!! পবিত্রতার নক্ষত্র ভারত!!! প্রাচীন আর্যদের প্রাচীন সভ্যতার ভারত!!!! ঔরঙ্গজেব এর পৌত্রী সফিউন্নীসাকে দুর্গাদাস আপন কন্যা হিসাবে গ্রহণ করিয়াছিলেন, গোলেদারীর আসীর শাহজ়াদী, যিনি লুটের মাল হিসাবে আসিয়াছিলেন, তাঁহাকে শিবাজী আপন কন্যা মানিতেন।

তবে ইহাও মনে রাখিতে হইবে যে আয়েশা অতি কোমল ও লঘুশরীর ছিলেন, তাই পালকী তুলিবার সময় তিনি ভিতরে আছেন কিনা তাহা বুঝিতেই পারা যায় নাই। আয়েশা সেখানেই অসহায় বসিয়া রহিলেন। এই বুঝি কেহ লইতে আসিল, এই বুঝি কেহ আসে, এই প্রতীক্ষায় প্রভাত হইয়া গেল, কেহই আসিল না। ভাগ্যক্রমে সাফবান তাহার ঊট লইয়া সেই পথে যাইতেছিল। আয়েশাকে দেখিয়াই সে চিনিতে পারিল এবং কোনো কথাবার্তায় না গিয়া আয়েশার সামনে নিজের ঊট বসাইয়া দিল। আয়েশাও একলাফে তাহাতে চড়িয়া বসিলেন। এইভাবে একরাত্রি পার করিয়া তিনি প্রিয় মহম্মদের সহিত মিলিত হইলেন।

এখন এই অবস্থায় কে কাহার মুখ বন্ধ করিত! নানাপ্রকার কথাবার্তা শুরু হইয়া গেল। ধীরে-ধীরে মহম্মদও আয়েশার প্রতি বিরক্ত হইয়া উঠিলেন। এ অবস্থায় বেচারী আয়েশা আর কোনো উপায় না দেখিয়া আপন পিতা-মাতার নিকট চলিয়া গেলেন। মাতা তাঁহাকে ভুলাইয়া রাখিবার যন্য যত্ন করিতেন, কিন্তু তাহাতে আয়েশার মনের দুঃখকষ্ট দূর হইত না।
Title: Re: রঙ্গিলা রসুল (Rangeela Rasool - The playboy prophet)
Post by: Jupiter Joyprakash on October 23, 2013, 04:28:51 AM
এই ঘটনা লইয়া মহম্মদের বন্ধু ও শত্রুদের মধ্যে বহুপ্রকার মতামতের জন্ম হইতে আরম্ভ করিল। মহম্মদের নামে কলঙ্ক লাগিয়াছিল, তাঁহার প্রতাপও পূর্বের ন্যায় রহিল না। অবশেষে তিনি আলি ও ওসমান এর নিকট পরামর্শ প্রার্থনা করিলেন। আলি জানাইলেন এ ব্যাপারে আয়েশার দাসীকে প্রশ্ন করা উচিত। পরামর্শ উপযুক্তই ছিল, কিন্তু তাহার ফল আলীর জন্য মারাত্মক হইয়াছিল। আয়েশা এই স্পর্ধা জীবন ভুলিতে পারেন নাই যে মহম্মদের জামাতা হইয়া আলী কিনা শাশুড়ীর উপর সন্দেহ করে! আলীর সহিত আয়েশার ভয়ানক শত্রুতা জন্মিল।

মহম্মদের কন্যা ফতেমা, মাতা খাদীজার স্মৃতি ফতেমার সহির আলীর বিবাহ হইয়াছিল। একদিকে প্রিয় জামাতা আলী, অন্যদিকে প্রিয় পত্নী আয়েশা। বেচারা মহম্মদ কোন দিকে যাইতেন! গৃহযুদ্ধের বীজ অঙ্কুরিত হইয়া গিয়াছিল। মহম্মদের মৃত্যুর পর ইসলামের ইতিহাস অন্তহীন রক্তপাতের ইতিহাস। খিলাফতের জন্য এই রক্তপাত হইত না যদি সেদিন আলী ও আয়েশার মন নির্মল হইত, যদি তাঁহারা এই শত্রুতা ভুলিয়া যাইতেন।

বহুবিবাহকারীরা অবধান করুন, যেখানে পয়গম্বরের জীবন বিপন্ন হইয়া পড়ে, এমন মহান ব্যক্তিও আপন ভুলের ও কৃতকর্মের ফল ভোগ করিতে বাধ্য হন, সেখানে আপনারা এমন কে যে কর্মফল হইতে নিজেকে সুরক্ষিত বলিয়া মনে করেন? দশরথের গৃহ ধ্বংশ হইয়া গিয়াছিল, মহম্মদের ধর্ম বিনষ্ট হইয়া গেল, কিসের জন্য? কারণ তাঁহারা বৃদ্ধকালে নবযুবতী (কুমারী) বিবাহ করিয়াছিলেন।



মহম্মদ আয়েশার কক্ষে গিয়া তাঁহার পিতামাতার সমক্ষেই তাঁহার নিকট সমস্ত ইতিহাস জানিতে চাহিলেন। সেই সময় আয়েশার পিতামাতা কন্যাকে কহিলেন, "যদি তুই অন্যায় করিয়া থাকিস তবে তওবা কর। আল্লাহ দয়ালু রক্ষাকর্তা। আর যদি তুই নির্দোষ হইয়া থাকিস তবে তাহাই প্রকাশ কর।"



আয়েশা কিছুক্ষণ চুপ থাকিয়া উত্তর করিলেন, "ধৈর্যই আমার উত্তর, পরমাত্মাই আমার সহায়। যদি আমি নিজেকে নির্দোষ বলি তবে কেহ মানিবে না, তওবা করিব কি অপরাধে? পরমাত্মা জানেন আমি নির্দোষ।"



মহম্মদ মনে মনে আয়েশার চাল-চলন জানিতেন। তিনি বিশ্বাস করিয়া লইলেন কিন্তু লোকজনকেও তো বিশ্বাস করাইবার প্রয়োজন ছিল! অবশেষে তিনি নিজের ঐশ্বরিক জ্ঞানের শরণাগত হইলেন। মুখে কাপড় চাপা দিয়া কিছুক্ষণ দৃশ্যতঃ জ্ঞানহীন অবস্থায় পড়িয়া রহিলেন। অতঃপর কপালের ঘাম মুছিতে মুছিতে উঠিয়া ঘোষণা করিলেন- "আয়েশা! আনন্দ করো। আল্লাহ তোমার নির্দোষিতার সাক্ষ্য দিয়াছেন।"
Title: Re: রঙ্গিলা রসুল (Rangeela Rasool - The playboy prophet)
Post by: Jupiter Joyprakash on October 23, 2013, 07:18:51 PM
 আয়েশার হারানো সৌভাগ্য ফিরিয়া আসিল, কিন্তু নিন্দাকারীদের হইল সর্বনাশ। একের পর এক ঐশ্বরিক বাণী আসিতে লাগিল। নিন্দাকারীদের উপর তিরষ্কার বৃষ্টি হইতে লাগিল। অবশেষে তাহাদের জন্য শাস্তি ধার্য্য হইল যে তাহাদের ৮০-৮০ চাবুক লাগানো হউক। পুরুষদের মত নারীদের উপরেও চাবুক চালানো হইল।

সুরা 'আল-নূর' এ রসুল ও তাঁহার ঈশ্বরের দুঃখ ও ক্রোধ এখনও লিখিত আছে। দূর্ভাষীদের মুখ এবেবারে বন্ধ করিয়া দেওয়া হইয়াছিল, এখন প্রয়োজন ছিল 'হারেম' এর; কারণ তালি বাজাইতে দুই হস্তই প্রয়োজন। আল্লামিঞা এই আবেদনও মঞ্জুর করিয়া দিলেন এবং সুরা 'আহযাব' অবতীর্ণ হইল-
"হে পয়গম্বরের পত্নীগণ, তোমরা অন্য নারীদের ন্যায় নও। যদি তোমাদের হৃদয়ে ধর্মের ভয় থাকে তবে কথাবার্তায় কোমলতা প্রদর্শন করিও না, যাহাতে দুষ্টাত্মারা প্রলুদ্ধ হয়। সেটুকুই বলো যা প্রয়োজনীয় ও মর্যাদাপূর্ণ।"
"আর তোমরা আপন গৃহে অবস্থান করো, অন্ধকার যুগের স্ত্রীলোকদিগের ন্যায় আপন সৌন্দর্য্যের প্রদর্শন করিয়া বেড়াইওনা।"
Title: Re: রঙ্গিলা রসুল (Rangeela Rasool - The playboy prophet)
Post by: Jupiter Joyprakash on December 05, 2013, 10:00:53 AM
আসলে মহম্মদ তাঁহার পত্নীদের উপর জোর জুলুম, বকুনি ইত্যাদির বিরুদ্ধে ছিলেন। আল্লামিঞা সকলের গুরুজন ছিলেন। তাঁহাকেই মধ্যে টানিয়া আনিলেন এবং নিজে যাহা চাহিয়াছিলেন তাহা আল্লাকে দিয়া ঐশ্বরিক বচন হিসাবে বলাইলেন। ইহাতে আয়েষা ও মুহম্মদের আবার মিল হইয়া গেল আর আয়েষার তো গৃহে রাজত্ব চলিতে লাগিল। কিন্তু ইহার পরে আর কোনো যুদ্ধের বেলায় আয়েষাকে সঙ্গে লইয়া যাওয়া হয়নাই।

ইহার পরে আয়েষার দর্শন শেষ দর্শন ছিল। যাহা তাঁহার পতির মৃত্যুশয্যায় হইয়াছিল। মুহম্মদ তাঁহার শেষবারের রোগশয্যায়; যাহা মারণরোগ প্রমাণিত হইয়াছিল, আয়েষার নিকট থাকিবার অনুমতি বিবিদের নিকট আদায় করিয়া লইয়াছিলেন। সেই গৃহেই প্রায়ই ঐশ্বরিক আয়াত অবতীর্ণ হইত। সেই খাটিয়া ছিল, সেই বিছানা-বালিশ। এই গৃহ মুহম্মদের সবচেয়ে প্রিয় ছিল।

রোগ্রস্ত অবস্থায় মুহম্মদ কবরস্থান গেলেন এবং মৃত্যু নিশ্চিত জানিয়া ঘরে ফিরিলেন। আয়েষাও সেই সময়ে শিরঃপীড়ায় আক্রান্ত হইয়াছিলেন এবং 'মাথা গেল, মাথা গেল' বলিয়া ক্রন্দন করিতেছিলেন।

মুহম্মদ বলিয়া উঠিলেন, "আয়েষা, ইহা তো আমার বলার কথা।" এ শুনিয়াই আয়েষা চুপ হইয়া গেলেন। মুহম্মদের তখন তামাশা করার ইচ্ছা হইল। তিনি কহিলেন, "আয়েষা! তোমার মৃত্যু আমার আগে হইলে কি তোমার ভাল মনে হয় না? থা হইলে আমি তোমাকে নিজহস্তে কবর দিয়া তোমার জন্য প্রার্থনা করিতে পারি।" আয়েষা নাক উঁচু করিয়া উত্তর করিলেন- "এসব অন্য কোথাও শুনাইও। আমি জানি, তুমি আরো সুন্দর পুতুল (বিবি) আনিবার মতলব করিতেছ।"

বেচারা মুহম্মদ আর কি বলিতেন! তর্ক করার শক্তি ছিল না, মুচকি হাসিয়া চুপ থাকিতে হইল।

"হায়াত মোহম্মদী ম্যোরসাহেব কৃত"
Title: Re: রঙ্গিলা রসুল (Rangeela Rasool - The playboy prophet)
Post by: Jupiter Joyprakash on December 14, 2013, 05:24:42 AM
পাঠক অনুমান করিতে পারেন যে নবযুবতী বিবিকে পশ্চাতে ছাড়িয়া যাইতে মুহম্মদের কিরূপ টেনশন হইতেছিল। কিন্তু হায়! এই বাস্তব জগত বড়ই কঠোর, নিষ্ঠুর, হৃদয়হীন। মসজিদের আঙিনায় বিশ বৎসরের পত্নী তাহার ৬২ বৎসরের পতির মস্তক কোলে লইয়া বসিয়া আছেন। মুহম্মদ তাহার চিবাইয়া দেওয়া দাঁতন মুখে লইতে লইতে এই ক্ষণিকের শরীর ত্যাগ করিলেন। এর পর আবুবকর আয়েষাকে বলিয়াছিলেন "মহম্মদের জন্য আমার দুঃখ নাই, কিন্তু মাত্র ২০ বৎসরে বিধবার রূপ যৌবন, আশা ভরসা সকলই শেষ হইল। ইহাতে কোন পিতা অশ্রুপাত না করিয়া থাকিতে পারে!"

Title: Re: রঙ্গিলা রসুল (Rangeela Rasool - The playboy prophet)
Post by: Jupiter Joyprakash on December 14, 2013, 05:42:15 AM
সদা সোহাগিনী


আবু বকর যেমন হজ়রৎ মুহম্মদ সাহেবের দক্ষিণ হস্তস্বরূপ ছিলেন তেমনই মোহম্মদ ওমর ছিলেন বাম হাত। আবুবকর এর ন্যায় তিনি সহজে মুসলিম হইতে স্বীকার করেন নাই, কিন্তু যখন হইলেন তখন পূর্ণ বিশ্বাসের সহিতই হইলেন। এই ধর্মের জন্য প্রাণ পর্যন্ত ত্যাগ করিতে প্রস্তুত ছিলেন।

আবু বকর উদার মনের বুদ্ধিমান ব্যক্তি ছিলেন। অন্যদিকে ওমর অধিক আবেগপ্রবণ ছিলেন। সহজেই তাঁহার মাথাটি গরম হইয়া যাইত। সেই সময়ে তাঁহাকে সামলানো বড় সহজ ছিল না। তাঁহার কন্যা "হাফসা" পিতার নিকট হইতে এই গুণটি লাভ করিয়াছিলেন। তিনিও কাহারো কথা কানে তুলিতে অভ্যস্ত ছিলেন না। 'খানীস' এর সহিত তাঁহার বিবাহ হইয়াছিল যিনি যুদ্ধে (গিজ়বাবদর) নিহত হইয়াছিলেন। বেশ কিছুদিন বিধবা থাকার পরও কোনো মুসলমান তাঁহাকে বিবাহ করিতে প্রস্তুত হইল না। তখন ওমর প্রথমে আবুবকর এর সহিত তাঁহার বিবাহের প্রস্তাব করিলেন কিন্তু আবুবকর রাজী হইলেন না। ওমর তখন ওসমান কে অনুরোধ করিলেন, কিন্তু তিনিও সম্মত হইলেন না। কারণ হাফসা কে সামলানো কোনো সামান্য ব্যাপার ছিল না। ইহাতে ওমর এর মাথা গরম হইয়া গেল আর তিনি মহম্মদের নিকট হাফসা কে বিবাহ করার প্রস্তাব লইয়া গেলেন। মুহম্মদ মেহেরবানি করিয়া তাহাকে আপন স্ত্রী হিসাবে মঞ্জুর করিয়া লইলেন। এইভাবে আবুবকরের সহিত যেমন আত্মীয়তা ছিল, ওমরের সহিতও সেইরূপ হইল। দুইজনেই পরম বিশ্বস্তভাবে ইসলামের প্রচারে আত্মনিয়োগ করিলেন এবং আপন কন্যাদের সুবাদে মুহম্মদের গুরুজন হইয়া গেলেন। এই রকমই বদর যুদ্ধের আর এক শহীদ উবাইদা-র স্ত্রী ছিল জৈনব। সম্পর্কে উবাইদা
মুহম্মদের ভাই ছিলেন। (আল-মুত্তালিব বংশের সন্তান।) তাঁহার বিধবা পত্নীর সহিতও মুহম্মদ শাদী করিয়া লইলেন। জৈনব বড়ই সুন্দর শরীর-স্বাস্থ্য পাইয়াছিলেন এজন্য তাঁহাকে "আম্মুল্মসাকীন" বলা হইত।
Title: Re: রঙ্গিলা রসুল (Rangeela Rasool - The playboy prophet)
Post by: Jupiter Joyprakash on December 14, 2013, 10:48:02 AM
আবু সাল্লামা প্রথম দিকের মুসলমান দের মধ্যে ছিলেন। "হবস" হিজরতের সময়ে তাঁহাকে আরব ছাড়িতে হইয়াছিল। পরে মুহম্মদ যখন মদীনায় ডেরা পাতিলেন তখন তিনিও সেখানে ফিরিয়া আসিলেন। 'ঊহুদ' এর যুদ্ধে তিনি আহত হইয়াছিলেন কিন্তু প্রায় সুস্থও হইয়া উঠিয়াছিলেন। যখন "বনি-সাদ" গোত্রের উপর মুসলিমেরা চড়াও হইল তখন তাঁহাকে সেনাপতি বানানো হইয়াছিল। দুর্বল শরীর লইয়া যুদ্ধ করিতে গিয়া তিনি পরলোক প্রাপ্ত হইলেন। আপন আত্মীয়দের প্রতি মুহম্মদের সহানুভূতি ছিল, তিনি উহার বিধবা 'হিন্দ' এর নিকট যাতায়াত করিতেন। বৃদ্ধা হইলেও হিন্দ সুন্দরী ছিলেন। মুহম্মদ তাহাকে শাদী করিবার ইচ্ছা প্রকাশ করিলেন তখন তিনি বৃদ্ধ হইবার বাহানা দেখাইয়াছিলেন। কিন্তু মুহম্মদ কহিলেন "আমারও কিছু কম বয়স হয়নাই।" ইহার পর হিন্দ তাঁহার বালবাচ্চার কথা তুলিলে মুহম্মদ তাহাদেরও দায়িত্ব লইতে সম্মত হইয়া গেলেন এবং বুড়ীকে রাজী করাইয়া ঘরে আনিলেন। মদীনা মসজিদের সংলগ্ন ৫ কুঠুরী গৃহ সে সময়ে নির্মিত হইয়াই গিয়াছিল। এক এক কামরায় মুহম্মদের এক এক বিবি থাকিতেন। মুহম্মদ পালাক্রমে এক-এক রাত, এক-এক দিন এক এক বিবির সহিত কাটাইতেন। শেষ কামরাখানি ছিল হারিশ এর। যখনই মুহম্মদের ঘরে কোনো নূতন বিবি আসিতেন, তাঁহাকে হারিশ এর কামরায় তোলা হইত। হারিশ এর জন্য নূতন কুঠুরী বানাইয়া দেওয়া পড়িত। সে বেচারী চুপচাপ আলাদা ব্যবস্থা করিয়া লইত। একবার মুহম্মদ স্বয়ং লজ্জিত হইয়া বলিয়াছিলেন "হারিশ কি বলিবে!"।
Title: Re: রঙ্গিলা রসুল (Rangeela Rasool - The playboy prophet)
Post by: Jupiter Joyprakash on December 16, 2013, 04:08:01 PM
রাঃ আঃ সৈয়দ আমীর আলি ফরমাইয়াছেন যে এইসব বিধবারা, যাহাদের মুহম্মদের বিবি হইয়া অহঙ্কার হইয়াছিল তাঁহারা অসহায় ছিলেন। তাঁহাদের পতি ইসলামের সেবা করিতে করিতে শহীদ হইয়া গিয়াছিলেন। তাঁহাদের যাহাতে গিন গুজরাণ হইতে পারে তাহার ব্যবস্থা করা মুহম্মদের কর্তব্য ছিল। কার্য্যটি জরুরী ছিল বটে, কিন্তু তাঁহার নিজের দিন গুজরানেই প্রথম হইতে টানাটানি চলিত। তাহার উপর তিনি নিজের রুজিরুটির উপর নূতন বোঝা চাপাইয়া খরচের বহর আরো বাড়াইয়া ফেলিলেন। অন্যদিকে আমদানী সেই আগের মতই রহিল। এক এক দেশের এক এক রেওয়াজ। হয়ত হজরৎ আমীর আলির কথাই সত্য। আরব দেশে মুহম্মদের সময়ে কোনো নারী অন্য পুরুষের নিকট কেবল পত্নী হিসাবেই থাকিতে পারিত। নতুবা হিন্দুস্থানের প্রথা তো এই যে ধর্মাত্মারা পরনারীকে ধর্মভগ্নী বানাইয়া লইতেন। ইহাতে তাহাদেরও দিনাতিপাতের উপায় হইয়া যাইত আবার ধর্মরক্ষাও হইত। হয়ত সমস্ত মুসলমানের মধ্যে বিধবাদের পালনকর্তা আর কেহই ছিল না। হয়ত কোনো কুমার অথবা বিপত্নীক ঐসব বিধবাদিগকে বিবাহ করিতে প্রস্তুত ছিল না। দয়ার সাগর একমাত্র মুহম্মদই ছিলেন। আমাদের তুচ্ছ বুদ্ধিতে তো মুহম্মদ তাহাদিগকে ধর্মভগ্নী মানিয়া লইলেও কাজ চলিত। অথবা যদি বিবাহই দিতে হয় তবে কোনো কুমারের সহিত দেওয়া যাইত। আপন আপন ধর্মের ব্যাপার, হয়ত মুহম্মদের এই পথই ভাল বোধ হইয়াছিল যে বিবিতে গৃহ পরিপূর্ণ কইয়া লইবেন। ৬০ বৎসরের বৃদ্ধ আর ৫-৫ জন বিবি! যাহা হউক, বিবি লইয়া কামকাজ নিশ্চয় ভালই চলিত। দিন-রাত মৌজেই কাটিত। বৃদ্ধের তরুণী ভার্যা চিরকালীন ঘটনা।
Title: Re: রঙ্গিলা রসুল (Rangeela Rasool - The playboy prophet)
Post by: Jupiter Joyprakash on December 22, 2013, 02:49:48 PM
পুত্রবধু সমাচার

আমরা আগেই বলিয়াছি যে জ়ায়েদ নামে খাদীজার এক ঈশাঈ গোলাম ছিল। সে মুহম্মদের ধর্মীয় ও মানসিক সমস্যায় নানাভাবে সমাধান করিত। এজন্য উহার প্রতি মুহম্মদের বিশেষ প্রীতি ছিল। খাদীজা এই গোলামটি মুহম্মদকে দান করিয়াছিলেন এবং মুহম্মদ তাহাকে নিজের পুত্র বানাইয়া লইয়াছিলেন। জ়ায়েদ ও মুহম্মদকে অত্যধিক ভালবাসিত। একবার তাহার আপন পিতা তাহাকে লইতে আসিলে সে যাইতে সটান অস্বীকার করিয়াছিল। মুহম্মদ রসুলও ছিলেন আবার বাপও ছিলেন, সে শুধুই বাপের নিকট থাকিয়া কি করিত! উহার প্রথম বিবাহ "উম্মেমন" এর সহিত হইয়াছিল, যাহার বয়স ছিল জ়ায়েদ এর দ্বিগুণ। কিন্তু বাপ মুহম্মদ পাত্রীটি পছন্দ করিয়াছিলেন ফলে বাধ্য হইয়া তাহাকে বিবাহ করিতে হইয়াছিল। তাহাদের একটি পুত্র জন্মাইয়াছিল। তাহার নাম ছিল "ওসামা"। জ়ায়েদ এর দ্বিতীয় বিবাহ হয় জয়নব এর সহিত। জয়নব কুরেশী বংশের ছিল এবং মুহম্মদের পিস্তুতো সম্পর্কের ভগ্নী ছিল। একদিন মুহম্মদ জ়ায়েদ এর অবর্তমানে তাহার ঘরে গিয়া পড়িলেন। জয়নব পর্দার আড়াল হইতে রসুলের (আবার শ্বসুরও বটে) গলা পাইয়া তাড়াতাড়ি আসিয়া তাঁহাকে ভিতরে ডাকিল। মুহম্মদের নজর তাহার সুন্দর চেহারায় পড়িল। আর কি বাকি থাকে? তাঁহার দিলের মধ্যে কারেন্ট লাগিয়া গেল আর মুখে বাহির হইল- "সোভান-আল্লা! তোমার সৃষ্টি কতই না সুন্দর!"
জয়নব তাহা শুনিয়া ফেলিল এবং মনে মনে পয়গম্বরের হৃদয় জয় করিয়া খুশী হইয়া উঠিল। জায়েদকে সম্ভবতঃ তাহার পছন্দ ছিল না। যতই মুহম্মদের পুত্রতুল্য হোক না কেন, আসলে তো ছিল সে গোলামই!
Title: Re: রঙ্গিলা রসুল (Rangeela Rasool - The playboy prophet)
Post by: Jupiter Joyprakash on December 22, 2013, 03:11:13 PM
জায়েদ যখন গৃহে ফিরিয়া আসিল, জয়নাব তাহাকে ঘটনা জানাইয়া দিল। ইহার পর যাহা হইল তাহাকে আপনারা মুহম্মদের বিবাহের কথাবার্তা বুঝিবেন কিনা তাহা আপনাদের ব্যাপার। কিম্বা হয়ত জায়েদ জয়নবের উপর পূর্বেই চটিয়া ছিল। যাহাই হউক সে এক দৌড়ে মুহম্মদের নিকট গিয়া হাজির হইল আর নিজের বিবিটিকে যাহাকে দেখিয়া মুহম্মদ মুগ্ধ হইয়াছিলেন তাহাকে তালাক দিবার প্রস্তাব করিল। কিন্তু মুহম্মদ তাহাকে বুঝাইয়া কহিলেন, "সুখে শান্তিতে সংসার করো"। কিন্তু যে বিবি অন্যের দিকে টান দেখাইতেছে তাহাকে লইয়া সংসার করার ইচ্ছা জায়েদ এর ছিল না। সে জয়নবকে তালাক দিয়াই ফেলিল। আর জয়নব তখন মুহম্মদের খিদমতের আশায় তাঁহার পিছনে লাগিয়া গেল। বদনামের ভয়ে মুহম্মদ ইহাতে সম্মত হইতে পারিতেছিলেন না। সেই সময়েই ঐশ্বরিক বাণী আসিয়া সমস্ত সমস্যার সমাধান করিয়া দিল।

আল্লা মনুষ্যকে দুইটি হৃদয় দেন নাই তেমনই পোষ্যপুত্রকে তোমার পুত্রও করেন নাই। যাহা তুমি বলিয়াছ তাহা তোমার মুখের কথা মাত্র, কিন্তু আল্লাহ প্রকৃত সত্য জানেন ও সঠিক পথ প্রদর্শন করেন। তিনি ইচ্ছা করেন যে মনুষ্য তাহার প্রকৃত পিতার নামেই পরিচিত হঊক। আর যখন তুমি বলিয়াছ "বিবি লইয়া সুখে সংসার করো" তখন তুমি সত্য গোপন করিয়াছ যে সত্য প্রকাশ করাই আল্লার ইচ্ছা ছিল। ভয় করিয়ো না, জায়েদ যখন তালাক দিয়াছে তখনই আমরা মুহম্মদের সহিত বিবাহ দিয়াছি, যাহাতে মোমিনেরা তাহাদের পোষ্যপুত্রের বিবিকে বিবাহ করিতে পারে। নিয়ম অনুযায়ী তালাক সম্পন্ন হইয়া গিয়াছে এবং আল্লার ইচ্ছা অবশ্যই পূর্ণ হইবে।

-- সুরা আখরাব ৫ --

মুহম্মদ তোমাদের কাহারও পিতা নহেন তিনি আল্লার রসুল এবং "খাতিমুল্মরসলীম"। আর আল্লা সবকিছু অবগত।
Title: Re: রঙ্গিলা রসুল (Rangeela Rasool - The playboy prophet)
Post by: Jupiter Joyprakash on December 23, 2013, 03:14:02 AM
এসব কথা এইজন্য লিখিত হইল যাহাতে মুহম্মদের অন্তরমন সম্পর্কে পাঠক জ্ঞানলাভ করিতে পারেন। জয়নবকে বিবাহ করিতে মুহম্মদ মুখে অস্বীকার করিয়াছিলেন বটে, কিন্তু অন্তরে প্রেমের আগুন জ্বলিয়া উঠিয়াছিল। এমনও বলিতে পারেন যে অগ্নি সর্বদাই জ্বলিয়া থাকিত। তাহাই ঈশ্বরের বাণীরূপে প্রকাশিত হইয়া গেল। আর তারপর মুহম্মদ জয়নবের নিকট বার্তা পাঠাইলেন-
"আল্লাহ তোমাকে আমার সহিত মিলাইয়া দিয়াছেন। তাই আর বিবাহের কোনো প্রয়োজন নাই।"

আল্লা যেখানে মনের মিলন করিয়া দিয়াছেন সেখানে মৌলভী-কাজী দের নাক গলাইয়া বিবাহ দেওয়া নিরর্থক। তাই আরো বলা হইল-
"আল্লাহ স্বয়ং বিবাহ দিয়াছেন এবং জিব্রাইল তাহার সাক্ষী" [তাফসীর হুসনী আয়াত মজকর খূরা জমকুর], "আর বিবাহের জন্য এই দুটি ছাড়া অন্য কি প্রয়োজন?"

রঙ্গীলা রসুল এর এই কাহিনী বড়ই বিচিত্র। পুত্র পুত্র রহিল না, পুত্রবধু পুত্রবধু রহিল না।

পাঠক এইবার বুঝিতে পারিবেন কেন মুহম্মদ কাহারো সহিত মাতা, কন্যা অথবা ভগ্নী পাতাইতে ইচ্ছুক ছিলেন না। যেখানে পাতানো পুত্রেরই সহিত সম্পর্ক রহিল না, যেখানে তাহার বিবিও মুহম্মদের জন্য হালাল হইয়া গেল, সেখানে পাতানো মাতা-কন্যা-ভগ্নীরা কিভাবে নিস্তার পাইত?
Title: Re: রঙ্গিলা রসুল (Rangeela Rasool - The playboy prophet)
Post by: Jupiter Joyprakash on December 23, 2013, 01:52:32 PM
সেই সময়ের মুসলমানেরা কিন্তু চুপ ছিল না। ইতিহাস বলে মুহম্মদ কাজটি ভাল করেন নাই। তাঁহার আসমানী আয়াত, আল্লা, জিব্রাইল সকলের উপরেই লোকে বিরক্ত হইয়া উঠিয়াছিল। এমন নহে যে মুহম্মদ নিজের দোষ বুঝিতেন না। বরং তিনি ভালই জানিতেন যে সেদিন যদি তিনি জায়েদের গৃহে না যাইতেন এবং বেপর্দা জয়নবকে না দেখিতেন তবে এইভাবে দিন দুপুরে অন্ধকার নামিত না। যাহা হউক সে সব তো ঘটিয়াই গিয়াছিল, তাহার পর কি হইল দেখা যাক!

মুহম্মদ এইবার নিজের হারেম খানি লইয়া চিন্তায় পড়িলেন। লোকে সর্বদাই তাঁহার গৃহে আসিত। তাঁহার বিবিদের সহিত কথাবার্তা কহিত। পয়গম্বরের যাহা হইয়াছিল তাহা অন্য কোনো মুসলমানের উপরেও ঘটিয়া যাওয়া অসম্ভব ছিল না। জায়েদের বিবি জয়নব যাহা করিতে পারে  মুহম্মদের কোনো বিবিও সাহস করিয়া তেমন কিছু করিয়া ফেলিতে পারিত। ইহার ব্যবস্থা সময়মত করার প্রয়োজন ছিল। এইসব চিন্তা করিয়া মুহম্মদ শুন্যপানে তাকাইলেন এবং আল্লার দরবারের ঘন্টী বাজাইয়া দিলেন। অমনি কাজ হইয়া গেল, আয়াত নামিয়া আসিল।

হে মুমিনগণ!! রসুলের গৃহে প্রবেশ করিও না। তোমাদের যাহা জানিবার থাকে তাহা পর্দার আড়াল হইতে প্রশ্ন করিও। ইহাই তোমাদের ও তাঁহার হৃদয়ের জন্য সর্বোত্তম। আর তোমাদের জন্য কখনোই উচিত নয় যে তোমরা রসুলের মনে দুঃখ দাও বা তাঁহার মৃত্যুর পর তাঁহার বিবিদের সহিত বিবাহ করো। রসুলের বিবিরা তোমাদের মাতা।



হে মুমিনগণ! তোমাদেরকে অনুমতি দেয়া না হলে তোমরা খাওয়ার জন্য আহার্য রন্ধনের অপেক্ষা না করে নবীর গৃহে প্রবেশ করো না। তবে তোমরা আহুত হলে প্রবেশ করো, তবে অতঃপর খাওয়া শেষে আপনা আপনি চলে যেয়ো, কথাবার্তায় মশগুল হয়ে যেয়ো না। নিশ্চয় এটা নবীর জন্য কষ্টদায়ক। তিনি তোমাদের কাছে সংকোচ বোধ করেন; কিন্তু আল্লাহ সত্যকথা বলতে সংকোচ করেন না। তোমরা তাঁর পত্নীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্যে এবং তাঁদের অন্তরের জন্যে অধিকতর পবিত্রতার কারণ। আল্লাহর রাসূলকে কষ্ট দেয়া এবং তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর পত্নীগণকে বিবাহ করা তোমাদের জন্য বৈধ নয়। আল্লাহর কাছে এটা গুরুতর অপরাধ।
 
O you who believe! Enter not the Prophet's houses, except when leave is given to you for a meal, (and then) not (so early as) to wait for its preparation. But when you are invited, enter, and when you have taken your meal, disperse, without sitting for a talk. Verily, such (behaviour) annoys the Prophet, and he is shy of (asking) you (to go), but Allâh is not shy of (telling you) the truth. And when you ask (his wives) for anything you want, ask them from behind a screen, that is purer for your hearts and for their hearts. And it is not (right) for you that you should annoy Allâh's Messenger, nor that you should ever marry his wives after him (his death). Verily! With Allâh that shall be an enormity.

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَدْخُلُوا بُيُوتَ النَّبِيِّ إِلَّا أَن يُؤْذَنَ لَكُمْ إِلَى طَعَامٍ غَيْرَ نَاظِرِينَ إِنَاهُ وَلَكِنْ إِذَا دُعِيتُمْ فَادْخُلُوا فَإِذَا طَعِمْتُمْ فَانتَشِرُوا وَلَا مُسْتَأْنِسِينَ لِحَدِيثٍ إِنَّ ذَلِكُمْ كَانَ يُؤْذِي النَّبِيَّ فَيَسْتَحْيِي مِنكُمْ وَاللَّهُ لَا يَسْتَحْيِي مِنَ الْحَقِّ وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِن وَرَاء حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ وَمَا كَانَ لَكُمْ أَن تُؤْذُوا رَسُولَ اللَّهِ وَلَا أَن تَنكِحُوا أَزْوَاجَهُ مِن بَعْدِهِ أَبَدًا إِنَّ ذَلِكُمْ كَانَ عِندَ اللَّهِ عَظِيمًا
তোমরা খোলাখুলি কিছু বল অথবা গোপন রাখ, আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সর্বজ্ঞ।
 
Whether you reveal anything or conceal it, verily, Allâh is Ever All­Knower of everything.

إِن تُبْدُوا شَيْئًا أَوْ تُخْفُوهُ فَإِنَّ اللَّهَ كَانَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمًا
নবী-পত্নীগণের জন্যে তাঁদের পিতা, পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নি পুত্র, সহধর্মিনী নারী এবং অধিকার ভুক্ত দাসদাসীগণের সামনে যাওয়ার ব্যাপারে গোনাহ নেই। নবী-পত্নীগণ, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ সর্ব বিষয় প্রত্যক্ষ করেন।
 
It is no sin on them (the Prophet's wives, if they appear unveiled) before their fathers, or their sons, or their brothers, or their brother's sons, or the sons of their sisters, or their own (believing) women, or their (female) slaves, and keep your duty to Allâh. Verily, Allâh is Ever All­Witness over everything.

  لَّا جُنَاحَ عَلَيْهِنَّ فِي آبَائِهِنَّ وَلَا أَبْنَائِهِنَّ وَلَا إِخْوَانِهِنَّ وَلَا أَبْنَاء إِخْوَانِهِنَّ وَلَا أَبْنَاء أَخَوَاتِهِنَّ وَلَا نِسَائِهِنَّ وَلَا مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ وَاتَّقِينَ اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ شَهِيدًا
Title: Re: রঙ্গিলা রসুল (Rangeela Rasool - The playboy prophet)
Post by: Jupiter Joyprakash on January 10, 2014, 02:05:24 PM

এই দিব্যবচনের শেষ কথাটি আমার বড়ই পছন্দের। আমি নিজেও তাঁহাদের মাতা বলিয়াই মনে করি। ইহার পর আরও বলা হইল-
"হে রসুল! আপন স্ত্রী কন্যা তথা মোমিন দিগের স্ত্রীদের বলুন যে তাহারা যেন বস্ত্রের একাংশ আপ্ন দেহে জড়াইয়া রাখে, আপন দৃষ্টি সংযত করে এবং নিজ মর্যাদা রক্ষা করে। -------------

যদি এইসব নিয়ম জয়নবের গৃহে যাইবার পূর্বে প্রচলিত হইয়া যাইত তবে জয়নবের সংসার বাঁচিয়া যাইত, মুহম্মদ নিজে কলঙ্ক হইতে বাঁচিতেন। কিন্তু  পর্দা করিয়াই কি মোমিনরা তাঁহার কীর্তি হইতে নিস্তার পাইয়াছিল? মনের মধ্যে সাধুতা আনয়ন করাই অসৎ কর্মের প্রকৃত ঔষধ। মুহম্মদ যদি এই বিষয়ে যত্ন লইতেন তবে হয়ত নিজের ধর্ম ও ধর্মের অনুসারীদের প্রকৃত মঙ্গল হইত। ম্যোরসাহেব এক কাহিনী আছে, যিনি হজ্ব করিতে মক্কায় গিয়া আরবের অবস্থা স্বচক্ষে এইরূপ দেখিয়া আসিয়াছিলেন-

মহিলারা ১০-১২ খানি করিয়া বিবাহ করিত। দুই চারিটি মাত্র বিবাহ করিয়াছে এমন আওরাৎ এর সংখ্যা বেশ অল্পই ছিল। পতি বৃদ্ধ হইয়া গেলে অথবা অন্য কেহ পছন্দ হইয়া গেলেই তাহারা মক্কাশরীফে আসিয়া মামলা-খতম করিয়া লইত। পুরাতন পতিকে ত্যাগ করিয়া নূতন বিবাহ করিয়া ফেলিত। এমনই ছিল পরদার মহিমা।
Title: Re: রঙ্গিলা রসুল (Rangeela Rasool - The playboy prophet)
Post by: Jupiter Joyprakash on January 10, 2014, 02:37:25 PM
হারেমের শোভাঃ
এতক্ষন আমরা রঙ্গিলা রসুল এর দস্তুরমত গৃহস্থজীবনের আলোচনা করিতেছিলাম, সেজন্য অন্যদের ইহার মধ্যে আসিতে দেওয়া হয়নাই। কিন্তু এইবার তাহার ব্যতিক্রম করিতে হইবে। কারণ মুহম্মদ আর যাহাদের আনিয়াছিলেন তাহারা কেবল ইহুদিনী ছিল। মুহম্মদের জিদ ধরার পরেও তাহারা ব্যাভিচারে সম্মত ছিল না। ব্যাপারখানি পাঠকের পক্ষে বুঝা কঠিন হইবে যদি না মুহম্মদের সহিত ইহুদীদের সম্পর্ক বিষয়ে কিছু বিবরণ না দেওয়া হয়। দেখা যাক!

হিজরত (দেশত্যাগ) এর পর মুহম্মদকে ইহুদীদের ধর্মের বহুরকম প্রশংসা করিয়া তাহাদের নিকট নিজ মতবাদের সার্টিফিকেট লইতে হইয়াছিল। পরে যখন তাঁহার অনুসারীদের সংখ্যা যথেষ্ট বৃদ্ধি পাইল তখন সেই ইহুদীরাই মুহম্মদের গলার কাঁটা বোধ হইতে লাগিল। অবশেষে একদিন তিনি উহাদের ঘেরাও করিয়া ফেলিতে সক্ষম হইলেন। ইহুদীরা যখন ক্ষমাপ্রার্থনা করিল তখন তিনি উহাদের কোতল করার সিদ্ধান্ত করিলেন। শত শত ইহুদী তলোয়ারে দুইখানা হইয়া গেল। একজন ইহুদিনীকেও তাঁহার আদেশে কাটিয়া ফেলা হইয়াছিল।

'রেহানা' নামের এক আওরাৎ এর প্রতি অবশ্য মেহেরবানি করা হইয়াছিল।  প্রথমেই তাহাকে আলাদা করিয়া রাখা হইয়াছিল। দেখিতে শুনিতে সুন্দর ছিল বলিয়া সে মুহম্মদের জন্য রিজার্ভ ছিল। মুহম্মদ যখন তাহাকে বিবাহের আবেদন জানাইলেন তাহা সে নামঞ্জুর করিয়া দিল। ইসলাম কবুল করার প্রস্তাবেও সে সম্মত হইল না। শেষে মুহম্মদ তাহাকে রক্ষিতা বানাইয়া রাখিলেন। অবশ্য সে বেচারী বেশিদিন জীবিত রহিল না। ভাই বেরাদরদের মৃত্যু এবং রসুলের মেহেরবানির চাপে কাঁদিয়া কাঁদিয়া মরিয়া গেল।
Title: Re: রঙ্গিলা রসুল (Rangeela Rasool - The playboy prophet)
Post by: Jupiter Joyprakash on January 10, 2014, 03:06:02 PM
বনি মুস্তলক গোত্রের উপর আক্রমণের কথা আমরা আগে বলিয়াছি। যেখানে আয়েষা হারাইয়া গিয়াছিলেন এবং নানা বদনাম রটিয়াছিল। এই যুদ্ধে অন্য মালামালের সহিত জ়োয়েরিয়া নামের ইহুদিনীও আসিয়াছিল যাহার নিলামের সময়ে মুহম্মদ ডাকাডাকিতে দাম বাড়ানোর সুযোগ না দিয়া প্রথমেই তাহাকে কিনিয়া লইলেন (eBay তে Buy It Now এর মতো) এবং বিবি বানাইয়া ফেলিলেন। জ়োয়েরিয়া যখন মুহম্মদের গৃহে আসিল তখন তাহার সৌন্দর্য্য দেখিয়াই আয়েষা বুঝিয়াছিলেন এ আর বিদায় হইবে না, আর এক সপত্নী বাড়িয়া যাইবে। আর হইলও তাহাই।
খাইবার এও ইহুদীদের এক বসতি ছিল। সেখানেও মুহম্মদ চড়াও হইয়া দখল করিলেন। তাহাতে উহাদের সর্দার 'কনাণ' এর মৃত্যু হইল আর তাহার বিবি দখলে আসিল। মুহম্মদ তাহাকে বিবাহ করার ইচ্ছা প্রকাশ করিতে সে সম্মত হইয়া গেল। আবার মদীনায় ফিরিবার কোনো কথাই হইল না। সেখানেই মাটি ফেলিয়া দস্তরখান বানানো হইল ও খেজুর মাখন এর নিমন্ত্রণ হইয়া গেল। নূতন বিবিলে সাজাইয়া মুহম্মদ যখন কামরায় লইয়া গেলেন তখন চারিপাশে বিশ্বাসী অনুচরেরা প্রহরায় ছিল। আশঙ্কা ছিল এই বেজাতের আওরাৎ বদলা লইবার জন্য কিছু করিয়া ফেলিতে পারে। অবশ্য তেমন কিছু হয়নাই। এই বিবির কপালে এক ক্ষতচিহ্ণ ছিল। যখন মুহম্মদ তাহার কারণ জানিতে চাহিলেন তখন সে উত্তর দিল  যে আমি একরাত্রে স্বপ্নে দেখিয়াছিলাম আকাশ হইতে চাঁদ আমার কোলে পড়িতেছে। আমার পতিকে ইহা জানাইতে তাহার মনে সন্দেহ হইল। "হারামজাদী! পয়গম্বরেকে বিবাহ করার শখ হইয়াছে?" এই বলিয়া সে আমার মাথায় আঘাত করিল। সেই হইতেই এই দাগ হইয়াছে। পাঠক আশা করি সকলই বুঝিয়াছেন। যাহার অন্তরে পূর্ব হইতেই মুহম্মদের বাস, তাহার চরিত্র লইয়া আর কথা কি থাকিতে পারে! ইহার পর মুহম্মদ খাইবার হইতে মদীনায় ফিরিলেন। সেখানে আবার আবুসফিয়ার কন্যা ওস্মহবিবি কে বিবাহ করিলেন।
Title: Re: রঙ্গিলা রসুল (Rangeela Rasool - The playboy prophet)
Post by: Jupiter Joyprakash on January 23, 2014, 02:32:54 PM

ইংরাজী ৬২৬ সনে মুহম্মদ কাবায় হজ্ব করিলেন। ইহা তাঁহার প্রথম হজ্ব ছিল। এজন্য কাবার পুরোহিতদের নিকট তিনি অনুমতি পাইয়াছিলেন। এখানেও মুহম্মদ তাঁহার কীর্তি স্থাপনের সুযোগ ত্যাগ করেন নাই।
চাচা আব্বাস এর বিধবা স্ত্রী মৈমূতা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তাঁহার বয়স ২৫ বৎসর ছিল আর সম্পর্কেও তিনি মুহম্মদের নিকটাত্মীয় ছিলেন। দেখাশুনা ঠিকভাবে করার জন্য মুহম্মদ তাঁহাকেও নিজগৃহে আনিয়া রাখিলেন। মদীনার মসজিদে যেখানে আগে নয়টি কক্ষ ছিল সেখানে আর একটি বানানো হইল।

ইহা ছিল মুহম্মদের বাস্তবিক বিবিদের কাহিনী। যেগুলিকে মুহম্মদ কুরানের বক্তব্যমতে দক্ষিণ হস্তে সংগ্রহ করিয়াছিলেন। এছাড়াও তিনি যেসব রক্ষিতা পালন করিতেন তাহারা আলাদা ছিল।

মারিয়াঃ-
ইংরাজী ৬২৮ সন এ মুহম্মদ তাঁহার গভর্ণরকে লকোকষ এর নিকট পাঠাইলেন। কিন্তু সে মুহম্মদের পয়গম্বরীতে বিশ্বাস করিত না। ফলে কিঞ্চিত তলোয়ারবাজীর দ্বারা তাহার ঈমান মজবুত করিয়া দিতে হইল। অতঃপর সে সম্পর্ক স্থাপন করিতে সম্মত হইয়া দুইখানি সুন্দরী ভেট পাঠাইল। তাহাদের একজনের নাম ছিল 'মারিয়া'। [হাদিশ মুসলিমঃ তাফসীর হুসেনী]

মসজিদের কক্ষে মুহম্মদের অন্য বিবিদের সহিত মারিয়ার স্থান হইল না। যেহেতু সে রক্ষিতা ছিল তাই তাহার জন্য আলাদা বাগানবাড়ি প্রস্তুত করা হইল। সেখানে মুহম্মদ মাঝেমধ্যে সময় কাটাইয়া যাইতেন।

মারিয়া কে লইয়া মুহম্মদের বদনাম আছে যে কুরানে কি মাগী পুষিবার ব্যবস্থা রাখা হইয়াছে? মুহম্মদের গৃহে রক্ষিতা ছিল, এ লইয়া না তাঁহার বিবিরা আপত্তি করিয়াছেন না তাঁহার অনুগত বান্দারা।
একবার কোথা হইতে তিন জন মাগী লাভ হইয়াছিল। মুহম্মদ সেগুলির এক-একটিকে শ্বসুর আবুবকর এবং উসমান এর নিকট এবং তৃতিয়টিকে জামাতা আলির নিকট ভেট পাঠাইয়াছিলেন। আজকের দুনিয়া এসব শুনিয়া ছিছি করিবেই; জামাতা-স্বশুরের সহিত এমন ব্যবহার! শাবাস মুহম্মদ!!

হিন্দুস্তানে শ্বসুরকে পিতার ন্যায় ও জামাতাকে পুত্রের ন্যায় মনে করা হয়। এমন শ্রদ্ধেয় গুরুজন এবং স্নেহের পাত্রকে মাগী পাঠানোকে কোনো ভদ্রলোকে কখনোই প্রশংসা করিতে পারিবে না, কিন্তু সেইকালে আরব দেশে এসব প্রথা চালু ছিল। তাছাড়া ফেরেস্তাগণ সাক্ষ্য দিয়া যাহাকে বৈধ করিয়া দিয়াছে তখন কে এমন কাফের আছে যে পয়গম্বরকে গিয়া বলিবে যে তুমি অবৈধ কর্ম করিতেছ!
Title: Re: রঙ্গিলা রসুল (Rangeela Rasool - The playboy prophet)
Post by: Jupiter Joyprakash on March 28, 2014, 08:58:37 AM
বিপদের কথা এই যে এইবার মুসলমানেদের মধ্যেও মুহম্মদের এই সকল কাজকর্মের ফলে খটকা লাগিতেছিল। সৈয়দ আমীর আলি এই কথাগুলি ঢেকুরটিও না তুলিয়া একেবারে চাপিয়া হজম করিয়া ফেলিয়াছেন। অ-মৌলানা শিবলী ব্যাপারটির আগাপাছতলা বদল করিয়া ফেলিয়াছেন। তাঁহার মতে মুহম্মদের গৃহে এমন কোনো ঘটনাই হয়নাই। কুরানে এক সুরা আসিয়াছিল, আসুন দেখা যাক-

"হে নবী, আল্লাহ আপনার জন্যে যা হালাল করছেন, আপনি আপনার স্ত্রীদেরকে খুশী করার জন্যে তা নিজের জন্যে হারাম করেছেন কেন? আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়াময়।"
"আল্লাহ তোমাদের জন্যে কসম থেকে অব্যহতি লাভের উপায় নির্ধারণ করে দিয়েছেন। আল্লাহ তোমাদের মালিক। তিনি সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।"
"যখন নবী তাঁর একজন স্ত্রীর কাছে একটি কথা গোপনে বললেন, অতঃপর স্ত্রী যখন তা বলে দিল এবং আল্লাহ নবীকে তা জানিয়ে দিলেন, তখন নবী সে বিষয়ে স্ত্রীকে কিছু বললেন এবং কিছু বললেন না। নবী যখন তা স্ত্রীকে বললেন, তখন স্ত্রী বললেনঃ কে আপনাকে এ সম্পর্কে অবহিত করল? নবী বললেন, যিনি সর্বজ্ঞ, ওয়াকিফহাল, তিনি আমাকে অবহিত করেছেন।"
"তোমাদের অন্তর অন্যায়ের দিকে ঝুঁকে পড়েছে বলে যদি তোমরা উভয়ে তওবা কর, তবে ভাল কথা। আর যদি নবীর বিরুদ্ধে একে অপরকে সাহায্য কর, তবে জেনে রেখ আল্লাহ জিবরাঈল এবং সৎকর্মপরায়ণ মুমিনগণ তাঁর সহায়। উপরন্তু ফেরেশতাগণও তাঁর সাহায্যকারী।"
"যদি নবী তোমাদের সকলকে পরিত্যাগ করেন, তবে সম্ভবতঃ তাঁর পালনকর্তা তাঁকে পরিবর্তে দিবেন তোমাদের চাইতে উত্তম স্ত্রী, যারা হবে আজ্ঞাবহ, ঈমানদার, নামাযী তওবাকারিণী, এবাদতকারিণী, রোযাদার, অকুমারী ও কুমারী।"

ভাইলোগ, আপনারা কেহ কি বলিতে পারেন সে কোন গোপন কথা যাহা এক বিবি আরেক বিবির নিকট জানাইয়া দিয়াছিলেন? মুহম্মদ কোন বৈধ কর্মকে অপকর্ম মনে করিয়া ত্যাগ করিয়াছিলেন? বেচারী গরীব বিবিদের কেন আল্লার নিকট এমন ধমক খাইতে হইল?

হাদিশে পাওয়া যায় [সহি মুসলিম; তাফসীর হুসেইনী] একদা নবীর যখন হাফজ়ার সহিস বসবাসের সময় ছিল তখন হাফজ়া ছুটি লইয়া বাপেরবাড়িতে ছিলেন। সেই ফাঁকে হাফজ়ার খালি কামরায় মুহম্মদ মারিয়াকে লইয়া আসিয়া সংসার পাতিয়া ফেলিলেন। হাফজ়া ফিরিয়া আসিয়া যখন দেখিলেন তাঁহার খাস কামরা এক মাগীর দখলে চলিয়া গিয়াছে তখন তিনি রাগে আগুন হইয়া উঠিলেন।  এই অবস্থায় বিবিজানের মেজাজ দেখিয়া মুহম্মদ বিপদ কাটাইতে হাফজ়ার নিকট প্রতিজ্ঞা করিলেন যে হে বিবিজান, তুমি এই মাগিবাজীর কথা গোপন রাখিলে আমিও আর কখনো মারিয়া বান্দীর সহিত সহবাস করিব না এবং আমার পর তোমার আব্বাজানই খলিফা হইবেক।

বিপদ কাটিল বটে কিন্তু হাফজ়া বিবির পেটে কথাটি চাপা থাকিল না। ফলে আয়েশার নেতৃত্বে বিবিদের এক সভা বসিল এবং সকলে একমত হইয়া মুহম্মদকে বয়কট করার সিদ্ধান্ত লইলেন। মুহম্মদ পয়গম্বর; তাহার উপরে মদীনার একমাত্র বাদশাহ! তিনি ভাবিলেন, এই বিবিরা কোন হরিদাস পাল যে আমার উপর মেজাজ দেখাইতে চায়? তিনিও সঙ্গে সঙ্গে সেই ঐশ্বরিক অস্ত্র প্রয়োগ করিলেন এবং বিবিদের ত্যাগ করিয়া মাসখানেকের জন্য মারিয়া বান্দীর বাগানবাড়িতে গিয়া ডেরা বসাইলেন। বলিলেন, দেখি বিবিরা আমার কি করিতে পারে? তাহাদের ক্ষমতা একবার দেখি।
এর ফলে ভীষণ রকমের জটিলতা জন্মাইয়া গেল, আবুবকর গরম, ওমর গরম, ঊসমান গরম। এক মাগীর জন্য তাহাদের বেটিদের সহিত সম্পর্ক ত্যাগ করা হইল? মাসখানেক এইভাবে আলাদা থাকিয়া মুহম্মদের মেজাজ নরম হইয়া আসিল (হাফজ়ার মেজাজ তিনি ভালই জানিতেন) এবং তিনি বলিতে লাগিলেন - আল্লা বলিয়াছেন হাফজ়ার কসুর মাফ, তাহার সহিত তাহার বহিন দেরও কসুর মাফ। খোদা-খোদা করিয়া রাসুলের ঘরসংসারে ঝগড়া মিটিয়া শান্তি আসিল।
'মারিয়া'র প্রতি বাড়তি প্রেমের আরো এক কারণ ছিল যে তাহার গর্ভে সন্তান হইয়াছিল। মুহম্মদের কন্যা তো ছিল, কিন্তু পুত্র হইয়া মরিয়া গিয়াছিল। মুহম্মদ ওয়ারিস পাইয়াছিলেন। কাজের উত্তরাধিকার, সম্পত্তির উত্তরাধিকার, বংশের প্রদীপ। পুত্র কে না চায়! সৈয়দ আমীর আলি কহেন, সম্ভবতঃ মুহম্মদ উপযুক্ত পুত্রের আশাতেই এতগুলি বিবাহ করিয়াছিলেন। কিন্তু এই আশা তাঁহার  কোনো বিবি পূরণ করিতে পারেন নাই, শেষে কিনা বান্দী মারিয়ার ভাগ্যে ছিল। এই নবজাতকের নাম রাখা হইল ইব্রাহিম। তাহার দুগ্ধের জন্য এক পাল বকরি রাখা হইয়াছিল।

একদিন মুহম্মদ ইব্রাহিমকে আয়েশার নিকট দেখাইয়া কহিলেন, দেখ মুহম্মদের বাচ্চা না? চোখে মুখে চেহারায়, রং-রূপ ব্যবহারে হুবহু মুহম্মদ। আয়েশা কিন্তু সতীনপুত্রকে দেখিতে পারিতেন না। তিনি কহিলেন "অন্য কাহারো সহিত মিল আছে কিনা দেখো। এইভাবে নিজের চেহারাখানার অপমান করা ঠিক না।" মুহম্মদ যখন বালকের স্বাস্থ্যের কথা তুলিয়া কহিলেন " দেখো কেমন বলবান পুত্র।"  আয়েশা তাহাতে উত্তর দিলেন " একপাল বকরি আনিয়া খাওয়াইলে সকলেই এমন ফুলিয়া উঠিবে।"

আমরা এই কাহিনীর উল্লেখ এজন্য করিলাম যাহাতে বহুপত্নীবানেরা কিঞ্চিত শিক্ষালাভ করেন। পিতা সন্তানের মুখ দেখিয়া শান্তি পাইতেছেন, আনন্দে ভাসিতেছেন আর অন্যদিকে বিবি হিংসায় জ্বলিতেছেন।