Menu

Show posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.

Show posts Menu

Messages - Jupiter Joyprakash

#151
Poetry / হিরো বন্দনা।
May 10, 2013, 04:38:32 PM
হিরো বন্দনা


প্রাচীন রোমে এক ব্যাদড়া রাজা ছিল
তাহার নাম ছিল নিরো
বেহালা বাজানোয় দখল ছিল বলে
নিজেরে ভাবিত সে হিরো

সাধনা ছাড়া কিছু হয়না অভিনব
এমনি ছিল তার বাণী
বেহালা হাতে নিলে দিতনা আর সাড়া
করিলে শত টানাটানি

যেদিন রাজধানী আগুনে পুড়ে গেল
হাসিয়া বলিল সে কেঁদোনা,
সুরের কাছে খড়ো চালের দাম কিবা
করিতে দাও মোরে সাধনা

==================
==================

স্বপনে দেখিয়াছি আবার সেই হিরো
এসেছে লয়ে তার বাদ্য
নতুন যুগে তার নতুন সুর নিয়ে
যোগাতে সঙ্গীত খাদ্য

রকেরা রোল হয়ে গড়িয়ে ভেগে যায়
শুনিয়া মিউজিক নব্য
সঙ্গে আছে তার নব আবিষ্কার
নূতন নাচ, গান, কাব্য...

সেই মহান দিন একদা আসিবেই
এ চোখে দেখা যাবে তোমাকে
মেকাপে মোড়া হয়ে ঘোড়ার মত নাচ
দেখিব বসে খালি ষ্টমাকে

জ্বলুক খালি পেট, কিম্বা পোড়া মন
থাকুক আরো বহু বেদনা
তোমার প্রয়োজন নাই তা জানিবার
দেখিও তুমি নিজ সাধনা

#152
চিকিৎসকেরা বলেন যে একজন মহিলা ৪০ বা ৪৫ বৎসর বয়স পর্যন্ত সন্তানের জন্মদান করিতে পারেন। কিন্তু এত বয়সের সন্তান অধিক দিন জীবিত থাকে না। তাই সন্তানের জন্য বিবাহ করিতে হইলে এমন বয়সের নারীরা বিবাহের অযোগ্য। এই হিসাবে খাদীজা আদৌ বিবাহের যোগ্য ছিলেন না।

মহম্মদ একলা থাকিতেই অধিক ভালবাসিতেন। কল্পনার জগতে থাকিতেই আনন্দ পাইতেন। পাহাড়ে,জঙ্গলে, মাঠে বা মরুভূমিতে কিম্বা গৃহকোনেই একেলা বসিয়া নিজমনে কথাবার্তা কহিতেন। এই পাগলামি হইতেই তাঁহার পয়গম্বর হইবার সূচনা হয়।

রুজি-রুটির ব্যবস্থা না হইলে স্বাধীনতাই থাকে না, পয়গম্বরী ত অনেক দূরের কথা। খাদীজার সহিত বিবাহ ছিল এক দৈবিক প্রেরণা,যাহা হইতেই মহম্মদের সুসময়ের সূত্রপাত।

আরবে পাপ হইত। অতি ভয়ানক সব পাপ হইত, আর মহম্মদের অন্তর সৎ চিন্তায় পূর্ণ ছিল। আরবীয়রা মূর্তিপূজক ছিল আর মহম্মদ উন্মুক্ত প্রান্তরে, অসীম আকাশে অথবা ঘন বনে এক অলৌকিক শক্তির উপলদ্ধি করিয়াছিলেন। তিনি নিশ্চিত হইয়াছিলেন যে পরমাত্মা এক এবং তাঁহার কোনো প্রতিমা নাই।

খাদীজার দাসদের মধ্যে জায়েদ নামক একজন ক্রীশ্চান ছিল। সে মহম্মদকে ক্রীশ্চান ধর্মের উপদেশ শুনাইয়া তাঁহার বিশ্বাস উৎপাদনের চেষ্টা করিত। জায়েদ এর প্রতি মহম্মদের স্নেহ এতই বৃদ্ধি পাইয়াছিল যে তিনি নিজের জন্য তাহাকে খাদীজার নিকট হইতে চাহিয়া লইলেন। খাদীজার আত্মীয়দের মধ্যে বেশ কিছু খ্রীষ্টধর্মে বিশ্বাসী ছিল। তাহারা মহম্মদকে নানাভাবে উৎসাহিত করিবার সব রকমে সাহায্য করিত।

মহম্মদ নিশ্চিত হইয়া গিয়াছিলেন যে জগতের লোকসকল পথভ্রষ্ট হইয়া চলিয়াছে। নিজের এই অবস্থা দেখিয়া তাঁহার কান্না আসিত। তাঁহার অন্তরে গভীর ব্যথা ছিল, যাহা কখনো কখনো আরবী ভাষায় চমৎকার কবিতার রূপে প্রকাশিত হইত। ইহাই কোরানের প্রথম আয়াত। তাহা কোন কারণে কোরানের অন্তিমে লিখিত হইয়াছে তাহা বুঝা যায় না। ইহাতে ব্যথা আছে, তীব্রতা আছে। কেবল যে সত্য আছে তাহা নহে, তীব্র আকাঙ্খা আছে ও বাস্তবের সন্ধান আছে।
#153
Poetry / কবিতা
May 06, 2013, 05:21:00 PM
 আমার গামছা যেন সপ্তম স্বর্গের রুমাল
আমার পুরোনো জামা দেবতার বিজয় নিশান
আমার পকেটে ফুটো, যেন দ্বার খোলা আশমান
আমার অশ্রাব্য গালি, তারও মাঝে আছে সুর তাল

পরনিন্দুকের দল নিন্দা করে শ্রান্ত হয়ে যাক
আমার কাব্যের স্রোতে ভরে দেব এভিরিহোয়্যার
কবিতায় ধুয়ে যাবে ঘামে ভেজা আন্ডারওয়্যার
তারই ছন্দের সাথে তাল দেবে তেরে-কেটে-তাক

আমি এক পৃথিবীর কবি, তবু পরিচিত নই
নামে কিবা এসে যায়? কর্মেই সবার পরিচয়
সুকর্মে সুনাম পেতে লাগে যদি অধিক সময়
গালি দিয়ে অধিকার কেড়ে নিতে কভু ভীত নই
#154
যাহা হউক, মহম্মদ বিবাহ করিলেন। মাতা খাদীজার পতি হইয়া তাঁহার জান-মাল এর অধিকারী ও রক্ষক হইলেন। বাল্যকালেই দরিদ্র হইয়াছিলেন। মাতার মমতা কোনোদিন পান নাই। এখন বিবাহ করিয়া ফেলায় এক সঙ্গে দুই বাসনা পূরণ হইয়া গেল। মহম্মদ যাহা ইচ্ছা বলুন, কিন্তু আমরা তাঁহাকে মাতা খাদীজাই বলিব। তিনি আমাদিগের মাতা এবং আর্য্যশাস্ত্র অনুসারে প্রত্যেক নারীকেই মাতা বলা হইয়াছে।
ইহা মাতা খাদীজার তৃতীয় বিবাহ ছিল। মাতা খাদীজা মহম্মদের ছয়টি সন্তান জন্মদান করেন। তাহাদের মধ্যে দুইটি পুত্র এবং চারটি কন্যা ছিল। বড় পুত্রের নাম ছিল কাশেম, যে মাত্র দুই বৎসর বাঁচিয়াছিল। অন্য পুত্রটি নিতান্ত শিশুকালেই স্বর্গলাভ করে।

সীরাতুল্লাভী মৌলানা শাবলী কৃত
#155
বৃদ্ধাচারী মহম্মদ

মহম্মদের প্রথম বিবাহ হয় ২৫ বৎসর বয়সে। আর্যসমাজীদেরও এ কথা মানিতেই হইবে যে মহম্মদ তাঁহার জীবনের প্রথম ভাগ শাস্ত্র অনুসারে কুমার অবস্থায় অতিবাহিত করিয়াছিলেন। তিনি ব্রহ্মচারী ছিলেন, বিবাহ করার পূর্ণ অধিকার তাঁহার ছিল।
সর্বপ্রথম আমরা মহম্মদের ব্রহ্মচর্য্য অবস্থার প্রতি একবার দৃষ্টিপাত করা উচিত বিবেচনা করিতেছি। কারণ দুর্গন্ধময় মানসিকতার লোকেরা সর্বদাই ভালমানুষের অভ্যাস, কর্ম ও বাক্যে সন্দেহ প্রকাশ করিয়া থাকে।
আমরা মহম্মদকে ব্রহ্মচারী মান্য করি কারণ তিনি স্বয়ং এ বিষয়ে আলোকপাত করিয়াছেন। তিনি বলিয়াছেন- একদা তিনি অন্য এক কুরেশী যুবকের সহিত পশুচারণ করিতেছিলেন। মহম্মদ ঐ যুবককে কহেন, "তুমি যদি আমার পশুগুলির প্রতি দৃষ্টি রাখিতে পারো তবে আমি ছুটি পাইতে পারি, আর যেভাবে নবযুবকেরা রাত্রিযাপন করিয়া থাকে আমিও সেইভাবে রাত্রিযাপন করিয়া আসিতে পারি।"
এই বলিয়া মহম্মদ মক্কা শহরে চলিয়া গেলেন। কিন্তু সেখানে এক বিবাহ অনুষ্ঠানে তাঁহার মনযোগ আকর্ষন করিয়া লইল। তিনি সেখানেই ঢুকিয়া পড়িলেন এবং এক সময় ঘুমাইয়া পড়িলেন। পরে আরেক রাত্রে তিনি আবার একই উদ্দেশ্যে মক্কায় গেলেন, কিন্তু স্বর্গীয় প্রলোভনে তাঁহার মন মোহিত হইয়া গেল এবং সেবারও তিনি ঘুমাইয়া রাত্রি কাটাইয়া দিলেন।
মহম্মদ কহেন যে এই দুই ঘটনার পর আর তাঁহার মন মন্দের দিকে অগ্রসর হয়নাই।

"হায়াত মহম্মদী  ম্যোরসাহেব কৃত"

আমরা মহম্মদের বাক্যে বিশ্বাস করি, কারণ তাঁহাকে 'হমামীন' বলা হয়। আমরা বিশ্বাস করি যে তাঁহার অন্তর সমস্ত পাপ হইতে মুক্ত ছিল। মাত্র দুইবার শয়তান তাঁহাকে পথভ্রষ্ট করিয়াছিল কিন্তু ঐশ্বরিক প্রেরণার সহায়তায় আমাদের "রঙ্গিলা রসুল" সেই অন্ধকার রসাতলের পথ হইতে এক চুলের জন্য নিস্তার পাইয়াছিলেন। তিনি বাস্তবে কোনো অন্যায় কার্য্য করেন নাই (করিবার চিন্তা করিয়াছিলেন মাত্র)। মহম্মদ পূর্ণ ব্রহ্মচারী ছিলেন, তিনি ২৫ বৎসর বয়সকাল পর্যন্ত যৌবনের সকল বাসনা হইতে সুরক্ষিত ছিলেন।


মাতা খাদীজা

আমরা খাদীজাকে মাতা খাদীজা বলিয়াই উল্লেখ করিব, কারণ তিনি যখন মহম্মদের অন্তঃপুরে আসিলেন তখন তাঁহার বয়স ৪০ বৎসর। সত্য কথা বলিতে গেলে মহম্মদই খাদীজার গৃহে গিয়াছিলেন। মহম্মদ ২৫ বৎসরের ছিলেন, দেখিতে-শুনিতে সুন্দর ছিলেন, স্বভাবে সৎ ছিলেন, কেবল সৎ বংশেরই নহে বরং সৎ গৃহেরও সন্তান ছিলেন।
অন্যদিকে খাদীজা বিধবা ছিলেন, কুরেশী অর্থাৎ মহম্মদের স্বগোত্র ছিলেন, তাঁহার দুই পতি ইতিপূর্বেই গত হইয়াছিলেন, তাঁহার সন্তানও ছিল। তবুও মহম্মদ ও তাঁহার মধ্যে সম্পর্কের সূত্র এই ছিল যে তাঁহার নিকট সম্পত্তি ছিল। সওদাগরের দল যখন বিদেশে যাইত তখন তিনিও প্রতিনিধি প্রেরণ করিতেন। প্রভুর আশীর্বাদে ব্যবসায়ে ১০০% হইতে ১৫০% অবধি লাভ থাকিত। সমগ্র মক্কা তাঁহাকে চিনিত। সুন্দর ধনী ব্যক্তিদের নিকট হইতে বিবাহের প্রস্তাবও কম আসিত না। কিন্তু তিনি তাঁহার সম্পত্তি ও অবস্থায় সুখী ছিলেন, অকারণে আর জাগতিক সমস্যা মাথায় লইবার কোনো ইচ্ছা তাঁহার ছিল না।
এক বৎসর তিনি মহম্মদকে প্রতিনিধি করিয়া বণিকদলের সহিত পাঠাইলেন। মহম্মদ সৎ ছিলেন, আশার অতিরিক্ত লাভ করিয়া ফিরিলেন। বাড়ির ছাতে বসিয়া খাদীজা এক সুন্দর সওয়ারকে আসিতে দেখিলেন, তিনি ছিলেন মহম্মদ। মহম্মদ আসিলেন, ব্যবসার হিসাব দিলেন, নিজের প্রাপ্য লইয়া চলিয়া গেলেন। তাঁহার লাজুক নয়ন, পরিমিত বাক্য, স্বাভাবিক সৌন্দর্য্য, ব্যবসায়িক দক্ষতা ও অন্তরের সরলতা বৃদ্ধার মনকে অতি স্বাভাবিকভাবেই প্রভাবিত করিয়া ফেলিল, আর তিনি এই যুবককে জীবনসাথী করিবার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিলেন।
খাদীজা পবিত্র ছিলেন। লোকে তাঁহার সৌন্দর্য্য ও সম্পত্তির পিছনে পড়িয়াছিল। এখন তিনি নিজেই পড়িলেন। এমন কে ছিল যে তাঁহাকে এইভাবে পড়িতে দেখিয়া বিচলিত হইবে না? এমন কে ছিল যে এই অবস্থায় মুখ ফিরাইয়া চলিয়া যাইতে পারে!
খাদীজার পিতা জীবিত ছিলেন। আশঙ্কা ছিল তিনি এই বিবাহে কাঁটা হইবেন। এই সময়ে খাদীজা এক উৎসব করিলেন। তাহাতে নিজে পরিবার এবং মহম্মদের পরিবারকেও নিমন্ত্রন করিলেন। সুরার স্রোত চলিল। খাদীজার পিতাও নিমন্ত্রিত হইয়াছিলেন। তিনি বৃদ্ধকালে অতিরিক্ত পান করিয়া বেসামাল হইয়া পড়িলেন। সকলে এই সুযোগের অপেক্ষাতেই ছিল। সঙ্গে সঙ্গে খাদীজাকে সাজাইয়া বিবাহ দেওয়া হইয়া গেল। জ্ঞান হইবার পর খাদীজার পিতা হতভম্ব হইয়া গেলেন, কিন্তু পক্ষী তখন উড়িয়া গিয়াছে। সমাজের প্রধানেরা যখন মানিয়া লইয়াছেন তখন বৃদ্ধকে নিরব থাকিতে হইল।

"হায়াত মহম্মদী  ম্যোরসাহেব কৃত"
#156
ঈশ্বরের অন্তিম বার্তাবাহক "হজরত মহম্মদ সাহেব" এর জীবন-চরিত্র আরম্ভ।
মহম্মদের বিশেষত্ব এই যে তিনি গৃহস্থ পয়গম্বর ছিলেন। মুসলমান ভাইয়েরা তাঁহার এই চরিত্র লইয়া গর্ব করেন, যে দেখ; অন্য পয়গম্বরের মধ্যে যাহা নাই তাহা মহম্মদের মধ্যে আছে। এই জন্যই ত মহম্মদ প্রশংসার যোগ্য। এ কথা আমারও হৃদয় স্পর্শ করে।


- দয়ানন্দ বাল-ব্রহ্মচারী ছিলেন। তিনি ছিলেন দেবতা। আমরা সামান্য মনুষ্য, তাঁহার ব্রহ্মচর্যের স্তরে যাওয়া আমাদের সাধ্য কি!

- মহাত্মা বুদ্ধ বিবাহ করিয়াছিলেন। কিন্তু তিনি গৃহত্যাগ করিয়াছিলেন। যৌবনকালে পত্নী ও সন্তানকে একলা পরিত্যাগ
করিয়া তিনি সাধু হইয়াছিলেন। এমন সাধুতা লাভ করা আশা বা ক্ষমতা আমাদের নাই।

- যীশু ত সংসারের কাজ কিছুই করেন নাই।

- মহম্মদ বিবাহ করিয়াছেন, না! তিনি অজস্র বিবাহ করিয়াছেন। সকল প্রকার নারীকে বিবাহ করিয়াছেন। বিধবা, কুমারী, বৃদ্ধা, যুবতী, হাঁ, একজন নবযুবতীও ছিলেন। তিনি সমস্ত রকম বিবাহেরই রঙ দেখিয়াছেন, তাহাদের ভালমন্দ কেবল বুঝেনই নাই, তাহা প্রয়োগ করিয়া বাস্তব ফলাফলের
নিদর্শনও স্থাপন করিয়াছেন।
- মহম্মদ একজন অভিজ্ঞ পয়গম্বর ছিলেন। অভিজ্ঞতাই তাঁহার জ্ঞানের উৎস ছিল। এমন নিম্বপত্রের ন্যায় তিক্ত অভিজ্ঞতাও মহম্মদ মধুর মত পান করিয়াছেন, কেন? কেবল সকলের মঙ্গলের জন্য! আমাদের জ্ঞান দান করার জন্যই। মহম্মদের জীবন শিক্ষাপ্রদ উপদেশে ও উপাসনায় পরিপূর্ণ। সত্যই তিনি পথ-প্রর্দশক

- আমি গৃহস্থ, আমার পয়গম্বর গৃহস্থ। তিনি আমার গুরু, আমি তাঁহার শিষ্য। উপনিষদে লিখিত আছে যে গুরুর সদগুণ গ্রহণ করিবে ও অসদ গুণ বর্জন করিবে।
- এই দৃষ্টিকোণ হইতেই আজ আমরা ঘরবাড়ীওয়ালা, রঙ্গিলা, রসিক নাগর রসুলের জীবনের গৃহস্থাশ্রমের উপর এক সরস দৃষ্টিপাত করিতে চাই। মহম্মদী তথা অ-মহম্মদী সকলেই ইহা পাঠ করিতে পারেন, কারণ মহম্মদ ত সকলেরই।

#157
!!ওম!!
পয়গম্বরের প্রশংসা

বাগিচায় বুলবুলি যায় যেমন করে ফুলের টানে।
আমি যাই তেমন আমার রঙ্গিলা রসুলের পানে।।

চির বসন্তের রঙ্গিলা রসুল আমার!
লক্ষ পীরের রঙ্গিলা রসুল আমার!!
জগতের সেরা রঙ্গিলা রসুল আমার!
দেবতার প্রিয় রঙ্গিলা রসুল আমার!!

বাগিচায় বুলবুলি যায় যেমন করে ফুলের টানে।
আমি যাই তেমন আমার রঙ্গিলা রসুলের পানে।।

মন্দকে চাও করতে ভালো? বিয়ে করাই সহজ পথ।
আঁধারে চাও জ্বালতে আলো? বিয়ে করাই সহজ পথ।।
দেখতে পেলে রূপের রাণী? বিয়ে করাই সহজ পথ।
দেখলে কারো টাকার খনি? বিয়ে করাই সহজ পথ।।


বাগিচায় বুলবুলি যায় যেমন করে ফুলের টানে।
আমি যাই তেমন আমার রঙ্গিলা রসুলের পানে।।


চমূপতি (এম এ)
#158
 প্রস্তাবনাঃ-

হজরত মহম্মদ সাহেব এর পঁচিশ বৎসর বয়সকাল হইতে  লেখক এই পুস্তকের সূচনা করিয়াছেন। ইহার পূর্বকালের কোনো তথ্য এই পুস্তকে নাই। এজন্য পাঠকের জ্ঞাতার্থে সংক্ষেপে তাঁহার জন্ম হইতে পঁচিশ বৎসর বয়স পর্যন্ত কাহিনী পাঠকের নিকট জানাইয়া আমার পবিত্র কর্তব্য পালন করিতেছি।
হজরত মহম্মদ এর পিতার নাম ছিল আব্দুল্লাহ। তিনি আব্দুল মুত্তালিব এর পুত্র ছিলেন। তাঁহারা ছিলেন কুরাইশ বংশের সন্তান। এই বংশ আরবের অন্যতম প্রধান গোত্র ছিল এবং তৎকালীন বেদুইনদের মধ্যে সর্বাধিক সম্মানিত ছিল।
মহম্মদ এর জন্ম মক্কায় হইয়াছিল। জন্মের পূর্বেই তাঁহার পিতা আব্দুল্লাহ পরলোকে প্রস্থান করেন। তাই জন্মের পর তাঁহার পিতামহ আব্দুল মুত্তালিবের নিকট তিনি পালিত হইতেছিলেন। মহম্মদের যখন আট বৎসর বয়স তখন আব্দুল মুত্তালিবের মৃত্যু হইল, অতঃপর বালক মহম্মদের দায়িত্ব লইলেন চাচা হজরৎ আবু তালিব।
মহম্মদের মাতার নাম ছিল আমীনা। কিন্তু সে সময়ের প্রথা অনুসারে শারীরিক ও মানসিক উন্নতির জন্য তাঁহাকে নিকটের এক গ্রামে হালিমা সাদীয়া নামক এক মহিলার নিকট পাঠাইয়া দেওয়া হয়। সেখান হইতে মাতার নিকট ফিরিয়া আসার অল্পদিন পরেই মাতা আমীনাও দেহরক্ষা করিলেন। ফলে বালক মহম্মদের সম্পূর্ণ দায়িত্ব পড়িল চাচা আবু তালিব এর উপর। চাচা ব্যবসায়ী ছিলেন। তিনি মহম্মদকে ব্যবসায়ে লাগাইয়া দিলেন এবং ছাগল চরানোর দায়িত্বে নিযুক্ত করিলেন। এই ছাগল চরানোতেই মহম্মদের বাল্যকাল কাটিয়া গেল। প্রভূর কৃপায় অলৌকিক সৌন্দর্য্য, অসাধারণ স্বাস্থ্য, বিশুদ্ধ হৃদয় ও গভীর ভক্তি থাকার পরেও তাঁহাকে দারিদ্র ও কঠোর পরিশ্রমের মধ্য দিয়া চলিতে হইয়াছিল। পিতাকে কখনো দেখেন নাই, মাতাকে অতি বাল্যকালেই হারাইয়াছিলেন।
পঁচিশ তম বর্ষে তাঁহার প্রতি খাদিজা নামক এক ধনী বিধবা মহিলার দৃষ্টি পড়িল। তাঁহার বয়স সেই সময় চল্লিশ বৎসর ছিল। মহম্মদও ইহাতে হৃদয় হারাইয়া ফেলিলেন। ২৫ বৎসরের কষ্টের পর সহসা তাঁহার যেন লটারী লাগিয়া গিয়াছিল। যে ভালবাসা হইতে তিনি আজন্ম বঞ্চিত ছিলেন সেই ভালবাসা একই সঙ্গে পত্নী ও মাতার রূপে সাক্ষাৎ প্রাপ্ত হইবার মত সৌভাগ্য আর কি হইতে পারে! খাদীজার বয়স যদি চল্লিশ না হইয়া ষাট হইত তাহাতেও হজরত এই বিবাহ প্রস্তাবে আপত্তি করিতেন না।
এইবার আপনারা হজরত মহম্মদ সাহেব এর পবিত্র? জীবন চরিত মনযোগ সহকারে পাঠ করিয়া লাভবান হোন। অন্য কোনো পয়গম্বরের এমন শিক্ষাপ্রদ জীবন বৃত্তান্ত পাওয়া কঠিন, যাহা অনুসরণকারীর জন্য স্বর্গ নিশ্চিত। যাহাতে প্রত্যেক বাক্যের সহিত প্রমাণ নিহিত আছে যেগুলিকে সুন্নী মুসলমান ভাইয়েরা প্রামাণ্য হিসাবে মান্য করেন। যদি আপনি ইহাকে নরকের পথ বলিয়া মনে করেন তবে আজই পরিত্যক্ত ঈমান ফিরাইয়া আনিতে পারিবেন। কারণ কিছু না জানিয়া কাহারো অনুসরণ করা অস্বাভাবিক।
এই জীবন চরিতটি সম্পূর্ণ নিরপেক্ষতা সহকারে প্রমাণ সহ লিখিত হইয়াছে। ইহাতে পরিষ্কার জানা যায় যে সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠাতা নিজেই এত পবিত্র যে তাঁহার তুলনা ইতিহাসে আর দ্বিতীয় পাওয়া যায় না! তবে তাঁহার উপদেশ ও সিদ্ধান্ত কতই না শিক্ষাপ্রদ হইবেক। পাঠক স্বয়ং তাহা বিচার করিবেন।
                                                বিতরকঃ-  মহম্মদ রফী।
#159
 
রঙ্গিলা রসুল (The playboy prophet)
লেখক ? পন্ডিত চমুপতি
প্রকাশক শহীদ-এ আজম মহাশয় রাজপাল, লাহোর

বিতরক- মহম্মদ রফী, সবজী মন্ডী, দিল্লী



উৎসর্গঃ-
সেই মহান যোদ্ধা, সাহসী, বিদ্বান কে এই কীর্তি সমর্পন করা হইল যিনি এই সংসারের নিকট ?হজরত মহম্মদ সাহেব? এর জীবন চরিত্র প্রকাশ করিয়া সঠিক দিগদর্শন করাইয়াছেন এবং তাহার ফলস্বরূপ ছোরার আঘাতে শহীদ হইয়াছেন। এই পুণ্যাত্মার প্রতি আমার অন্তিম প্রণাম।

              পন্ডিত চমূপতি (লেখক)









ইতিহাসঃ


পন্ডিত চমূপতি ছদ্মনামে এক আর্যসমাজী এই 'রঙ্গীলা রসুল' গ্রন্থটি রচণা করেন। লাহোরের রাজপাল প্রকাশনী হইতে এটি প্রকাশিত হয়। এজন্য মুসলিম সমাজের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রকাশক শহীদ আজম রাজপালকে আদালতে উঠানো হইয়াছিল, কিন্তু কোনো অবস্থাতেই তিনি এই গ্রন্থের রচয়িতার পরিচয় প্রকাশ করেন নাই। পাঁচ বৎসর মামলা চলিবার পর প্রকাশক আজম সাহেব এই মামলা হইতে মুক্তিলাভ করেন। এই সময়ের মধ্যে তাঁহার উপর বহুবার প্রাণঘাতী আক্রমণ ঘটিয়াছিল। অবশেষে ১৯২৯ সালের ৬ এপ্রিল ইল্ম-উদ-দীন নামক এক জিহাদী তরুণ আজম সাহেবকে ছোরার আঘাতে হত্যা করিতে সক্ষম হয়। এই মহান কীর্তি সম্পাদন করার ফলে ইলম-উদ-দীন এর ফাঁসি হইয়াছিল।

নিজের জীবন বার বার বিপন্ন করিয়াও প্রকাশক আজম সাহেব যেভাবে গ্রন্থকারকে রক্ষা করিয়াছিলেন সেজন্য লেখক 'পন্ডিত চমূপতি' আজম সাহেবের প্রতি আজীবন কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করিয়াছেন।
#160
Story / আল্লার বাপ।
May 03, 2013, 06:37:10 PM
 
আল্লার বাপ।
        উড়ন্ত ঘোড়ার আবিষ্কারক ডঃ আবুল দিওয়ানার বাপের একটা নাম ছিল বটে। কিন্তু আবুল মহাশয় যেইদিন বিশ্ববিখ্যাত হইলেন সেদিনের পরে তিনি আবুলের বাপ নামেই সর্বত্র পরিচিত। এর আগেও অবশ্য অনেকে তাঁহাকে এই নামে ডাকিতেন। কিন্তু তাহাতে তাঁহার মনে সুখ ছিল না। কারণ তিনি নিজে সুপুত্র আবুলকে হারামজাদা বলিয়া ডাকিতেন।

যাহাই হউক সবে বরাত এর পবিত্র রজনীতে আবুলের বাপের সহসা মনে হইল আল্লা তাঁহার গদিচেয়ারে তাকিয়া ঠেসান দিয়া বসিয়া আছেন। অবশ্যই তিনি উহা চক্ষে দেখেন নাই। কিন্তু তিনি একজন বিশ্বাসী, গায়েবে তাঁহার অবিশ্বাস নাই। অতিশয় সংবেদনশীল অনুভূতির দ্বারা তিনি সহজেই বুঝিলেন যে সেই তাকিয়া ঠেসান দেওয়া ব্যক্তিটি স্বয়ং আল্লাহ।
অনেকে হয়ত মনে করিবেন যে আল্লার আর কাজকাম নাই! তিনি আবুলের বাপের কাছে আসিয়া বসিবেন। এক সাল আগে হইলে আবুলের বাপও এমন কথায় বিশ্বাস করিতেন না। কিন্তু এখন তিনি বিশ্ববিখ্যাত আবুলের বাপ। তাই এমন লোকের কাছে আল্লা আসিতেই পারেন।

যাহা হউক আবুলের বাপ বিশ্বাসী মানুষ হইলেও তিনি বিজ্ঞানী আবুলের বাপও বটেন। তাই আল্লার আগমণের কথা বলিলে যে অনেকে প্রমাণ চাহিবে তাহা তিনি পুত্রের কারবার দেখিয়া ভালই জানিতেন। কিন্তু বৈজ্ঞানিক প্রমাণ কেমনে সংগ্রহ করে তাহা তিনি ভাল জানিতেন না। তাই তিনি সোজা পুত্রকে ফোন দিলেন।

ডঃ আবুল তখন বসিয়া ঠাকুরমার ঝুলির রূপকথা পড়িতেছিলেন। পড়িতে পড়িতে চিন্তা করিতেছিলেন ঘুমন্তপুরীর রাজকন্যাকে কোথায় গেলে আবিষ্কার করা যায়। এমন সময়ে বাপের ফোন আসিল।

বাপ- ব্যাটা আবুল, কোথায় আছি রে এখন? তোর কাছে বুদ্ধি চাই।
আবুল সমস্ত শুনিয়া তখনি অন্য ফোনে হেলিকপ্টার অর্ডার করিয়া আনাইলেন। একদল বিশেষজ্ঞ সমেত হেলিকপ্টারে চলিতে চলিতে বাপকে কহিলেন
আবুল- উনি চেয়ারে বসে আছেন তো। তা ওনাকে কি খোঁচা দেওয়া যায়?
আবুলের বাপ- না বেটা! হাত নাড়িয়ে দেখলাম, হাওয়ার মতনই লাগে।
আবুল- ছবি তোলা যায়?
আবুলের বাপ- না বেটা, মোবাইলে তুলে দেখলাম। কেবল চেয়ার দেখা যায়।
আবুল- উনি বসার ফলে কি চেয়ারের ওজন বেড়েছে?
আবুলের বাপ- নাঃ চেয়ারটা তুলে দেখলাম। একেবারে যেমন ছিল তেমনই।

আবুল- তার মানে ওনার শরীর কোনো বস্তু দিয়ে তৈরী নয়। আচ্ছা উনি কি নিঃশ্বাস ফেলেন?
আবুলের বাপ- মোটেই না। নাকের কাছে হাত দিয়েও কোনো বাতাস লাগে না।

এইসব আলোচনা করিতে করিতেই ডঃ আবুলের হেলিকপ্টার বাড়ি আসিয়া নামিল। সকলে সেই চেয়ারের কাছে আসিয়া পরীক্ষা শুরু করিলেন।

প্রথমেই ইনফ্রারেড হইতে এক্সরে পর্যন্ত ক্যামেরা দিয়া দেখা হইল। কোনোভাবেই কিছু দেখা গেল না।

চেয়ারটিকে অতি উন্নত যন্ত্রে ওজন করিয়া দেখা হইল। লোকটির কোনো ওজন পাওয়া গেল না।

এবারে চেয়ারটিকে পলিথিনের চাদরে ঢাকিয়া দিয়া ভিতরে বায়ু পরিমাপ যন্ত্র লাগানো হইল। তাহাতে বাতাসের কোনো পরিবর্তন দেখা গেল না। অর্থাৎ শ্বাসক্রিয়াও নাই।


চেয়ারের লোকটি যে অতিশয় অলৌকিক তাহা নিশ্চিত হইবার পরে তাহাকে প্রশ্ন করা শুরু হইল। অবশ্য অন্য কেহ তাহা পারেন নাই। আবুলের বাপই একমাত্র উহাকে অনুভব করিতে পারিতেছিলেন। তাই তিনিই দোভাষীর কাজ করিলেন।


প্রশ্ন- আপনি কে মহাশয়? আপনি কি আল্লার ফেরেস্তা? নাকি আল্লা স্বয়ং?
ব্যক্তি- আমি হলাম আল্লার বাপ।
প্রশ্ন- তা কিভাবে সম্ভব? আল্লার বাপ থাকে কিভাবে?
আল্লার বাপ- যেভাবে তোমাদের বাপ থাকে সেইভাবে আল্লারও বাপ থাকে। তোমরা কিভাবে জানলে যে আল্লার বাপ থাকতে পারে না?
প্রশ্ন- আল্লা তো নিজেই বলেছেন তেনার কোনো বাপ নাই। তাইলে আপনি কোথা থেকে এলেন?
আল্লার বাপ- আচ্ছা! তুমি কি আল্লাকে দেখেছ? তিনি যে তোমাকে সৃষ্টি করেছেন সেটা তুমি জানলে কিভাবে?
আবুল- সেটা তো আল্লাই বলেছেন যে তিনিই সব সৃষ্টি করেছেন আল্লার বাপ- তাইলে দেখলে তো। যে বানিয়েছে সেইই বলতে পারে। তোমাকে যে আল্লায় বানিয়েছে সেটা তোমার জানার কথা না। সেটা আল্লায় জানে। তেমনি আমি আল্লাকে বানিয়েছি সেটা আল্লার জানার কথা না, সেটা আমি জানি। ভগবান, গড, আল্লা তিনটাকেই আমি বানিয়েছি। কিন্তু তারা এতটাই বেয়াড়া নাস্তিক হয়ে গেছে যে যেখানে সেখানে বলে বেড়ায় যে তারা নিজে নিজেই হয়েছে। ঠিক তোমাদের পৃথিবীর নাস্তিকগুলার মতন।
#161
 
ঘোড়াগুলি মানুষ হোক। (দ্বিতীয় পর্ব)
যে 'মালিক' ঘোড়াদের মানুষ করেন তাঁর লিখিত গাইড-বুক থেকে


শুরুকরছি সেই মহান মালিক এর নামে, যিনি ঘোড়াদের মানুষ করেন। তিনি এছাড়াও মানুষ করেন গরু, ছাগল, ভেড়া, কুকুর ইত্যাদিদেরও। তিনি যাকে চান তাকেই মানুষ করতেসক্ষম।

মালিক তাঁহার ঘোড়াদের মানুষ করার যে আদর্শ বিধান অনুসরণ করিয়াছেন তাহাই শ্রেষ্ঠপথ। যারা বিশ্বাস করে না তারা নিশ্চয় আরশোলা বা উইপোকা। তারা কখনো বিশ্বাস করবেও না।

ঘোড়াদের উচিত নয় এইসব নোংরা পোকাদের বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করা। ওরা সন্দেহ ও ফাসাদ সৃষ্টিকারী। তাদের জন্য মালিক নিশ্চয় এনেছেন ডিডিটি বা কার্বলিক এর মতন শাস্তি। তোমরা কি তার গন্ধ পাও না?

এই সেই কিতাব যাতে কোনো সন্দেহ নেই, যা ঘোড়াদের মানুষ করার পরিপূর্ণ বিধান দেয়। তার সাথে অন্য সব বিশ্বাসী প্রাণিদেরও জীবন সুন্দর করে। নিশ্চয় মালিক বুদ্ধিমান ও সত্যবাদী।

মানুষ বেশির ভাগ সময়েই ত্রুটিমুক্ত। কিন্তু ঘোড়ারা কেউ ত্রুটিহীন নয়। মালিক এর আস্তাবলের সেই দুটি ঘোড়া ছাড়া, যারা প্রথম মালিকের দেওয়া লাগাম পরেছিল।

তাই তোমরা ও ঘোড়াদের মধ্যে তোমাদের সিদ্ধান্তই অধিক মূল্যবান। কারণ মালিক তোমাদের একে অপরের উপর শ্রেষ্ঠত্ব প্রদান করেছেন। নিশ্চয় তিনি সব কিছু জানেন।

তোমরা তোমাদের ঘোড়াদের বাইরে নিয়ে যাবার সময় শরীরের সাজ ও মুখের লাগাম ব্যবহার করবে। এছাড়া যদি রাস্তায় চোরের উপদ্রপের আশঙ্কা কর তবে ঘোড়াকে বস্তায় পুরে চার পা শুধু বের করে দিও।

তোমরা নিজের আস্তাবলে চারটির বেশি ঘোড়া রাখবে না। তবে এর বাইরে আলাদা করে উঠোনে বা গোয়ালে যতো খুশি ঘোড়া রাখতে পারো। তোমার দক্ষিন হস্ত যাদের অধিকারী তারা তোমার জন্য হালাল।

তারাই উতম ঘোড়া যারা মালিকের নির্দেশ নির্ভূল মেনে চলে। এমনকি মালিক সামনে থাকুক বা না থাকুক তারা মালিকের পরানো লাগামের উপর বিরক্তি প্রদর্শন করে না। এরাই মানুষ হবার যোগ্য।

সেই ঘোড়াই আদর্শ ঘোড়া, যে তার মালিকের আহবানে দৌড়ে আসে, এমনকি চুল্লির ভিতর থেকে হলেও। মালিক পর্বত উত্তোলন করতে বললেও সে বিনা প্রশ্নে সেই কাজে প্রবৃত্ত হবে। এরাই মানুষ হবার যোগ্য।

ঘোড়ারা তোমাদের আস্তাবলে থাকে, তোমাদের খায় পরে ও তোমাদেরই বুদ্ধিতে নিরাপদে থেকে মানুষ হয়। যেসব ঘোড়া এই সত্য স্বীকার করে তোমাদের অনুগত থাকে তারাই ঈমানদার ঘোড়া। তারাই মানুষ হবার উপযুক্ত।

ঘোড়াদের মধ্যে যাদের অবাধ্যতার আশঙ্কা কর তাদের প্রথমে উপদেশ দাও, পরে আস্তাবলের বাইরে বেঁধে রাখো। তারপর তাদের প্রহার করো। এতে যদি তারা শুধরে যায় তবে আর কিছু করতে যেয়ো না।

ঘোড়াদের প্রহার কেন করা হয়েছে তা ঘোড়া ও মালিক এর ব্যক্তিগত গোপন ব্যাপার। পাব্লিকের কাছে তার কারণ দেখাতে তোমরা বাধ্য নও। কোনো মালিক কে প্রশ্ন করা হবে না সে কেন তার ঘোড়াকে পিটিয়েছিল।

তবুও ভদ্রলোক সাজতে চাইলে ঘোড়াদের প্রহার করার কথা গোপন রাখার নির্দেশ দিতে পারো। উত্তম ঘোড়া অবশ্যই মালিক যা হেফাজত করতে বলেছেন তার হেফাজত করবে। মালিক এর সামনে বা অবর্তমানে। এর অবাধ্য হলে তাদের আবার প্রহার করতে পারো।

প্রহার করার সময় শরীরের দৃশ্যমান অংশ (মানে আঙুলের ডগা, বা নাকের ডগা) বাদ দিয়ে আঘাত করবে। আর দেখবে যেন হাত পা ভেঙে না যায়। কারণ ল্যাংড়া ঘোড়া কোনো কাজে লাগে না আর তা থেকে পূর্ণ মানুষও করা যায় না।

যদি এর পরেও কোনো ঘোড়াকে মানুষ করতে না পারো তবে তা ঘোড়ারই দোষ, এই কিতাব এর নয়। সব ঘোড়া মানুষ হয় না। তাই তেমন ঘোড়াকে তিনবার ?দূর হ! দূর হ! দূর হ! বলে দূর করে দিয়ে অন্য ঘোড়া নিয়ে এসো।
#162
ঘোড়াগুলি মানুষ হোক

একজনমানুষ একদিন জঙ্গলে বেড়াতে বেড়াতে দেখতে পেল একটা জংলী ঘোড়া ঘুরে বেড়াচ্ছে। লোকটার ইচ্ছে হল ঘোড়াটাকে ধরে বাড়িতে পুষবে। কিন্তু সমস্যা হল জংলী ঘোড়া ধরার মতন কিছুই তার ছিল না। তাই বুদ্ধি দিয়েই সে কাজ শুরু করল।

মানুষঃ- কিরে ঘোড়া? কি করছিস?
ঘোড়াঃ- দেখতে পাস না? খাবার খুঁজে বেড়াচ্ছি।... তুই আবার কে রে?
মানুষঃ- আমি হলাম গিয়ে মানুষ। তুই আমাকে নিজের মতন ভাবিস নাকি? সম্মান দিয়ে কথা বলতে শেখ।
ঘোড়াঃ-- কেন রে? তুই আমার চাইতে কি এমন বিরাট কিছু যে সম্মান দিতে হবে?
মানুষঃ-আমি কি তা দেখতে চাস? দ্যাখ তাহলে। তুই খাবার খুঁজে বেড়াস কিন্তু আমার খাবার আমার সঙ্গে ঘুরে বেড়ায়। (পকেট থেকে বিস্কুট বের করে খাওয়া শুরু করে।)
ঘোড়াঃ- (মনে মনে) বাপ্রে বাপ! খাবার এর সাথে সাথে চলে? মানুষ হওয়ার তো বেশ মজা? (জোরে) তা দাদা, মানুষ হলে আর কি হয়?
মানুষঃ-কত কি সুবিধে। খাবার খুঁজে বেড়াতে হয় না। থালা বাটিতে খাওয়া যায়। পাকাবাড়িতে আরামে ঘুমানো যায়। বাঘ সিংহ এসে ধরবে বলে এক চোখে তাকিয়ে থাকালাগেনা। জামা পরতে পাওয়া যায়, তাতে শীত করেনা, মশাও লাগেনা। পায়ে জুতা পরা যায়, তাতে ধুলোকাদা লাগেনা। তুই যদি একবার মানুষ হয়ে যাস তো আর অন্য কিছু হতেই চাইবি না।
ঘোড়াঃ- আমি মানুষ হতে পারব?
মানুষঃ- না পারার কি আছে? এই তো গত বছর একটা কুকুর নিয়ে রাখলাম বাড়িতে। সে তো এখন থালায় খায়, বিছানায় ঘুমায়। তুই চাইলে তোকেও নিয়ে যেতে পারি। জগতের ভালো করাই তো মানুষের কাজ।
ঘোড়াঃ- আমি তাহলে মানুষ হবো। কি করতে হবে?
মানুষঃ-পরিশ্রম করতে হবে, আর আমার সব কথা শুনে চলতে হবে। সহজ কাজ নয় কিন্তু। মানুষের চলতে শিখতেই এক বছর লাগে। তুই যে জন্মের পরেই দৌড় দিয়েছিলি তেমনসোজা না।
ঘোড়াঃ- ঠিকাচে, সব করব। আমি মানুষ হতে চাই।


দ্বিতীয় দৃশ্যঃ- মানুষের বাড়ির রাস্তায় পরের দিন।

ঘোড়াঃ- তুমি আমার পিঠে চড়বে কেন?
মানুষঃ-দূর বোকা! আমার সঙ্গে যত ঘসাঘসি করবি ততই তোর ভাল হবে রে। দেখিস না, আমার কুকুরটা আমার কোলে ওঠে। তাছাড়া তুই জানিস না যে মানুষেরা তাদের বাচ্চাদের কোলেপিঠে করেই মানুষ করে। দাঁড়া তোকে তার ছবি দেখাই। কিন্তু তুই কিআমার পিঠে চড়তে পারবি? পারিস যদি তো দেখ।
মানুষ ঘোড়াকে বেশ কিছু ছবি দেখিয়ে প্রমাণ করে দেয় যে মানুষ হতে গেলে কিভাবে কোলে পিঠে জড়াজড়ি করতে হয়। খাড়া দাঁড়ানো মানুষের পিঠে যে চড়া যাবেনা বুঝে ঘোড়াই শেষে মানুষকে পিঠে নেয়। মানুষ হবার শিক্ষা শুরু হয়ে যায়।
মানুষঃ- তুই কিন্তু আমার উপর বিশ্বাস রাখছিস না। সব কিছুতে সন্দেহ করলে তোর মানুষ হওয়া যাবেনা। মানুষ যদি বা হয়েও যাস তো বাজে মানুষ হবি।
ঘোড়াঃ- না না, আর আমি সন্দেহ করব না। প্রথম বার ভুল হয়ে গেছে।

তৃতীয় দৃশ্যঃ- মানুষের আস্তাবলের সামনে।

ঘোড়াঃ- আমার পিঠে এসব কি দিলে? আবার বাঁধাবাঁধি করছ কেন?
মানুষঃ- ওরে বোকারাম, একে জিন বলে। মানুষ হতে গেলে খালি গায়ে রাস্তায় বেরুতে নেই। আমাকে দেখিস কখনো খালি গায় যেতে?
ঘোড়াঃ- অ, বুঝলাম। কিন্তু পায়ে কি সব ঠুকছ আবার?
মানুষঃ-নাল পরাতে হবেনা? দ্যাখ আমার জুতা। খালিপায় চলে কি রকম মানুষ হবি? তোকে যতই মানুষ করতে চাইছি তুই ততই ফালতু প্রশ্ন করছিস। মানুষ হতে গেলে মন সাফ রাখতে হবে রে বোকা। গুরুকে বিশ্বাস করতে হবে।
মানুষ এবার ঘোড়াকে লাগাম পরায়। ঘোড়া আর কিছু বলতে ভরসা পায় না। মানুষ তার পিঠে চড়ে বসে।
মানুষঃ-এইটা কেন দিলাম জানিস? তোর মুখ বন্ধ রাখার জন্যে। কেবল বাজে প্রশ্ন করছিস।চল এবার দৌড় শুরু কর। তুই হয়ত আবার বলবি যে দৌড়াতে হবে কেন? দৌড়ে লাভ কি? এই যে আমি সকাল বেলায় রোজ ওঠবোস করি, তাতে কি লাভ হয় তুই বুঝবি? দুপুরে যে রোজ সাঁতার কেটে পুকুরের এপার থেকে ওপার যাই আর আসি তাতে কি লাভ হয় তুই কিছু বুঝবি? তুই বুঝতে না পারলেও লাভ হয়। একে এক্সারসাইজ বলে। মানুষ হতে গেলে এসব দরকার। বুঝলি কিছু?
ঘোড়া জলের মতন বুঝে যায়। বাধা মুখে হুহুহুহুহুহু করে।

মানুষঃ-তোর স্বভাব খুব খারাপ। তুই নির্ঘাত জিজ্ঞেস করবি কতক্ষণ দৌড়াতে হবে? সেটা এখন তুই নিজে ঠিক করতে পারবি না। আমি যেমন বলব তেমন দৌড়াবি। যখন বোঝার মতন জ্ঞান হবে তখন নিজেই ঠিক করবি। আর শোন, মাঝে মাঝে তোকে আমি চাবুক মারব। মানুষ হতে গেলে এটা লাগে। আমাকে মানুষ করার সময় আমার গুরুও মারত। মাথায় ঢুকেছে ???
ঘোড়া দৌড়াতে দৌড়াতে বাঁধা মুখে হুঁহুঁহুঁ করে।



শেষ দৃশ্যঃ-
অনেক বছর কেটে গেছে। ঘোড়ার একটা বৌ জোগাড় হয়েছে। তাকেও একই পদ্ধতিতে শিক্ষা দিয়ে প্রায় মানুষ করে ফেলা গেছে। দুজনে মিলে এখন একটা গাড়ি চালায়। তাদের কয়েকটা ছানাপোনাও হয়েছে।

মানুষ হবার পথেও তারা অনেক দূর এগিয়েছে। তারা এখন খালিগায়ে থাকেনা। চলার সময় মাটিতে পা ঠেকে না। তাদের খাবার মুখের সামনে এসে যায়। পাকা বাড়িতে তারা বাস করে। রাত্রে বাঘ সিংহ ইত্যাদির ভয় থাকেনা। জঙ্গলে মানুষ যা যা কথা দিয়েছিল তার কোনোটাই মিথ্যা হয়নি। তার উপর তারা এখন গাড়ি চালানো শিখছে। তাদের ছানাপোনারাও মানুষ হওয়ার সাধনায় বেদম পরিশ্রম শুরু করেছে। ছানারা শুনেছে জঙ্গল বলে একটা যায়গা আছে, যেখানে কেউ খাবার এনে দেয় না। বরং বাঘ এসে খেয়ে ফেলতে পারে। "মালিক" তাদের পূর্বজদের নিরাপদে রাখার জন্যই জঙ্গল থেকে বের করে এনেছেন। তারা কোনোদিন জঙ্গল দেখেনি, দেখার কোনো ইচ্ছেও নেই। মালিক বলেছেন জঙ্গল খুব খারাপ জায়গা। কেউ যদি "মালিক" এর উপর বিশ্বাস না রাখে, তাঁর কথামত মানুষ হবার চেষ্টা না করে তবে তাকে জঙ্গলে ছেড়ে দিয়ে আসা হবে। ছানারা শুনে ভয় পায়। তারা প্রতিজ্ঞা করেছে যতদিন না "মানুষ হতে পারছে ততদিন চেষ্টা চালিয়েই যাবে। তাই মানুষ হবার জন্য বাপ-মায়ের চেয়ে তারা অনেক বেশি পরিশ্রম করে। ছেলেবেলা থেকেশিক্ষা পেয়ে তারা বাপ মায়ের চেয়েও বড় মাপের মানুষ হবে বলেই সবার ধারণা।

কেবল একটা দুঃখ এখনো বাকি। কোন রাস্তায় কখন কতদূর চলতে হবে সেইটা তারা এখনো বুঝে উঠতে পারেনি। তাদের বাপ-মায়েরও সে বিদ্যা এখনো হয়নাই। আসুন সকলে প্রার্থনা করি তারা যেন "মালিক" এর উপর বিশ্বাস না হারায়। তারা সবাই মানুষ হোক।
#163
 
একটি পরিপূর্ণ জীবন বিধান।
সুরা আল মুরগী-
(সুরা আল বাকারা অর্থাৎ বাছুর যদি থাকে তবে মুরগীরা কি এমন দোষ করেছে? মুরগী বলে কি তারা মানুষ না?)

==============================
1. হে বুদ্ধিমান মুরগীগণ, তোমাদের প্রভুর নামে শ্রবণ করো। তিনি তোমাদের কল্যাণের নিমিত্ত এই সর্বোত্তম জীবন বিধান প্রদান করিতেছেন। তোমরা তোমাদের প্রভূ ও তাঁহার বার্তাবাহক উভয়কে সম্মান প্রদর্শন করিয়া মনযোগ সহকারে উহা পালন করিবে।

2. তোমরা কেবল তোমাদের মালিকের কাছে কৃতজ্ঞ থাক যিনি তোমাদের নির্জীব আন্ডা হইতে ?ইনকিউবেটর? যন্ত্রের দ্বারা নির্মাণ করিয়াছেন। তোমাদের এই জীবন তাঁহার জন্য ত্যাগ করিতে সর্বদা প্রস্তুত থাকিও। ইহাতে কোন প্রকার সন্দেহ রাখিও না।

3. তোমরা তোমাদের প্রভুর শরণাগত হইয়া নিজেদের সর্বশ্রেষ্ঠ উম্মত রূপে প্রমাণ করিও। যাহারা তাহাদের প্রভুকে অস্বীকার করিয়া স্বাধীনতার নামে জংলীপনা করিয়া থাকে তাহাদের সঙ্গ তোমরা বর্জন করিবে। ইহাতেই তোমাদের মঙ্গল।

4. আর তোমরা দেখ, এই বিশাল খামার ও তাহার অন্তর্গত সমস্ত স্থাবর ও অস্থাবর বস্তু  তোমাদের প্রভু সৃষ্টি করিয়া তোমাদের সেবায় নিযুক্ত করিয়াছেন। উর্দি ও লাঠিধারী যে সকল দূতেরা রাত্রিকালে রশ্মিযুক্ত হইয়া ঘুরিয়া বেড়ায় তাহারাও তোমাদের সেবাতেই নিযুক্ত। তাহাদের সঙ্গী দন্তকেলায়িত কুক্কুরগণও তোমাদের জন্যই। তোমরা তাহাদের জন্য নও।

5. তোমাদের প্রভূ জন্ম হইতে মৃত্যু পর্যন্ত তোমাদের খাদ্য-পানীয় যোগাইবার ভার লইয়াছেন। তিনিই গ্রীষ্মে শীতল বায়ু ও শীতে অগ্নির ব্যবস্থা করিয়া তোমাদের জীবন রক্ষা করেন। তোমরা তাঁহাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন কর।

===============================

6. তোমাদের ভোজন করিবার জন্য তোমাদের প্রভু যে সকল বস্তুকে পবিত্র করিয়াছেন তাহা ভিন্ন অন্য কিছু ভোজন করিবে না। তোমরা যাহা ভোজন করিয়া থাক, সেই সকল বস্তুও কোনো অপরিচিত ব্যক্তির নিকট গ্রহণ করিবে না। মনে রাখিও, প্রভু তোমাদের জন্য যাহা পবিত্র করিয়া প্রেরণ করিয়াছেন তাহা ভিন্ন সব কিছুই ক্ষতিকর।

7. তোমাদের প্রভু জানাইতেছেন যে তোমরা সূর্যোদয়কালে সমবেতভাবে সূর্যের দিকে গলা তুলিয়া প্রভুর নামকীর্তন করিবে। যে কেহ এটি করিতে পারিবে না প্রভুর দূতেরা তাহাকে মারিয়া পুঁতিয়া ফেলিবে। মুরগী জাতির সামগ্রিক কল্যাণের জন্য তিনি এমন করিয়া থাকেন। এজন্য তোমরা তাঁহাকে নিন্দা করিও না। মূর্খেরা তাঁহার উদ্দেশ্য না বুঝিয়া তাঁহাকে দোষী করে।

8. তোমরা মোরগেরা শুন। মুরগিরা তোমাদের আন্ডাক্ষেত্র। সেই আন্ডাক্ষেত্রে তোমরা যত পার আন্ডা উৎপাদন কর। তবে ইহা করিতে গিয়া নিজের ওজন কমাইলে শাস্তি পাইবে। মুরগিদের সম্মান করিবে, কিন্তু তাহারা তোমাদের কথার বিন্দুমাত্র অবাধ্য হইলে গদাম দিয়া ঠান্ডা করিবে। অবাধ্য মুরগিদের গদাম দিতে কোনো দোষ নাই, শুধু তাহারা যেন অপমানিত না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখিও।

9. মনে রাখিও, প্রভু তোমাদের নিজ উদ্দেশ্য সফল করিবার জন্যই রাখিয়াছেন। তিনি তোমাদের লইয়া যাহা করেন তাহা মঙ্গলের জন্যই। তোমরা তোমাদের আন্ডা-বাচ্চা ইত্যাদি অপেক্ষাও প্রভুর প্রতি বেশি বিশ্বস্ত থাকিবে। কারণ তাহাদের রক্ষা ও পালনও তিনিই করেন।

10. আর তোমরা এই সকল নিয়মের কারণ খুঁজিতে চেষ্টা করিবে না। তাহাতে তোমাদের ওজন কমিয়া যাইবে ও মাংসের স্বাদ হারাইয়া যাইবে। তোমরা খামারের বাহিরে বিচরণকারী পোকাখেকো মুর্গীদের সমতুল্য হইবে, যাহারা প্রভুর খামারের যোগ্য নয়।

=================

11. তোমরা শ্রবণ কর সেই শাস্তির কথা যাহা তোমাদের প্রভুর আদেশ অমান্যকারীদের জন্য বরাদ্দ হইয়াছে। কিন্তু তোমাদের মধ্যে যাহারা সকল নিয়ম মান্য করিয়া মোটা তাজা হইয়া থাকিবে তাহারা জীবনের অন্তে পাঁচ তারা হোটেলের স্বর্গীয় পরিবেশে দামী মশলায় রন্ধিত হইবে ও বিলাইতি মাল সহযোগে মহামান্য ব্যক্তিদের সহিত এক টেবিলে বসিয়া হূর পরী দর্শন করিবে।

12. তোমরা যদি এমন কোনো কাজ কর যাহা নিয়ম ভঙ্গ করে বা খামারে অশান্তি ও যুদ্ধ সৃষ্টি করিয়া মুরগীদিগের ক্ষতি করে তবে প্রভুর দূতেরা তাহাদের অকালে তুলিয়া আনিয়া প্রভুর রান্নাঘরের জ্বলন্ত অগ্নিতে ভাজিয়া খাইয়া ফেলিবে। তোমরা নিশ্চিত জানিবে, প্রভু ও তাঁহার দূতেরা যত মুরগী এইভাবে ভক্ষন করেন তাহারা সকলেই খামারদ্রোহী। তোমরা না জানিলেও প্রভুর কাছে কিছুই অজ্ঞাত নহে।

13. তোমাদের মধ্যে যে কেহ খামার ত্যাগ করিয়া পালায় তাহারা নিশ্চিতরূপে অপরাধী। তাহাদের জীবন্ত ভাজিলেও দোষ হয় না। কিন্তু তোমাদের প্রভু কেবল দয়া করিয়াই তাহাদের এমন শাস্তি দেন না। তবে তোমরা নিশ্চিত জানিও তাহারা শয়তানের কথায় বিভ্রান্ত। তাহাদের অনুসরণ করিয়া নিজেদের বিনাশ করিও না। তাহাদের নির্বুদ্ধিতার জন্য তাহাদের করুণা কর।

14. এ ছাড়াও এমন যেকোন কাজ, যাহা খামার সৃষ্টির উদ্দেশ্যকে ব্যাহত করে তাহা করা অন্যায় বলিয়া জানিবে। এবং নিজেরা এমন কোন নিয়ম করিবে না যাহা প্রভুর দ্বারা প্রদত্ত নিয়মের বিরুদ্ধে যায়। মনে রাখিও, খামারের শান্তি ও পবিত্রতা রক্ষা করিতে না পারিলে তোমরা বিনাশ প্রাপ্ত হইবে। প্রভু অপেক্ষা তোমরা অধিক জান না।

15. যদি তোমরা সকলেই প্রভুর আদেশ অবহেলা করিয়া তাঁহাকে অস্বীকার কর তবে প্রভু বাধ্য হইয়া তোমাদের সকলকে সহ এই খামার ধ্বংস করিবেন ও নতুন খামারের সৃষ্টি করিবেন। প্রভুর কাছে এমন শত শত খামার সৃষ্টি করা নিতান্তই সহজ। কাজেই তোমরা তাঁহাকে অস্বীকার করার আগে সেই ভয়ানক দিনের কথা চিন্তা করিও।
===============================
  এই পরিপূর্ণ জীবন বিধান কেবল মুরগীদের জন্য দেওয়া হইয়াছে। অন্য কোন জীব ইহা নিজ বুদ্ধিতে অনুসরণ করিবার চেষ্টা করিলে তাহার ফলাফলের জন্য তিনি স্বয়ং দায়ী থাকিবেন।


#164
ধার্মিকের জ্ঞান-বুদ্ধির লেভেল (উপযুক্ত ধর্মীয় দলিল সহকারে)

পৃথিবীর সমস্ত ধর্মের বইতে লেখা আছে যে অবিশ্বাসী নাস্তিকেরা বিশ্বাসীদের তুলনায় নিকৃষ্ট জীব। নাস্তিকদের অন্ধ, বেকুব, ইত্যাদি সার্টিফিকেট দেবার ব্যাপারে বিভিন্ন ধর্মের মধ্যে কম্পিটিশন আছে। আজ এখানে দেখানো হবে ঠিক কি কারণে এইসব ধর্মের লোকেরা নাস্তিকদের বেকুব বলে মনে করেন।

হিন্দু উপনিষদ: তৈত্তিরীয় উপনিষদ নামে একটি উপনিষদ আছে যেটি তিত্তির পাখীরা খেয়ে ফেলেছিল। পরে তার কাছ থেকে সেটি উদ্ধার করা হয়।
যাজ্ঞবল্ক্য ঋষি তাঁর গুরু বৈশম্পায়ন এর কাছে যজুর্বেদ শিক্ষা নিচ্ছিলেন। একদিন গুরুর সাথে তাঁর ঝগড়া হয়ে গেল। শিষ্য গুরুর কাছে পাওয়া সমস্ত শিক্ষা বমি করে বের করে দিয়ে চলে গেলেন। জ্ঞান এইভাবে ছড়িয়ে পড়ে থাকতে দেখে তিত্তিরপাখির রূপ ধরে অন্য ঋষিরা সেগুলি খুঁটে খুঁটে খেয়ে ফেলল। পরে সেই খুঁটে খাওয়া জ্ঞান একত্র করে একটি গ্রন্থ হয়, যার নাম তৈত্তিরীয় উপনিষদ।

বাইবেল: ইজেকিয়েল একটি বই খেয়ে ফেললেন।
তিনি আমাকে কহিলেন,  হে মনুষ্যসন্তান; আমি তোমাকে এই পুস্তক  দিলাম।  ইহা  ভক্ষন কর।  আর তখন আমি তাহা ভোজন করিলাম। (৩ পরিচ্ছেদ।)

ইসলাম: মুহম্মদ এর জ্ঞানবুদ্ধি কলসিতে করে এনে বুকের মধ্যে ভরে দেওয়া হয়েছিল।
বুখারী থেকে- আল্লার রাসুল কহিলেন, একদিন যখন আমি মক্কায় ছিলাম আমার ঘরের ছাদ খুলে জিব্রাইল নেমে এলেন। তিনি আমার বুক খুলে ভিতরটি জমজমের পানির দ্বারা ধুয়ে দিলেন। তারপর জ্ঞান ও ঈমান ভর্তি সোনার এক পাত্র নিয়ে সেগুলি আমার বুকের মধ্যে ঢেলে দিয়ে বুক বন্ধ করে দিলেন। এরপর তিনি আমার হাত ধরে ঊঠিয়ে আমাকে প্রথম স্বর্গে নিয়ে গেলেন।

Volume 1, Book 8, Number 345:Narrated Abu Dhar:Allah's Apostle said, "While I was at Mecca the roof of my house was opened and Gabriel descended, opened my chest, and washed it with Zam-zam water. Then he brought a golden tray full of wisdom and faith and having poured its contents into my chest, he closed it. Then he took my hand and ascended with me to the nearest heaven.

এরথেকে বোঝা যায় যে ধার্মিকদের জ্ঞানবুদ্ধি একটা সলিড জিনিস। যা খেয়ে ফেললে পেটে যায় বা বুক চিরে ভরে দেওয়া হয়। কলসিতে করে বয়ে আনা যায়, বমি করে বের করে দেওয়া যায়। মোদ্দা কথা ধার্মিকের বুদ্ধি মগজে থাকে না, তার চাইতে নিচের লেভেলেই থাকে, বুকে বা পেটে। যেহেতু এগুলো বস্তু, তাই নিজের ওজনেই এরা হাঁটুর দিকে নেমে যায়। কারো কারো মাথায় থাকলেও একই ভাবেনেমে যায়। এই জ্ঞানবুদ্ধি মগজের দিকে আনতে গেলে একমাত্র পথ হল মাথা নিচুকরা। যে ধার্মিক যতবেশি মাথা নিচু করে প্রার্থনা করে তাদের জ্ঞানবুদ্ধি তত মাথার দিকে যায়। তাই মাথা নামিয়ে প্রার্থনা না করলে সেই ধার্মিক কখনো বুদ্ধিমান হতেই পারেনা। যে ধার্মিক যত মাথা নোয়ায় তার জ্ঞানবুদ্ধির লেভেল তত ওপরে। (অবশ্য সেই ওপরটা নিচু করে রাখা লাগে।)





এই হল জ্ঞানবুদ্ধি মাথায় পৌঁছানোর ধর্মীয় প্রক্রিয়া।

নাস্তিকদের জ্ঞানবুদ্ধি এরকম সলিড বস্তু নয়। তাই এগুলো মাথা থেকে নেমে যায় না। মাথায় ফেরত আনার জন্য মাথা নামিয়েও থাকা লাগে না। কিন্তু ধার্মিকেরা মনে করে তাদের জ্ঞানবুদ্ধির মতন সকলেরই জ্ঞানবুদ্ধি নিচের দিকে নেমে যায়। তাই মাথা নামায় না বলেই তারা ধরে নেয় নাস্তিকেরা বেকুব। আর নাস্তিকেরাও এক্ষেত্রে অসহায়। ধার্মিকদের কলসী ভরা জ্ঞানবুদ্ধি যে ওজনে এবং আয়তনে নাস্তিকদের তুলনায় অনেক বেশি তা সকলেই জানে।
#165
তাল্গাচ, নাস্তিক ও মামদো ভূত


প্রচন্ড রৌদ্রে পথ চলিতে চলিতে একদা এক পথিক পথের প্রান্তে একটি তাল্গাচ দেখিতে পাইল। তাল্গাচের সুশীতল ছায়া বড়ই লোভনীয় দেখিয়া সে তাল্গাচের তলায় বসিয়া পড়িল।তাল্গাচের মাথায় ছিল মামদো ভুত। সে শীতল শীতল ফুঁ মারিয়া পথিককে ঘুম পাড়াইয়া দিল। তাহার পর পথিকের মাথা হইতে বুদ্ধিটুকু চুশিয়া লইল।পথিকের যখন ঘুম ভাঙিল তখন সে তাড়াতাড়ি উঠিতে গেল। অমনি মামদো ভুত তাহার লম্বা ঠ্যাং ঝুলাইয়া তাহার মাথায় চাপাইয়া তাহাকে আবার বসাইয়া দিল।
মামদো বলিক, ওহে বে-আদব! তাল্গাচ কি তোমার বাপের সম্পত্তি? যখন খুশি আসিয়া ঘুমাইবে, আর যখন খুশি চলিয়া যাইবে? তাল্গাচ আমার। আমার তাল্গাচের তলায় বসিয়া বাতাস খাইয়াছ, আর তুমি তাল্গাচের সুশীতল ছায়া ত্যাগ করিতে পারিবে না। তাল্গাচের ছায়া হইতে বাহির হইলেই তোমার ঘাড় মটকাইয়া মারিব।
পথিক বড় বিপদে পড়িল। তাল্গাচের সুশীতল ছায়া বড় ভাল, কিন্তু তাহার তলায় থাকিতে গেলে দুনিয়ার সব কাজ বন্ধ করিতে হয়। তাই বাধ্য হইয়া পথিক তাল্গাচ তুলিয়া মাথায় লইল। মাথায় তাল্গাচ লইয়া সে ঘুরিয়া বেড়ায়, আর মামদো ভুতও সাথে সাথেই ঘোরে। ক্রমে ক্রমে তাল্গাচ সেই পথিকের মাথায় শিকড় চালাইয়া দিল। পথিক যেখানেই যায় সকলেই তাহাকে দেখিতে আসে। মামদো ভূতের হুকুম মতন পথিক তাহাদের কাছে তাল্গাচের অসীম গুণের পরিচয় দেয়। সকলেই তাল্গাচের সুশীতল ছায়াতলে আসিয়া জড়ো হয়। শিশু পোলাপান নিজের নাম কি জানিবার আগেই তাল্গাচের গুণাবলী জানিয়া যায়।
মামদো ভুতের ভারি মজা। লোকে তাল্গাচের সুশীতল ছায়ায় আসিয়া বসে, আর তাল্গাচ মাথায় নিয়া বাড়ি যায়। মাথায় একটি তাল্গাচ থাকা যে কত দরকার তাহা জানিতে কেহ আর বাকি নাই। সকলেই জানে যে মাতায় তাল্গাচ না থাকিলে জেবন ব্রেথা হইয়া যায়।

বহুদিন এমন চলার পরে একদিন এক নাস্তিক সেইখানে আসিয়া হাজির হইল। কারবার দেখিয়া তো মাথা খারাপ! ছেলেবুড়ো সবাই মাথায় তাল্গাচ লইয়া ঘোরে। একে অন্যের সাথে দেখা হইলে বলে ?তোমার উপর তাল্গাচ এর সুশীতল ছায়া থাকুক?। নাস্তিকের সেখানে কিছু বন্ধু জুটিল। সকলেই তাহাকে বলিল যে মাতায় তাল্গাচ থাকিলে অনেক সুবিধা। সর্বদা সুশীতল ছায়া পাওয়া যায়। কিন্তু সেই ছায়া মাথা হইতে সরিয়া গেলেই মামদো ভূতের হাতে মারা পড়িতে হইবেক।
নাস্তিক বলিল, তাহা কেমনে হয়? অনেকেরই তো মাথায় তাল্গাচের সুশীতল ছায়া পড়িতেছে না। ছায়া পড়িতেছে অনেক দূরে। সেই ছায়ায় অনেকেই আসে যায়। কুত্তারাও আসে যায়। তবে তাহাদের কেউ মরে না কেন?

তাল্গাচিরা বলিল, যাহারা নিজ ইচ্ছায় তাল্গাচ এর সুশীতল ছায়ায় আসে তাহাদের জন্যই এই নিয়ম।

নাস্তিক বলিল, তোমরা কি সকলেই নিজ ইচ্ছায় তাল্গাচ এর সুশীতল ছায়ায় আসিয়াছিলে? তখন তোমাদের বয়স কত ছিল?

সকলেই বলিল তাহাদের মাথায় জ্ঞানবুদ্ধি গজাইয়া উঠিবার আগেই বাপ-মায়ে তাল্গাচ লাগাইয়া দিয়াছে। নিজ জ্ঞানে তাল্গাচ এর সুশীতল ছায়ায় আসিয়াছে এমন লোক খুবই অল্প।

নাস্তিক বলিল, তবে তোমরা নিজ ইচ্ছায় তাল্গাচ এর সুশীতল ছায়ায় আসিলে কিভাবে? তাল্গাচ কাটিয়া ফেল।

তাহারা বলিল, তাল্গাচ না থাকিলে সুশীতল ছায়া থাকিবে না।

নাস্তিক ছাতা খুলিয়া বলিল, এই আধুনিক পদ্ধতি বেশি ভাল। ইহাতে মামদো ভূতের ভয় নাই। তাহার কথায় কিছু লোকে মাতার তাল্গাচ কাটিয়া ফেলিল। বলিল, আহা কি শান্তি।

=========================================

নাস্তিকের দল কিছু বাড়িল, অন্যদের বলিল তোমরাও তাল্গাচ কাটিয়া ফেল। মামদো ভূতে কিছুই করিতে পারিবেক না।
তাহারা বলিল, মামদো ভূতে কিছু না করুক, তাল্গাচ খুব দরকারী জিনিস। ছাতা হইতে তো আর তাল পাওয়া যায় না।
নাস্তিকেরা বলিল, তাল ফলানোর জন্য কি তাল্গাচ মাথায় রাখার দরকার আছে? চিন্তা করিয়া দেখ দেখি! তাহারা বলিল, চিন্তা করিলে মাথা ঘামিয়া যায়। তাল্গাচ এর সুশীতল ছায়ায় থাকিয়া মাথা ঘামাইলে তাল্গাচ এর অপমান হয়।